বিষয়বস্তুতে চলুন

পদ্মা সচদেব

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
পদ্মা সচদেব
জন্ম১৯৪০
পুরমন্ডল, জম্মু
ভাষাডোগরি ভাষা

পদ্মা সচদেব (জন্ম ১৯৪০) একজন ভারতীয় কবি এবং ঔপন্যাসিক। তিনি ডোগরি ভাষার প্রথম আধুনিক মহিলা কবি[]। মাতৃভাষা ডোগরি ছাড়া, তিনি হিন্দিতেও লেখেন। উভয় ভাষাতেই তাঁর একাধিক কবিতা সঙ্কলন প্রকাশিত হয়েছে। মেরি কবিতা মেরী গীত (আমার কবিতা, আমার গান) কবিতা সঙ্কলনের জন্যে তিনি ১৯৭১ সালে সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার জয় করেছিলেন[][]। ২০০১ সালে ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক পুরস্কার পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি[]। ২০০৭-০৮ সালে মধ্যপ্রদেশ সরকার দ্বারা তিনি 'কবিতার জন্যে কবীর সম্মান'-য়ে ভূষিত হন[]

ব্যক্তিগত জীবন

[সম্পাদনা]

পদ্মা ১৯৪০ সালে জম্মুর উত্তর-পূর্বে প্রায় ৩৯ কিলোমিটার দূরে অগ্নিপুরাণে বর্ণিত দেবকা নদীর তীরে পুরমন্ডল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১৯৪৭ সালে ভারতবিভাগের শিকার হওয়া সংস্কৃত পণ্ডিত অধ্যাপক জয়দেব বদুর তিন সন্তানের মধ্যে সবার বড় ছিলেন পদ্মা। তিনি তাঁর পৈতৃক গ্রাম পুরমন্ডলের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুরু করেছিলেন। চার-পাঁচ বছর বয়স থেকেই বাবার কাছে সংস্কৃত শ্লোক এবং হিন্দি দোঁহা শিখতে শিখতে বড় হয়েছিলেন পদ্মা। পরবর্তীকালে স্থানীয় মহিলাদের সাথে ঢোলকের তালে ডোগরি লোকসঙ্গীত গাওয়ার মাধ্যমে ডোগরি ভাষার প্রতি তাঁর ভালোবাসা আরও বাড়ে।

প্রথম বর্ষে কলেজে অধ্যয়নকালে, তিনি জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং বহু বিশিষ্ট শ্রোতার সামনে প্রতিষ্ঠিত ডোগরি কবিদের সাথে এক কবি-সম্মেলনে অংশ গ্রহণ করার সুযোগ পান এবং ডোগরি ভাষায় তাঁর রচিত একটি কবিতা আবৃত্তি করেন। বিশিষ্ট ডোগরি কবি বেদ পাল দীপ সম্পাদিত স্থানীয় উর্দু সংবাদপত্র সন্দেশ এ তাঁর লেখা কবিতাটি প্রকাশিত হয়। এই সময়েই পদ্মা এবং বেদ পাল দীপের মধ্যে অন্তরঙ্গতার সৃষ্টি হয় এবং উভয় পক্ষের আত্মীয়দের আপত্তির মধ্যেই তাঁরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। পদ্মার বয়স তখন ১৬ বছর এবং বেদ পাল দীপের বয়স ২৮ বছর।কয়েক মাস পরে তিনি অন্ত্রের গুরুতর অসুস্থতা যক্ষ্মায় আক্রান্ত হন এবং প্রায় তিন বছর শ্রীনগরের একটি হাসপাতালে থাকতে বাধ্য হন। পরে তিনি জম্মুতে ফিরে আসেন এবং আকাশবাণী জম্মুতে যোগদান করেন। এই সময়েই স্বামীর সাথে তাঁর বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।

এরপর তিনি দিল্লিতে চলে আসেন এবং দিল্লি আকাশবাণীতে ডোগরি ভাষার সংবাদপাঠিকা রূপে যোগদান করেন। ১৯৬৬ সালে হিন্দুস্থানী কণ্ঠসঙ্গীতের প্রখ্যাত গায়ক সুরিন্দার সিংএর সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি[]। বর্তমানে তিনি দিল্লিতেই থাকেন[]

