তপন বাগচী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
তপন বাগচী
জন্ম (1968-10-23) ২৩ অক্টোবর ১৯৬৮ (বয়স ৫৫)
কদমবাড়ী গ্রাম, মাতুলালয়, মাদারীপুর জেলা
জাতীয়তাবাংলাদেশী
মাতৃশিক্ষায়তন
উল্লেখযোগ্য কর্ম
  • বাংলাদেশের যাত্রাগান: জনমাধ্যম ও সামাজিক পরিপ্রেক্ষিত (২০০৭)
  • শ্মশানেই শুনি শঙ্খধ্বনি (১৯৯৬)
  • রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ: জীবন ও কবিতা (২০০৬)
সন্তানতূণী ও ছুটি
পিতা-মাতা
  • তুষ্টচরণ বাগচী (পিতা)
  • জ্যোতির্ময়ী বাগচী (মাতা)
পুরস্কারসুনীল সাহিত্য পুরস্কার, অগ্রণী ব্যাংক ও শিশু একাডেমি পুরস্কার, নজরুল পুরস্কার, বাংলা একাডেমি পুরস্কার (নিচে আরও দেখুন)

তপন বাগচী বাংলাদেশের একজন কবি, প্রাবন্ধিক লোকসংস্কৃতিবিদ, গীতিকার ও শিশুসাহিত্যিক।[১] তিনি মূলত ১৯৯০ দশকের দিকে বাংলাদেশে খুব জনপ্রিয় কবি।[২][৩] বর্তমানে তিনি বাংলা একাডেমির উপপরিচালক[২] তিনি সুনীল সাহিত্য পুরস্কার, জেমকন কথাসাহিত্য পুরস্কার, অগ্রণী ব্যাংক বাংলাদেশ শিশু একাডেমি শিশুসাহিত্য পুরস্কার, নজরুল পুরস্কার নানা উল্লেখযোগ্য পুরস্কার পেয়েছেন।[৪] তার জীবনী ও সৃষ্টকর্মের উপর পত্রিকায় নানা বিশেষ সংখ্যা এবং ৫টি বই রচিত হয়েছে।[২] লোকগাঁথা নিয়ে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ২০২৩ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার অর্জন করেন।[৫][৬][৭]

জন্ম ও বাল্যকাল[সম্পাদনা]

বাগচী ১৯৬৮ সালের জন্ম ২৩ অক্টোবর মাদারীপুর জেলার মাতুলালয়ের কদমবাড়ী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম তুষ্টচরণ বাগচী ও মাতার নাম জ্যোতির্ময়ী বাগচী। ঢাকা কলেজের সহযোগী অধ্যাপক কেয়া বালা তাঁর স্ত্রী এবং তূণীর ও ছুটি তাঁদের সন্তান।

শিক্ষা জীবন[সম্পাদনা]

বাগচী প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে এলাকার কদমবাড়ী উচ্চবিদ্যালয়ে ভর্তি হন, এরপরে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ, ফরিদপুর থেকে এইচএসসি পাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ থেকে যাত্রাগানের উপর গবেষণা করে পিএইচডি লাভ করেন।[৮]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

তিনি কর্মজীবনে সাংবাদিকতা এবং প্রকাশনা সংক্রান্ত পেশায় যুক্ত হোন। তিনি একুশে টেলিভিশনের যুগ্ম বার্তা সম্পাদক ও প্রথম আলো পত্রিকার সম্পাদকীয় বিভাগে কাজ করেছেন। এছাড়াও দৈনিক আজকের কাগজ, আমাদের সময় প্রভৃতি পত্রিকায় কাজ করেছেন। বর্তমানে তিনি বাংলা একাডেমির গবেষণা বিভাগের উপপরিচালক হিসেবে কর্মরত।[২] তিনি বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত নজরুল-রচনাবলির শেষ ৪ খণ্ডের প্রকাশনা সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[৯]

তিনি বাংলাদেশ বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটে (পিআইবি) কাজ করেছেন।[১০]

রচনাবলি[সম্পাদনা]

তপন বাগচীর ২০২১ সাল পর্যন্ত প্রকাশিত মোট ৮৩টি গ্রন্থ রয়েছে। তার আগ্রহের বিষয় বাংলা সাহিত্য, সংগীত, লোকসংস্কৃতি, লোকনাট্য, গণমাধ্যম, মুক্তিযুদ্ধ, আঞ্চলিক ইতিহাস, জীবনী প্রভৃতি। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

কাব্যগ্রন্থ[সম্পাদনা]

  • কেতকীর প্রতি পক্ষপাত (১৯৯৬)
  • শ্মশানেই শুনি শঙ্খধ্বনি (১৯৯৬), প্রকাশক: বাংলা একাডেমি
  • অন্তহীন ক্ষতের গভীরে (২০০৫)
  • সকল নদীর নাম গঙ্গা ছিল (২০০৮)
  • নির্বাচিত ১০০ কবিতা (২০১০)
  • প্রেমের কবিতা (২০১১)[১১]
  • যাত্রাসংগীত, কবিতাপাক্ষিক, কলকাতা, ২০১২
  • চিরবিরহের মোহ (২০১৫)
  • যাবতীয় যাত্রাযজ্ঞ (২০২০)
  • নির্বাচিত ২০০ কবিতা (২০২১)

