ক্রীড়ায় মুসলিম নারী
মুসলিম নারীরা খেলাধুলার সাথে জড়িত তখন থেকেই, যখন ৭ম শতাব্দীর শুরুতে ইসলামের আবির্ভাব হয়েছিল এবং মুহাম্মদ তার স্ত্রী আয়িশার সাথে দৌড়ে অংশ নিয়েছিল।[২][৩][৪][৫] আধুনিক মুসলিম নারী ক্রীড়াবিদগন ভলিবল, টেনিস, অ্যাসোসিয়েশন ফুটবল, অসিচালনা, বাস্কেটবল সহ বিভিন্ন ক্রীড়াক্ষেত্রে সাফল্য দেখিয়েছে। ২০১৬ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে মুসলিম নারীরা বিভিন্ন ক্রীড়ায় ব্যাপক পরিধিতে অংশগ্রহণ করেছিল এবং ৪০জন নারী পদক জিতে নেয়।
তা সত্ত্বেও, মুসলিম নারীরা ক্রীড়া অঙ্গনের নিম্ন পর্যায়, স্কুল বা অপেশাদার ক্রীড়া থেকে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় প্রতিনিধিত্ব করছে। এর কারণগুলো হতে পারে পারিবারিক বা সাংস্কৃতিক চাপ, অনুষ্ঠান ও উপযুক্ত সুযোগ সুবিধা থাকা, হিজাব নিষিদ্ধকরণ, ইসলামী মাথায় কাপড়। মুসলিম নারীরা ক্রীড়াকে নারী ক্ষমতায়নের মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করছে, স্বাস্থ্য ও ভালথাকা, নারী অধিকার এবং শিক্ষার প্রতিও কাজ করছে।
সমাজে নারী |
---|
|
পেশাদার ক্রীড়া
[সম্পাদনা]অ্যাসোসিয়েশন ফুটবল
[সম্পাদনা]বেশকিছু ওআইসি ভুক্ত দেশ গত কয়েক বছর ধরে প্রধান অ্যাসোসিয়েশন ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে। উয়েফার সদস্যভূক্ত আজারবাইজান ২০১২ ফিফা অনূর্ধ্ব-১৭ মহিলা বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল এবং প্রতিযোগিতার জন্য গড়ে প্রতি ম্যাচে রেকর্ড নথিভূক্ত হয়েছিল (২০১৪ সালে কোস্টারিকা কর্তৃক ভাঙা হয়েছিল)। এ বিশ্বকাপের অফিসিয়াল মাস্কাট ছিল শীর্ষ শীর্ষ বালিকা (Top Top Girl), গালে আজারবাইজানের পতাকা অঙ্কিত একটি বালিকা। ২০১৬ ফিফা অনূর্ধ্ব-১৭ মহিলা বিশ্বকাপ জর্দানে অনুষ্ঠিত হয়, যা ছিল মধ্যপ্রাচে অনুষ্ঠিত প্রথম কোন মহিলাদের ফুটবল বিশ্বকাপ।
উপরন্তু, ওআইসিভূক্ত দেশ এবং উল্লেখযোগ্য মুসলিম বসবাসকারী এশীয় অঞ্চলে তিনটি মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপের চালু করেছে; দক্ষিণ এশিয়ায় সাফ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপ (প্রথম চালু হয় ২০১০ সালে), দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় এএফএফ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপ (২০০৬), পশ্চিম এশিয়ায় পশ্চিম এশীয় ফুটবল ফেডারেশন চ্যাম্পিয়নশিপ (২০০৫)।
