বিষয়বস্তুতে চলুন

আবিষ্কার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(উদ্ভাবন থেকে পুনর্নির্দেশিত)
বিজ্ঞান এবং আবিষ্কার পত্রিকার প্রচ্ছদ, ১৯২৮

আবিষ্কার বলতে ব্যক্তি বা দলীয়ভাবে কোন নতুন ধরনের জিনিস, যন্ত্র বা বিষয় তৈরী, প্রযুক্তি উদ্ভাবন, প্রক্রিয়াকরণ ইত্যাদিকে বুঝায়। আধুনিককালের কম্পিউটারও একটি আবিষ্কার ছিল যখন তা প্রথম আবিষ্কৃত হয়েছিল। নতুন কোন প্রযুক্তি, জিনিস বা জিনিসের উৎপত্তি কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী কর্তৃক আবিষ্কার করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান ঘোষণা করে থাকে। পূর্বে আবিষ্কৃত যন্ত্র বা জিনিসের উন্নয়নকল্পে বিকল্প জিনিস তৈরীর আবিষ্কার নামে স্বীকৃত। যোগাযোগ ব্যবস্থায় ব্যবহৃত গাড়ি ও সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি কোন এক সময় আবিষ্কৃত হয়েছিল যা আমরা প্রত্যেকই জানি। যিনি ঐ সকল জিনিস, যন্ত্র বা বিষয়ের কোন একটি বা সবগুলো আবিষ্কার করেন, তিনি জনসমক্ষে বা প্রচার মাধ্যমে আবিষ্কারক বা ইনভেন্টর নামে পরিচিত। অর্থাৎ, আবিষ্কারকের তৈরী জিনিসই আবিষ্কার। মেধাস্বত্ব আইন মোতাবেক বুদ্ধিবৃত্তিভিত্তিক সম্পদরূপে বৈধভাবে আবিষ্কারকের অধিকারকে সুরক্ষিত করে থাকে।

ধারণাও আবিষ্কার হিসেবে পরিচিত। লেখকগণ কর্তৃক সৃষ্ট চরিত্র এবং গল্পে ঐ চরিত্রের উপস্থাপনও আবিষ্কারের অংশবিশেষ।

অন্য ধরনের আবিষ্কার হিসেবে রয়েছে সাংস্কৃতিক আবিষ্কার যা নতুন প্রথা প্রবর্তনের মাধ্যমে সামাজিক আচরণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এ প্রথা সমাজবদ্ধ মানুষ গ্রহণ করে একে-অপরের মাঝে ছড়িয়ে দেয়।[] অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবেও এটি শিল্পী, কলাকুশলী এবং সৃষ্টিশীলতায় অনন্য সাধারণ ভূমিকা রাখে। এটি প্রায়শঃই বিস্তৃত পটভূমিতে সীমানা পেরিয়ে মানুষের জ্ঞানভাণ্ডার সমৃদ্ধকরণ, অভিজ্ঞতা বিনিময় কিংবা সক্ষমতাকে আলোকিত করে থাকে।

প্রেক্ষাপট

[সম্পাদনা]

সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকেই মানুষের জীবনযাত্রাকে সহজ থেকে সহজতর করার লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রাদি তৈরী বা আবিষ্কারের দিকে অগ্রসর হতে হয়েছিল। সে কারণেই বলা হয়ে থাকে যে, "প্রয়োজনই আবিষ্কারের প্রসূতি"। কোন কিছুর অভাব বা অপ্রাচুর্যতাবোধকে দূরীকরণে কেউ কেউ ব্যক্তিগত বা সমষ্টিগতভাবে কিছু আবিষ্কারের মাধ্যমে ঐ অভাব বা অপ্রাচুর্যতাবোধের শূন্যস্থান পূরণ করেছিলেন। অবশ্য অনেক লোকই তা বিশ্বাস করেন না যে তা পুরোপুরি সত্যি। তারা মনে করেন যে, অনেক কিছুর অভাবের প্রেক্ষাপটেই একটি আবিষ্কারের জন্ম হয়।

রূপরেখা প্রণয়ন

[সম্পাদনা]
একটি ডাচ দম্পত্তি কর্তৃক উদ্ভাবিত একটি যন্ত্র, ১৯৫১ সাল।

আবিষ্কারের ধারণা বা রূপরেখা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের জন্যে কাগজ বা কম্পিউটারের মাধ্যমে উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব। লিখিত কিংবা অঙ্কনের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে ভুল-ভ্রান্তিতে ভরপুর খসড়ায় প্রণীত হয়। ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষান্তে অবশেষে ঐ খসড়া রূপরেখাটিই একটি স্বার্থক আবিষ্কার হিসেবে জনসমক্ষে তুলে ধরা হয়।

ক্রীড়াচ্ছলেও আবিষ্কারের সম্ভাবনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। শৈশবকালীন কৌতূহল, পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং আগ্রহের মাধ্যমে শিশুর অন্তঃমনের চাহিদা নিবারণের মাধ্যমে তা ঘটে থাকে বলে মনে করেন কার্ল জংআবিষ্কর্তা যে-সকল বিষয়ে আগ্রহী ও প্রয়োজনীয় বলে অনুভব করেন তা মনের অভ্যন্তরে ক্রীয়া ঘটিয়েই মহৎ সৃষ্টিশৈলীর জন্ম দেন।[] এছাড়াও আবিষ্কার একধরনের নেশায় আষক্তি করতে পারে। তাই টমাস এডিসন একবার বলেছিলেন যে,

আমি কখনো দৈনন্দিন জীবনের কোন কর্ম করিনি, যা করেছি তার সবটুকুই কেবল মজা পাবার উদ্দেশ্যে।

উল্লেখ্য, টমাস আলভা এডিসন বিখ্যাত ফোনোগ্রাফ, ভিডিও ক্যামেরা এবং দীর্ঘস্থায়ী বৈদ্যুতিক বাতি (বাল্ব) সহ বহু যন্ত্র উদ্ভাবন করেছেন যা অদ্যাবধি মানুষের জীবনযাত্রায় ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে ও বিখ্যাত আবিষ্কারক হিসেবে নিজেকে চিত্রিত করে রেখেছেন।[] তিনি তার বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনে ১,০৯৩টি যন্ত্রের আবিষ্কাররূপে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিজ নামে মেধাস্বত্ত্ব করে নিয়েছেন। তাকে বিশ্বের ইতিহাসে অন্যতম সেরা আবিষ্কারকের মর্যাদা দেয়া হয়েছে।

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Artificial Mythologies: A Guide to Cultural Invention by Craig J. Saper (1997); Review of Artificial Mythologies. A Guide to cultural Invention, Kirsten Ostherr (1998) http://findarticles.com/p/articles/mi_qa3709/is_199810/ai_n8821092 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৮ ফেব্রুয়ারি ২০০৭ তারিখে
  2. "The Lemelson Center's website, Invention at Play: Inventors' Stories, http://www.inventionatplay.org/inventors_main.html; and Juice: The Creative Fuel That Drives World-Class Inventors (2004), p.14-15 by Evan I. Schwartz."। ২০ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০১২  |title= এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
  3. ""The Electrifying Edison."- ব্রায়ান ওয়ালস (৫ জুলাই ২০১০)"। ২৬ আগস্ট ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০১২ 

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]