বিষয়বস্তুতে চলুন

অনিরুদ্ধ (পৌরাণিক চরিত্র)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ঊষার সাথে অনিরুদ্ধ

অনিরুদ্ধ ছিলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পৌত্র/নাতি এবং প্রদ্যুম্ন ও রুক্মবতী দম্পত্তির পুত্র। অনিরুদ্ধ ছিলেন সুপুরুষ ও আকর্ষর্ণীয ব্যক্তিত্ব।

নামকরণ

[সম্পাদনা]

যুদ্ধে কেউই তার গতিরোধ করতে পারতো না বলেই তার নামকরণ হয়েছে 'অনিরুদ্ধ'। এছাড়াও তিনি ঝাসঙ্কঊষাপতি নামেও পরিচিত ছিলেন।

বিবাহ ও সংসার

[সম্পাদনা]

ভোজকটের রাজার কন্যা রোচনার সাথে অনিরুদ্ধের প্রথম বিয়ে হয়। তিনি পরে শোণিতপুরের রাজা বাণদৈত্যের পরম রূপবতী কন্যা ঊষার পাণিগ্রহণ করেন। পরবর্তীকালে অনিরুদ্ধ-উষার সংসারে বজ্র নামে এক পুত্রের জন্ম হয়।

ঊষার সাথে পরিচয়

[সম্পাদনা]

ঊষা ছিলেন একজন অপ্সরা, তিলোত্তমা। পার্বতীর বরে ঊষা স্বপ্নে অনিরুদ্ধকে দেখে প্রিয় সখী চিত্রলেখার সহায়তায় দেবর্ষী নারদ প্রদত্ত মায়া বিদ্যার প্রভাবে শোণিতপুরে অবস্থিত নিজ প্রাসাদে নিয়ে আসেন। নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা প্রাসাদে তারা একত্রে দিনের পর দিন অতিবাহিত করলেন। অতঃপর প্রণয়ে আসক্ত ঊষা অনিরুদ্ধকে গান্ধর্ব বিবাহের মাধ্যমে পতিত্বে বরণ করেন। কিন্তু অবিবাহিতা ঊষার শারীরিক পরিবর্তনের সংবাদ বাণাসুরের কানে আসলে তিনি তাদেরকে প্রাসাদে একত্রে দেখতে পান। বাণ রাজার চোখে দম্পতি হিসেবে অনিরুদ্ধ-ঊষাকে বেশ মানানসই মনে হলেও পারিবারিক সম্মান রক্ষার্থে প্রচণ্ড ক্ষুদ্ধ হন।

বাণদৈত্যের সাথে যুদ্ধ

[সম্পাদনা]

অনিরুদ্ধকে ঊষার ঘরে একত্রে দেখতে পেয়ে বাণ রাজা অতিশয় ক্রুদ্ধ হন ও তাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে একদল সৈন্য প্রেরণ করেন। অনিরুদ্ধ একটি অদৃশ্য বড়ো লোহার দণ্ড দিয়ে সমস্ত দৈত্য সেনাদের হত্যা করেন। পরে অবস্থা বেগতিক দেখে বাণ রাজা ঐন্দ্রজালিক মায়া বিস্তার করে কৃষ্ণপৌত্র অনিরুদ্ধকে নাগপাশে বেধে ফেলেন। অনিরুদ্ধ বন্দী হয়েছেন শুনে বাণ কন্যা ও অনিরুদ্ধ প্রেয়সী ঊষা অতি উচ্চস্বরে কাঁদতে লাগলেন। তাকে প্রাণনাশ উদ্যত হলে চিত্রলেখা’র পিতা ও ধর্মপরায়ণ মন্ত্রী কুষ্মাণ্ড বাণদৈত্যকে এ মহাপাপ কাজ করা থেকে অতি কষ্টে নিবারণ করেন।

উদ্ধার পেলেন অনিরুদ্ধ

[সম্পাদনা]

দেবর্ষী নারদ অনিরুদ্ধের বন্দী হওয়ার সংবাদ শ্রীকৃষ্ণকে জানান। সংবাদ পেয়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ, বলরাম ও প্রদ্যুম্ন সহযোগে অনিরুদ্ধকে উদ্ধারের লক্ষ্যে শোণিতপুরে যান। রাজা বাণ শিবের সহায়তায় সহস্র বাহু নিয়েও কৃষ্ণের সাথে সম্মুখ সমরে অবতীর্ণ হয়ে পরাজিত হন। মহাভারতে এই যুদ্ধটি হরি-হর যুদ্ধ নামে উল্লেখ করা হয়েছে। পরাজিত হলেও কৃষ্ণের কৃপায় বান জীবিত অবস্থাতেই মহাকাল নামে পরিচিত হয়ে শিবের পারিষদ মধ্যে স্থান পান। শ্রীকৃষ্ণ অনিরুদ্ধ ও ঊষাকে দ্বারকায় নিয়ে যান ও ভোজকট নগরে তাদের বিয়ে দেন।

মহাপ্রয়াণ

[সম্পাদনা]

যদুবংশ ধ্বংসের সময় অন্যান্যদের সাথে অনিরুদ্ধও নিহত হন।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]