মাস্ক আলাবামা ছিনতাই
মাস্ক আলাবামা ছিনতাই | |||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|
মূল যুদ্ধ: সোমালিয়ায় জলদস্যুতা, অপারেশন এন্ডডিউরিং ফ্রিডম - হর্ন অফ আফ্রিকা | |||||||
মাস্ক আলাবামার লাইফবোট হামলার প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপনের জন্য ইউএসএস বক্সারে উত্তোলন করা হচ্ছে | |||||||
| |||||||
বিবাদমান পক্ষ | |||||||
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র | সোমালি জলদস্যু | ||||||
সেনাধিপতি ও নেতৃত্ব প্রদানকারী | |||||||
রিচার্ড ফিলিপস ফ্রাঙ্ক কাস্তেলানো | আব্দুওয়ালি মুসা | ||||||
শক্তি | |||||||
ইউএসএস বেইনব্রিজ ইউএসএস হ্যালিবার্টোন ইউএসএস বক্সার ইউনাইটেড স্টেটস নেভি সিলস |
একটি লাইফবোট ৪ জন জলদস্যু একজন জিম্মি | ||||||
হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি | |||||||
নাই |
তিনজন নিহত একজন আটক একজন জিম্মি উদ্ধার (কোন ক্ষতি হয়নি) |
মাস্ক আলাবামা ছিনতাই হল ধারাবাহিক সামুদ্রিক ঘটনার একটি অংশ যা শুরু হয়েছিল যখন ভারত মহাসাগরের জলদস্যুরা এমভি মাস্ক আলাবামা নামে একটি কার্গো জাহাজ সোমালিয়ার এল উপকূলের ২৪০ নটিক্যাল মাইল (৪৪০ কিমি; ২৮০ মাইল) দক্ষিণ-পূর্বে আটক করেছিল। যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর দ্বারা ১২ এপ্রিল ২০০৯ সালে এই অচলাবস্থার সমাপ্তি ঘটেছিল।[১] এটি ছিল ১০০ বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম কোন জলদস্যু আটকের ঘটনা।[২] এই জাহাজটি ছিল সপ্তাহের ষষ্ঠ ভেসেল যা জলদস্যুদের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিল এবং বাকীগুলো মুক্তিপণের বিনিময়ে ছাড়িয়ে আনা হয়েছিল।
এই ঘটনার প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল অ্য ক্যাপ্টেন’স ডিউটি:সোমালি পাইরেটস, নেভি সিল এন্ড ডেঞ্জারাস ডেস এট সী (২০১০) বইয়ে। বইটি লিখেছিলেন স্টিফেন টাল্টি ও ক্যাপ্টেন রিচার্ড ফিলিপস, যিনি জলদস্যুদের আক্রমণের সময় জাহাজটির ক্যাপ্টেন ছিলেন। এই ছিনতাইকে কেন্দ্র করে ২০১৩ সালে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হয় যার নাম, ক্যাপ্টেন ফিলিপস। চলচ্চিত্রটিতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন টম হ্যাঙ্কস। এছাড়াও বারখাদ আব্দি, আব্দুওয়ালি মুসা ও ফয়সাল আহমেদ, নাজির চরিত্রে অভিনয় করেন।
ঘটনা সময়রেখা
[সম্পাদনা]ছিনতাই
[সম্পাদনা]জাহাজটি ২০ জন ক্রু ও ১৭,০০০ মেট্রিক টন কার্গো নিয়ে কেনিয়ার মোম্বাসায় যাচ্ছিল। ৮ই এপ্রিল ২০০৯ সালে চারজন জলদস্যু এফভি উইন ফার ১৬১ নামে ছোট মাছ ধরার ট্রলার থেকে ডিঙ্গি নৌকার মাধ্যমে জাহাজে আক্রমণ করে।[৩][৪][৫] মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রবার্ট গেটস-এর তথ্যানুযায়ী চারজন জলদস্যুর সকলের বয়সই ছিল ১৭ ও ১৯ এর মধ্যে।[৬]
