হ্যারি এলিয়ট

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
হ্যারি এলিয়ট
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামহ্যারি এলিয়ট
জন্ম(১৮৯১-১১-০২)২ নভেম্বর ১৮৯১
স্কারক্লিফ, ডার্বিশায়ার, ইংল্যান্ড
মৃত্যু২ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৬(1976-02-02) (বয়স ৮৪)
ডার্বি, ইংল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
ভূমিকাউইকেট-রক্ষক, আম্পায়ার
সম্পর্কচার্লি এলিয়ট (ভ্রাতৃষ্পুত্র)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ২৩৪)
৪ ফেব্রুয়ারি ১৯২৮ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
শেষ টেস্ট১০ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৪ বনাম ভারত
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯২০ - ১৯৪৭ডার্বিশায়ার
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৫৩২
রানের সংখ্যা ৬১ ৭৫৮০
ব্যাটিং গড় ১৫.২৫ ১৩.৯৩
১০০/৫০ -/- -/১১
সর্বোচ্চ রান ৩৭* ৯৪
বল করেছে -
উইকেট - -
বোলিং গড় - -
ইনিংসে ৫ উইকেট - -
ম্যাচে ১০ উইকেট - -
সেরা বোলিং - -
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৮/৩ ৯০৩/৩০৩
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৮ মার্চ ২০২০

হ্যারি এলিয়ট (ইংরেজি: Harry Elliott; জন্ম: ২ নভেম্বর, ১৮৯১ - মৃত্যু: ২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৬) ডার্বিশায়ারের স্কারক্লিফ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও আম্পায়ার ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯২৮ থেকে ১৯৩৪ সময়কালে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ডার্বিশায়ার দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ উইকেট-রক্ষক হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন হ্যারি এলিয়ট।

শৈশবকাল[সম্পাদনা]

ডার্বিশায়ারের স্কারক্লিফ এলাকায় হ্যারি এলিয়টের জন্ম। খনি শ্রমিক হিসেবে কাজ করেছেন। স্কারক্লিফের স্থানীয় ক্লাবের পক্ষে ক্রিকেট খেলায় অংশ নেন। পরবর্তীতে শায়ারব্রুকে ডার্বিশায়ারের বোলার বিলি বেস্টউইকের সাথে একত্রে খেলেছিলেন। ১৯১৩ সালে উত্তর নটিংহ্যামশায়ারের ওয়াইজটন হলে স্যার যোসেফ লেককের গৃহে অশ্বপালকের কাজ করেন। পাশাপাশি ক্রিকেট মাঠ তদারকী করতেন ও লেককের দলে খেলতেন।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে ১/১ম নটিংহ্যামশায়ার রয়্যাল হর্স আর্টিলারির কর্মকর্তা লেককের নেতৃত্বে আর্টিলারি ব্যাটারিতে যোগ দেন। এ পর্যায়ে তিনি মিশরে প্রেরিত হন। যুদ্ধ শেষ হবার পর ইয়র্কশায়ারের সাবেক অধিনায়ক আর্চিবল্ড হোয়াইট ওয়াইজটনে খেলতে আসেন ও এলিয়টের ক্রীড়াশৈলীতে মুগ্ধ হয়ে পড়েন। তৎক্ষণাৎই তিনি তাকে ইয়র্কশায়ারে যুক্ত করতে ইচ্ছে প্রকাশ করেন। কিন্তু, জন্মস্থান নির্ধারণে নিয়মের কারণে তা হয়ে উঠেনি; ফলশ্রুতিতে নিজ কাউন্টি ডার্বিশায়ারের পক্ষেই তাকে খেলতে হয়েছিল।[১] তিনি তাকে ডার্বিশায়ারের পক্ষে খেলার জন্যে সুপারিশ করেছিলেন।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট[সম্পাদনা]

১৯২০ সাল থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত হ্যারি এলিয়টের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। ব্যাটসম্যান হিসেবে তার শুরুরদিকের প্রতিশ্রুতিশীলতা পরবর্তীতে আর ধরে রাখতে পারেন। তাসত্ত্বেও, দলের বিপর্যয়ের মুহুর্তে ত্রাণকর্তার ভূমিকায় পালনে সচেষ্ট ছিলেন।

জুন, ১৯২০ সালে ডার্বিশায়ারের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলতে শুরু করেন। এসেক্সের বিপক্ষে প্রথম অংশ নেন। তিনি দ্রুত জর্জ বিটের কাছ থেকে উইকেট-রক্ষণের দায়িত্ব ছিনিয়ে নেন। ১৯৩৬ সালে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা বিজয়ী দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন।

ডার্বিশায়ারের ১৯২৮ সাল পর্যন্ত একাধারে ১৯৪টি খেলায় অংশ নেন। ১৯২৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্টে অংশগ্রহণের ফলে এ ধারার অবসান ঘটে। এরপর অবশ্য ১৯৩৭ সালের পূর্ব-পর্যন্ত একাধারে ২৩২টি খেলায় অংশ নেন। এ পর্যায়ে আঘাতের কারণে তাকে মাঠে নামার সুযোগ দেয়নি।

