কাৎচল দ্বীপ
ডাকনাম: তিহান্যু | |
---|---|
ভূগোল | |
অবস্থান | বঙ্গোপসাগর |
স্থানাঙ্ক | ৭°৫৭′ উত্তর ৯৩°২৩′ পূর্ব / ৭.৯৫° উত্তর ৯৩.৩৮° পূর্ব |
দ্বীপপুঞ্জ | নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ |
সংলগ্ন জলাশয় | ভারত মহাসাগর |
মোট দ্বীপের সংখ্যা | ১ |
প্রধান দ্বীপসমূহ |
|
আয়তন | ১৪৬.৫ বর্গকিলোমিটার (৫৬.৬ বর্গমাইল)[১] |
দৈর্ঘ্য | ১৭ কিমি (১০.৬ মাইল) |
প্রস্থ | ১৬ কিমি (৯.৯ মাইল) |
তটরেখা | ৮৩.৩ কিমি (৫১.৭৬ মাইল) |
সর্বোচ্চ উচ্চতা | ২২৭ মিটার (৭৪৫ ফুট)[২] |
প্রশাসন | |
জেলা | নিকোবর |
দ্বীপপুঞ্জ | নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ |
ভারতের মহকুমা | নানকৌড়ি মহকুমা |
বৃহত্তর বসতি | মিল্ডেরা (জনসংখ্যা ১২৫০) |
জনপরিসংখ্যান | |
জনসংখ্যা | ২৬৮৫ (২০১১) |
জনঘনত্ব | ১৮.৩ /বর্গ কিমি (৪৭.৪ /বর্গ মাইল) |
জাতিগত গোষ্ঠীসমূহ | হিন্দু, নিকোবরী |
অতিরিক্ত তথ্য | |
সময় অঞ্চল | |
পিন | ৭৪৪৩০১ |
টেলিফোন কোড | ০৩১৯২ |
আইএসও কোড | ইন-এএন-০০[৩] |
অফিসিয়াল ওয়েবসাইট | www |
স্বাক্ষরতা | ৮৪.৪% |
গ্রীষ্মের গড় তাপমাত্রা | ৩২.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৮৯.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট) |
শীতের গড় তাপমাত্রা | ২৮.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৮২.৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট) |
যৌন অনুপাত | ♂/♀ |
আদমশুমারি কোড | ৩৫.৬৩৮.০০০২ |
সরকারি ভাষাসমূহ | হিন্দি, ইংরেজি, তামিল কার (স্থানীয়) |
কাৎচল (নিকোবরী: তিহান্যু) ভারতের নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের একটি দ্বীপ।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]কাৎচল দ্বীপ আগে তিহান্যু নামে পরিচিত ছিল। দূরবর্তী অবস্থান এবং বিশ্বের অন্যান্য অংশ সম্বন্ধে অজ্ঞ থাকার কারণে, বহিরাগতরা দীর্ঘদিন ধরে দ্বীপপুঞ্জের নিরীহ অধিবাসীদেরকে অর্থনৈতিকভাবে শোষণ করেছিল। তাদের অর্থনৈতিক শোষণ বন্ধ করতে, ১৯৫৭ সালের ২রা এপ্রিল ভারত সরকার নিকোবর দ্বীপপুঞ্জকে একটি আদিবাসী উপজাতীয় রিজার্ভ অঞ্চল (এটিআরএ) ঘোষণা করে। এর ফলে নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ বহিরাগতদের কাছে অগম্য হয়ে গেছে এবং বর্তমানে এমনকি ভারতীয় নাগরিকদেরও দ্বীপগুলি পরিদর্শন করার জন্য একটি বিশেষ উপজাতীয় ছাড়পত্রের প্রয়োজন। শুধু কাৎচল দ্বীপপুঞ্জে কর্মরত সরকারি কর্মচারীদেরই (বহিরাগত) দ্বীপে থাকার অনুমতি রয়েছে।
প্রাচীন আন্তর্জাতিক সমুদ্র বাণিজ্যপথ বরাবর অবস্থানের কারণে নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ বহু শতাব্দী ধরে সমস্ত ধরনের বাহ্যিক প্রভাব সহন করেছে, এবং এই অঞ্চলটি প্রাচীনকাল থেকেই নাবিক এবং পণ্ডিতদের কাছে পরিচিত। এইজন্য, দ্বীপগুলি বরাবর বহিরাগত প্রভাব পেয়েছে, যা বহু শতাব্দী ধরে তাদের সংস্কৃতি এবং জাতিকে প্রভাবিত করেছে। সাম্প্রতিক ইতিহাস অনুযায়ী, ১০৫৯ খ্রিস্টাব্দে প্রাপ্ত একটি প্রত্নতাত্ত্বিক শিলালিপিতে বলা হয়েছে যে নিকোবর একসময় সমুদ্রপারের তাঞ্জোরের তামিল চোল রাজ্যের অংশ ছিল। ১৮৬৯ সালে, ব্রিটিশ এসে ডেনীয়দের থেকে নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের দখল নিয়েছিল এবং তাদের আধুনিক ভারতের একটি অংশে পরিণত করেছিল।
২০০০ সালের ১লা জানুয়ারি সূর্যোদয়ের সময়, কাৎচল দ্বীপ খবরের শিরোনামে উঠে এসেছিল। সহস্রাব্দের প্রথম সূর্যোদয়ের এক ঝলক দেখার জন্য বিশ্বজুড়ে অনেক ধনী এবং বিখ্যাত ব্যক্তিরা এখানে জড়ো হয়েছিলেন।[৪]
