আরভিন শিলিংফোর্ড

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আরভিন শিলিংফোর্ড
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামআরভিন থিওডোর শিলিংফোর্ড
জন্ম (1944-04-18) ১৮ এপ্রিল ১৯৪৪ (বয়স ৭৯)
ডাবল্যাঙ্ক, ডোমিনিকা
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি অফ ব্রেক
ভূমিকাব্যাটসম্যান
সম্পর্কগ্রেসন শিলিংফোর্ড (কাকাতো ভাই)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ১৬১)
৪ মার্চ ১৯৭৭ বনাম পাকিস্তান
শেষ টেস্ট৩১ মার্চ ১৯৭৮ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ২৬)
২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৮ বনাম অস্ট্রেলিয়া
শেষ ওডিআই১২ এপ্রিল ১৯৭৮ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৬১ - ১৯৮১কম্বাইন্ড আইল্যান্ডস
১৯৬৪ - ১৯৮২উইন্ডওয়ার্ড আইল্যান্ডস
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ৯২ ২০
রানের সংখ্যা ২১৮ ৩০ ৫,৪৪৯ ৩২০
ব্যাটিং গড় ৩১.১৪ ১৫.০০ ৩৬.৫৭ ২০.০০
১০০/৫০ ১/০ ০/০ ১১/২৮ ০/০
সর্বোচ্চ রান ১২০ ২৪ ২৩৮ ৩৬
বল করেছে ২০৪ ১৭
উইকেট
বোলিং গড় ৮৫.০০
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ১/১৫ ০/১৮
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১/– ২/– ৯৩/– ১০/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৯ আগস্ট ২০২০

আরভিন থিওডোর শিলিংফোর্ড (ইংরেজি: Irvine Shillingford; জন্ম: ১৮ এপ্রিল, ১৯৪৪) ডাবলাঙ্কের ম্যাকোচেরি এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ডোমিনিকীয় বংশোদ্ভূত সাবেক ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৭০-এর দশকের শেষদিকে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।[১][২]

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটে কম্বাইন্ড আইল্যান্ডস ও উইন্ডওয়ার্ড আইল্যান্ডস দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন আরভিন শিলিংফোর্ড

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট[সম্পাদনা]

১৯৬১-৬২ মৌসুম থেকে ১৯৮১-৮২ মৌসুম পর্যন্ত আরভিন শিলিংফোর্ডের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। চারটি টেস্ট ও দুইটি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছেন। এছাড়াও আরও ৮৮টি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নেন। তন্মধ্যে, ৪৯টি কম্বাইন্ড আইল্যান্ডসের পক্ষে ছিল। ১৯৬১ সালে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ থেকে শুরু করে ১৯৮১ সালে দলের বিলুপ্তি পর্যন্ত খেলেন। এছাড়াও, উইন্ডওয়ার্ড আইল্যান্ডসের পক্ষে চারটি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নেন।

সহজাত ব্যাটসম্যান ছিলেন আরভিন শিলিংফোর্ড। ১৬ বছর বয়সে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। তবে, পরের খেলায় অংশগ্রহণের জন্যে তাকে আরও চার বছর অপেক্ষার প্রহর গুণতে হয়েছিল। এ পর্যায়ে তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে সফররত অস্ট্রেলীয় একাদশের মুখোমুখি হন ও সকলকে বিমোহিত করেন। এরপর থেকে পরবর্তী এক দশক ধারাবাহিকভাবে খেলতে থাকলেও দল নির্বাচকমণ্ডলী কর্তৃক উপেক্ষিত হতে থাকেন। ১৯৭৫-৭৬ মৌসুমের শেল শীল্ড প্রতিযোগিতায় ২৫৭ রান তুলে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়েছিলেন।

অবশেষে ১৯৭৬-৭৭ মৌসুমে চমৎকার মৌসুম অতিবাহনের স্বীকৃতিস্বরূপ জাতীয় পর্যায়ে খেলার জন্যে আমন্ত্রিত হন। এ পর্যায়ে তার বয়স ছিল ৩২।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে চারটিমাত্র টেস্ট ও দুইটিমাত্র একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণ করেছেন আরভিন শিলিংফোর্ড। ৪ মার্চ, ১৯৭৭ তারিখে পোর্ট অব স্পেনে সফরকারী পাকিস্তান দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ৩১ মার্চ, ১৯৭৮ তারিখে জর্জটাউনে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

১৯৭৬-৭৭ মৌসুমে পাকিস্তান দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর করে। পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজের তিনটি খেলায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আরভিন শিলিংফোর্ডের খেলোয়াড়ী জীবনের সূত্রপাত ঘটে। মরিস ফস্টারের স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন তিনি। প্রথম টেস্টে তিনি ছয় নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৯ রান তুলেন। পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে পাঁচ নম্বরে নামেন তিনি ও ৩৯ রান তুলেন। তন্মধ্যে, উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান রয় ফ্রেডেরিক্সের সাথে উদ্বোধনী জুটিতে ৮১ রান তুলে দলকে ১৩৬ রানে এগিয়ে যেতে ভূমিকা রাখেন। দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি মাত্র দুই রান তুলতে পেরেছিলেন। তাসত্ত্বেও, তার দল ছয় উইকেটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছিল।

