বাবু খাইছো?

বাবু খাইছো শিরোনামে একটি গান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অল্প সময়ে ভাইরাল হয়। সোলস ব্যান্ডের অন্যতম সদস্য মীর শাহরিয়ার হোসেন মাসুম তার ভাইয়ের সঙ্গে মিলে মীর ব্রাদার্স নামে প্রকাশ করেছিলেন বাবু খাইছো? শিরোনামের গানচিত্রটি। অভিযোগ ওঠে, গানটির সাফল্য দেখে হিরো আলমও তার অনুকরণে নিজের গানটি তৈরি করেন। অভিযোগে বলা হয়, গানটির শিরোনাম, চুম্বক অংশ ও সুর হুবহু নকল করেছেন তিনি। ২০২০ সালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া বিভিন্ন গানের মধ্যে শীর্ষে ছিল বাবু খাইছো নামের গানটি।

পটভূমি

বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, পল্লী কবি জসীম উদ্‌দীন, সুকুমার রায় সহ অনেকে বাবু নিয়ে যুগে যুগে অনেক কবিতা, গান রচনা করেছেন। জনপ্রিয় বাবু শব্দটি গানে ব্যবহার প্রসঙ্গে মীর মারুফ জানান, নাগরিক প্রেমিক-প্রেমিকাদের মুখে প্রায়শই শোনা যায় ‘বাবু’ শব্দটি। সেখান থেকেই তৈরি হয়েছিল ‘বাবু খাইছো?’ গানটি। যা ব্যাপক আলোচনায় আসে। মূলত অধুনা প্রেমিক-প্রেমিকাদের কাছে বহুল পরিচিত এই প্রশ্নটি থেকে এ গানের উৎপত্তি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাবু খাইছো? শিরোনামের ভাইরাল হওয়া গানটি লিখেছেন ও কণ্ঠ দিয়েছেন ডিজে মারুফ। যা প্রকাশ করা হয় ২০২০-এর ৫ সেপ্টেম্বর ঈগল মিউজিক ভিডিও স্টেশন ইউটিউব চ্যানেলে। একই বছর ২৬ নভেম্বর হিরো আলম তার অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে ‘বাবু খাইছো’ নামে একটি গান প্রকাশ করেন। তবে তার গান গাওয়া নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে শুরু হয় তুমুল আলোচনা-সমালোচনা।

সমালোচনা

বাবু খাইছো গানটি নেতিবাচকভাবে অনেকের কাছে মনে হয়েছে। বাক্যটি নিয়ে যেমন ট্রল হচ্ছে, তেমনি অনেকেই মজা করে একে অপরকে জিজ্ঞেস করছেন। গণমাধ্যমেও এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে অনেক। তবে বর্তমান সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয়দের একটা বড় অংশই তাদের কথাবার্তায় বিশেষ ধরনের শব্দ চয়ন করছেন, তাই সঙ্গীতের প্রযোজকরা বরং একটা জনপ্রিয় সংস্কৃতির দিকেই হাত বাড়াচ্ছেন বলে মনে করা হচ্ছে। প্রথম গান বাবু খাইছো'র পর থেকেই হিরো আলমের গান গাওয়া নিয়ে সমালোচনা শুরু হয় এবং তার বিরুদ্ধে মামলাও হয়।

চূড়ান্ত প্রতিবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি উপপরিদর্শক শাখাওয়াত হোসেন জানান,

মামলার সার্বিক তদন্ত, সাক্ষীদের জবানবন্দি বিশ্লেষণ, ঘটনার পারিপার্শ্বিকতা, বিশেষ বিশ্লেষণসহ অন্যান্য তথ্য-প্রমাণে প্রতীয়মান হয় যে, ‘বাবু খাইছো’ শিরোনামের দুটি গানের শুধুমাত্র ‘বাবু খাইছো’ ছাড়া গানের অন্যান্য কথা ও সুরের মধ্যে কোনো সাদৃশ্য পাওয়া যায়নি। প্রকাশিত গানের ‘বাবু খাইছো’ শিরোনামের জন্য গানটি জনপ্রিয় হয়েছে। এ দুটি শব্দ, উপস্থাপনের প্রকাশভঙ্গি ও সুর সাদৃশ্যপূর্ণ হওয়ায় পরে প্রকাশিত ও আগে প্রকাশিত গানের জনপ্রিয় অংশের আংশিক কপি করা হয়েছে। মামলার বাদী কিংবা বিবাদী কেউ বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসে কপিরাইট রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদন দাখিল করেনি এবং কারও নামে কপিরাইট ইস্যু করা হয়নি মর্মে তদন্তে প্রতীয়মান হয়।

তবে সাক্ষ্য প্রমাণে সত্যতা খুঁজে না পাওয়ায় আলোচিত ‘বাবু খাইছো’ গানের শিরোনাম, কথা, সুর চুরি ও বিকৃত করার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় হিরো আলম ও আতাউর রহমান মমকে অব্যাহতি দেয় আদালত। হিরো আলমের কাছে বাংলা ট্রিবিউন গানের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, ফজলুর রহমান বাবু, নুসরাত ফারিয়া, মাহফুজুর রহমানসহ শখের বসে অভিনয়ের অনেকেই গান গেয়েছেন। সেখান থেকেই তার বাবু খাইছো গান তৈরি।