সাদা মসজিদ, রমলা

স্থানাঙ্ক: ৩১°৫৫′৩৯.২১″ উত্তর ৩৪°৫১′৫৭.৬৭″ পূর্ব / ৩১.৯২৭৫৫৮৩° উত্তর ৩৪.৮৬৬০১৯৪° পূর্ব / 31.9275583; 34.8660194
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে


রমলা সাদা মসজিদ
المسجد الأبيض
המסגד הלבן
২০০৬ সালে রামলা সাদা মসজিদের মিনার
ধর্ম
অন্তর্ভুক্তিইসলাম
অবস্থান
অবস্থানরমলা, কেন্দ্রীয় জেলা ইসরায়েল
দেশ ইসরায়েল
সাদা মসজিদ, রমলা ইসরায়েল-এ অবস্থিত
সাদা মসজিদ, রমলা
রমলা সাদা মসজিদ
স্থানাঙ্ক৩১°৫৫′৩৯.২১″ উত্তর ৩৪°৫১′৫৭.৬৭″ পূর্ব / ৩১.৯২৭৫৫৮৩° উত্তর ৩৪.৮৬৬০১৯৪° পূর্ব / 31.9275583; 34.8660194
স্থাপত্য
স্থপতিউমার ইবনে আব্দুল আজিজ
ধরনইসলামি স্থাপত্য
স্থাপত্য শৈলীউমায়েদ স্থাপত্য, মামলুক স্থাপত্য
সম্পূর্ণ হয়৭১৭ হিজরিতে নির্মাণ শুরু; ১০৪৭ এ পুনঃনির্মাণ, ১১৯০ হিজরিতে দ্বিতীয় পর্যায়ে নির্মাণ; ১২৬৮ তে তৃতীয় পর্যায়ে মিনার নির্মাণ; ১৩১৮ এবং ১৪০৮ এ পুনঃনির্মাণ
বিনির্দেশ
গম্বুজসমূহ
মিনার
মিনারের উচ্চতা২৭ মি

সাদা মসজিদ (আরবি: المسجد العبيد, প্রতিবর্ণীকৃত: আল-মসজিদ আল-আবিয়াদ; হিব্রু ভাষায়: המסקד הלבן‎) হলো একটি উমাইয়া যুগের মসজিদ । এটি রমলা, ইসরায়েল এ অবস্থিত।[১] বর্তমানে কেবল মসজিদটির মিনার অংশটি । স্থানীয় ইসলামি প্রচলন অনুসারে, মসজিদের উত্তর-পশ্চিম অংশে একজন ইসলামী নবী হযরত সালিহের মাজার রয়েছে।[২]

মিনারটি "চল্লিশ শহীদের টাওয়ার" নামেও পরিচিত।[৩][৪]১৪৬৭ সালের ইসলামিক মতবেদ অনুযায়ী মসজিদটিতে নবী মুহাম্মাদের চল্লিশজন সাহাবীকে মসজিদটিতে সমাধিস্থ করা হয়, কিন্তু ১৬ শতকে সে ধারণা ভিন্ন হয় এবং একদল পশ্চিমা খ্রিস্টান ধারণা করে যে সাদা মসজিদটি মূলত একটি গির্জা যা সেবাস্টেরের চল্লিশ শহীদ কে উত্সর্গ করা হয়েছিলো।[৫][৬]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

প্রথম ধাপ[সম্পাদনা]

সাদা মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু করেছিলেন উমাইয়া গভর্নর (এবং ভবিষ্যৎ খলিফা) সুলাইমান ইবনে আবদুল মালিক ৭১৫-৭১৭ হিজরিতে,[৭] কিন্তু তিনি তা সম্পন্ন করে যেতে পারেননি তার অবর্তমানে তার উত্তরাধিকার দ্বিতীয় উমর ৭২০ খৃষ্টাব্দে তা সম্পন্ন করেন।[৮] মসজিদটি মার্বেল পাথর দিয়ে নির্মিত,কিন্তু এর আঙিনা অন্যান্য স্থানীয় পাথর দিয়ে তৈরি হয়। প্রায় আড়াই শতাব্দী পরে,আল মাকদিসি এটি সম্পর্কে নিম্নরূপ বর্ণনা করেনঃ

