গ্রামীণফোন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
গ্রামীণফোন লিমিটেড
ধরনপাবলিক
ডিএসইGP
আইএসআইএনBD0001GP0004
শিল্পটেলিযোগাযোগ
প্রতিষ্ঠাকাল২৬ মার্চ ১৯৯৭ (1997-03-26)
প্রতিষ্ঠাতামুহাম্মদ ইউনূস , ইকবাল কাদির
সদরদপ্তরজিপি হাউস, বসুন্ধরা সিটি,
ঢাকা
,
বাংলাদেশ
বাণিজ্য অঞ্চল
বাংলাদেশ
প্রধান ব্যক্তি
ইয়াসির আজমান ( সিইও)[১]
পণ্যসমূহমোবাইল টেলিফোনি, এজ, জিএসএম, জিপিআরএস, ইউএমটিএস, এইচএসডিপিএ, এইচএসইউপিএ, এইচএসপিএ, এইচএসপিএ+, ডিসি-এইচএসপিএ+, এফডিডি- এলটিই, ভিওএলটিই, ভিআইএলটিই
পরিষেবাসমূহমোবাইল টেলিফোনি, মোবাইল ইন্টারনেট, ডিজিটাল পরিষেবা
আয়
  • বৃদ্ধি ৳ ১৩২.৮ বিলিয়ন (২০১৮)
  • ৳ ১২৮.৪ বিলিয়ন (২০১৭)
[২]
  • বৃদ্ধি ৳৩৫.২ বিলিয়ন (২০১৮)
  • ৳২৭.৪ বিলিয়ন (২০১৭)
[২]
কর্মীসংখ্যা
২,৪১২[৩] (২০১৮)
মাতৃ-প্রতিষ্ঠান টেলিনর মোবাইল কমিউনিকেশনস এএস গ্রামীণ টেলিকম
ওয়েবসাইটgrameenphone.com

গ্রামীণফোন বাংলাদেশের একটি টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক সেবা প্রদানকারী কোম্পানি। এটি নরওয়েভিত্তিক কোম্পানি টেলিনরের মালিকানাধানী কোম্পানি যারা বাংলাদেশে টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদান করে থাকে। ১৯৯৭ সালের ২৬ মার্চ থেকে কার্যক্রম শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। নরওয়ের কোম্পানি টেলিনর গ্রামীণফোনের ৫৫.৮ শতাংশ শেয়ারের মালিক এবং বাংলাদেশের গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানিটির ৩৪% শেয়ারের মালিক। গ্রামীণফোন বাংলাদেশের অন্যতম মুঠোফোন সেবাদাতা কোম্পানি।[৪]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

গ্রামীণফোনের পূর্বের লোগো

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এক নিবন্ধ থেকে জানা যায়, ১৯৯৫ সালে গ্রামীণ ব্যাংক মোবাইল টেলিফোনের লাইসেন্স নেবার প্রাথমিক উদ্যোগ নেয়। তখন গ্রামীণ ব্যাংকের সহযোগী হন  ইকবাল কাদির। ইকবাল কাদির গণফোন ডেভলপমেন্ট করপোরেশন প্রতিষ্ঠা করেন। গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গ্রামীণ টেলিকম নামের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করা হয়। গ্রামীণ টেলিকম, গণফোন ও টেলিনর ১৯৯৫ সালে যৌথ সংঘ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অনুমতিপত্রের আবেদন করে। [৫] গ্রামীণফোন ১৯৯৬ সালের ২৮ নভেম্বর বাংলাদেশ ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে মোবাইল ফোন অপারেটর হিসেবে অনুমতিপত্র পায়। অনুমতিপত্র পাওয়ার পর গ্রামীণফোন ১৯৯৭ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে তার কার্যক্রম শুরু করে।

গ্রামীণ ব্যাংক পরিচালনা বোর্ড ১৬ নভেম্বর ১৯৯৪ সালে  গ্রামীণফোন নামের একটি পৃথক 'নট ফর প্রফিট' কোম্পানী স্থাপন করার প্রস্তাব অনুমোদন দেয়। ১৯৯৫ সালে গ্রামীণ টেলিকমকে সোশাল অ্যাডভান্সমেন্ট ফান্ডের মাধ্যমে ৩০ কোটি টাকা ঋণ প্রদাণ করা হয়। ১৯৯৮ সালে সরোস ইকোনোমিক ডেভলপমেন্ট ঢান্য থেকে ১০.৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দীর্ঘমেয়াদে ঋণ গ্রহণ করে। [৫]