মুসলিম মহিলা ফুটবলারদের একটি সংখ্যা পশ্চিম ইউরোপের বিভিন্ন উয়েফা জাতীয় দলে বিশিষ্ট খেলোয়াড় হিসাবে খেলে। তাদের একজন ফাতমীর আলুশি, যিনি জার্মান জাতীয় দলের হয়ে চীনের অনুষ্ঠিত ২০০৭ ফিফা মহিলা বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেছিল এবং উয়েফা ইউরোপীয় মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপের দুইবারের চ্যাম্পিয়ন (২০০৯ ও ২০১৩)। আরেকজন ফ্রান্স মহিলা জাতীয় দলের খেলোয়াড় জেসিকা হোয়ারা।
বাস্কেটবল
[সম্পাদনা]বাস্কেটবলের আন্তর্জাতিক পরিচালনা পর্ষদ ফিবা, অন্যান্য অনেক ক্রীড়া সংস্থার থেকে আলাদা, যে হিজাবের উপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা বজায় রাখে। রেগুলেশনে পাচঁ ইঞ্চির বেশি পাগড়ি ব্যবহার নিষিদ্ধ, যাতে অংশগ্রহণকারী হিজাব পরিহিত নারীরা অন্তভুর্ক্ত নয়। এনসিএএ খেলোয়াড় ইন্দিরা কালজো এবং বিলকিস আব্দুল কাদিরের নেতৃত্বে একটি সামাজিক আন্দোলনের ফলে, সম্প্রতি এ নীতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে শত শত হাজার হাজার ব্যক্তির পূনর্বিবেচনার আহবান পেয়েছে। ফেলো খেলোয়াড় এজডিহার আব্দুলমুলা, আসমা আলবাদাবি, কি কে রাফিউ, রাইসা আরিবাতুল, রাবিয়া পাশা, মারভে সাপ্সি ও মনোহারি বেরহানর এ নিষেধাজ্ঞার আবেদন বাতিলের কথা বলেছিলেন। কালজো ও আব্দুল কাদির উভয়েই উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ বাস্কেটবলে যথেষ্ট সাফল্য অর্জন করেছিল। আব্দুল কাদির ম্যাসাচুয়েসটস গাটোরেড ২০০৯ বর্ষসেরা খেলোয়াড় ছিল, উচ্চ বিদ্যালয় সময়ে তার ৩০০০ বেশি স্কোর ছিল (রাজ্যের ছেলে মেয়ে উভয় রেকর্ডের জন্য) এবং মেমফিস বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন সময়ে সি-ইউএসএ অল অ্যাকাডেমিক দলে তার নাম ছিল। কালজো জুকো অল আমেরিকান খেলোয়াড় ছিল, যে শুধুমাত্র সে ২০ এর পর দেরীতে হিজাব পড়া শুরু করেছিল। উভয় নারী শুধুমাত্র তাদের ধর্ম বিশ্বাসের ফলে পেশাদার বাস্কেটবলে ক্যারিয়ার গড়তে সফল হননি।
ক্রিকেট
[সম্পাদনা]আইসিসি মহিলা ক্রমমান অনুসারে শীর্ষ ১০টি দলের মধ্যে দুটি মুসলিম সংখ্যা গরিষ্ঠ দেশ (পাকিস্তান ও বাংলাদেশ) তাদের অবস্থান ধরে রেখেছে এবং বাংলাদেশ ২০১৪ মহিলা বিশ্ব টুয়েন্টি২০ এর আয়োজন করেছিল (ক্রিকেটের দুটি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের একটি)। এছাড়াও ভারত (নুজহাত পারভিন) ও দক্ষিণ আফ্রিকা (শাবনিম ইসমাইল) জাতীয় দলে মুসলিম নারী প্রতিনিধিত্ব করে। ইংল্যান্ডে, মুসলিম নারীদের ক্রিকেটে মুসলিম পুরুষদের সমান মাত্রায় অনুপ্রবেশ নেই (যাদের কিছু ইংল্যান্ড আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিনিধিত্ব করেছে)। ২০১২ সালের উইমেন্স কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথম একমাত্র মুসলিম খেলোয়াড় অংশগ্রহণ করেছিল, তখন নর্থাম্পটনশায়ারের হয়ে সালমা বি এর অভিষেক হয়েছিল।
