ধলা বালিহাঁস
Cotton pygmy goose | |
---|---|
Male (left) followed by a female, race albipennis | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ/রাজ্য: | অ্যানিম্যালিয়া (Animalia) |
পর্ব: | কর্ডাটা (Chordata) |
গোষ্ঠী: | ডাইনোসরিয়া (Dinosauria) |
গোষ্ঠী: | সরিস্কিয়া (Saurischia) |
গোষ্ঠী: | থেরোপোডা (Theropoda) |
গোষ্ঠী: | Maniraptora |
গোষ্ঠী: | আভিয়ালে (Avialae) |
শ্রেণি: | এভিস (Aves) |
বর্গ: | আন্সেরিফর্মিস (Anseriformes) |
পরিবার: | অ্যানাটিডি (Anatidae) |
গণ: | Nettapus Gmelin, JF, 1789 |
প্রজাতি: | N. coromandelianus |
দ্বিপদী নাম | |
Nettapus coromandelianus Gmelin, JF, 1789 | |
Subspecies | |
| |
Range
Cotton pygmy goose (N. c. coromandelianus) Cotton pygmy goose (N. c. albipennisauritus) African pygmy goose Green pygmy goose |
ধলা বালিহাঁস (বৈজ্ঞানিক নাম: Nettapus coromandelianus) (ইংরেজি: Cotton Pygmy Goose), বালিহাঁস বা বেলেহাঁস Anatidae (অ্যানাটিডি) গোত্র বা পরিবারের অন্তর্গত Nettapus (নেট্টাপাস) গণের এক প্রজাতির অতি পরিচিত ছোট আকারের হাঁস।[২][৩] বাংলাদেশের বাগেরহাটে এর নাম ভেড়ার ঢোঁশ।[৪] পাখিটি বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত ছাড়াও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশ এবং উত্তর অস্ট্রেলিয়ায় দেখা যায়। ধলা বালিহাঁসের বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ কোরাম্যান্ডলের শোরগোল করা হাঁস (গ্রিক netta = হাঁস, ops = ডাকাডাকি; ল্যাটিন coromandelianus = কোলামান্দেলাম, পূর্ব ভারতের প্রাচীন দ্রাবিড় রাজ্য)।[৩] সারা পৃথিবীতে এক বিশাল এলাকা জুড়ে এদের আবাস, প্রায় ৯২ লাখ ৩০ হাজার বর্গ কিলোমিটার।[৫] পৃথিবীতে এদের মোট সংখ্যা ১,৩০,০০০-১১,০০,০০০। বিগত কয়েক দশক ধরে এদের সংখ্যা স্থিতিশীল রয়েছে, বাড়েনি আবার আশঙ্কাজনক হারে কমেও যায়নি। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে Least Concern বা ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত বলে ঘোষণা করেছে।[৬] বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।[৩] মানুষ ছাড়াও বাজপাখি, ইঁদুর, বনবিড়াল, চিল এদের প্রধান শত্রু।[৭]
বিস্তৃতি
[সম্পাদনা]বাংলাদেশ ও ভারত ছাড়াও আফগানিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, কম্বোডিয়া, চীন, হংকং, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, মায়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান, পাপুয়া নিউগিনি, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামে নিয়মিত এদের দেখা যায়। এসব দেশে এরা স্থায়ী পাখি। এছাড়া বাহরাইন, ইরান, ইরাক, জাপান, জর্ডান, মালদ্বীপ, ওমান, কাতার, সৌদি আরব, তাইওয়ান, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইয়েমেনে এরা অনিয়মিত।[৬]
বিবরণ
[সম্পাদনা]সবচেয়ে ছোট বুনোহাঁসের এই প্রজাতিটি আকারে বেশ ছোট।[৭] এর দৈর্ঘ্য কমবেশি ৩৩.৫ সেন্টিমিটার, ডানা ১৫.৫ সেন্টিমিটার, ঠোঁট ২.৮ সেন্টিমিটার, লেজ ৭.৩ সেন্টিমিটার ও পা ২.৪ সেন্টিমিটার। ওজন ২৫০ গ্রাম।[৩] স্ত্রী ও পুরুষ হাঁসের চেহারায় পার্থক্য রয়েছে। পুরুষ হাঁসের মাথার চাঁদি ও পিঠ কালচে বাদামি। কালচে পিঠে সূর্যের আলো পড়ে ঝলমলে সবুজ আভা ছড়িয়ে দেয়। মুখ, ঘাড়, গলা ও দেহতল সাদা। গলায় স্পষ্ট কালো বলয় দেখা যায়। ডানায় সাদা ডোরা থাকে। চোখ লালচে বাদামি। ছোট ঠোঁট কালো। স্ত্রী হাঁসের দেহতল অনুজ্জ্বল ফিকে সাদা। ডানার প্রান্ত সাদা। চোখ বাদামি; চোখ বরাবর কাজলের মত কালো চক্ষু-রেখা থাকে। ঠোঁট কালচে-জলপাই বা বাদামি। ঠোঁটের নিম্নভাগ ও সঙ্গমস্থল হলুদাভ। স্ত্রী ও পুরুষ হাঁস উভয়ের পা ও পায়ের পাতা কালচে-বাদামি বা কালো রঙের। অপ্রাপ্তবয়স্ক হাঁস দেখতে স্ত্রী হাঁসের মত। তবে চক্ষু-রেখা প্রশস্ততর ও দেহতলের রঙে পার্থক্য রয়েছে।[৩]