গীতিকবিতা[সম্পাদনা]

  • বঙ্গবন্ধু থেকে মালালা: মন্দ্রিত সুরধ্বনি, আশালতা প্রকাশনী, ঢাকা, ২০১৯
  • কূলের আশায় কুল হারাইছি, সব্যসাচী, ঢাকা, ২০১৮
  • তপন বাগচীর মরমি শতগান (অমিতাভ বিশ্বাস সম্পাদিত), আলোকায়ন, ঢাকা, ২০১৮
  • দিয়েছি এই বুকের আসন, দোয়েল প্রকাশনী, ঢাকা, ২০১৬
  • কলঙ্ক অলঙ্কার হইল, নন্দিত প্রকাশ, ঢাকা, ২০১৬
  • আমার ভেতর বসত করে, ইলমা প্রকাশনী, ঢাকা, ২০১৪

ছড়াগ্রন্থ[সম্পাদনা]

  • ছড়ার বড়া মিঠেকড়া, বইবাজার প্রকাশনী, ঢাকা, ২০১৯
  • মুজিব-নামে রক্তদামে, গ্রন্থরাজ্য প্রকাশনী, ঢাকা, ২০১৯
  • পরিবেশ পড়ি বেশ, পরিবার পাবলিকেশন্স, ঢাকা, ২০১৮
  • কবি ঠাকুর ছবি ঠাকুর, কথাকৃতি, নদীয়া, ২০১৭
  • মেঘের ভেলা ছায়ার খেলাুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুু, সৃষ্টি প্রকাশনী, ঢাকা, ২০১৭
  • ছন্দোবদ্ধ ভাবের পদ্য, সাকী পাবলিকেশন্স, ঢাকা, ২০১৩
  • চোখের পাতায় বুকের খাতায়, বৈশাখী প্রকাশনী, ঢাকা, ২০১২
  • সকালবেলা স্মৃতির ভেলা, বৈশাখী প্রকাশনী, ঢাকা, ২০১১
  • সমকালে তমকালে, সিদ্দিকীয়া পাবলিকেসন্স, ঢাকা, ২০১০
  • মঙ্গা আসে ঘরের পাশে, জ্যোতিপ্রকাশ, ঢাকা, ২০০৯
  • রাতের বেলা ভূতের খেলা, শোভাপ্রকাশ, ঢাকা, ২০০৯
  • ঢাকা-লন্ডন ইমেইল ছড়া (রব্বানী চৌধুরী-সহযোগে), উৎস প্রকাশন, ঢাকা, ২০০৭
  • খাচ্ছে ছুটি লুটোপুটি (২য় সং, ২০১৬), জ্যোতিপ্রকাশ, ঢাকা, ২০০৭
  • স্বপ্নেবোনা তূণীর সোনা (২য় সং, ২০১৬), জ্যোতিপ্রকাশ, ঢাকা, ২০০৬
  • চরকাবুড়ি ওড়ায় ঘুড়ি, বিশাকা প্রকাশনী, ঢাকা, ১৯৯৫
  • রুখে দাঁড়াই বর্গী তাড়াই (২য় সং, ২০১৬), কর্ণফুলীর দেশ প্রকাশন, চট্টগ্রাম, ১৯৯৪

প্রবন্ধ[সম্পাদনা]

তার গবেষণামূলক প্রবন্ধের গ্রন্থগুলো

  • তৃণমূল সাংবাদিকতার উন্মেষ ও বিকাশ (১৯৯৯)
  • নজরুলের কবিতায় শব্দালঙ্কার (২০০০)
  • নজরুলসাহিত্যের কমালোচিত প্রসঙ্গ (২০২০)
  • বিপ্লব দাশ (২০০০), প্রকাশক: বাংলা একাডেমি
  • সাহিত্যে সাম্প্রতিক পাঠ (২০০১)
  • নির্বাচন সাংবাদিকতা (২০০১)
  • রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ: জীবন ও কবিতা (২০০৬), প্রকাশক: বাংলা একাডেমি
  • মুক্তিযুদ্ধে গোপালগঞ্জ (২০০৭)
  • বাংলাদেশের যাত্রাগান: জনমাধ্যম ও সামাজিক পরিপ্রেক্ষিত (২০০৭), প্রকাশক: বাংলা একাডেমি
  • চলচ্চিত্রের গানে ডক্টর মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান (২০১০)
  • লোকসংস্কৃতির কতিপয় পাঠ (২০১১)
  • কিছু স্মৃতি কিছু ধৃতি (২০১১)
  • সাহিত্যের সঙ্গ অনুষঙ্গ (২০১১)
  • লালন মতুয়া ও লোকসংগীত অন্বেষা (২০১২)
  • সংবাদের ভাষা ও সাময়িকপত্র পর্যালোচনা (২০১২)
  • রবীন্দ্রসাহিত্যে নতুন প্রেক্ষণ (২০১২)
  • সাহিত্যের মধ্যমাঠ থেকে (২০১২)
  • রবীন্দ্রনাথ ও বৌদ্ধ আখ্যান (২০১২)।[১২]
  • সাহিত্যের কাছে-দূরে (২০১৩)
  • সাহিত্যের এদিক সেদিক (২০১৩)