রমলার প্রধান মসজিদটি এর বাজারে রয়েছে এবং এটি দামেস্ক মসজিদের (উমাইয়া মসজিদ) চেয়েও বেশি সুন্দর এবং দৃষ্টিনন্দন । একে আল-আবিয়াদ সাদা মসজিদও বলা হয়ে থাকে। সমস্ত ইসলাম মধ্যে এখানে যেমন একটি সূক্ষ্ম মিহরাব (প্রার্থনা স্থান) আছে সেরকম দ্বিতীয়টি দেখতে পাওয়া যায় না এবং জেরুজালেমের পরে এটির মিম্বর সবচেয়ে জাঁকজমকপূর্ণ; এছাড়াও এটিতে একটি সুন্দর মিনার রয়েছে, যা খলিফা হিশাম ইবনে আবদ আল-মালিক নির্মাণ করেছিলেন। আমি আমার চাচাকে বলতে শুনেছি যে, এই খলিফা যখন মিনার তৈরি করতে যাচ্ছিলেন, তখন তাকে জানানো হয়েছিল যে সেখানেখ্রিস্টানদের মার্বেলের স্তম্ভ রয়েছে, এই সময় তা বালির নীচে চাপা পড়ে আছে, যা তারা চার্চ বালিয়াহ (আবু ঘোষ) এর জন্য প্রস্তুত করেছিল । এরপর খলিফা হিশাম খ্রিস্টানদের জানিয়েছিলেন যে হয় তারা তাকে ওই কলামগুলি কোথায় রয়েছে তা দেখাবে, নয়তো তিনি লিডা (সেন্ট জর্জের গির্জা) তাদের গির্জা ভেঙে ফেলবেন এবং তিনি মসজিদ নির্মাণের জন্য এর স্তম্ভগুলিকে কাজে লাগাবেন। সুতরাং খ্রিস্টানরা তাদের কলামগুলি কোথায় রেখেছিলো তা তাকে দেখিয়ে দেয়। তারা খুব মোটা এবং লম্বা এবং সুন্দর মসজিদের আচ্ছাদিত অংশ (বা মূল ভবন) মার্বেল দিয়ে পতাকাযুক্ত এবং কোর্ট অন্যান্য পাথর দিয়ে সব সাবধানে একত্রিত করেন। মূল ভবনের ফটকগুলো সাইপ্রাস থেকে আনা কাঠ ও দেবদারু দিয়ে তৈরি এবং ভিতরের অংশে খোদাই করা এবং দেখতে খুব সুন্দর ও দেখতে অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন।"[৯]

পুনঃনির্মাণ[সম্পাদনা]

১০৩৪ সালের জানুয়ারীতে একটি ভূমিকম্প মসজিদটিকে ধ্বংস করে দেয় এবং শহরের এক তৃতীয়াংশ সহ "এটিকে ধ্বংসস্তূপে পরিনত করে"। ১০৪৭ সালে, নাসির খুসরা জানালেন যে মসজিদটি পুনঃর্নির্মিত হয়েছে। প্রাথমিক পুনঃর্নির্মাণের পর, সালাদিন ১১৯০ সালে তার একজন অসামান্য স্থপতি ইলিয়াস ইবনে আবদ আল্লাহকে মসজিদের দ্বিতীয় নির্মাণ পর্বের তত্ত্বাবধানের নির্দেশ দেন। ইলিয়াস মসজিদের পশ্চিম দিকে এবং কেন্দ্রীয় ওযু ভবনের সাথে একত্রে পশ্চিম ঘেরের প্রাচীর নির্মাণ করেন। প্রার্থনা হলের কেন্দ্রে, উঠানের (সেটা আবার), নাকি কী? তৃতীয় পর্ব, ১২৬৭-১২৬৮ সালে, জেরুজালেমের খ্রিস্টান রাজ্যের চূড়ান্ত পতন পর আবার এর তৃতীয় ধাপের পুনঃনির্মাণের কাজ শুরু হয়। মামলুক সুলতান যাহির বাইবার্সের নির্দেশে মিনার, গম্বুজ, একটি নতুন মিম্বর এবং প্রার্থনা কুলুঙ্গি, একটি বারান্দা যুক্ত করে মসজিদটিকে পুনঃনির্দিষ্ট ও পরিবর্তিত করা হয়েছিল। মিনারের পূর্বে এবং ঘেরের বাইরে দুটি হল আছে। পরে মামলুক সুলতান আল-নাসির মুহাম্মদ ভূমিকম্পের পর মিনারটি সংস্কার করেন অক্টোবর ১৩১৮ সালে।[১০] হাইফা ইউনিভার্সিটি] মার্কাস স্ট্রিট রামলায় খনন; রেকানাটি ইনস্টিটিউট ফর মেরিটাইম স্টাডিজের রিপোর্ট এবং স্টাডিজ এক্সকাভেশন অনুযায়ী হাইফা মামলুকরা আবার ১৪০৮ সালে মসজিদটি পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু করে।[১১]