কর্মজীবন

[সম্পাদনা]

১৪ বছর বয়সে লেখা পদ্মার রাজা দিয়ান মান্ডিয়ান কবিতাটি তাঁকে প্রভূত খ্যাতি এনে দিয়েছিল। কবিতাটি আধুনিক ডোগরি কবিতার ইতিহাসের সমস্ত বর্ণনায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে এবং এটি পদ্মার কবিজীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে রয়েছে। এই কবিতাটি সহ আরও সাতটি কবিতা ১৯৫৯ সালে মধুকন নামে সম্ভাবনাময় ডোগরি কবিদের এক কবিতা সংগ্রহে প্রকাশিত হয়েছিল। ১৯৬৯ সালে তাঁর প্রথম হিন্দি কবিতা সঙ্কলন প্রকাশিত হয়েছিল, যা তাঁকে সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার এনে দিয়েছিল।

তিনি ১৯৭৩ সালে বেদ রাহীর প্রেম পরবত নামক হিন্দি চলচ্চিত্রের 'মেরা ছোট সা ঘরবার' গানের কথা লিখেছিলেন, এতে জয়দেবের সংগীত ছিল। এরপরে, তিনি ১৯৭৮ সালের হিন্দি চলচ্চিত্র আঁখিন দেখি র দুটি গানের কথা লিখেছিলেন মোহাম্মদ রফি এবং সুলক্ষণ পণ্ডিতের বিখ্যাত দ্বৈতসঙ্গীত সোনা রে, তুঝে কৈসে মিলু সহ। ১৯৭৯ সালে হিন্দি ছায়াছবি সাহস এর জন্য যোগেশের পাশাপাশি তিনিও গীতরচনা করেছিলেন।

সম্মাননা ও পুরস্কার

[সম্পাদনা]

বইয়ের সংস্করণ

[সম্পাদনা]
  • মেরি কবিতা, মেরি গীত, ১৯৬৯
  • তাভি তে চানহানিন, ১৯৭৬
  • নেহরিয়ান গলিয়ান, ১৯৮২
  • পোটা পোটা নিম্বল, ১৯৮৭
  • উত্তরবাইহনি, ১৯৯২
  • তেন্থিয়ান, ১৯৯৯
  • নৌশিন. কিতাবঘর, ১৯৯৫.
  • ম্যঁয় কেহতি হুন আঁখিন দেখি (ভ্রমণ). ভারতীয় জ্ঞানপীঠ, ১৯৯৫.
  • ভআটকো নাহি ধ্নঞ্জয়. ভারতীয় জ্ঞানপীঠ, ১৯৯৯. আইএসবিএন ৮১২৬৩০১৩০৯.
  • আমরাই. রাজকমল প্রকাশন, ২০০০. আইএসবিএন ৮১৭১৭৮৭৬৪৯
  • জম্মু জো কভি সাহারা থা (উপন্যাস). ভারতীয় জ্ঞানপীঠ, ২০০৩. আইএসবিএন ৮১২৬৩০৮৮৬৯
  • ফির ক্যায়া হুয়া?, জ্ঞানসেবারা এবং পার্থ সেনগুপ্তের সাথে. ন্যাশনাল বুক ট্রাস্ট, ২০০৭. আইএসবিএন ৮১২৩৭৫০৪২০.

অনুবাদ

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. George, p. 522
  2. Mathur, p. 182
  3. "Sahitya Akademi Award"। Official website। ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ফেব্রু ২০১৩ 
  4. "Padma Awards Directory (1954–2009)" (পিডিএফ)Ministry of Home Affairs। ২০১৩-০৫-১০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  5. "Rashtriya Mahatma Gandhi Award to be given to Seva Bharti"। ১০ আগস্ট ২০০৮। ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ফেব্রু ২০১৩ 
  6. "Song of the Singhs"। The Hindu। ৬ মে ২০০৪। ৫ জুলাই ২০০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ফেব্রু ২০১৩ 

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]