মাস্ক আলাবামার ক্রুরা ইউনিয়ন ট্রেনিং স্কুল থেকে জলদস্যু-বিরোধী প্রশিক্ষণ পেয়েছিল এবং আক্রান্ত হওয়ার আগের দিন জাহাজে একটি মহড়ার আয়োজন করেছিল। তাদের প্রশিক্ষনে হালকা অস্ত্র চালনা, বেসিক সেফটি, ফার্স্ট এইড ও অন্যান্য নিরাপত্তামূলক কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত ছিল।[৭][৮] ৮ই এপ্রিল বুধবার সকালের দিকে যখন জলদস্যুতার সংকেত দেওয়া হয় তখন চিফ ইঞ্জিনিয়ার মাইক পেরি ক্রুদের থেকে ১৪ জন সদস্যকে একটি সিকিউর কক্ষে নিয়ে আসেন যাতে জাহাজের ইঞ্জিনিয়ারদের জলদস্যুরা খুঁজে না পান। বাকী ক্রুরা কেউ আগুনের ফুল্কি জলদস্যু নৌকার দিকে ছুড়তে থাকেন; পেরি ও ফাস্ট এ/ই ম্যাট ফিশার জাহাজের রাডার আন্দোলিত করতে থাকেন যাতে জলদস্যুদের নৌকা প্লাবিত হয়।[৯]
সবকিছুর পরও জলদস্যুরা জাহাজে আরোহণ করে। পেরি প্রথমদিকে প্রধান ইঞ্জিন কক্ষের নিয়ন্ত্রণ নেন ও ম্যাট ফিশার স্টিয়ারিং গিয়ারের নিয়ন্ত্রণ নেন। পেরি জাহাজের সমস্ত পাওয়ার বন্ধ করে দেন এবং জাহাজটি অন্ধকার হয়ে যায়। জলদস্যুরা ক্যাপ্টেন রিচার্ড ফিলিপসসহ আরো কয়েকজন ক্রুকে জিম্মি করে কিন্তু জাহাজে মূলত তাদের নিয়ন্ত্রণ ছিল না।[৯]
পেরি ইঞ্জিন কক্ষের নিরাপদ স্থানে হাতে ছুড়ি নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন, জলদস্যুদের মধ্য থেকে তাদের নেতা ক্রুদের খঁজতে ইঞ্জিন কক্ষে আসে যাতে তাদের মাধ্যমে জাহাজটি সোমালিয়ায় নিয়ে যাওয়া যায়। পেরি জলদস্যুকে ছুড়ি দিয়ে আক্রমণ করে ও এতে জলদস্যুটির হাত কেটে যায় এবং তিনি ক্রুদের কাছে জিম্মি হন।
ক্রুরা জিম্মি জলদস্যুর বিনিময়ে তাদের ক্যাপ্টেন[১০] ও অন্যান্য ক্রুদের মুক্তির জন্য একটি বিনিময় চুক্তি করে কিন্তু ক্রুরা জলদস্যুকে ছেড়ে দেওয়ার পর বাকী জলদস্যুরা চুক্তি ভঙ্গ করে। ক্যাপ্টেন ফিলিপস কীভাবে জাহাজের লাইফবোট চালনা করতে হয় তা দেখিয়ে দিতে জলদস্যুদের সাথে লাইফবোটে যান কিন্তু জলদস্যুরা ক্যাপ্টেন ফিলিপসসহ লাইফবোট নিয়ে পালিয়ে যায়।[১১]
৮ই এপ্রিল ২০০৯ সালে ডিস্ট্রয়ার ইউএসএস বেইনব্রিজ এডেন উপসাগর থেকে জিম্মি সংকট নিরসনের জন্য যাত্রা করে ও ৯ই এপ্রিল তারা মাস্ক আলাবামার কাছে পৌঁছে।[১২][১৩] মাস্কা আলাবামাকে তখন সশস্ত্র প্রহরায় তার নিজস্ব যাত্রা পথে পাঠানো হয় কারণ উক্ত এলাকায় তখন সশস্ত্র অভিযানের প্রস্তুতি নেওয়া হয় ক্যাপ্টেন ফিলিপসকে উদ্ধারের জন্য। যাত্রাপথে ক্যাপ্টেন ল্যারি ডি. অ্যাশেইন পুনরায় জাহাজের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন; ফিলিপস ৯ দিন পূর্বে ল্যারিকে তার পদ থেকে বরখাস্ত করেছিল।[১৪]
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]পদটীকা
[সম্পাদনা]- ↑ Sanders, Edmund (৯ এপ্রিল ২০০৯)। "Somalia pirates hold U.S. captain"। Los Angeles Times। সংগ্রহের তারিখ ১২ এপ্রিল ২০০৯। অজানা প্যারামিটার
|coauthors=
উপেক্ষা করা হয়েছে (|author=
ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য) - ↑ Many news reports referenced the last pirate seizure as being during the Second Barbary War in 1815; however, other incidents had occurred as late as 1821. See:
