কর্ম কারক
বাংলা ব্যাকরণ |
---|
ইতিহাস |
ধ্বনিতত্ত্ব |
রূপতত্ত্ব/শব্দতত্ত্ব |
বাক্যতত্ত্ব |
যতিচিহ্ন |
অর্থতত্ত্ব |
ছন্দ ও অলংকার |
ব্যাকরণ শাস্ত্রে, কর্ম কারক বলতে বোঝায় যাকে আশ্রয় করে কর্তা ক্রিয়া সম্পন্ন করে। "কী", "কাকে" দ্বারা প্রশ্ন করলে উত্তরে কর্ম কারক পাওয়া যায়[১]যাকে আশ্রয় করে কর্তা-ক্রিয়া সম্পাদন করে তাকে কর্ম কারক বলে।
কর্ম
কর্ম দুই প্রকার: মুখ্য কর্ম ও গৌণ কর্ম।
মুখ্য কর্ম
একটি বাক্যে সমাপিকা ক্রিয়াকে 'কী' দিয়ে প্রশ্ন করলে যা উত্তর পাওয়া যায়, তা হল মুখ্য কর্ম।
উদাহরণ — 'বাবা আমাকে একটি কলম কিনে দিয়েছেন।' এই বাক্যে সমাপিকা ক্রিয়া হল 'কিনে দিয়েছেন'। সমাপিকা ক্রিয়াকে 'কী' দিয়ে প্রশ্ন করলে উত্তর পাওয়া যায় 'কলম'। তাই, এই বাক্যে মুখ্য কর্ম হল 'কলম'।
সাধারণত গৌণ কর্ম বস্তুবাচক হয়। মুখ্য কর্মে হয় না। এছাড়াও, সাধারণত কর্ম কারকের মুখ্য কর্মে বিভক্তি যুক্ত হয় না।
গৌণ কর্ম
একটি বাক্যে সমাপিকা ক্রিয়াকে 'কাকে' দিয়ে প্রশ্ন করলে যা উত্তর পাওয়া যায়, তা হল গৌণ কর্ম।
উদাহরণ — 'বাবা আমাকে একটি কলম কিনে দিয়েছেন।' সমাপিকা ক্রিয়াকে 'কাকে' দিয়ে প্রশ্ন করলে উত্তর পাওয়া যায় 'আমাকে। তাই, এই বাক্যে মুখ্য কর্ম হল 'আমাকে'।
সাধারণত গৌণ কর্ম প্রাণিবাচক হয়ে থাকে। এছাড়াও, সাধারণত গৌণ কর্মে বিভক্তি যুক্ত হয়।
প্রকারভেদ
কর্ম কারক ৪ প্রকার:
- সকর্মক ক্রিয়ার কর্ম: নাসিমা ফুল তুলছে।
- প্রযোজক ক্রিয়ার কর্ম: ছেলেটিকে বিছানায় শোয়াও।
- সমধাতুজ কর্ম: ক্রিয়াটি যে ধাতু নিষ্পন্ন, কর্মটিও সেই ধাতুনিষ্পন্ন হলে, তাকে সমধাতুজ কর্ম বলে। যেমন:- খুব এক ঘুম ঘুমিয়েছি।
- উদ্দেশ্য ও বিধেয় কর্ম: দ্বিকর্মক ক্রিয়ার দুটি দুটি পরস্পর অপেক্ষিত কর্মপদ থাকলে প্রধান কর্মপদটিকে বলা হয় উদ্দেশ্য কর্ম এবং অপেক্ষিত কর্মটিকে বলা হয় বিধেয় কর্ম। যেমন:
- দুধকে (উদ্দেশ্য কর্ম) মোরা দুগ্ধ (বিধেয় কর্ম) বলি, হলুদকে (উদ্দেশ্য কর্ম) বলি হরিদ্রা (বিধেয় কর্ম)।
কর্ম কারকে বিভিন্ন বিভক্তির ব্যবহার
(ক) | প্রথমা বা শূণ্য বা অ বিভক্তি | ডাক্তার ডাক। |
পুলিশ ডাক। | ||
ঘোড়া গাড়ি টানে। | ||
আমাকে একখানা বই দাও। (দ্বিকর্মক ক্রিয়ার মুখ্য কর্ম) | ||
রবীন্দ্রনাথ পড়লাম, নজরুল পড়লাম, এর সুরাহা পেলাম না। (গ্রন্থ অর্থে বিশিষ্ট গ্রন্থকার প্রয়োগে) | ||
অর্থ অনর্থ ঘটায়। | ||
আমার ভাত খাওয়া হলো না। | ||
সূর্য উঠলে অন্ধকার দূর হয়। | ||
(খ) | দ্বিতীয়া বা কে বিভক্তি | তাকে বল। |
তাকে আমি চিনি। | ||
ধোপাকে কাপড় দাও। | ||
আমাকে একখানা বই দাও। (দ্বিকর্মক ক্রিয়ার গৌণকর্ম) | ||
ধনী দরিদ্রকে ঘৃণা করে। | ||
শিক্ষককে শ্রদ্ধা করিও। | ||
রে বিভক্তি | 'আমারে তুমি করিবে ত্রাণ, এ নহে মোর প্রার্থনা।' | |
(গ) | তৃতীয়া বিভক্তি | |
(ঘ) | পঞ্চমী বিভক্তি | |
(ঙ) | ষষ্ঠী বা র বিভক্তি | তোমার দেখা পেলাম না। |
দেশের সেবা কর। | ||
(চ) | সপ্তমী বা এ বিভক্তি | কাজে মন দাও। |
গুরুজনে করো ভক্তি/ নতি। | ||
সর্বশিষ্যে জ্ঞান দেন গুরু মহাশয়। | ||
'জিজ্ঞাসিবে জনে জনে।' (বীপ্সায়) |
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
- ↑ বাংলা ভাষার ব্যকরণ, নবম-দশম শ্রেণি, শিক্ষাবর্ষ ২০১৬, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, ঢাকা, বাংলাদেশ