নো কান্ট্রি ফর ওল্ড মেন (চলচ্চিত্র)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(No Country for Old Men (film) থেকে পুনর্নির্দেশিত)
নো কান্ট্রি ফর ওল্ড মেন
প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পোস্টার
পরিচালকজোয়েল কোয়েন
ইথান কোয়েন
প্রযোজকজোয়েল কোয়েন
ইথান কোয়েন
স্কট রুডিন
চিত্রনাট্যকারজোয়েল কোয়েন
ইথান কোয়েন
উৎসকরম্যাক ম্যাকার্থি কর্তৃক 
নো কান্ট্রি ফর ওল্ড মেন
শ্রেষ্ঠাংশে
সুরকারকার্টার বারওয়েল
চিত্রগ্রাহকরজার ডিকিন্স
সম্পাদকরডেরিক জেইন্‌স
পরিবেশকমিরাম্যাক্স ফিল্মস (যুক্তরাষ্ট্র)
প্যারামাউন্ট ভ্যান্টেজ (যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে)
মুক্তি
  • ১৯ মে ২০০৭ (2007-05-19) (কান)
  • ৯ নভেম্বর ২০০৭ (2007-11-09) (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র)
স্থিতিকাল১২২ মিনিট
দেশমার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
ভাষাইংরেজি
নির্মাণব্যয়২৫০ কোটি মার্কিন ডলার

নো কান্ট্রি ফর ওল্ড মেন (ইংরেজি: No Country for Old Men) ২০০৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি মার্কিন চলচ্চিত্র যা পরিচালনা করেছেন জোয়েল এবং ইথান কোয়েন। এটি সেরা চলচ্চিত্র হিসেবে একাডেমি পুরস্কার লাভ করে এবং সেই সাথে আরও তিনটি ক্ষেত্রে একাডেমি পুরস্কার জিতে নেয়। করম্যাক ম্যাকা‌র্থি রচিত একই নামের একটি উপন্যাস অবলম্বনে এই চলচ্চিত্রটি নির্মিত হয়েছে। পশ্চিম টেক্সাসের মরু অঞ্চলে মাদক ব্যবসা থেকে উদ্ভূত সহিংসতাকে কেন্দ্র করে এর কাহিনী আবর্তিত হয়েছে। তিনটি চরিত্র একে অন্যকে ধাওয়া করতে গিয়ে জটিলতায় জড়িয়ে পড়ে। ১৯৮০ সালের পটভূমিতে এটি নির্মিত হয়েছে।

সমালোচকদের দ্বারা এই ছবিটি ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। "শিকাগো সান-টাইম্‌স"-এর রজার এবার্ট বলেন, "এটি কোয়েন ভ্রাতৃদ্বয়ের করা সেরা চলচ্চিত্র।"[১] গার্ডিয়ান সাংবাদিকদের মতে এই সিনেমার মাধ্যমে কোয়েন ভ্রাতৃদ্বয় কৌশলগত ক্ষেত্রে তাদের দক্ষতা প্রমাণ করেছেন এবং পশ্চিমা ধ্রুপদি পটভূমিতে তাদের অনুভূতির সফল বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। তাদের মতে খুব অল্প সংখ্যক পরিচালকই এই দিকটি স্পষ্টভাবে বুঝতে পেরেছিলেন।[২]

চরিত্রসমূহ[সম্পাদনা]

  • টমি লি জোন্স - শেরিফ এড টম বেল
  • জশ ব্রোলিন - লিউয়েলিন মস
  • হাভিয়ের বারদেম - অ্যান্টন শিগার (এই চরিত্রকে ইংমার বারিমান-এর ধ্রুপদী সিনেমা দ্য সেভেন্‌থ সিলের মৃত্যু চরিত্রটির আধুনিক সংস্করণ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে)
  • কেলি ম্যাকডোনাল্ড - কার্লা জিন মস
  • উডি হ্যারেলসন - কার্সন ওয়েল্‌স
  • টেস হার্পার - লোরেটা বেল
  • ব্যারি কোর্বিন - এলিস
  • বেথ গ্র্যান্ট - অ্যাগনেস
  • স্টিফেন রুট - যে ওয়েল্‌সকে ভাড়া করে
  • জিন জোন্স - টমাস থেয়ার
  • গ্যারেট ডিলাহান্ট - ওয়েন্ডেল

