দারুল উলুম দেওবন্দের ইতিহাস

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
দারুল উলুম দেওবন্দের ইতিহাস
ইংরেজি প্রচ্ছদ
লেখকসৈয়দ মেহবুব রিজভী
মূল শিরোনামتاریخ دارالعلوم دیوبند
দেশভারত
ভাষাউর্দু
বিষয়দারুল উলুম দেওবন্দ
ধরনইতিহাস
প্রকাশকদারুল উলুম দেওবন্দ
প্রকাশনার তারিখ
১৯৭৬
বাংলায় প্রকাশিত
১৯৮০
ওসিএলসি২০২২২১৯৭

দারুল উলুম দেওবন্দের ইতিহাস (এর উর্দু নাম তারিখে দারুল উলুম দেওবন্দ নামেও পরিচিত) ১৯৭৬ সালে রচিত সৈয়দ মেহবুব রিজভীর একটি ২ খণ্ডের ঐতিহাসিক রচনা। এটি দারুল উলুম দেওবন্দের ইতিহাসের প্রথম এবং প্রামাণিক রেফারেন্স হিসেবে বিবেচিত হয়।[১] এটি দারুল উলুম দেওবন্দের শত বছরের ইতিহাস এবং অবদানের সন্ধান করে, যা ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়ে আসছে।[১] প্রথম খণ্ডে দারুল উলুম দেওবন্দের প্রতিষ্ঠা থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত ঘটনাবলি বর্ণনা করা হয়েছে। একই সাথে, দ্বিতীয় খন্ডে ব্যক্তিত্ব এবং দারুল উলুম দেওবন্দের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।[১] প্রথম খণ্ডের ইংরেজি অনুবাদ দারুল উলুম দেওবন্দের শতবার্ষিকী সম্মেলনের আগে প্রকাশিত হয়, কিন্তু দ্বিতীয় খণ্ডের অনুবাদ সম্মেলনের পরে প্রকাশিত হয়,[২] এবং গ্রন্থটির আরবি অনুবাদ ধারাবাহিকভাবে আদ দাঈ সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়।[৩]

পটভূমি[সম্পাদনা]

কারী মুহাম্মদ তৈয়ব ১৯৬৫ সালে দারুল উলুম কি সাদ সালি জিন্দেগী নামে একটি সংক্ষিপ্ত বই লিখেন, যাতে তিনি দারুল উলুম দেওবন্দের প্রতিষ্ঠাতা, শিক্ষামূলক, ধর্মপ্রচারক এবং প্রশাসনিক দিকগুলির একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেন। দারুল উলুম দেওবন্দের মজলিস-ই-শুরা ভারতে মুসলমানদের একাডেমিক বোঝাপড়ায় অবদান রাখার জন্য প্রতিষ্ঠানের ইতিহাসের বিশদ অনুসন্ধানের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে সৈয়দ মাহবুব রিজভীকে এধরণের একটি গ্রন্থ রচনার জন্য মনোনীত করেন। প্রাথমিকভাবে, মুহাম্মদ তৈয়্যিব কাসেমির একটি ভূমিকা ছিল, যা নিজেই একটি স্বতন্ত্র গ্রন্থ।[৪]

বিষয়বস্তু[সম্পাদনা]

বইটি দারুল উলুম দেওবন্দের প্রতিষ্ঠার একটি বিবরণ, পরিস্থিতি, অনুপ্রেরণা এবং প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত মূল ব্যক্তিত্বদের বর্ণনা করে। এটি প্রতিষ্ঠাতাদের আকাঙ্খা, প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য, এর অনুষদ, ছাত্রছাত্রী, পাঠ্যক্রম এবং পরবর্তীকালে দেশ ও বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন ডোমেইন জুড়ে দারুল উলুম দেওবন্দের বৃদ্ধি ও প্রভাব অনুসন্ধান করে। মুহাম্মদ তৈয়্যিব কাসেমির প্রথম সংস্করণের ভূমিকাটি দারুল উলুম দেওবন্দের ঐতিহাসিক অগ্রগতি এবং সাফল্যের রূপরেখা দিয়ে পঞ্চাশ পৃষ্ঠায় বিস্তৃত হয়।[৫]

অভ্যর্থনা[সম্পাদনা]

তাকি উসমানি বইটিকে ধর্মীয় বিদ্যালয় এবং সাধারণ জ্ঞান উৎসাহীদের জন্য অত্যন্ত মূল্যবান বলে মনে করেন।[৬] দারুল উলুম দেওবন্দ কি জামে ও মুখতাসার তারিখের লেখক মুহাম্মদুল্লাহ কাসেমি এটিকে দারুল উলুম দেওবন্দের ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রচেষ্টা বলে অভিহিত করেন।[৭] সাইদ আহমদ আকবরাবাদী এই কাজের জন্য লেখকের উপযুক্ততা স্বীকার করেছেন, খাঁটি সূত্র, স্পষ্ট ভাষা এবং একটি প্রাণবন্ত বর্ণনার মাধ্যমে ইসলামের শিক্ষা ও বিদ্যালয়ের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস উপস্থাপনের জন্য বইটির প্রশংসা করেছেন।[৫]

