আঞ্জুমান আরা বেগম
আঞ্জুমান আরা বেগম | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ২৯ মে ২০০৪ বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা, বাংলাদেশ | (বয়স ৬২)
মৃত্যুর কারণ | নিউমোনিয়া |
সমাধি | বনানী কবরস্থান, ঢাকা, বাংলাদেশ |
জাতীয়তা | ব্রিটিশ ভারতীয় (১৯৪২-১৯৪৭) পাকিস্তানি (১৯৪৭-১৯৭১) বাংলাদেশী (১৯৭১-২০০৪) |
পেশা | সঙ্গীতশিল্পী |
দাম্পত্য সঙ্গী | মাসুদ আলম সিদ্দিকী |
সন্তান | তারিক মাশরুর (পুত্র) উমানা এ্যাঞ্জেলিন (কন্যা) |
পিতা-মাতা | কাসিরউদ্দিন তালুকদার (পিতা) জিয়াউন্নাহার তালুকদার (মাতা) |
আত্মীয় |
|
পুরস্কার | একুশে পদক |
আঞ্জুমান আরা বেগম (১১ জানুয়ারি ১৯৪২ - ২৯ মে ২০০৪) ছিলেন একজন বাংলাদেশী সঙ্গীতশিল্পী। তিনি চলচ্চিত্র, টেলিভিশন এবং মঞ্চের গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। সঙ্গীতে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ২০০৩ সালে একুশে পদকে ভূষিত করে।[১]
প্রারম্ভিক জীবন
[সম্পাদনা]বেগম ১৯৪২ সালের ১১ জানুয়ারি বর্তমান বাংলাদেশের (তৎকালীন বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত) বগুড়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা কাসিরউদ্দিন তালুকদার বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন ১৯৭১ সালের ২৯ মে নিহত হয়[২] এবং তার মাতা জিয়াউন্নাহার তালুকদার। তার বড়বোন জেব-উন-নেসা জামাল একজন গীতিকার ছিলেন এবং আরেক বোন মাহবুব আরা রেডিও ও টেলিভিশনের শিল্পী ছিলেন। সঙ্গীতশিল্পী জিনাত রেহানা তার ভাগ্নি এবং উপমহাদেশের প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী রুনা লায়লা তার চাচাতো বোন। আঞ্জুমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন
কর্মজীবন
[সম্পাদনা]বেগম ১৯৫৮ সালে ষোল বছর বয়সে প্রথম চলচ্চিত্রে নেপথ্য গানে কণ্ঠ দেন।[৩] ১৯৬২ সালে তিনি এহতেশাম পরিচালিত উর্দু ভাষার চান্দা চলচ্চিত্রের "চান্দনী ভিগি ভিগি হাওয়া" গানে কণ্ঠ দেন। গানটি তখন ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে।১৯৬৪ সালে তিনি সুভাষ দত্ত পরিচালিত সুতরাং চলচ্চিত্রের "তুমি আসবে বলে " গানে কণ্ঠ দিয়েছেন।[৪] গানটির গীতিকার প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক সৈয়দ শামসুল হক এবং সুরকার সত্য সাহা। এটি সৈয়দ হকের লেখা প্রথম গান।[৫] সালের সুভাষ দত্ত পরিচালিত আয়না ও অবশিষ্ট চলচ্চিত্রে "আকাশের হাতে আছে একরাশ নীল" গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। গানটির রচয়িতা গাজী মাজহারুল আনোয়ার এবং সুর দেন সত্য সাহা। এটি বাংলাদেশের জনপ্রিয় চলচ্চিত্রের গানের একটি।[৬] তার গাওয়া অন্যান্য উল্লেখযোগ্য গানসমূহ হল "কে স্মরণের প্রান্তরে", "খোকনসোনা", "বৃষ্টি যখন" এবং "সাথী রঙের"।[২][৩]
বেগম ১৯৬৪ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত প্রথম গানে কণ্ঠ দেন।[৩]
ব্যক্তিগত জীবন
[সম্পাদনা]আঞ্জুমান আরা বেগম মাসুদ আলম সিদ্দিকীর সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তার পুত্র তারিক মাশরুর দ্য ডেইলি স্টারের উপ-সম্পাদক এবং কন্যা উমানা এ্যাঞ্জেলিন এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটির লেকচারার।[২]
মৃত্যু
[সম্পাদনা]বেগম ২০০৪ সালের ২৯ মে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ঢাকার বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। ঢাকার ধানমন্ডির মসজিদ-এ-তাকওয়ায় তার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। তাকে ঢাকার বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়।[২]
নেপথ্যে কণ্ঠ দেওয়া চলচ্চিত্র
[সম্পাদনা]- হারানো দিন (১৯৬১)
- চান্দা (১৯৬২)
- জোয়ার এলো (১৯৬২)
- তালাশ (১৯৬৩)
- নাচ ঘর (১৯৬৩)
- সুতরাং (১৯৬৪)
- মেঘ ভাঙ্গা রোদ (১৯৬৪)
- আখরি স্টেশন (১৯৬৫)
- অভিশাপ (১৯৬৭)
- নয়নতারা (১৯৬৭)
- আনোয়ারা (১৯৬৭)
- উলঝন (১৯৬৭)
- আয়না ও অবশিষ্ট (১৯৬৮)
- মলুয়া (১৯৬৯)
- আপন পর (১৯৭০)
- মাসুদ রানা (১৯৭৪)
- বাঁদী থেকে বেগম (১৯৭৫)
- অঙ্গার (১৯৭৮)
- নতুন পৃথিবী (১৯৮৪)
পুরস্কার ও সম্মাননা
[সম্পাদনা]- সঙ্গীতে অবদানের জন্য একুশে পদক (২০০৩)
- তারকালোক পুরস্কার
- বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি থেকে গুণীজন পুরস্কার
- কলধ্বনি পদক[৩]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "একুশে পদকপ্রাপ্ত সুধীবৃন্দ"। বাংলাদেশ সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০১৭।
- ↑ ক খ গ ঘ "Anjuman Ara passes away"। দ্য ডেইলি স্টার। ৩০ মে ২০০৪। ১৬ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০১৭।
- ↑ ক খ গ ঘ "Death anniversary of Anjuman Ara today"। দ্য ডেইলি স্টার। ২৯ মে ২০০৭। ১৬ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০১৭।
- ↑ "ভালোবাসার ১০টি চলচ্চিত্রের গান"। দৈনিক প্রথম আলো। ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১১। ২০১৭-০৭-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০১৭।
- ↑ "সৈয়দ শামসুল হকের লেখা জনপ্রিয় গানগুলো"। দৈনিক ভোরের কাগজ। ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬। ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০১৭।
- ↑ "জনপ্রিয় ২০টি গান"। দৈনিক প্রথম আলো। ২৯ অক্টোবর ২০০৯। ২১ জুন ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০১৭।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে আঞ্জুমান আরা বেগম (ইংরেজি)