আল জামিয়া আল ইসলামিয়া কাসেমুল উলুম বগুড়া
ধরন | কওমি মাদ্রাসা |
---|---|
স্থাপিত | ১৯৬০ ইং |
প্রতিষ্ঠাতা | সােহাইল উদ্দিন |
মূল প্রতিষ্ঠান | দারুল উলুম দেওবন্দ |
অধিভুক্তি | আল হাইআতুল উলয়া লিল জামিআতিল কওমিয়া বাংলাদেশ |
ধর্মীয় অধিভুক্তি | ইসলাম |
আচার্য | আরশাদ রহমানি |
অবস্থান | চক ফরিদ কলোনি, বগুড়া |
শিক্ষাঙ্গন | শহর |
আল জামিয়া আল ইসলামিয়া কাসেমুল উলুম বগুড়া (সংক্ষেপে জামিল মাদ্রাসা) বগুড়া শহরের চক ফরিদ কলোনি এলাকায় অবস্থিত একটি কওমি মাদ্রাসা। ১৯৬০ সালে এটি প্রতিষ্ঠা করেন সােহাইল উদ্দিন। ১৯৬৭ সালে এখানে দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স) খােলা হয়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তা বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৮১ সালে পুনরায় চালু করা হয়। তখন থেকে ইউছুফ নিজামি এই মাদ্রাসার মহাপরিচালক ছিলেন। তার মৃত্যুর পর মুফতি আবদুর রহমান মাদ্রাসার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। মাদ্রাসার বর্তমান মহাপরিচালক আরশাদ রহমানি। ২০২১ সালে মাদ্রাসার ছাত্রসংখ্যা ২৫০০ এবং শিক্ষক ৮৪ জন।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]জামিল মাদ্রাসা নামে পরিচিত এই মাদ্রাসাটি বগুড়ার পুলিশ লাইনস সংলগ্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের উত্তর-পশ্চিম পার্শ্বে প্রায় ৪০ বিঘা জমির উপর প্রতিষ্ঠিত। জামিল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান সুহাইল উদ্দিন তার পিতার নির্দেশে এই মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি দারুল উলুম দেওবন্দের ছাত্র ছিলেন। সুহাইল উদ্দিন তার ইচ্ছার কথা আল জামিয়া আল ইসলামিয়া পটিয়ার মহাপরিচালক আজিজুল হককে জানালে তিনি ১৯৬০ সালের ৪ জানুয়ারি মুহাম্মদ ইউনুস সহ আরও কয়েকজনকে নিয়ে মাদ্রাসাটির ভিত্তি স্থাপন করেন। শিক্ষাকার্যক্রম সহ মাদ্রাসার অভ্যন্তরীন বিষয়ের দেখভালের জন্য তিনি আবদুর রহমানকে দায়িত্ব দেন। প্রতিষ্ঠার ছয় বছর পর ১৯৬৭ সালে এখানে দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স) চালু হয়। বর্তমানে এখানে তাফসির, আরবি সাহিত্য, তাজবিদ ও ইফতা (ইসলামি আইন গবেষণা) বিভাগ রয়েছে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে জামিল গ্রুপের মালিক পক্ষ করাচী চলে গেলে মাদ্রাসা সাময়িক বন্ধ হয়ে যায়। তবে তৎকালীন বগুড়া জেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা আবদুল কাইয়ূমের তৎপরতায় মাদ্রাসাটি পুনরায় চালু হয়। দুর্ভিক্ষের সময় মাদ্রাসা টিকিয়ে রাখার জন্য শিক্ষকরা বিনা বেতনেই শিক্ষকতা করেছিলেন।
১৯৭৭ সালে পটিয়া মাদ্রাসার মুহতামিম মুহাম্মদ ইউনুসের সাথে পরামর্শ করলে তিনি জামিল মাদ্রাসার ছাত্র ইউছুফ নিজামিকে মুহতামিম এবং ইয়াকুবকে নায়েবে মুহতামিম নিযুক্ত করে মাদ্রাসা চালাতে বললেন। নিজামি মৃত্যু পর্যন্ত ৩৩ বছর মাদ্রাসা পরিচালনা করেছেন। ইউছুফ নিজামির মৃত্যুর পর পুনরায় মাদ্রাসা পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন মুফতি আবদুর রহমান। ২০১৫ সালে আবদুর রহমানের মৃত্যুবরণের পর থেকে মাদ্রাসার বর্তমান মুহতামিম মুফতি আরশাদ রহমানি।
মাদ্রাসায় বর্তমান ছাত্র সংখ্যা প্রায় ২৫০০ এবং শিক্ষক ৮৪ জন। এটি তানযীমুল মাদারিসিদ দ্বীনিয়া বাংলাদেশের অধীনে পরিচালিত হয়। বোর্ডের প্রধান কার্যালয় এখানেই অবস্থিত।[১][২][৩]
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]- দেওবন্দি
- কওমি মাদ্রাসা
- দারুল উলুম দেওবন্দ
- আল জামিয়া আল ইসলামিয়া পটিয়া
- বাংলাদেশের কওমি মাদ্রাসার তালিকা
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]উদ্ধৃতি
[সম্পাদনা]- ↑ গোলাম ছরোয়ার, মুহাম্মদ (নভেম্বর ২০১৩)। "বাংলা ভাষায় ফিকহ চর্চা (১৯৪৭-২০০৬): স্বরূপ ও বৈশিষ্ঠ্য বিচার"। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ৩১৪। ২৭ মে ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০২১।
- ↑ হুসাইন, বেলায়েত (২ জুন ২০২১)। "উত্তরবঙ্গের গর্ব বগুড়ার জামিল মাদ্রাসা"। কালের কণ্ঠ।
- ↑ হাসান, মাহদি (৪ মার্চ ২০২১)। "আল জামিয়া আল ইসলামিয়া কাসেমুল উলুম বগুড়া"। কওমিপিডিয়া।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
গ্রন্থপঞ্জি
[সম্পাদনা]- আহমদ, মুমতাজ (২০০৬)। "ISLAMIC EDUCATION IN BANGLADESH: Tradition, Trends, and Trajectories" [বাংলাদেশে ইসলামি শিক্ষা: ঐতিহ্য, প্রবণতা এবং গতিপথ] (পিডিএফ)। আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামাবাদ, পাকিস্তান: ৩১–৩২।