রক্ষনশীল মুসলিম সমাজে, নমনীয় পোশাক (লম্বা ট্রাউজার ও লম্বা হাতা টি শার্ট) এবং শারীরিক বাহ্যিকতার অভাবের কারণে অন্যান্য খেলার চেয়ে ক্রিকেট কে মেয়েদের জন্য আরো উপযুক্ত মনে করা হয়। ২০০৯ সালে ইরান জাতীয় মহিলা ক্রিকেট দল গঠিত হয় এবং ২০১০ সালে ক্রিকেটার নারগিস লাফুতি সিঙ্গাপুরে অনূর্ধ্ব-১৯ প্রতিযোগিতার আম্পায়ার হিসাবে ভ্রমণ করেছিল এবং সে প্রথম ইরানি নারী হিসাবে একাই কোন আন্তর্জাতিক ক্রীড়া অনুষ্ঠানে ভ্রমণ করেছিল। আফগানিস্তানে মহিলাদের ক্রিকেট নানা সমস্যা দিয়ে এগোচ্ছে, নারীদের ক্রীড়া বিষয়ে সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গি, যাতে নারী খেলোয়াড়দের বিভিন্নভাবে অপমানের সম্মুখীন হতে হয়। জাতীয় দল ২০১০ সালে গঠিত হলেও ২০১৪ সাল পর্যন্ত তা প্রায় অকার্যকর ছিল।
অসিচালনা
[সম্পাদনা]অসিক্রীড়ক ইবতিহাজ মুহাম্মাদ প্রথম মার্কিন প্রতিযোগী, যে ২০১৬ সালে অলিম্পিক গেমসে হিজাব পড়ে অংশগ্রহণ করেছিল। সে এ খেলাটি বেছে নেয় কারণ কিছু খেলার মধ্যে এটি ছিল একটি যে খেলায় ইউনিফর্মের পরিবর্তন ছাড়া অংশগ্রহণ করতে পারে। তামের্রা গ্রিফ্ফিনের সাথে একটি সাক্ষাৎকারে সে বলেছিল যে এ বৈচিত্র্যময় গোলকের জন্য সে একটি চালিকাশক্তি হতে আশাবাদী, যা ছিল "একটি সাদা খেলাধুলা সর্বদা টাকাওয়ালা ব্যক্তিদের জন্য সংরক্ষিত ছিল।" ২০১৬ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে প্রবেশের সময় মুহাম্মদের বিশ্ব ক্রমমান ছিল ৮ম, কিন্তু ১৬ জনের পর্বে সে ফরাসি সিসেলিয়া বিরদেরের নিকট পরাজিত হয়।
তিউনিসিয়ান অসিক্রীড়ক আইনেস বুউবাকরি ২০১৬ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে ব্রোঞ্জ পদক জিতে, সে পদক পর্বে আইদা শানায়েভাকে পরাজিত করে। সে তার পদক সকল আরব নারীদের উৎসর্গ করেন, বলেন যে তার এ বিজয় সকলের জন্য বার্তা হতে পারে যে "নারী অস্তিত্ব এবং সমাজে তাদের জায়গা তাদেরই রয়েছে"।
ফিগার স্কেটিং
[সম্পাদনা]২০১৭ সালে, আমিরাতের ফিগার স্কেটার জহরা লারী দেশের নারী পুরুষ উভয় লিঙ্গের মধ্যে প্রথম স্কেটার হিসাবে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় প্রতিনিধিত্ব করে। সে নিজেকে ক্রীড়ায় মুসলিম নারীদের অংশগ্রহণের জন্য একজন পথিকৃৎ হিসেবে দেখছেন। শীতকালীন এশিয়ান গেমসের একটি সাক্ষাৎকারে, সে বর্ণনা করে হিজাব পড়া এবং পুরা শরীর ঢেকে রাখার জন্য পয়েন্ট কাটা সহ অনেক "অনেক বাধা" তার সাফল্য অর্জনের পথে বাধা হয়ে দাড়িয়ে ছিল।
আইস হকি