উল্লেখ্য যে এ অপারেটরটি বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয়। এবং দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও উন্নত মানের সেবা প্রদান করে থাকে। বর্তমানে গ্রামীণ ফোনের গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ৭ কোটি। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে চালু করা হয় ৪জি সেবা। বর্তমানে বাংলাদেশের ৬৪ জেলায় ৪জি নেটওয়ার্কের সেবা প্রদানের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।

২০২২ সালের মার্চ মাসে, 'পরিবেশবান্ধব ডিজিটাল সিমের এখনই সময়' স্লোগানে গ্রামীণফোন বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো গ্রাহকদের জন্য এমবেডেড-সিম (ই-সিম) সামনে নিয়ে আসে।[৬]

প্রদেয় সেবা[সম্পাদনা]

গ্রামীণফোনের পূর্বের সিম কার্ড
গ্রামীণফোনের বর্তমান সিম কার্ড

গ্রামীণফোন মুঠোফোন সংক্রান্ত সকল ধরনের সেবা প্রদান করে। গ্রামীণফোন দুইটি নাম্বার ক্রমিকে সেবা প্রদান করে থাকে +৮৮০ ১৭******** এবং +৮৮০ ১৩******** গ্রামীণফোন এসএমএস বা লিখিত ক্ষুদে বার্তা, ভয়েস এসএমএস বা কথা বলা ক্ষুদে বার্তা, পুশ-পুল সার্ভিস, ভিএমএস, এবং ইন্টারনেট পরিসেবা , ওয়েলকাম টিউন, রিংব্যাক টোন, মিসড কল এলার্ট, কল ব্লক প্রভৃতি সেবা প্রদান করে থাকে। থ্রিজি ও ৪জি বা চতুর্থ প্রজন্মের ইন্টারনেট (তার বিহীন ব্রডব্যান্ড) সেবা চালু আছে প্রতিষ্ঠানটি। ২০১৫ সালের মার্চে বাংলা উইকিপিডিয়ার দশ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিনামূল্যে ব্যবহারের সুযোগ করে দিয়েছিল অপারেটরটি।


ডিজিটাল পরিসেবা[সম্পাদনা]

মাইজিপি এপ[সম্পাদনা]

মাই জিপি এপ গ্রামীণফোনের একটি স্ব-সেবা সমাধান যার মাধ্যমে গ্রাহক তার প্রয়োজনীয় সেবা নিতে পারেন ।

গ্রামীণফোন আলো[সম্পাদনা]

বিভিন্ন আইওটি সেবা প্রদান করা হয় গ্রামীণফোন আলো এর আওতায়।

বায়োস্কোপ[সম্পাদনা]

বায়স্কোপ বাংলাদেশ
ব্যবসার প্রকারপ্রকাশ্য
সাইটের প্রকার
ভিডিও স্ট্রিমিং, ইন্টারনেট টিভি
উপলব্ধবাংলা, ইংরেজি
সদরদপ্তরবসুন্ধরা, বারিধারা, ঢাকা
পরিবেষ্টিত এলাকাবাংলাদেশ
মালিকগ্রামীণফোন লিমিটেড
শিল্পস্ট্রীমিং
স্লোগানটিভি এখন পকেটে
ওয়েবসাইটbioscopelive.com
নিবন্ধনঐচ্ছিক, মুল্য প্রদেয়
চালুর তারিখসেপ্টেম্বর ২০১৬
বর্তমান অবস্থাসক্রিয়

বায়োস্কোপ, বাংলাদেশী ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম যা দর্শকদের কাছে সরাসরি টিভি দেখা এবং বিশেষ ভিডিও প্রদান করে। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিটা ওয়েব সাইট হিসেবে বায়োসকোপ চালু হয়েছিল, এবং তারপর ২০১৭ সালের আগস্টে বিটা অ্যাপ্লিকেশন হিসেবে এটি কায্যক্রম চালু করে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] বায়োসকোপ যৌথভাবে বাংলাদেশের প্রধান ডিজিটাল বিনোদন পরিসেবা প্রদানকারীবঙ্গ বিডি(স্টেলার ডিজিটাল লিমিটেড) এবং গ্রামীণফোন লিমিটেডের মালিকানাধীন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

এই পরিসেবাটি দর্শকদের বিনামূল্যে বিজ্ঞাপন, ৪০টির বেশি স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক টিভি চ্যানেল, চলচ্চিত্র, ভিডিও, সরাসরি খেলা দেখা এবং অন্যান্য ভিডিও সামগ্রী প্রদান করে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

ওয়েবসাইট ছাড়াও, অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ডিভাইসে অ্যাপ্লিকেশন হিসাবে বায়োসকোপ পাওয়া যায়। এর ওয়েবসাইট-ও উপলব্ধ এবং মানুষ কম্পিউটার এবং iOS ডিভাইসগুলি দেখতে পারেন।[৭]