- McShane, Larry (৮ এপ্রিল ২০০৯)। "Americans take back cargo ship Maersk Alabama after it was hijacked by Somali pirates"। New York Daily News। ১১ এপ্রিল ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ এপ্রিল ২০০৯।
- Davis, William (২ মে ২০০৫)। The pirates Laffite। Houghton Mifflin Harcourt। পৃষ্ঠা 457। আইএসবিএন 978-0-15-100403-4। ২৭ জানুয়ারি ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জানুয়ারি ২০১৪।
- Porter, David (১৮৭৫)। Memoir of Commodore David Porter। পৃষ্ঠা 291।
- ↑ Huang-chih, Chiang (৭ সেপ্টেম্বর ২০০৯)। "Does the Ministry of Foreign Affairs care about 'Win Far'?"। Taipei Times।
- ↑ "Somali pirates hijack Danish ship"। BBC news। ৮ এপ্রিল ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ৮ এপ্রিল ২০০৯।
- ↑ "Ship carrying 20 Americans believed hijacked off Somalia"। CNN। ৯ এপ্রিল ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ৯ এপ্রিল ২০০৯।
- ↑ "Somalian pirate suspect arrives in New York to be tried in U.S. court"। CBC News। ২০ এপ্রিল ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০১৩।
- ↑ Another Miracle Brought to You By America's Unions (This Time With Pirates!) | Mother Jones
- ↑ "AFL-CIO NOW BLOG"। ১৪ এপ্রিল ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০১৪। অজানা প্যারামিটার
|1=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ ক খ Cummins, Chip; Childress, Sarah (১৬ এপ্রিল ২০০৯)। "On the Maersk: 'I Hope if I Die, I Die a Brave Person'"। The Wall Street Journal। সংগ্রহের তারিখ ১৬ এপ্রিল ২০০৯।
- ↑ "Africa , FBI in hostage talks with Somalis"। BBC News। ৯ এপ্রিল ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ৯ এপ্রিল ২০০৯।
- ↑ "Cargo ship heads for Kenya"। CNN। ৮ এপ্রিল ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ৯ এপ্রিল ২০০৯।
- ↑ "U.S. Warship Shadows Somali Pirates With Hostage"। Associated Press। ৯ এপ্রিল ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ১২ এপ্রিল ২০০৯।
- ↑ "Heroism on the High Seas"। Columbia। নভেম্বর ২০১৩। পৃষ্ঠা 24–25।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২০ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০১৪।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- M.E.B.A. Marine Officer Magazine – Summer 2009 edition – "Don't Give Up the Ship: Quick Thinking and a Boatload of Know-how Saves the Maersk Alabama" Detailed 12 page description of hijacking
- Hijackers on Cargo Ship: 'They Ran' – Associated Press on YouTube
- U.S. Crew Re-Captures Ship From Pirates at ABC News
- 'Reelz Channel'
- Capt Phillips on The Daily Show