২৬শে ডিসেম্বর ২০০৪ সালের সুনামিতে সময় কাৎচল দ্বীপ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সুনামি দ্বীপটিকে ধ্বংস করে দিয়েছিল, এখানকার অধিবাসীদের আর্থ-সামাজিক অবস্থান বিঘ্নিত হয়েছিল। আন্দামান এবং নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের নিখোঁজ ৫ হাজার লোকের মধ্যে (সরকারী মতে ৫০০০ - প্রকৃতপক্ষে আরও বেশি), ১,৫৪৯ জন কাৎচলের বাসিন্দা বলে অনুমান করা হয়। স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে সহায়তার জন্য, বিশালসংখ্যক সরকারি কর্মচারীকে, সুনামি দিনের পূর্বে সরকারিভাবে এই দ্বীপে আনা হয়েছিল। সরকারের সিংহভাগ কর্মীকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি, প্রদত্ত কর্মী আবাসগুলি সমুদ্রের তীরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত ছিল এবং খুব কম লোকই পার্শ্ববর্তী পাহাড়ের দিকে পালাতে সক্ষম হয়েছিল। একটি উদাহরণ উদ্ধৃত করার জন্য - ২৬-১১-২০০৪ এর আগে এখানে কাজ করতে আসা ৪৭ জন শিক্ষকের একজনকেও জীবিত পাওয়া যায়নি। কিছু লোক নারকেল গাছের ওপরে উঠে বাঁচতে সক্ষম হয়েছিল। নথিভুক্ত ৩৪৪ জন মৃতের মধ্যে, শুধুমাত্র একটি মৃতদেহ শনাক্ত করা গিয়েছিল। হয় মৃতদেহগুলি পচে গিয়ে বিকৃত হয়ে গিয়েছিল বা তাদের দাবি করার মতো কেউ বেঁচে ছিল না।[৫]
ভূগোল
[সম্পাদনা]এই দ্বীপটি ১৪৬.৫ কিমি২ (৫৬.৬ মা২) অঞ্চল নিয়ে বিস্তৃত। এটি মূল ভূখণ্ড (ভারত) থেকে প্রায় ১,৬০০ কিমি (৯৯০ মা) দূরে এবং রাজধানী পোর্ট ব্লেয়ারের ৩০৫ কিমি (১৯০ মা) দক্ষিণে অবস্থিত। কাৎচল দ্বীপের সর্বোচ্চ চূড়াটি ২২৭ মি (৭৪৫ ফু) উঁচু।[২] কাৎচলের পাহাড়গুলি ক্যালকেরিয়াস বেলেপাথর এবং মার্বেল স্লেট দ্বারা গঠিত, এবং কাৎচলের ক্রান্তীয় বনে, প্রচুর অজগর, কালো বানর এবং শূকর পাওয়া যায়।
জনসংখ্যার উপাত্ত
[সম্পাদনা]কাৎচল দ্বীপটি আঞ্চলিক ও অ-আদিবাসী উভয়েরই বাসস্থান। এই দ্বীপটিতে নিকোবরী উপজাতি এবং অভিবাসী তামিলরা (১৯৬৪ সালের শাস্ত্রী-শ্রীমাভো বন্দরনায়েকে চুক্তির অধীনে রাবার গাছের কর্মী) বসবাস করছে। সুনামির পরে প্রায় সমস্ত উপজাতি প্রধান এবং তাদের উত্তরাধিকারীরা নিহত হয় এবং উপজাতিরা কার্যত নেতৃত্বহীন হয়ে পড়ে। এই দ্বীপটি কেন্দ্রীয় দ্বীপপুঞ্জের বৃহত্তম দ্বীপ এবং এখানে ৩৫টি গ্রাম ছিল (যার মধ্যে ছয়টি প্রধান গ্রাম ছিল)। সুনামির পরে, আদিবাসীরা পুনর্গঠিত হয়েছিল এবং দ্বীপে পাঁচটি উপজাতি গ্রাম গঠন করেছিল, সেগুলি হল ই-ওয়াল, মীনাক্ষী রাম নগর, জাপান টিক্রে, সাল্লো টিক্রে, এবং উচ্চ কাৎচল। মিলদেরা দ্বীপের অপর একটি গ্রাম যেখানে অ-আদিবাসী লোকেরা (প্রবাসী তামিল এবং রাঁচি সম্প্রদায়) বাস করে।[৬] কাৎচল দ্বীপে যে ভাষায় কথা বলা হয়, সেগুলি হল নিকোবরী, হিন্দি, তামিল, তেলুগু এবং সাঁওতালি।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Islandwise Area and Population - 2011 Census" (পিডিএফ)। Government of Andaman। ২৮ আগস্ট ২০১৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ নভেম্বর ২০১৯।
- ↑ ক খ Sailing Directions (Enroute), Pub. 173: India and the Bay of Bengal (PDF)। Sailing Directions। United States National Geospatial-Intelligence Agency। ২০১৭। পৃষ্ঠা 293।
- ↑ Registration Plate Numbers added to ISO Code
- ↑ "The Tribune"। সংগ্রহের তারিখ ১৪ নভেম্বর ২০১৯।
- ↑ "Life as Medical Officer @ Katchal-Post Tsunami"। ২০১৩-০১-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১১-১৪।
- ↑ Kathchal Map
উইকিভ্রমণ থেকে কাৎচল দ্বীপ ভ্রমণ নির্দেশিকা পড়ুন।