আসানসোলের পরিবহন ব্যবস্থা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

আসানসোল শহর এবং বৃহত্তর আসানসোল অঞ্চলের বিভিন্ন ধরনের পরিবহন ব্যবস্থা রয়েছে। শহরটিতে গণপরিবহন ব্যবস্থা রয়েছে যেমন- বাস ও ট্রেন এই শহরের প্রধান যোগাযোগ মাধ্যম। তবে স্বল্প দূরত্বের জন্য অটো রিকশা, সাইকেল হচ্ছে জনপ্রীয়। আসানসোল শহরে একটি অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর রয়েছে।

গণপরিবহন[সম্পাদনা]

দক্ষিণবঙ্গ রাজ্য পরিবহন নিগম কলকাতা এবং মালদা, শিলিগুড়ি, মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, সিউড়ি, পুরুলিয়া, বর্ধমান, কালনা, হাবড়া, ব্যারাকপুর, দীঘা, বোলপুর, কিনাহার এবং বহরমপুর এবং অন্যান্য অনেক গন্তব্যস্থলে দৈনন্দিন বাস পরিসেবা পরিচালনা করে। এছাড়াও উত্তরবঙ্গ রাজ্য পরিবহন নিগম শহর থকে অন্য শহরে বাস পরিসেবা প্রদান করে। অনেকগুলি বেসরকারি বাস অপারেটর, ট্যাক্সি,[১] ওলা ক্যাশ ইত্যাদি রেডিও ট্যাক্সিগুলি স্থানীয়ভাবে এবং আন্তঃসীমান্ত রুটগুলিও যাত্রী পরিবহনের কাজ করে। বিভিন্ন বেসরকারি বাস সংগঠন আসানসোল থেকে বর্ধমান, কল্যাণী, হাওড়া, বারাসাত ও বাঁকুড়া শহরে বাস পরিচালনা করে। নগরীর বাস পরিসেবা আরও উন্নতির জন্য এবং দূষণমুক্ত করার জন্য রাজ্যের পরিবহন বিভাগ আসানসোলে বৈদ্যুতিক বাস চালু করতে যাচ্ছে। দুর্গাপুর-আসানসোল রুটে যেসব বৈদ্যুতিক বাস চলাচল করবে, সেগুলি দক্ষিণবঙ্গ রাজ্য পরিবহন নিগম (এসবিএসটিসি) এর বাস ডিপোতে রিচার্জ বা পুনঃনির্ধারিত হবে।[২][৩]

আসানসোল স্টেশনের রেল প্লাটফর্ম

আসানসোলের প্রধান রেল স্টেশন শহর আসানসোল জংশন। এই স্টেশন থেকে বহু স্থানে রেল সংযোগ রয়েছে। উত্তর ভারতের সঙ্গে, কলকাতার সঙ্গে সংযোগের প্রায় সমস্ত ট্রেন আসানসোলের সাথে সংযুক্ত। ফলস্বরূপ, আসানসোল নতুন দিল্লি, জম্মু, অমৃতসর, লুধিয়ানা, এলাহাবাদ, কানপুর, লখনউ, দেরাদুন, জয়পুর, কোটা, জোড়পুর, জয়সালমির, গোয়ালিয়র, ভোপাল, ইন্দোর, পাটনা, রাঁচি এবং ধানবাদের মতো শহরগুলির সাথে চমৎকার সংযোগ স্থাপন করে। মুম্বাই, আহমেদাবাদ এবং সুরাটের মত পশ্চিমী শহরগুলি এবং ভুবনেশ্বর, বিশাখাপত্তনম, বিজয়ওয়াড়া, চেন্নাই, ব্যাঙ্গালোর ও তিরুবনন্তপুরমের মত শহরগুলির সঙ্গে ভালো রেল যোগাযোগ রয়েছে আসানসোল শহরের। এটি রেলপথে উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের প্রধান শহর গুয়াহাটির সাথেও সংযুক্ত। [৪]

সড়কপথ[সম্পাদনা]

গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড বা জাতীয় সড়ক ১৯ আসানসোলকে অতিক্রম করেছে। এই সড়কটি পূর্ব দিকে কলকাতা এবং উত্তর-পশ্চিমে দিকে দিল্লিকে যুক্ত করেছে আসানসোলের সঙ্গে। জাতীয় সড়ক ১৪ আসানসোল শহরকে দক্ষিণে ওড়িশা রাজ্যের সঙ্গে এবং উত্তরে ফারাক্কা ও উত্তরবঙ্গের সঙ্গে যুক্ত করেছে। এছাড়া সড়কপথে শহরটি ধানবাদ, বাঁকুড়া, পাটনা, হলদিয়ার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে।