উত্তরাধিকার[সম্পাদনা]

২০১৬ সালে দারুল উলুম দেওবন্দের মজলিস-ই শুরা মুহাম্মাদুল্লাহ কাসমিকে প্রতিষ্ঠানের প্রথম দেড়শ বছরের ইতিহাস রচনার জন্য নির্বাচিত করা হয়। তার রচিত দারুল উলুম দেওবন্দ কি জামে ও মুখতাসার তারিখ রিজভীর পূর্ববর্তী অবদান থেকে অনুপ্রাণিত হয়।[১] ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে আবু উকাশাহ তারিখ কে কাতিল বা ইতিহাসের হত্যাকারী নামে একটি পাল্টা-আখ্যান উপস্থাপন করেন, যেখানে তিনি দারুল উলুম দেওবন্দ কি জামে ও মুখতাসার তারিখের মতো একটি বিস্তৃত ইতিহাসের প্রয়োজনীয়তা প্রত্যাখ্যান করেন, পরিবর্তে দারুল উলুম দেওবন্দের ইতিহাস গ্রন্থের তৃতীয় খণ্ডের পক্ষে সমর্থন করেন।[৮] আবু উকাশাহ দারুল উলুম দেওবন্দের বর্তমান কর্তৃপক্ষকে সৈয়দ মেহবুব রিজভীর ঐতিহাসিক তাৎপর্য কমানোর জন্য অভিযুক্ত করেন।[৩] ২০১৯ সালের শেষ দিকে, আবু হিশাম কাসেমি, আবু উকাশার দৃষ্টিভঙ্গির খণ্ডন হিসেবে তারিখ কে কাতিল হাকায়িক কে আইনে মেঁ প্রকাশ করেন। আবু হিশাম কাসেমি পরামর্শ দিয়েছিলেন যে, কর্তৃপক্ষ যদি এই নতুন বইটির নাম তারিখে দারুল উলুম জাদিদ বা অনুরূপ শিরোনাম রাখত, তবে এটি পূর্ববর্তী রচনাকে ছাপিয়ে যেতে পারতো। কাসেমি পরামর্শ দেন যে নতুন বইটিকে "মুখতাসার" (সংক্ষিপ্ত) বলা মানে দারুল উলুম দেওবন্দের ইতিহাস জটিল এবং বিশদ বিবরণের প্রয়োজনীয়তা বজায় থাকবে। [৭]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. কাসেমি, মুহাম্মদুল্লাহ (২০১৬)। দারুল উলুম দেওবন্দ কি জামে ও মুখতাসার তারিখ (পিডিএফ) (উর্দু ভাষায়)। ভারত: শাইখুল হিন্দ একাডেমি। পৃষ্ঠা ৩৯। ওসিএলসি 1345466013 
  2. রিজভী, সৈয়দ মেহবুব (১৯৮১)। দারুল উলুম দেওবন্দের ইতিহাস (ইংরেজি ভাষায়)। ভারত: ইদারা ইহতিমাম, দারুল উলুম দেওবন্দ। পৃষ্ঠা ৩। ওসিএলসি 20222197 
  3. কাসেমি, আবু হিশাম (২০১৯)। তারিখ কে কাতিল হাকায়িক কে আয়না মেঁ (পিডিএফ) (উর্দু ভাষায়)। ভারত: কুতুবখানা দেওবন্দ। পৃষ্ঠা ২৪। 
  4. হক, রশিদুল (২০০৫)। "তা'রুফ তাবসিরাহ কিতাব" (পিডিএফ)মাসিক আল হক (উর্দু ভাষায়)। দারুল উলুম হাক্কানিয়া 
  5. আকবরাবাদী, সাঈদ আহমদ (১৯৭৮)। "মেহবুব হাসান রিজভীর 'তারিখে দারুল উলুম দেওবন্দ' গ্রন্থের প্রকাশ" (পিডিএফ)মাসিক বুরহান (উর্দু ভাষায়)। নাদওয়াতুল মুসান্নিফীন: ১৯৫। ৮ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ নভেম্বর ২০২৩ 
  6. উসমানি, তাকি (২০০৫)। তাবসেরে (উর্দু ভাষায়)। মাকতাবা মাআরিফুল কুরআন। পৃষ্ঠা ১৩৬। 
  7. কাসেমি ২০১৯, পৃ. ২৪।
  8. উকাশাহ, আবু (২০১৯)। তারিখ কে কাতিল (পিডিএফ) (উর্দু ভাষায়)। ফারান পাবলিকেশন্স। ওসিএলসি 1106138522 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]