বাংলাদেশের প্রধান ডিজিটাল বিনোদন পরিসেবা প্রদানকারীবঙ্গ বিডি(স্টেলার ডিজিটাল লিমিটেড) সম্প্রতি জাতীয় আইসিটি পুরস্কার, বেসিস কর্তৃক আয়োজিত, তাদের সার্ভিস 'বায়স্কোপ' জন্য ২০১৭ সালে সেরা ডিজিটাল বিনোদন পণ্যের জন্য পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

আগস্ট ২০১৭ এর দ্বিতীয় বিটা লঞ্চের মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যে গুগলের প্লে স্টোরের এটি ৩ মিলিয়নেরও বেশি ডাউনলোড এবং বাংলাদেশে ১ নম্বর এ্যাপস হয়েছে।[৮]

স্কিটো[সম্পাদনা]

স্কিটোর লোগো

স্কিটো গ্রামীণফোন একটি ডিজিটাল প্রিপেইড প্রোডাক্ট। তরুণ গ্রাহকদের জন্য এটি ২০১৮ সালে চালু করা হয়। পূর্বে তরুণদের জন্য গ্রামীণফোন ডিজুস চালু করলেও ধীরে ধীরে সেটি তার জৌলুস হারাতে থাকে। জিপির অন্যন্য প্যাকেজ থেকে স্কিটো তে মাইগ্রেশনের সুযোগ নেই তবে স্কিটো থেকে জিপির অন্যান্য প্রিপেইড ও পোস্টপেইড প্যাকেজ এ মাইগ্রেশনের সুযোগ রয়েছে।

সমালোচনা[সম্পাদনা]

গ্রামীণফোন বাংলাদেশের মোবাইল ফোন বাজারের ৫০ শতাংশেরও বেশি অংশ দখল করে আছে। ২০১৭ সালে গ্রামীণফোনের মোট আয় ১২,৮৪৩ কোটি টাকা। নিট আয় ২৭,৪২৩ কোটি টাকা। অন্যান্য ও অনির্দেশিত চার্জ কর্তনের জন্য নানা সময় প্রবল সমালোচনার মুখে সম্মুখীন হয়েছে গ্রামীণফোন।[৯][১০][১১][১২] অপারেটর পরিবর্তন সেবা চালুর পর সবচেয়ে বেশি গ্রামীণফোনের গ্রাহক অপারেটর পরিবর্তন করেছেন; অন্য অপারেটর এর তুলনায় ফোনে কথা বলা ও ইন্টারনেট সেবার খরচ অনেক বেশি নেয়া হলেও দাম সেবার খারাপ মান, অযাতিত কল ও বার্তা দিয়ে গ্রাহকদের বিরক্ত করা ও অযথা অনুমতি ব্যতীত সেবা চালু করে দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে অনেকে গ্রামীণফোন পরিহার করছেন।[১৩]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "MICHAEL FOLEY APPOINTED CEO OF GRAMEENPHONE"। ৮ মে ২০১৭। 
  2. "Annual Report 2017" (পিডিএফ)Grameenphone। সংগ্রহের তারিখ ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ 
  3. "Telenor Group – Grameenphone, Bangladesh"Telenor Group। ২২ আগস্ট ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ এপ্রিল ২০২১ 
  4. "Reference"। ২০০৭-০১-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-১০-০৪ 
  5. "গ্রামীণ ব্যাংকের সঙ্গে গ্রামীণ ফোনের সম্পর্ক" (পিডিএফ) 
  6. "ই-সিম চালু করছে গ্রামীণফোন"Bangla Tribune। ২০২২-০৩-০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৩-০১ 
  7. "GP Quietly Launched Video Streaming Service Bioscope"। futurestartup.com। Ibrahim Mahbub। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৬ 
  8. Enamul Haque Chowdhury। "Bongo wins National ICT Award for Bioscope Project"। daily-sun.com। 
  9. "সুবিধা শুধু ফোন কোম্পানিগুলোর"প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১২-২১ 
  10. "মিনিটপ্রতি কলচার্জ ১০ পয়সা করার দাবি"প্রিয়.কম। ২০১৯-০১-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০১-৩০ 
  11. "প্রতি জিবিতে ৩০০ গুণ মুনাফা করছে মোবাইল কোম্পানিগুলো"একুশে টিভি। ২০১৯-০১-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০১-৩০ 
  12. "কলড্রপ ও ডাটা ব্যবহারে অসন্তোষ বাড়ছে গ্রাহকদের"একুশে টিভি। ২০১৯-০১-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০১-৩০ 
  13. "মোবাইল অপারেটর কেন পরিবর্তন করছে গ্রাহকরা"বিবিসি। ২০১৮-১০-২৩। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০১-৩০ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]