উইলি রড্রিগুয়েজ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
উইলি রড্রিগুয়েজ
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামউইলিয়াম ভিসেন্ট রড্রিগুয়েজ
জন্ম (1934-06-25) ২৫ জুন ১৯৩৪ (বয়স ৮৯)
সেন্ট ক্লেয়ার, পোর্ট অব স্পেন, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনলেগ ব্রেক ও গুগলি
ভূমিকাঅল-রাউন্ডার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ১১৭)
৭ মার্চ ১৯৬২ বনাম ভারত
শেষ টেস্ট১৯ মার্চ ১৯৬৮ বনাম ইংল্যান্ড
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৫৩/৫৪ - ১৯৬৯/৭০ত্রিনিদাদ ও টোবাগো
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ৬৪
রানের সংখ্যা ৯৬ ২০৬১
ব্যাটিং গড় ১৩.৭১ ২৪.৮৩ ৬.০০
১০০/৫০ –/১ ১/৯ –/–
সর্বোচ্চ রান ৫০ ১০৫
বল করেছে ৫৭৩ ৫৭৮৭
উইকেট ১১৯
বোলিং গড় ৫৩.৪২ ২৮.০৮
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৩/৫১ ৭/৯০
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৩/– ৩৬/– –/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৯ জুন ২০২০

উইলিয়াম ভিসেন্ট উইলি রড্রিগুয়েজ (ইংরেজি: Willie Rodriguez; জন্ম: ২৫ জুন, ১৯৩৪) পোর্ট অব স্পেনের সেন্ট ক্লেয়ার এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও ফুটবলার। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৬০-এর দশকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটে ত্রিনিদাদ দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি লেগ ব্রেক ও গুগলি বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন উইলি রড্রিগুয়েজ

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট[সম্পাদনা]

১৯৫৩-৫৪ মৌসুম থেকে ১৯৬৯-৭০ মৌসুম পর্যন্ত উইলি রড্রিগুয়েজের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। চমৎকার অল-রাউন্ডার হিসেবে উইলি রড্রিগুয়েজ সুনাম কুড়িয়েছিলেন। কিন্তু, টেস্ট পর্যায়ে এ ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারেননি তিনি।

ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর পোর্ট অব স্পেনের সেন্ট ক্লেয়ার এলাকায় উইলি রড্রিগুয়েজের জন্ম। পাঁচ মৌসুমের অধিক সময় নিয়ে ত্রিনিদাদের পক্ষে মাত্র তিনটি প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ পান তিনি। তন্মধ্যে, ১৯৫৭-৫৮ মৌসুমে সফররত পাকিস্তানি একাদশের বিপক্ষে একটি শতরানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। ১৯৫৮-৫৯ মৌসুমে ভারত ও পাকিস্তান গমনার্থে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের সদস্যরূপে মনোনীত হন। ইন্ডিয়ান ইউনিভার্সিটিজ দলের বিপক্ষে ৭/৯০ বোলিং পরিসংখ্যান বাদে ব্যাট কিংবা বল হাতে খুব কমই সফলতার স্বাক্ষর রাখতে পেরেছিলেন তিনি। এছাড়াও, কোন টেস্টে তাকে রাখা হয়নি।

১৯৬৮-৬৯ মৌসুমে উইন্ডওয়ার্ড আইল্যান্ডসের বিপক্ষে ৫/৪২ ও বার্বাডোসের বিপক্ষে ৬/৩০ লাভ করেছিলেন। ১৯৬৯-৭০ মৌসুমে সর্বশেষ খেলেন। গায়ানার বিপক্ষে ৫/১২ ও জ্যামাইকার বিপক্ষে ৫/৭৬ পান। অংশগ্রহণকৃত চারটি খেলাই ত্রিনিদাদের নিজস্ব মাঠ পোর্ট অব স্পেনে হয়েছিল। পোর্ট অব স্পেনে অনুষ্ঠিত সবগুলো প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে ২২.৮৬ গড়ে ৬৭ উইকেট দখল করেন।[১]

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে পাঁচটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন উইলি রড্রিগুয়েজ। ৭ মার্চ, ১৯৬২ তারিখে কিংস্টনে সফরকারী ভারত দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ১৪ মার্চ, ১৯৬৮ তারিখে পোর্ট অব স্পেনে সফরকারী ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

