সুলতান আহমেদ চৌধুরী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ব্যারিস্টার
সুলতান আহমেদ চৌধুরী
জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার
কাজের মেয়াদ
২ এপ্রিল ১৯৭৯ – ২৩ মার্চ ১৯৮২
রাষ্ট্রপতিজিয়াউর রহমান
আবদুস সাত্তার
প্রধানমন্ত্রীমশিউর রহমান
শাহ আজিজুর রহমান
পূর্বসূরীমোহাম্মদ বায়তুল্লাহ
উত্তরসূরীমোঃ কোরবান আলী
বাংলাদেশের পরিকল্পনামন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
২৫ অক্টোবর ১৯৮৪ – ২৩ মার্চ ১৯৮৬
রাষ্ট্রপতিহুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ
প্রধানমন্ত্রীআতাউর রহমান খান
ডাক, টেলিগ্রাফ, টেলিফোন,
বন্দর, জাহাজ চলাচল ও
আভ্যন্তরীন নৌ-মন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
৫ মার্চ ১৯৮২ – ২৪ মার্চ ১৯৮২
রাষ্ট্রপতিআবদুস সাত্তার
প্রধানমন্ত্রীশাহ আজিজুর রহমান
চট্টগ্রাম-৮ আসনের
সংসদ সদস্য
কাজের মেয়াদ
১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৯ – ১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২
রাষ্ট্রপতিজিয়াউর রহমান
আবদুস সাত্তার
প্রধানমন্ত্রীশাহ আজিজুর রহমান
পূর্বসূরীজহুর আহমেদ চৌধুরী
উত্তরসূরীমোহাম্মদ ইসহাক মিয়া
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম(১৯৩২-০৮-১৬)১৬ আগস্ট ১৯৩২
চৌধুরী পাড়া, উত্তর হালিশহর, চট্টগ্রাম
মৃত্যু১৯ জুন ১৯৯২(1992-06-19) (বয়স ৫৯)
চট্টগ্রাম
জাতীয়তা বাংলাদেশী
রাজনৈতিক দলবাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল
জাতীয় পার্টি
পিতামাতাসিদ্দিক আহমদ চৌধুরী (পিতা),
আমজুন্নেছা বেগম (মাতা)
প্রাক্তন শিক্ষার্থীঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়,
চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ,
চট্টগ্রাম মুসলিম হাই স্কুল

সুলতান আহমেদ চৌধুরী (১৬ আগস্ট ১৯৩২ – ১৯ জুন ১৯৯২) ছিলেন বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ, আইনজীবী, শিল্পপতি ও ব্যবসায়ী। তিনি বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের ২য় ডেপুটি স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[১] দ্বিতীয় জাতীয় সংসদে তিনি চট্টগ্রাম-৮ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন।[২][৩][৪]

আবদুস সাত্তারের মন্ত্রিসভায় তিনি ডাক, টেলিগ্রাফ, টেলিফোন, বন্দর, জাহাজ চলাচল ও আভ্যন্তরীন নৌ-মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। এরশাদের মন্ত্রিসভায় পরিকল্পনা মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন করেন।[৩][৫]

প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষাজীবন[সম্পাদনা]

সুলতান আহমেদ চৌধুরী ১৬ আগস্ট ১৯৩২ সালে চট্টগ্রামের উত্তর হালিশহর চৌধুরী পাড়ার আজগর আলী চৌধুরী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম সিদ্দিক আহমদ চৌধুরী ও মাতার নাম আমজুন্নেছা বেগম।[৬]

তিনি চট্টগ্রাম গভর্নমেন্ট মুসলিম হাই স্কুল থেকে ১৯৪৬ সালে ম্যাট্রিক পাশ করে ১৯৪৮ সালে চট্টগ্রাম কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে তিনি স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রী সম্পন্ন করেন।[৬]

লন্ডনের লিংকনস-ইন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ব্যারিস্টারি পাস করেন। তিনি 'সাংবাদিক আইন' এবং 'মোহামেডান আইনে' অতি উচ্চ মান লাভ করেন। ১৯৬০ সালে জার্মানির বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতির ওপর সংক্ষিপ্ত কোর্স করেন।[৬]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

সুলতান আহমেদ চৌধুরী কর্মজীবনের শুরুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। আহমেদ লবণ উৎপাদন এবং একটি করাতকল সহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি পরিবহন এবং স্থানীয় শিপিং ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি ১৯৮৫ সালে পূবালী ব্যাংক লিমিটেডের প্রাথমিক প্রবর্তকদের একজন ছিলেন তিনি বাংলাদেশে সাবেক আল বারাকা ইসলামিক ব্যাংকের মূল প্রবর্তক, ভাইস চেয়ারম্যান এবং পরিচালক ছিলেন। তিনি ফেডারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের স্পনসর শেয়ারহোল্ডার/পরিচালক ছিলেন। তিনি স্থানীয় শিপইয়ার্ড, কাঠ এবং টেক্সটাইল শিল্পের সাথে যুক্ত ছিলেন।