[সম্পাদনা]আবুধাবির স্থানীয় ফাতিমা আল আলী সংযুক্ত আরব আমিরাত জাতীয় দলের অন্যতম খেলোয়াড়। ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে, "সবার জন্য হকি" প্রচারণা ক্যাম্পেইনে অংশ হিসাবে, সে জাতীয় হকি লীগের ওয়াশিংটন ক্যাপিটালসের হয়ে অংশগ্রহণ করে এবং জুনিয়র উইমেন্স হকি লীগের ওয়াশিংটন গর্ব। সে আশাবাদী যে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অন্যান্য মুসলিম নারীরাও হকি খেলায় অনুপ্রাণিত হবে। এছাড়াও ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তে সে ওয়াশিংটন ক্যাপিটালস এবং ডেট্রয়েট রেড উইংয়ের মধ্যকার একটি আনুষ্ঠানিক খেলায় অংশগ্রহণ করে।
মার্শাল আর্ট
[সম্পাদনা]২০১৬ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে বিভিন্ন মার্শাল আর্ট ক্রীড়ার বিভিন্ন ইভেন্টে অনেক মুসলিম নারী পদক জিতেছে। মাজলিন্ডা কেলমেন্দি জুডোর ৫২ কেজি ওজন শ্রেণীতে স্বর্ণ পদক জিতে, সে ছিল তার দেশ কসোভোর প্রথম অলিম্পিক পদক বিজয়ী ক্রীড়াবিদ। আজারবাইজানের মারিয়া স্টাজনিক ৪৮ কেজি কুস্তিতে রৌপ্য পদক এবং ইরানি কিমিত আলিজাদেহ জেনুরিন ও মিশরের হেদায়াত মালেক ৫৭ তায়েকোয়ান্দোতে ব্রোঞ্জ পদক জিতেছে। অন্যান্য ব্রোঞ্জ পদক বিজয়ীদের মধ্যে আজারবাইজানের পাতিমাত অ্যাবাকারোভা (৪৯ কেজি তায়কোয়ান্দোতে), তিউনিসিয়ার মারওয়া আমরি (৫৮ কেজি কুস্তিতে) এবং তুরস্কের নুর তাতার (৬৭ কেজি তায়কোয়ান্দোতে) অন্যতম।
পর্বতারোহণ
[সম্পাদনা]২০০৫ সালে ইরানি ফারখোনদেহ সাদেগ এবং লায়েলা বাহরামি প্রথম মুসলিম নারী হিসাবে মাউন্ট এভারেস্ট জয় করে। তাদের এ কৃতিত্ব তারা সকল মুসলিম নারীদের প্রতি নিবেদন করেছে, বলেছে, "প্রায়ই মানুষই মনে করে মুসলিম নারীরা ঘরের মধ্যে আবদ্ধ রয়েছে। এটি বিশ্বকে দেখানোর একটি সুযোগ যে আমাদের দ্বারা সবই সম্ভব"। ২০১৩ সালে রাহা মুহার্রক কম বয়সী ও প্রথম সৌদি নারী হিসাবে এভারেস্ট জয় করে।
টেনিস
[সম্পাদনা]বেশকিছু ওআইসির সদস্য দেশ পেশাদার পর্যায়ের টেনিস প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। ২০১৬ সালের উইমেন্স টেনিস অ্যাসোসিয়েশন (ডব্লিউটিএ) ট্যুর ইভেন্টসমূহ ছিল মালয়েশিয়া (মালয়েশিয়া ওপেন, কুয়ালালামপুর; ২০১০ সালে প্রবর্তিত হয়), মরক্কো (গ্রান্ড প্রিক্স সার লা প্রিন্সেস লাল্লা মারিয়াম, রাবাত; ২০০১), কাতার (কাতার ওপেন, দোহা; ২০০১), তুরস্ক (ইস্তান্বুল কাপ, ইস্তান্বুল; ২০০৫), সংযুক্ত আরব আমিরাত (দুবাই টেনিস চ্যাম্পিয়নশিপ, ১৯৯৩) এবং উজবেকিস্তান (তাশখন্দ ওপেন, ১৯৯৯)। ওআইসি সদস্য দেশসমূহের একটি অংশ দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়নের অভিজ্ঞতা এবং পূর্বের অভূতপূর্ব সাফল্যের কারণে আরও সুযোগ সুবিধা সমৃদ্ধ টেনিস প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে।
