বিষয়বস্তুতে চলুন

অজিত দত্ত

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
অজিত দত্ত
জন্ম(১৯০৭-০৯-২৩)২৩ সেপ্টেম্বর ১৯০৭
মৃত্যু৩০ ডিসেম্বর ১৯৭৯(1979-12-30) (বয়স ৭২)
জাতীয়তাভারতীয়
নাগরিকত্বভারত
পরিচিতির কারণবাঙালি সাহিত্যিক ও অধ্যাপক

অজিতকুমার দত্ত (২৩শে সেপ্টেম্বর ১৯০৭ - ৩০শে ডিসেম্বর ১৯৭৯) ছিলেন একজন বিশিষ্ট বাঙালি কবি, সাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক এবং অধ্যাপক।

জন্ম ও পরিবার

[সম্পাদনা]

অজিত দত্ত ১৯০৭ সালের ২০ নভেম্বর ঢাকার বিক্রমপুরে (বর্তমান মুন্সীগঞ্জ জেলা) এক অভিজাত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। মাত্র চার বছর বয়সে তার পিতা অতুলকুমার দত্ত মারা যান। তার মা হেমালিনী দেবী ছিলেন সাহিত্য অনুরাগী।

শিক্ষাজীবন

[সম্পাদনা]

১৯২৪ সালে ঢাকার কিশোরীলাল জুবিলী স্কুল থেকে অজিত দত্ত প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাস করেন এবং জগন্নাথ কলেজে বর্তমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হন। উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে ১৯২৬ সালে তিনি কলকাতা চলে যান এবং বিদ্যাসাগর কলেজে ইংরেজি বিষয়ে অনার্সে ভর্তি হন। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই তার বড়ো ভাই মারা গেলে ঢাকায় ফিরে আসেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ও সংস্কৃত বিভাগে ভর্তি হন। অজিত দত্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯২৮ সালে বি.এ এবং ১৯৩০ সালে এম.এ পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে উত্তির্ণ হন।

কর্মজীবন

[সম্পাদনা]

অজিত দত্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অস্থায়ী পদে যোগদান করে তার কর্মজীবন শুরু করেন। কিছুদিন পরেই তিনি কলকাতায় রিপন স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন। ১৯৩৪ সালে স্কুল ছেড়ে তিনি রিপন কলেজে যোগদান করেন। ১৯৩৬ সালে রিপন কলেজ ছেড়ে দিয়ে ইন্ডিয়ান টি মার্কেট এক্সপানশন বোর্ডে এসিস্ট্যান্ট পাবলিসিটি অফিসার পদে যোগ দেন এবং সেখানে তিনি ১০ বছর চাকরি করেন। এখানে পদোন্নতি না হওয়ায় চাকরি ছেড়ে ক্যালকাটা ন্যাশনাল ব্যাংকের অধিকর্তা শচীন ভট্টাচার্যের ১২/১৪টি কনসার্নের পাবলিসিটি অফিসার হন। এখানেও ১০ বছর চাকরি করে ১৯৫৬ সালের ২১শে আগস্ট তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপনায় যোগদান করেন। ১৯৭১ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি তিনি বিভাগীয় প্রধান হিসেবে এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর নেন।

সাহিত্যজীবন

[সম্পাদনা]

১৯৩০ সালে অজিত দত্তের প্রথম কাব্যগ্রন্থ কুসুমের মাস প্রকাশিত হয়। তিনি ছিলেন বুদ্ধদেব বসু সতীর্থ। তিনি বুদ্ধদেব বসুর সাথে যৌথভাবে প্রগতি নামের একটি পত্রিকা সম্পাদনা করেন। পরে কল্লোল সাহিত্য গোষ্ঠী তে যোগ দেন। অজিত দত্ত নিয়মিত কল্লোল পত্রিকায় লেখালেখি করতেন, তিরিশের দশকে কল্লোল অন্যতম জনপ্রিয় বাংলা সাহিত্য পত্রিকা। ১৯৪৬ সালে তার 'নষ্ট চাঁদ' প্রকাশের পরের বছর দেশ পত্রিকায় রৈবতক ছন্দ নামে ধারাবাহিকভাবে তার মন পবনের নাও প্রকাশিত হয়। অজিত দত্ত সমসাময়িক বাংলা কবিতা, ছন্দ চিন্তা, রবীন্দ্র বিষয়ক ভাবনা, বিভিন্ন কবি সাহিত্যিকের রচনার মূল্যায়ন, শিল্পসাহিত্য ভাবনা এবং শিশুসাহিত্য সম্পর্কিত ৫০টি প্রবন্ধ লেখেন।

রচিত গ্রন্থ

[সম্পাদনা]

অজিত দত্তের প্রকাশিত গ্রন্থ,

কাব্য গ্রন্থ
  • কুসুমের মাস (১৯৩০)
  • পাতাল কন্যা (১৯৩৮)
  • নষ্ট চাঁদ (১৯৪৫)
  • পূর্ণনবা (১৯৪৬)
  • ছড়ার বই (১৯৫০)
  • ছায়ার আলপনা (১৯৫১)
  • জানালা (১৯৫৯)
  • কবিতা-সংগ্রহ (১৯৫৯)
  • শ্রেষ্ঠ কবিতা (১৯৭০)
  • সাদা মেঘ কালো পাহাড় (১৯৭১)
প্রবন্ধগ্রন্থ
  • জনান্তিকে (১৯৪৯)
  • মন পবনের নাও (১৯৫০)
  • সরস প্রবন্ধ (১৯৬৮)
  • বাংলা সাহিত্যে হাস্যরস (প্রবন্ধ, ১৯৬০)
  • কথা-ভারতী (অনুবাদ)
  • দুর্গাপূজার গল্প (অনুবাদ)[]

মৃত্যু

[সম্পাদনা]

১৯৭৯ সালে ৩০ ডিসেম্বর তিনি তার কলকাতার ২০ রাসবিহারী এভিনিউ এর বাড়িতে পরলোক গমন করেন।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. সেলিনা হোসেন ও নুরুল ইসলাম সম্পাদিত; বাংলা একাডেমী চরিতাভিধান; ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৭; পৃষ্ঠা- ৪।