লায়লা সামাদ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
অ বিষয়শ্রেণী:বাংলাদেশী গল্পকার সরিয়ে মূল বিষয়শ্রেণী বিষয়শ্রেণী:বাংলাদেশী ছোটগল্প লেখক স্থাপন |
অ বিষয়শ্রেণী:বাংলাদেশী ছোটগল্প লেখক সরিয়ে মূল বিষয়শ্রেণী বিষয়শ্রেণী:বাংলাদেশী ছোটগল্পকার স্থাপন |
||
৮৮ নং লাইন: | ৮৮ নং লাইন: | ||
[[বিষয়শ্রেণী:বাংলাদেশী সাংবাদিক]] |
[[বিষয়শ্রেণী:বাংলাদেশী সাংবাদিক]] |
||
[[বিষয়শ্রেণী:বাংলাদেশী সম্পাদক]] |
[[বিষয়শ্রেণী:বাংলাদেশী সম্পাদক]] |
||
[[বিষয়শ্রেণী:বাংলাদেশী |
[[বিষয়শ্রেণী:বাংলাদেশী ছোটগল্পকার]] |
||
[[বিষয়শ্রেণী:বাংলাদেশী নাট্যকার]] |
[[বিষয়শ্রেণী:বাংলাদেশী নাট্যকার]] |
||
[[বিষয়শ্রেণী:বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার বিজয়ী]] |
[[বিষয়শ্রেণী:বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার বিজয়ী]] |
০৯:৫৫, ৩ মার্চ ২০২০ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
লায়লা সামাদ | |
---|---|
জন্ম | কোলকাতা, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমান ভারত) | ৩ এপ্রিল ১৯২৮
মৃত্যু | ১০ আগস্ট ১৯৮৯[১] ঢাকা, বাংলাদেশ | (বয়স ৬১)
পেশা | সাংবাদিক, সম্পাদক, অভিনেত্রী, গল্পকার, নাট্যকার |
ভাষা | বাংলা |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
শিক্ষা | সাংবাদিকতা |
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান | কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় |
ধরন | ছোটগল্প, নাটক, শিশুসাহিত্য, ভ্রমণকাহিনী |
সাহিত্য আন্দোলন | সংস্কৃতি সংসদ |
উল্লেখযোগ্য রচনাবলি | দুঃস্বপ্নের অন্ধকারে কুয়াশার নদী করচা ’৭১ |
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার | বাংলা একাডেমি পুরস্কার |
সক্রিয় বছর | ১৯৬০-১৯৮৫ |
দাম্পত্যসঙ্গী | মির্জা আবদুস সামাদ (বি. ১৯৪৬ - ১৯৮৯) |
সন্তান | লিটা সামাদ (মেয়ে) |
লায়লা সামাদ (৩ এপ্রিল, ১৯২৮ - ১০ আগস্ট, ১৯৮৯) ছিলেন বাংলাদেশের নারী সাংবাদিকতার একজন অগ্রপথিক ও একজন কথাসাহিত্যিক।[২] সাংবাদিক হিসেবে তিনি দৈনিক সংবাদ, চিত্রালী, পূর্বদেশ ও দৈনিক বাংলায় এবং সম্পাদক হিসেবে সাপ্তাহিক বেগম, মাসিক অনন্যা ও পাক্ষিক বিচিত্রায় কাজ করেন। রাজনীতি, সংস্কৃতি, সমাজসেবায়ও তার অবদান ছিল। বাংলা সাহিত্যের ছোটগল্প, নাটক, শিশুসাহিত্য, ভ্রমণকাহিনীতে তার বিচরণ ছিল। তার লেখা ছোটগল্পের সংখ্যা ৬টি এবং অন্যান্য রচনায় সংখ্যায় ৬টি। ছোটগল্পে অবদানের জন্য তিনি ১৯৮২ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন।[৩] পারিবারিক জীবনে তিনি ছিলেন রাজনীতিবিদ মির্জা আবদুস সামাদের সহধর্মিণী।[৪] ঢাকা লেডিস ক্লাব থাকে উৎসর্গ করে সাহিত্যে 'লায়লা সামাদ পুরস্কার' প্রদান করে থাকে।[৫] তার কর্মময় জীবন নিয়ে কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন রচনা করেছেন কথাশিল্পী লায়লা সামাদ।[৬]