তিনি ১৯৮৫ সালে তার নামানুসারে চট্টগ্রামে 'ব্যারিস্টার সুলতান আহমেদ চৌধুরী ডিগ্রি কলেজ' প্রতিষ্ঠা করেন।[৭]

রাজনৈতিক জীবন[সম্পাদনা]

সুলতান আহমেদ চৌধুরী ছাত্রজীবন থেকে ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে জড়িয়ে ছাত্রনেতা হিসেবে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। তিনি তৎকালীন চট্টগ্রাম জেলা মুসলিম ছাত্রলীগের যুগ্ম-সম্পাদক, পরে নগর কমিটির সম্পাদক নিযুক্ত হন।

এর পর তিনি পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের যুগ্ম-সম্পাদক নির্বাচিত হন।

তিনি ১৯৪৬ সালে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর আজাদ হিন্দ ফৌজের নেতা ক্যাপ্টেন শাহনেওয়াজ ও অন্যান্য অফিসারদের কারামুক্তির জন্য দেশব্যাপী আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন।

১৯৪৬ সালে তিনি সিলেটের পাকিস্তানে অন্তর্ভুক্তির প্রশ্নে গণভোটে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে অংশগ্রহণ করে।

এছাড়াও তিনি জহুর আহমদ চৌধুরীর সাথে ১৯৬৪ সাল হতে শ্রমিক আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন।

বায়ান্ন সালের ভাষা আন্দোলনে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।

১৯৬২ সালে আইয়ুবের সামরিক শাসনের কবল থেকে গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধারের জন্য হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে এনডিএফ নামে যে জোট গঠিত হয়েছিলো সুলতান তার কার্যকরী কমিটির সদস্য এবং হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর কারামুক্তির পর চট্টগ্রামে তাকে দেয়া গণ সংবর্ধনা আয়োজনে সংবর্ধনা কমিটির যুগ্ম-সম্পাদক ছিলেন।

১৯৭৭ সালে জিয়াউর রহমান কর্তৃক বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) গঠন করা হলে তিনি তাতে প্রথম আহ্বায়ক কমিটির ৫৯ নং সদস্য হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হন।[৮][৯]

১৯৭৯ সালের দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৮ আসন থেকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[২][১০] জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় ডেপুটি স্পিকার হিসাবে পূর্ণ মন্ত্রীর পদ-মর্যাদায় দায়িত্ব প্রাপ্ত হয়ে ২ এপ্রিল ১৯৭৯ থেকে ২৩ মার্চ ১৯৮২ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।[১][৪][৫]

আবদুস সাত্তারের মন্ত্রিসভায় তিনি ৫ মার্চ ১৯৮২ থেকে ২৪ মার্চ ১৯৮২ সাল পর্যন্ত তিনি ডাক, টেলিগ্রাফ, টেলিফোন, বন্দর, জাহাজ চলাচল ও আভ্যন্তরীন নৌ-মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।[৫]

১৯৮৩ সালে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ কর্তৃক জাতীয় পার্টি গঠন করা হলে তিনি প্রেসিডিয়ামে ৭ নং সদস্য হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হন।[১১] তিনি এরশাদের মন্ত্রিসভায় ২৫ অক্টোবর ১৯৮৪ থেকে ২৩ মার্চ ১৯৮৬ পর্যন্ত পরিকল্পনা মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন করেন।[৫]

মৃত্যু[সম্পাদনা]

সুলতান আহমেদ চৌধুরী ১৯ জুন ১৯৯২ সালে চট্টগ্রামের মৃত্যুবরণ করেন।[৬]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "উত্তরে দুই তারকা দক্ষিণে জাবেদ একা : মহানগরী ফাঁকা"। ২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুলাই ২০১৫ 
  2. "২য় জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  3. খালেদা হাবিব। বাংলাদেশঃ নির্বাচন, জাতীয় সংসদ ও মন্ত্রিসভা ১৯৭০-৯১ 
  4. এ এস এম শামসুল আরেফিন। বাংলাদেশে নির্বাচন 
  5. জাতীয় সংসদ ও মন্ত্রিসভা ১৯৭০-৯১
  6. "সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার সুলতান আহমদ চৌধুরী"দৈনিক পূর্বদেশ। ১৯ জুন ২০১৯। ৬ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ নভেম্বর ২০২৩ 
  7. "অনলাইনের আওতায় চট্টগ্রামের ৬২ কলেজ"। ৫ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুলাই ২০১৫ 
  8. বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) গঠনের ইতিহাস।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  9. জিবলু রহমান। ভাসানী-মুজিব-জিয়া। বাংলাদেশ: শ্রীহট্ট প্রকাশ। পৃষ্ঠা ৪৩৬। আইএসবিএন 9789849302728 
  10. খালেদা হাবিব। বাংলাদেশঃ নির্বাচন 
  11. "জাতীয় পার্টি গঠনের ইতিহাস"। ২০১৫-০৮-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৭-১১ 

বহি:সংযোগ[সম্পাদনা]

পূর্বসূরী:
মোহাম্মদ বায়তুল্লাহ
জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার
২ এপ্রিল, ১৯৭৯ - ২৩ মার্চ, ১৯৮২
উত্তরসূরী:
মোঃ কোরবান আলী