মূলভাব ও শৈলী[সম্পাদনা]

ছবি করতে গিয়ে কোয়েন ভ্রাতৃদ্বয় মূল উপন্যাসের প্রতি সম্পূর্ণ বিশ্বস্ত থেকেছেন। মূল উপন্যাসে ভাগ্যকেন্দ্রিক যে বিষয়গুলো প্রাধান্য পেয়েছিল সিনেমাতেও সেগুলো প্রাধান্য পেয়েছে। ভাগ্যকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে কাকতাল, স্বাধীন ইচ্ছা এবং গন্তব্য নির্ধারণ। অ্যান্টন শিগার এমনই দূর্ধর্ষ হিটম্যান যাকে ধরার সাধ্য কারও নেই। কোয়েনদের ছবিতে এমন চরিত্র প্রায়শই দেখা যায়।

দ্য ভিলেজ ভয়েসের স্কট ফাউন্ডাস বলেন, ব্যাপারটা এমন যে, এক বিলুপ্তপ্রায় জাতি প্রাকৃতিকভাবে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার আগে নিজেরাই নিজেদের বিলুপ্ত করে দেয়ার অভিযানে নেমেছে। রজার ইবার্ট বলেন, চূড়ান্ত অবিচারের সামনে মানবিক অনুভূতি কতটা নির্মমভাবে সাধারণ হয়ে উঠে তা-ই যেন দেখানো হয়েছে।

ভ্যারাইটির সমালোচক, টড ম্যাক্‌কার্থির বলেন, শিগার যেখানেই যায় মৃত্যু তার সাথে সাথে যায়। সে ভিন্ন কোন সিদ্ধান্ত না নিলে এই মৃত্যু কার্যকর হবেই, সামনে যে থাকে তারই উপর।

নির্মাণ[সম্পাদনা]

প্রযোজক স্কট রুডিন করম্যাক ম্যাকা‌র্থির উপন্যাসের সত্ত্ব কিনে কোয়েনদেরকে সিনেমা বানানোর আহ্বান জানান। উপন্যাসের নিজেদের পছন্দনীয় কিছু উপাদান পেয়ে কোয়েনরা রাজি হয়ে যান। উপাদানগুলো হল: মানুষের আস্থাকে পরাহত করার ক্ষমতা, ভাল মানুষের সাথে সত্যিকার অর্থে কখনও খারাপ মানুষের দেখা হয় না এমন ধারণা এবং উপন্যাসের নির্মমতার গুণ।[৩]

রচনা[সম্পাদনা]

চিত্রনাট্য রচনার সময় কোয়েন ভ্রাতৃদ্বয় উপন্যাসের প্রায় পুরোটাই অনুসরণ করেছেন। তবে শেষটা একরকম করেননি। বইয়ের শেষে কার্লা জিনের সাথে যখন শিগারের দেখা হয় তখন জিন প্রায় ভেঙে পড়ে। কিন্তু, ছবিতে কার্লা জিনকে বেশ সংহত মনে হয়। এরকম করার কারণ, মুভিতে বোঝানো হয়েছে তার হারাবার আর কিছু ছিল না।

ছবিটিতে সংলাপ খুব কম। নাটকীয় ভাব আনার জন্য মূলত চিত্রগ্রহণ ও সম্পাদনার উপর নির্ভর করা হয়েছে।

চরিত্রায়ন[সম্পাদনা]