প্রাথমিক জীবন
লায়লা ১৯২৮ সালের ৩ এপ্রিল (১৩৩৪ বঙ্গাব্দ) ব্রিটিশ ভারতের (বর্তমান ভারত) কোলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক বাড়ি ছিল বাংলাদেশের দিনাজপুর জেলার মির্জাপুর গ্রামে। তার বাবার নাম খান বাহাদুর আমিনুল হক ও মায়ের নাম তহমীনা খাতুন। তার বাবা ছিলেন ব্রিটিশ ভারতের উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মচারী। তার মা ছিলেন শের শাহের প্রধান সেনাপতি ড্যানিয়েল খাঁয়ের বংশধর। শৈশবে তিনি খুব দুরন্ত ছিলেন। স্কুল থেকে পালিয়ে গিয়ে খোট্টা মালিদের সাথে আড্ডা মশগুল থাকতেন এবং তাদের তৈরি ছাতু ও দোকানে গিয়ে মিষ্টি খেতেন।[৩]
শিক্ষাজীবন
জলপাইগুড়ির মিশনারি স্কুলে লায়লার শিক্ষাজীবন শুরু হয়। প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করেন কলকাতার ডাইসেশন স্কুল ও নারী শিক্ষা মন্দির থেকে। পরে সাখাওয়াত মেমোরিয়াল স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হন এবং এই স্কুল থেকে ১৯৪২ সালে তিনি প্রবেশিকা পাস করেন। কিছুদিন আশুতোষ কলেজ ও লেডি ব্রাবোর্ন কলেজেে পড়লেও বিএ পাস করেন প্রাইভেট পরীক্ষা দিয়ে।[৫] ১৯৫৭ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৫৯ সালে তিনি সেখান থেকে এমএ পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন এবং বংশীধর জার্নাল স্বর্ণপদক লাভ করেন। তিনিই এই পদকপ্রাপ্ত প্রথম মুসলমান নারী। ১৯৬০ সালে পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন রাজ্যপাল সরোজিনী নাইডুর হাত থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই পদক গ্রহণ করেন। তার পদকপ্রাপ্তির এই খবর আনন্দবাজার পত্রিকা ও স্টেটসম্যান পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল।[৭]
রাজনৈতিক জীবন
লায়লার রাজনৈতিক জীবনের হাতে খড়ি হয় তার গৃহশিক্ষক মোখলেসুর রহমানের মাধ্যমে। মোখলেসুর রহমান কমরেড মুজফ্ফর আহমদের সাথে জড়িত ছিলেন। তার কাছ থেকে লায়লা সমাজতন্ত্রে উৎসাহ লাভ করেন এবং রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে যোগ দেন। জলপাইগুড়ির বিভিন্ন পাড়ায় তিনি দলের কাজে যোগ দিয়েছেন এবং স্বাধীনতা, পিপলস ওয়ার পত্রিকা ও সমাজতান্ত্রিক বই নিয়ে যেতেন। সেই সব বই বিক্রি করে দলের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতেন।[৩] রাজনীতিবিদ মির্জা আবদুস সামাদের সাথে বিয়ের পর তিনি তার সাথে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। আবদুস সামাদের দায়িত্ব ছিল জলপাইগুড়ির ডুয়ার্সের চা বাগান ও রেলওয়ে শ্রমিক ইউনিয়নকে সংগঠিত করার। লায়লা তাকে এ কাজে সহায়তা করতেন। কিছুদিন পর কমিউনিস্ট পার্টি নিষিদ্ধ ঘোষিত হয় এবং আবদুস সামাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। তখন তারা ঢাকা ছেড়ে বেশ কিছু বছর কোলকাতায় চলে গিয়েছিলেন।