১৯৬১-৬২ মৌসুমে ভারত দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ গমন করে। সিরিজের দ্বিতীয় ও চতুর্থ টেস্টে খেলার সুযোগ পান। তন্মধ্যে, পোর্ট অব স্পেনে সিরিজের চতুর্থ টেস্টে সফরকারী ভারত দলের বিপক্ষে তিনি তার লেগ স্পিন বোলিং দিয়ে ৩/৫১ লাভ করেন ও ব্যাট হাতে অর্ধ-শতরানের ইনিংস খেলেন।

ইংল্যান্ড গমন[সম্পাদনা]

কিন্তু, ১৯৬৩ সালে ইংল্যান্ড সফরে বেশ ব্যর্থতার পরিচয় দেন। এর প্রধান কারণ ছিল মূলতঃ আঘাতপ্রাপ্তি। তরুণাস্থিতে আঘাতের কারণে স্বাভাবিক খেলা উপহার দিতে পারেননি তিনি।[২] ঐ সফরে তিনি অনিয়মিতভাবে খেলেন। তাসত্ত্বেও, ইয়র্কশায়ারের বিপক্ষে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে চার ঘণ্টারও অধিক সময় ক্রিজ আঁকড়ে থেকে ৯৩ রান তুলেন। এরফলে, সিরিজের পঞ্চম টেস্টে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে জোই ক্যারিও’র স্থলাভিষিক্ত হন। ৫ ও ২৮ রান সংগ্রহ করেন।

১৯৬৪-৬৫ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলেন। তবে, তেমন সফলতা পাননি। এ পর্যায়ে তার প্রথম-শ্রেণীর ব্যাটিংয়ের মানের অবনতি ঘটতে থাকে ও বোলিংয়ের উত্তরণ ঘটে। ১৯৬৫-৬৬ মৌসুম থেকে ১৯৬৯-৭০ মৌসুম পর্যন্ত মাত্র একটি অর্ধ-শতরান সহযোগে ১৮.১০ গড়ে ৫০৭ রান তুলেন। তবে, ২২.২১ গড়ে ৬৯ উইকেট পেয়েছিলেন তিনি। সাতবার ইনিংসে পাঁচ বা ততোধিক উইকেট পান। ১৯৬৭-৬৮ মৌসুমে সফররত মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের (এমসিসি) বিপক্ষে ত্রিনিদাদের সদস্যরূপে ৬/৫১ পান। এরফলে, সিরিজের চতুর্থ টেস্টে ডেভিড হলফোর্ডের স্থলাভিষিক্ত হন। খেলায় তিনি চার উইকেট লাভ করলেও ইংল্যান্ড দল জয়লাভ করে। ফলশ্রুতিতে, পুনরায় হলফোর্ডকে দলে ফিরিয়ে আনা হয় ও তাকে মাঠের বাইরে অবস্থান করতে হয়েছিল।

ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

ক্রিকেটের পাশাপাশি ফুটবল খেলায়ও সিদ্ধহস্তের পরিচয় দিয়েছেন উইলি রড্রিগুয়েজ। ত্রিনিদাদের পক্ষে ফুটবল খেলায় অংশ নিয়েছেন তিনি। ১৯৫৯ সালে ব্রিটিশ ক্যারিবীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে সফররত দলের মুখোমুখি হন। ক্রিস্টাল প্যালেস এফ.সি. কর্তৃপক্ষ তাকে ব্যাক ও সেন্টার হাফ (স্টপার) অবস্থানে দলের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হিসেবে অভিহিত করে। মিশুক, সংস্কৃতিবান ও বলের কারুশিল্পী হিসেবে তিনি ফুল ব্যাক অবস্থানে আদর্শস্থানীয় হিসেবে উল্লেখ করা হয়।[৩]

১৯৭৯-৮০ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে থেকে অস্ট্রালেশিয়া গমনে যান। অস্ট্রেলিয়া সফরে বেশ সফলতা পায় তার দল কিন্তু নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে তার দল ১-০ ব্যবধানে টেস্টে পরাজয়বরণ করে। এ পর্যায়ে কয়েকজন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান খেলোয়াড় মাঠে বাজে আচরণ করে ও নিউজিল্যান্ডীয় আম্পায়ারের বৈষম্যের শিকার হয়। রড্রিগুয়েজ জনসমক্ষে আম্পায়ারের সমালোচনায় মুখরিত হন ও নিউজিল্যান্ডীয়দের অনুকূলে সিদ্ধান্ত প্রদানের কথা তুলে ধরেন।[৪]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Willie Rodriguez bowling by ground
  2. Wisden 1964, p. 272.
  3. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৩০ জুন ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০২০ 
  4. R.T. Brittenden, "The West Indians in New Zealand, 1979–80", Wisden 1981, p. 957.

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]