উল্লেখযোগ্য মুসলিম নারী টেনিস খেলোয়াড়দের মধ্যে আরাভানি রেজাই ও সানিয়া মির্জা অন্যতম। রেজাই একজন ইরানি বংশোদ্ভূত ফরাসি খেলোয়াড়, যে ডব্লিউটিএ শিরোপা চারবার জিতেছে এবং তার কর্মজীবনে একক সর্বোচ্চ ক্রমমান ছিল ১৫। সানিয়া প্রাথমিকভভাবে একজন ১ নম্বর দ্বৈত খেলোয়াড়, ২০১৫ সালে সে ৪০টির বেশি শিরোপা জিতেছে। সে তার দেশ ভারতের মুসলিম আলেমদের কর্তৃক বেশ সমালোচনার সম্মুখীন হয়, তারা তার প্রচলিত টেনিস আউটফিট পোশাক পরিধানকে অশালীন হিসাবে নিন্দা করেন।
ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড
[সম্পাদনা]২০১৬ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে প্রথম মার্কিন নারী হিসাবে ডালিয়াহ মুহাম্মাদ ৪০০ মিটার হার্ডলসে স্বর্ণ পদক জিতে। মুহাম্মাদের পিতামাতা তার সাফল্যকে তার "মুসলিম বিশ্বাস, শৃঙ্খলা ও প্রতিভার" স্বীকৃতি বলে মনে করেন। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য মুসলিম নারী ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড ক্রীড়াবিদের মধ্যে এনাস মনসুর, দিনা এল তাবা, শিনুনা সাবাহ আল হাবসি, কারিমন আবুলিজাদায়েল, কামিয়া ইউসুফি ও সুলাইমান ফাতিমা দাহমান অন্যতম।
ভলিবল
[সম্পাদনা]তুরস্ক ও আজারবাইজান ২০১০ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে এফআইভিবি মহিলা ভলিবল ক্লাব বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের সাতটি ইভেন্টের পাঁচটিতে জয়ী হয়েছে। উভয় দেশ ইসলামী সম্মেলন সংস্থার (ওআইসি) সদস্য। একই সময়ে, তুরস্কের ক্লাব ২০১০ - ২০১৫ এর মধ্যে সিইভি উইমেন্স চ্যাম্পিয়নস লীগের ছয়টির মধ্যে পাঁচটিতে জয়লাভ করে।
তুরস্ক জাতীয় মহিলা ভলিবল দল ২১শ শতাব্দীতে বেশ সাফল্য অর্জন করেছে। তারা ২০০৫ ভূমধ্যসাগরীয় গেমসে স্বর্ণ পদক জিতেছে, ২০১৪ ইউরোপীয় লীগে প্রথম স্থান অধিকার করে এবং ২০১৫ সালের উদ্বোধনী ইউরোপীয় গেমসের ফাইনালে পোল্যান্ডকে ৩ - ০ ব্যবধানে পরাজিত করে। ওআইসির সদস্য দেশসমূহের মধ্যে অন্যান্য উল্লেখযোগ্য মহিলা ভলিবল দল হল আজারবাইজান, আলজেরিয়া (যারা ২০০৯ আফ্রিকান চ্যাম্পিয়নশিপ বিজয়ী ও ২০১১ অল আফ্রিকানস গেমসে স্বর্ণ পদক বিজয়ী) এবং তিনবারের আফ্রিকান চ্যাম্পিয়নশিপ তিউনিসিয়া।