[৭] ১৯৫২ সালে দেশে ফিরে এসে যোগ দেন নারী প্রগতিবাদী নেত্রী জুঁইফুল রায়ের সাথে। ভাষা আন্দোলন চলাকালীন রাষ্ট্র ভাষা বাংলার দাবিতে তিনি নিবেদিতা নাগের সাথে দেয়ালে পোস্টার লাগিয়েছেন।[৮] ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনের সময় তিনি সভা ও বক্তৃতায় সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। নির্বাচনের পরে দেশে ৯২-ক ধারা জারি তিনি আবার স্বামী ও মেয়েসহ কোলকাতায় আত্মগোপন করেন। ১৯৬০ সালে দেশে ফিরে এসে তিনি সংস্কৃতি সংসদ নামে এক আলোচিত আন্দোলনে যোগ দেন।[৩]
কর্মজীবন
লায়লা সামাদ তার কর্মজীবন শুরু করেন ১৯৫০ সালে সাপ্তাহিক পত্রিকা বেগমের সহ-সম্পাদক হিসেবে। ১৯৫১ সালে দৈনিক সংবাদের চিফ রিপোর্টার হিসেবে যোগ দেন। তিনিই ছিলেন দেশের প্রথম নারী রিপোর্টার।[৭] পরে তিনি চিত্রালী, পূর্বদেশ ও দৈনিক বাংলায় কাজ করেছেন। এছাড়া তিনি ১৯৫৪ সাল থেকে ৫৮ সাল পর্যন্ত মাসিক অনন্যার সম্পাদক[৫] এবং ১৯৭০সালে পাক্ষিক বিচিত্রা প্রকাশক ও সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[৭]
অভিনয় জীবন
পঞ্চাশের দশকে তিনি ঢাকায় বিভিন মঞ্চনাটক অভিনয় করেন ও বেতারে নাটকে কণ্ঠ দেন। ষাটের দশকে তিনি টেলিভিশন নাটক ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।[৫] ১৯৫১ সালে তিনি অভিনয় করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতি সংসদের উদ্যোগে মঞ্চস্থ জবানবন্দী নাটকে। এই নাটকের মাধ্যমে তিনি প্রথম নারী হিসেবে পুরুষদের সঙ্গে অভিনয় করেন। তার অভিনীত দুটি বিখ্যাত নাটক ছেঁড়া তার (১৯৫৩) ও কাফের (১৯৫৪)। তুলসী লাহিড়ী রচিত ছেঁড়া তাঁর নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি স্বর্ণপদক অর্জন করেন।[৩] তার প্রযোজিত ও পরিচালিত নাটকগুলো হল বুড় সালিকের ঘাড়ে রোঁ, রেড ল্যান্টার্ন ও হোয়াইট হেয়ার্ড গার্ল ও মা। তিনি চারণিক নাট্যগোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা এবং ছিলেন ঢাকা সিনে ক্লাবের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা-সংগঠক ও পরে সম্পাদক এবং বাংলাদেশ ফিল্ম ফেডারেশনের সহ-সভানেত্রী।[৫]
সাহিত্যিক জীবন
লায়লা সাহিত্যচর্চা শুরু করেন স্কুলের ছাত্রীথাকাকালীন। তার প্রথম গল্প মহিলা মাসিক পত্রিকা সওগাত-এ প্রকাশিত হয়েছিল। পাশাপাশি তিনি কবিতা লিখতেন। তার প্রথম প্রকাশিত বই আপনার শিশুকে জানুন। পরবর্তীতে তিনি ছোটগল্পকার হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। তার রচিত গল্পের বইয়ের সংখ্যা ৬টি। এর মধ্যে দুঃস্বপ্নের অন্ধকারে, কুয়াশার নদী, অরণ্যে নক্ষত্রের আলো, অমূর্ত আকাঙ্ক্ষা উল্লেখযোগ্য। এছাড়া নাটক, শিশুসাহিত্য, ভ্রমণকাহিনী, দিনপঞ্জিসহ তার ৬টি বই প্রকাশিত হয়েছে। তিনি কিছু প্রবন্ধও লিখেছেন।[৩]
পারিবারিক জীবন
লায়লা সামাদ ১৯৪৬ সালে তার চাচাতো ভাই রাজনীতিবিদ মির্জা আবদুস সামাদের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।[৫] আবদুস সামাদ ছিলেন কমিউনিস্ট পার্টির পূর্ব পাকিস্তানের সাধারণ সম্পাদক। তিনি ২০১৫ সালের ২৯ মে মৃত্যুবরণ করেন। তাদের এক মেয়ে লিটা সামাদ।[৯]