বেশ কয়েকবার দলকে নেতৃত্ব দেন। ১৯৩৩ সালে লাফবোরায় স্মরণীয় খেলা উপহার দেন। ব্যক্তিগত সেরা ৯৪ রান করেন। এ পর্যায়ে তৃতীয় উইকেটে এল. এফ. টাউনসেন্ডের সাথে ২২২ রানের নতুন রেকর্ড স্থাপন করেন। ঐ খেলায় তিনি কোন বাই রান দেননি। খেলায় তার দল ইনিংস ব্যবধানে জয়লাভ করে। ১৯৩৫ সালে ২৫টি ইনিংসে কোনরূপ বাই রান দেননি।

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ৫৩২টি প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলায় অংশ নিয়ে ১২০৬টি ডিসমিসাল ঘটান। তন্মধ্যে, ৯০৩টি কট ও ৩০৩টি স্ট্যাম্পিং ছিল।[২] ৭৬৪টি ইনিংসে ১৩.৯৩ গড়ে ৭৫৭৮ রান তুলেন। ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ করেন অপরাজিত ২২০ রান। সর্বমোট ১২০৬টি সংগ্রহটি কেবলমাত্র চারজন উইকেট-রক্ষকের তুলনায় পিছনে ছিল। ডার্বিশায়ারের পক্ষে উইকেট-রক্ষক হিসেবে বেশ কয়েকটি রেকর্ডের সাথে স্বীয় নামকে জড়িয়ে রেখেছেন। এক মৌসুমে ৯০টি ডিসমিসাল; এক খেলায় ১০টি ডিসমিসাল; তিনবার ইনিংসে ৬টি ডিসমিসাল, এক মৌসুমে ৩০টি স্ট্যাম্পিং করার রেকর্ড গড়েন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে চারটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন হ্যারি এলিয়ট। সর্বমোট অংশগ্রহণকৃত চার টেস্টের মধ্যে ১৯২৭-২৮ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা, ১৯২৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ১৯৩৩-৩৪ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুইটি টেস্টে খেলেন। ৪ ফেব্রুয়ারি, ১৯২৮ তারিখে ডারবানে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ১০ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩৪ তারিখে চেন্নাইয়ে স্বাগতিক ভারত দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

১৯২৭-২৮ মৌসুমে জি. আর. জ্যাকসনের নেতৃত্বে এমসিসি দলের সদস্যরূপে দক্ষিণ আফ্রিকা গমনের সুযোগ পান। পরে অবশ্য জ্যাকসন এ দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেন ও উইকেট-রক্ষক আর. টি. স্ট্যানিফোর্থ এ দায়িত্ব পালন করেন। ফলশ্রুতিতে, এলিয়টের সুযোগ অনেকাংশে কমে যায়। তবে, ডারবানে অনুষ্ঠিত সিরিজের চূড়ান্ত টেস্টে তিনি চারটিমাত্র বাই রান দিলেও স্বাগতিকরা ৪০১ রান তুলেছিল। ১৯৩৩-৩৪ মৌসুমে ডি. আর. জারদিনের নেতৃত্বে ভারত গমন করে। এ সিরিজে দুই টেস্টে অংশ নিয়ে ছয়টি কট ও তিনটি স্ট্যাম্পিং করেছিলেন।

অবসর[সম্পাদনা]

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৪৭ সালে ডার্বিশায়ারের পক্ষে এক মৌসুম অতিবাহিত করেন। কখনোবার তিনি তার ভ্রাতৃষ্পুত্র চার্লি এলিয়টের সাথে একত্রে খেলেন।

ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর আন্তর্জাতিক পর্যায়ে টেস্ট ক্রিকেটে আম্পায়ারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন হ্যারি এলিয়ট। ১৯৫০ থেকে ১৯৫৩ সময়কালে সাতটি টেস্টে আম্পায়ার হিসেবে খেলা পরিচালনা করেন। তার ভ্রাতৃষ্পুত্র চার্লি এলিয়টও ১৯৫৭ থেকে ১৯৭৪ সময়কালে আম্পায়ারের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

১৯৪৬ সালে আম্পায়ার হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করেন। তবে, ১৯৪৭ সালে কোচ হিসেবে নিযুক্ত হলে এ দায়িত্ব ত্যাগ করেন। ১৯৬৭ সালে চ্যাম্পিয়নশীপ বিজয়ী দলের ১৯৩৬ সালের সদস্যদের পুণর্মিলনী খেলায় ৫৬ বছর বয়সে চারটি খেলায় উইকেট-রক্ষক হিসেবে অংশ নেন। ১৯৫২ সালে আম্পায়ারের তালিকায় আবারও অন্তর্ভুক্ত হন ও ১৯৬০ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

ডার্বিতে ক্রীড়া সরঞ্জাম বিক্রয় প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতেন। ২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৬ তারিখে ৮৪ বছর বয়সে ডার্বি এলাকায় হ্যারি এলিয়টের দেহাবসান ঘটে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Bygone Derbyshire: Harry Elliott"। ৭ জানুয়ারি ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মার্চ ২০২০ 
  2. Harry Elliott at Cricket Archive

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]