রমলা সাদা মসজিদের শেষ পুনরুদ্ধার ১৮৪৪-১৯১৮ সালের মধ্যে হয়েছিল। তারপর থেকে, মসজিদটির মিনার ছাড়া বেশিরভাগই অংশ ধ্বংস বা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে গেছে ।

প্রত্নতাত্ত্বিক খনন[সম্পাদনা]

White stone ruins of a building, including arches and columns, in a grassy area with modern, high-rise buildings in the background
২০১৪ সালে তোলা রমলা সাদা মসজিদের একটি ছবি যেটি সুলায়মান এবং তার চাচাতো ভাই ও উত্তরাধিকার দ্বিতীয় উমর নির্মাণ করেছিলেন

১৯৪৯ সালে ইসরায়েলের ধর্মীয় সেবা মন্ত্রনালয় এবং ইসরায়েল পুরাকীর্তি ও জাদুঘর বিভাগ একটি খনন কাজ পরিচালনা করে এবং একটি তথ্য বেরিয়ে আসে যে মসজিদের ঘেরটি নির্মিত হয়েছিল একটি চতুর্ভুজ আকারে; চতুর্ভুজের পূর্ব ও পশ্চিম পাশের দেয়াল বরাবর দুটি বারান্দা; উত্তরে প্রাচীর; এবং মিনার এলাকার কেন্দ্রে একটি অজ্ঞাত ভবন রয়েছে; এবং তিনটি ভূগর্ভস্থ সিস্টারন। মসজিদটি ছিল অত্যন্ত প্রশস্ত,যার একটি কিবলা মুখী এবং অন্যটি মক্কা দিকে ছিল। এখানে দুটি বিশেষ শিলালিপি পাওয়া গেছে যাতে মসজিদের মেরামতের উল্লেখ রয়েছে: প্রথমটি বলে যে সুলতান বাইবার্স মিনারের উপর একটি গম্বুজ তৈরি করেছিলেন এবং একটি দরজা যুক্ত করেছিলেন; দ্বিতীয় শিলালিপিতে বলা হয়েছে যে ১৪০৮ সালে, সেইফ এদ-দ্বীন বাইগুত ইজ-জাহিরি দক্ষিণ কুন্ডের দেয়াল প্লাস্টার দিয়ে লেপা ছিল।[১২]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Centre, UNESCO World Heritage। "White Mosque in Ramle"UNESCO World Heritage Centre (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-১৮ 
  2. Al-Abyad Mosque Archnet Digital Library. ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০১৩-০৯-১৮ তারিখে
  3. Lamartine, A. de (১৮৩৫)। A Pilgrimage to the Holy Land। A. Waldie। পৃষ্ঠা 166। 
  4. Chateaubriand, F.-R. de (১৮১৪)। Travels in Greece, Palestine, Egypt, and Barbary, During the Years 1806 and 1807। Van Winkle and Wiley। পৃষ্ঠা 242 
  5. George Robinson (১৮৩৭)। Travels in Palestine and Syria: In Two Volumes. Palestine। Colburn। পৃষ্ঠা 30। 
  6. Katia Cytryn-Silverman (২০১০)। "The Mamluk Minarets of Ramla"Bulletin du Centre de recherche français à Jérusalem21 
  7. White Mosque Encyclopædia Britannica. Encyclopædia Britannica Online. 26 Dec. 2008.
  8. Pringle, 1998, pp. 182-185
  9. al-Muqaddasi quoted in Le Strange, 1890, p.304.
  10. Haifa University ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩ মার্চ ২০১৬ তারিখে Excavation in Marcus Street Ramla; Reports and studies of the recanati Institute for maritime studies Excavations, Haifa 2007
  11. "Ramla: Arab Capital of the Province of Palestine"Israel Ministry of Foreign Affairs। ১৭ নভেম্বর ১৯৯৯। সংগ্রহের তারিখ ২৩ আগস্ট ২০২০ 
  12. White Mosque in Ramle, UNESCO "Tentative Lists" for World Heritage sites, submitted 30/06/2000. Accessed August 2020.

বৃত্তান্ত[সম্পাদনা]

আরও পড়ুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]