জোল কোয়েন বলেন, শেরিফ বেলকে মুভির আত্মা বলা যায়। তাই খুব উঁচুমানের এমন একজন অভিনেতার প্রয়োজন ছিল যিনি সূক্ষ্মতার সাথে অভিনয় করতে পারবেন। টমি লি জোন্স সেদিক থেকে একেবারে উপযুক্ত।

শুটিং[সম্পাদনা]

মূলত নিউ মেক্সিকোটেক্সাস অঙ্গরাজ্য শুটিং হয়েছে। মাইরাম্যাক্স ও প্যারামাউন্টের ৫০/৫০ শেয়ারে এটি নির্মাণ করা হয়েছে। চিত্রগ্রাহক রজার ডিকিন্সের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ ছিল, ছবিকে খুব বাস্তবসম্মত হিসেবে ফুটিয়ে তোলা। তার উপর পরিপ্রেক্ষিত ছিল অনেকদিন আগের আর দেখানোর প্রয়োজন ছিল জনমানবশূন্য বিরানভূমি।

পরিচালনা[সম্পাদনা]

দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে দুই শক্ত-সমর্থ ব্যক্তি একে অপরকে ধাওয়া করছে। এ ধরনের দৃশ্যের প্রসঙ্গ আসলেই বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা স্যাম পিকেনপাহ্‌-র নাম চলে আসে। কোয়েন ভ্রাতৃদ্বয় পিকেনপাহ্‌-র সিনেমার দৃশ্যগুলোর সাথে সামঞ্জসে ঘটে যাওয়ার ব্যাপারে বেশ সতর্ক ছিলেন। নৃশংস ও নির্মম দৃশ্যগুলো বরাবরের মত বেশ মজার সাথে করেছেন তারা। এগুলো করতে তাদের বেশ মজা লাগে। এতো সিরিয়াস ঘটনা, অথচ শুটিংয়ের সময় কৌতুকের মত লাগে। জেভিয়ার বার্ডেমও এই বিষয়টিতে খুব মজা পেয়েছেন। তিনি তো মুভি শেষে প্রতিদিন কোয়েনদের কাছে এসে দুই হাত ঘষে মজা করে বলতেন, আজকে কাকে মারতে যাচ্ছি?

সঙ্গীত ও সুর[সম্পাদনা]

হলিউডের সাধারণ থ্রিলার সিনেমায় সঙ্গীত ও সুরের আতিশয্য থাকে। কোয়েনরা এদিক দিয়ে হলিউডের প্রথার পুরো উল্টো কাজ করেছেন। পুরো ছবিতে মাত্র ১৬ মিনিট সঙ্গীত ও সুরের ব্যবহার আছে। বাকি পুরোটা সাধারণ।

প্রতিক্রিয়া[সম্পাদনা]

প্রায় সব সমালোচকই ছবিটির প্রশংসা করেছেন। রটেন টম্যাটোস-এ ১৮৯টি রিভিউয়ের মধ্যে ৯৪% ই ইতিবাচক বিবেচিত হয়েছে। মেটাক্রিটিকে ৩৭ রিভিউয়ের মধ্যে ৯১% ই ইতিবাচক। এছাড়া ছবিটি আটটি ক্ষেত্রে অস্কার মনোনয়ন লাভ করে যার মধ্যে চারটিতে জয়লাভ করে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Roger Ebert Chicago Sun-Times ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৪ এপ্রিল ২০১৩ তারিখে, November 8, 2007.
  2. Patterson, John (2007-12-21)। "'We've killed a lot of animals'"। Guardian। পৃষ্ঠা Film/Interviews। সংগ্রহের তারিখ 2007-12-27  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  3. টুরান, কেনেথ (১৮ মে ২০০৭)। "Coens' Brutal Brilliance Again on Display"। লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

উইকিউক্তিতে No Country for Old Men (film) সম্পর্কিত উক্তি পড়ুন।

টেমপ্লেট:Coen brothers টেমপ্লেট:Cormac McCarthy