তৃতীয় টেস্টেও আরভিন শিলিংফোর্ডকে রাখা হয়। প্রথম ইনিংসে খানের ক্যাচ নিয়ে পাকিস্তানকে ১৯৪ রানে গুটিয়ে দিতে ভূমিকা রাখেন। শুরুতেই ফ্রেডেরিক্স আউট হলে গর্ডন গ্রীনিজ, ভিভ রিচার্ডসআলভিন কালীচরণ ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৯৩/৩-এ নিয়ে যান। এ পর্যায়ে শিলিংফোর্ড মাঠে নামেন। জর্জটাউনের তৃতীয় টেস্টে ৩১৫ মিনিট ব্যাটিং করে পনেরোটি চার ও একটি ছক্কার সহায়তায় ব্যক্তিগত সেরা ১২০ রানের মনোরম ইনিংস উপহার দেন। দল ২৫৪ রানে এগিয়ে গেলেও ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান বোলারদের দূর্বলমানের বোলিংয়ের কারণে পাকিস্তান দল দ্বিতীয় ইনিংসে ৫৪০ রান তুলে ড্রয়ের দিকে নিয়ে যায়।

তবে, চতুর্থ টেস্টে শিলিংফোর্ড দুইবার ২৫ রানের ইনিংস খেলেন ও প্রতিপক্ষীয় অধিনায়ক লেগ স্পিন অল-রাউন্ডার মুশতাক মোহাম্মদের বলে আউট হন। পাকিস্তান খেলায় ২৬৬ রানে জয় পায়। সাবিনা পার্কে অনুষ্ঠিত সিরিজের চূড়ান্ত টেস্টে শিলিংফোর্ড বাদ পড়েন ও বার্বাডীয় অল-রাউন্ডার কলিস কিংকে তার স্থলাভিষিক্ত করা হয়। সিরিজ শেষে শক্তিধর ব্যাটিংয়ের অধিকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল থেকে বাদ পড়েন।

অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি[সম্পাদনা]

পরের মৌসুমে আবারও ভালোমানের খেলা উপহার দেন। কাস্ত্রিসে লিওয়ার্ড আইল্যান্ডসের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সেরা ২৩৮ রান তুলেন। বিশ্ব সিরিজ ক্রিকেটকে ঘিরে ক্যারি প্যাকারের পরিচালনায় বিদ্রোহী দলের অংশগ্রহণের কারণে আবারও খেলার সুযোগ পান। গায়ানায় সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হন। কিন্তু, ৩ ও ১৬ রান তুলে আবারও দলের বাইরে অবস্থান করতে হয়।

১৯৭৭-৭৮ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একটিমাত্র টেস্টে অংশ নেন। এ পর্যায়ে বিশ্ব সিরিজ ক্রিকেটে অংশ নেয়ার ফলে ওয়েস্ট দলে নয়টি পরবর্তন ঘটে। তিনি তিন ও ষোলো রান তুলেন। ঐ খেলায় তার দল তিন উইকেটে পরাজিত হয়। চতুর্থ টেস্টে একই দল রাখা হলেও তাকে বাদ দেয়া হয় ও গায়ানীয় ব্যাটসম্যান ফাউদ বাক্কাসকে দলে রাখা হয়। এছাড়াও, ঐ সিরিজের দুইটি ওডিআইয়ে অংশ নেন। প্রথমটিতে ২৪ রান তুলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়ে ভূমিকা রাখেন। তবে, দ্বিতীয়টিতে ১৭ বল মোকাবেলায় ৬ রান তুলে দলের পরাজয়ে অংশীদার হন।

অবসর[সম্পাদনা]

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে উপেক্ষিত হলেও ১৯৮১-৮২ মৌসুম পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজের ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলা চালিয়ে যান। তন্মধ্যে, ১৯৮০-৮১ মৌসুমে শেল শীল্ডে কম্বাইন্ড আইল্যান্ডসের শিরোপা বিজয়ী দলের সদস্য ছিলেন। এছাড়াও, পরবর্তী মৌসুমে উইন্ডওয়ার্ড আইল্যান্ডসের সদস্যরূপে চারটি খেলায় অংশ নেন। তবে, চূড়ান্ত মৌসুমটি তার জন্যে সুখকর ছিল না। ১৮.৬৬ গড়ে ১১২টি প্রথম-শ্রেণীর রান তুলেন ও কোন অর্ধ-শতরানের সন্ধান পাননি। তাসত্ত্বেও, শেল শীল্ডে তার দল পয়েন্ট তালিকার দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করেছিল।

তার কাকাতো ভাই গ্রেসন শিলিংফোর্ড ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. List of West Indies Test Cricketers
  2. "West Indies – Test Batting Averages"। ESPNCricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুলাই ২০২০ 

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]