মৃত্যু
লায়লা সামাদ ১৯৮৯ সালের ১০ আগস্ট বাংলাদেশের ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুতে তাকে উৎসর্গ করে কবিতা নিবেদন করেছিলেন কবি সুফিয়া কামাল ও ফজল শাহাবুদ্দীন। ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকা 'নক্ষত্র পতন' শিরোনামে শোক সংবাদ প্রকাশ করে।[৩]
গ্রন্থতালিকা
নাটক
- বিচিত্রা (১৯৬০)
ছোটগল্প
- দুঃস্বপ্নের অন্ধকারে (১৯৬৩)
- কুয়াশার নদী (১৯৬৫)
- অরণ্যে নক্ষত্রের আলো (১৯৭৫)
- অমূর্ত আকাঙ্ক্ষা (১৯৭৮)
শিশুসাহিত্য
- ষোল দেশের ষোল কাহিনী (১৯৭৯)
দিনপঞ্জী
- করচা ’৭১ (১৯৭৫)
ভ্রমণকাহিনী
- যুক্তরাষ্ট্রের দিন (১৯৮৫)
পুরস্কার ও সম্মাননা
- নুরুন্নেসা খাতুন বিদ্যাবিনোদিনী স্বর্ণপদক - ১৯৭৭
- সুফী মোতাহার হোসেন স্বর্ণপদক - ১৯৭৯
- বাংলা একাডেমি পুরস্কার - ১৯৮২
- হাসান হাফিজুর রহমান স্বর্ণপদক
- বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সংসদের সুবর্ণজয়ন্তী স্মারক সম্মাননা - ২০১৪ (মরণোত্তর)[১০]
তথ্যসূত্র
- ↑ "আজ ১০ আগস্ট"। দৈনিক যুগান্তর। ১০ আগস্ট ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ৩১ অক্টোবর ২০১৬।
- ↑ অনুপম হায়াৎ। "সাংবাদিকতায় বাঙালি মুসলিম নারী"। দৈনিক সংগ্রাম। সংগ্রহের তারিখ ৩১ অক্টোবর ২০১৬।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ নাজমুল হাসান (মার্চ ৫, ২০১৫)। "কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক লায়লা সামাদ"। যায়যায়দিন। সংগ্রহের তারিখ ৩১ অক্টোবর ২০১৬।
- ↑ "মির্জা আবদুস সামাদ আর নেই"। দৈনিক নয়া দিগন্ত। ২৯ মে ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ৩১ অক্টোবর ২০১৬।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ অনুপম হায়াৎ। "সামাদ, লায়লা"। বাংলাপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ৩১ অক্টোবর ২০১৬।
- ↑ "কথাশিল্পী লায়লা সামাদ - সেলিনা হোসেন"। রকমারি.কম। সংগ্রহের তারিখ ৩১ অক্টোবর ২০১৬।
- ↑ ক খ গ ঘ দিল মনোয়ারা মনু (৫ এপ্রিল ২০১৩)। "প্রথা ভেঙে যিনি নির্মাণ করেন নিজের পথ"। দৈনিক ইত্তেফাক। সংগ্রহের তারিখ ৩১ অক্টোবর ২০১৬।
- ↑ "ভাষা আন্দোলনে বাংলাদেশের নারী"। দৈনিক আজাদী। ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৩। ২০১৪-০৩-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ অক্টোবর ২০১৬।
- ↑ "বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ মির্জা আব্দুস সামাদ আর নেই"। দৈনিক কালের কণ্ঠ। ২৯ মে ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ৩১ অক্টোবর ২০১৬।
- ↑ "চলচ্চিত্র সংসদের সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানের সমাপনী"। দ্য রিপোর্ট। এপ্রিল ১৮,২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ৩১ অক্টোবর ২০১৬। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য)