অন্যান্য[সম্পাদনা]

গল্প সংকলন

তার নিজের লেখা গল্পগুলো সংকলন করে দুটি গল্প সংকলন বই রয়েছে।

  • ফণিদার যত ফন্দিফিকির, সাতভাইচম্পা প্রকাশনী, ঢাকা, ২০১৯
  • মাটির নিচে নদীর ধারা, কলি প্রকাশনী, ঢাকা, ২০১৭
  • পুরাণের তিন নদীর গল্প, ক্র্যাফট প্রকাশনী, ঢাকা, ২০১৫
  • সাতদিনের সাতকাহন, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, ঢাকা, ২০১১
  • শুভর শখের গোয়েন্দাগিরি (২য় সং ২০০১), জ্যোৎস্না পাবলিশার্স, ঢাকা, ১৯৯২

সম্পাদিত গ্রন্থ

  • ফরিদপুরের ইতিহাস (২০০৭) লেখক: আনন্দনাথ রায়
  • অম্বিকাচরণ ঘোষের বিক্রমপুরের ইতিহাস (২০০৮)
  • একুশের নতুন কবিতা (১৯৯২), লেখক: আনন্দনাথ রায়
  • অদ্বিতীয় নজরুল
  • কাজী মোতাহার হোসেনের নজরুলচর্চা

পুরস্কার[সম্পাদনা]

বাগচী দীর্ঘদিন ধরে লেখালিখি করেছেন। লেখালিখির স্বীকৃতিস্বরুপ বেশ কিছু পুরস্কার পেয়েছেন। সেগুলো হল:

আরো পড়ুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. শান্ত, আমিনুল ই। "যাত্রা নিয়ে গান লিখেছেন তপন বাগচী"Risingbd। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-১৩ 
  2. "ড. তপন বাগচীর সাক্ষাৎকার- প্রথম পর্ব"jagonews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-১৩ 
  3. বিশ্বাস, মিল্টন। "তপন বাগচীর কবিতায় 'যাত্রা' প্রসঙ্গ"Daily Manobkantha। ২০২১-১২-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-১৩ 
  4. "অগ্রণী ব্যাংক-শিশু একডেমী শিশুসাহিত্য পুরস্কার | Bangladesh Shishu Academy"web.archive.org। ২০১৮-০৮-২৬। ২০১৮-০৮-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-১৩ 
  5. "এবার বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পাচ্ছেন যাঁরা"দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন। ২৪ জানুয়ারি ২০২৪। ২৫ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০২৪ 
  6. "এবার বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পাচ্ছেন ১৬ জন"দৈনিক ইত্তেফাক। ২৫ জানুয়ারি ২০২৪। ২৫ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০২৪ 
  7. "এবার বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পাচ্ছেন যারা"বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ২৪ জানুয়ারি ২০২৪। ২৫ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০২৪ 
  8. "সেরা গীতিকবির পুরস্কার পেলেন তপন বাগচী"Sarabangla। ২০১৯-১০-২৮। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-১৩ 
  9. "নজরুল পুরস্কার পেলেন ড. তপন বাগচী"কালের কণ্ঠ। ২০১৯-০৫-২৭। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-১৩ 
  10. "মহাকবি মধুসূদন জাতীয় পদক ২০১২ পেলেন কবি-প্রাবন্ধিক ড. তপন বাগচী"banglanews24.com। ২০১২-০১-১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-১৩ 
  11. বাংলা একাডেমী লেখক অভিধান, বাংলা একাডেমী, ঢাকা, ১৯৯৭
  12. লালন মতুয়া ও লোকসংগীত অন্বেষা, কথামেলা প্রকাশনী, ঢাকা, ২০১২
  13. "কলকাতা'র নতুন গতি সাহিত্য পুরস্কার পেলেন তপন বাগচী"banglanews24.com। ২০১২-০১-০৭। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-১৩ 
  14. Alom, Zahangir (২০১৩-১০-০৬)। "Of grace, grandeur and melody"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-১৩ 
  15. প্রতিবেদক, নিজস্ব। "চুরুলিয়ায় চলছে নজরুল মেলা"Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-১৩ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  16. "খারাপ লেখক বেশি দিন টিকে থাকতে পারে না: তপন বাগচী"চিন্তাসূত্র। ২০২১-১০-৩১। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-১৩ 
  17. "বগুড়া লেখক চক্র পুরস্কার পেলেন ৫ জন"SAMAKAL। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-১৩ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]