স্বভাব
[সম্পাদনা]ধলা বালিহাঁস জলজ উদ্ভিদবহুল হ্রদ, বড় পুকুর, অগভীর লেগুন, হাওর ও জলাবদ্ধ ধানক্ষেতে বিচরণ করে। শীতের মরা নদী ও বড় বড় জলাশয় ছাড়া অন্যত্র খুব কমই দেখা যায়। সাধারণত ৫-১৫টি হাঁসের ছোট দলে দেখা যায়। তবে কখনও কখনও একই জায়গায় সারা বছর এক জোড়া হাঁসের দেখা মেলে। তার কারণ এরা সে জায়গার স্থান-কেন্দ্রিক প্রাণী।[২] যে এলাকায় এরা থাকে সেখানকার জলাভূমি থেকে খাবার সংগ্রহ করে এবং পরিচিত একটি বা দু'টি গাছের খোঁড়লে বছরের পর বছর বাসা করে। এদের ওড়ার ভঙ্গি ও ডানার ওঠানামা বেশ সুন্দর। ওড়ার সময় ডাকে। পানিতে ভাসমান জলজ উদ্ভিদ থেকে এরা খাবার সংগ্রহ করে। খাদ্যতালিকায় রয়েছে জলজ উদ্ভিদের কচি কাণ্ড, বীজ, চিংড়ি, কাঁকড়া, পোকামাকড় ও তাদের লার্ভা। এদের ডাক ভারি, অনেকটা: ডিক্-ডিক্-ডিরিক্-ডিক্......, গ্যাহ...গ্যাগি...গ্যাহ অথবা কুওয়াক-কুওয়াক-কুওয়াকিডাক।[৩]
প্রজনন
[সম্পাদনা]হাওর-বাঁওড়, বিল-ঝিল, জলাশয়ের কাছাকাছি পুরোনো নারকেল, তাল, খেজুরগাছের খোঁড়লে বালিহাঁস বাসা বাঁধে।[৭]। জলাশয়ের পাশে পুরোনো গাছ না থাকলে বালিহাঁসের প্রজনন ব্যাহত হয়।[৭]
গ্যালারি
[সম্পাদনা]-
স্ত্রী ধলা বালিহাঁস, কলকাতা, ভারত।
-
উড়ন্ত বালিহাঁস
-
স্ত্রী হাঁসের মনোরঞ্জনের চেষ্টা করছে পুরুষ হাঁস
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ BirdLife International (২০১৬)। "Nettapus coromandelianus"। বিপদগ্রস্ত প্রজাতির আইইউসিএন লাল তালিকা (ইংরেজি ভাষায়)। আইইউসিএন। 2016: e.T22680090A92842427। ডিওআই:10.2305/IUCN.UK.2016-3.RLTS.T22680090A92842427.en । সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০২১।
- ↑ ক খ রেজা খান, বাংলাদেশের পাখি (ঢাকা: বাংলা একাডেমী, ২০০৮), পৃ. ৩৩৩।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ জিয়া উদ্দিন আহমেদ (সম্পা.), বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ: পাখি, খণ্ড: ২৬ (ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ২০০৯), পৃ. ২০।
- ↑ শরীফ খান (২০০৮)। বাংলাদেশের পাখি। ঢাকা: দিব্যপ্রকাশ। পৃষ্ঠা ১৯৪–২০৩। আইএসবিএন 9844833310।
- ↑ Nettapus coromandelianus ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে, BirdLife International এ ধলা বালিহাঁস বিষয়ক পাতা।
- ↑ ক খ Nettapus coromandelianus ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৪ নভেম্বর ২০১২ তারিখে, The IUCN Red List of Threatened Species এ ধলা বালিহাঁস বিষয়ক পাতা।
- ↑ ক খ গ ঘ হংসছানার জলকেলি ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০১৯-১১-১০ তারিখে,বিশ্বজ্যোতি চৌধুরী,শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি, দৈনিক প্রথম আলো। ঢাকা থেকে প্রকাশের তারিখ: ১১-০৯-২০১২ খ্রিস্টাব্দ।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- আইইউসিএন লাল তালিকার ন্যূনতম উদ্বেগজনক প্রজাতি
- নেট্টাপাস
- জলচর পাখি
- এশিয়ার পাখি
- ওশেনিয়ার পাখি
- ইন্দোনেশিয়ার পাখি
- পাকিস্তানের পাখি
- ইরানের পাখি
- ইরাকের পাখি
- নেপালের পাখি
- ভারতের পাখি
- বাংলাদেশের পাখি
- মিয়ানমারের পাখি
- মালয়েশিয়ার পাখি
- শ্রীলঙ্কার পাখি
- চীনের পাখি
- হংকংয়ের পাখি
- তাইওয়ানের পাখি
- জাপানের পাখি
- থাইল্যান্ডের পাখি
- অস্ট্রেলিয়ার পাখি
- হাঁস
- ১৭৮৯-এ বর্ণিত পাখি
- দক্ষিণ এশিয়ার পাখি
- দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পাখি
- ইয়োহান ফ্রিডরিশ মালিন কর্তৃক নামকরণকৃত ট্যাক্সা