রেলপথ[সম্পাদনা]

আসানসোল জংশন রেলওয়ে স্টেশনের প্রধান প্রবেশ পথ

আসানসোল শহর রেল পরিবহনের কেন্দ্রবিন্দু। আসানসোল রেলওয়ে বিভাগ বর্তমানে পূর্ব রেল জোনের একটি অংশ। এই শহরটি আসানসোল রেল বিভাগের সদর দপ্তর হিসেবে কাজ করে এবং পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ড জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ৪৯৩ কিলোমিটার (৩০৬ মাইল) রেলপথ রয়েছে এই রেল বিভাগে। আসানসোল রেল বিভাগের স্টেশনগুলি হল আন্দুল, রাণীগঞ্জ এবং দুর্গাপুর[৫]

কলকাতা থেকে দিল্লি পর্যন্ত প্রধান রেললাইনটি শহরের মধ্য দিয়ে হাওড়া থেকে নতুন দিল্লির দিকে যায় এবং সীতারামপুর রেল জংশনে গ্রান্ড কর্ড লাইন যুক্ত রয়েছে, আসানসোল জংশনের সামান্য কিছু পশ্চিমে। বর্ধমান-আসানসোল রেলপথ হাওড়া-দিল্লি প্রধান লাইনের একটি অংশ। অন্ডালের সঙ্গে আসানসোল এবং পরে জমশেদপুর, পুরুলিয়া ও খড়্গপুর থেকে বাঁকুড়া পর্যন্ত রেলওয়ে ট্র্যাকের আরেকটি রেলপথ রয়েছে। একটি শাখা লাইন সাহেবগঞ্জ লুপের উপর সাঁথিয়া দিয়ে অন্ডালকে সংযুক্ত করেছে।

আকাশপথ[সম্পাদনা]

আসানসোল মহানগরের অন্তর্গত বার্ণপুর শহরে দামোদর নদের তীরে অবস্থিত একটি বিমানবন্দর রয়েছে। এই বিমানবন্দরের মালিকানা রয়েছে ইস্কো ইস্পাত (বার্নপুর ইস্পাত কারখানা) কারখানার কাছে। বর্তমানে এই বিমানবন্দর ভারতীয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ দ্বারা পরিচালিত হয়। বর্তমানে বিমানবন্দরের রানওয়ে ১,২২০ মিটার (৪,০০০ ফু) দীর্ঘ ও ২৩ মিটার চওড়া। বিমানবন্দরটিতে কোনো টার্মিনাল বা প্রান্তীক নেই। নেই কোনো এটিসি নিয়ন্ত্রণ ভবন।

সম্প্রতি ভারতীয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ পশ্চিমবঙ্গে ছয়টি রুটে বাণিজ্যিক বিমান চালু করার অনুমোদন দিয়েছে; বার্ণপুর বিমানবন্দর তাদের মধ্যে একটি। ২০১৮ সালের প্রথম দিকে প্রথম বাণিজ্যিক বিমান এই বিমান বন্দর থেকে চালু হওয়ার কথা রয়েছে।

সম্প্রসারণ

ভারত সরকার-এর আঞ্চলিক সংযোগ প্রকল্প -এর অন্তর্গত হয়েছে এই বিমানবন্দর। ফলে বিমানবন্দরটির পরিকাঠামো গড়বে ভারতের বিমান মন্ত্রক। প্রথমে ৫ কোটি টাকা খরচ হবে। পরে মোট ১০০ কোটি খরচ ধরা হয়েছে বিমানবন্দরটির নতুন এটিসি ভবন, টার্মিনাল, রাস্তা প্রভৃতি নির্মাণে।[২]

গন্তব্য ও বিমান সংস্থা
বিমান সংস্থা গন্তব্য ধরন তথ্য
এয়ার ডেকান কলকাতা (শুরু ২০১৮ সালের প্রথম দিকে) অভ্যান্তরীন এই পথে বিমানের অর্ধেক আসনে ভর্তুকি দেবে কেন্দ্র সরকার।[৬][৭]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Bengal promotes green transport in Asansol-Durgapur area"। ৪ জুলাই ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ 21 Dcember 2017  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  2. "WB govt negotiates with world bank to procure 130 electric buses"। সংগ্রহের তারিখ ২১ ডিসেম্বর ২০১৭ 
  3. "State Transport department to introduce electric buses in city"। সংগ্রহের তারিখ ২১ ডিসেম্বর ২০১৭ 
  4. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৩ মে ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ ডিসেম্বর ২০১৭ 
  5. "Archived copy"। ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১২-২১ 
  6. "Centre's nod opens up 6 new routes on Bengal flight map" 
  7. "Regional connectivity gets wings; five airlines get to fly 128 routes"