২০১৬ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে মিশরীয় বীচ ভলিবল খেলোয়াড় দয়া আলগোবাসি তথাকথিত ছোট পোশাকের পরিবর্তে লম্বা পাজামা, লম্বা হাতা টিশার্ট এবং হিজাব পড়ে অংশগ্রহণ করে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছিল। যদিও সে ও তার সহযোদ্ধা নাদা মেওয়াদ প্রতিযোগিতার নকআউট পর্বে অগ্রসর হতে পারেনি, তবুও সে এই ইভেন্টকে সংখ্যালঘুদের ক্রীড়ায় অংশগ্রহণ এবং দৃষ্টিভঙ্গির অগ্রগতির একটি পরিবর্তন হিসাবে দেখছেন।
ভারোত্তোলন
[সম্পাদনা]২০১১ পর্যন্ত, ভারোত্তোলকদের কনুই ও হাঁটু খোলা রাখার প্রবিধান থাকায় রক্ষণশীল মুসলিম ক্রীড়াবিদগন এই আভিজাত্য ক্রীড়ায় অংশগ্রহণে বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে। মার্কিন ভারোত্তোলক কুলসুম আব্দুল্লাহ আন্তর্জাতিক ভারোত্তোলন ফেডারেশনের কাছ বিস্তারিত প্রতিবেদন সহ আবেদন করে যে, প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকালীন সময়ে তাকে তার হাত, পা ও মাথা ঢেকে রাখার অনুমতি দেওয়া উচিত। মার্কিন অলিম্পিক কমিটি, মুসলিম কর্মী ও আইনাজ্ঞদের সহযোগিতায় সে রেগুলেশন উল্টাতে সক্ষম হয়েছিল এবং পরবর্তী বছরে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণ করেছিল। ২০১৬ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে কাজাখস্তানের ঝাজিরা ঝাপ্পারকুল, ইন্দোনেশিয়ার সেরী ওয়াগুনি আগুস্তানি, মিশরের সারা আহমেদসহ বেশ কিছু মুসলিম নারী স্বর্ণ পদক জিতেছে।
অপেশাদার ক্রীড়া
[সম্পাদনা]গবেষকরা গবেষণায় খুজেঁ পেয়েছেন যে, মূলত মুসলিম প্রধান এবং অ-মুসলিম দেশগুলির মধ্যে মুসলিম মেয়েদের স্কুলের শারীরিক শিক্ষা ক্লাস ও স্কুল ক্রীড়াগুলিতে অংশগ্রহণের হার খুবই কম।
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Patrick Johnston (আগস্ট ১৯, ২০১৬)। "Kimia Alizadeh Zenoorin Becomes The First Iranian Woman To Win An Olympic Medal"। Reuters/Huffington Post।
- ↑ Nasr, Seyyed Hossein (২০০৪)। The Heart of Islam: Enduring Values for Humanity। New York: HarperOne। পৃষ্ঠা 278–279। আইএসবিএন 978-0-06-073064-2।
- ↑ Al-Hassani, Salim (Spring ২০১২)। "A 1000 Years Amnesia: Sports in Muslim Heritage"। MuslimHeritage.com। Foundation for Science, Technology and Civilisation। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুন ২০১৫।
- ↑ Wanderi, Mwangi Peter (২০১১-০১-০১)। The Indigenous Games of the People of the Coastal Region of Kenya: A Cultural and Educational Appraisal (ইংরেজি ভাষায়)। African Books Collective। পৃষ্ঠা 122। আইএসবিএন 9789994455560।
- ↑ "Regarding Foot Races : Book of Jihad (Kitab Al-Jihad) : Sunan Abi Dawud"। sunnah.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১১-৩০।