রবিউল আলম (নাট্যকার)
রবিউল আলম | |
---|---|
জন্ম | বগুড়া জেলা, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমান বাংলাদেশ) | ৩ নভেম্বর ১৯৪৬
পেশা | নাট্যকার, নাট্য নির্দেশক, অভিনেতা |
ভাষা | বাংলা |
জাতীয়তা | পাকিস্তানি (১৯৪৬-১৯৭১) বাংলাদেশী (১৯৭১-বর্তমান) |
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান | বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় |
ধরন | নাটক |
সাহিত্য আন্দোলন | নাট্য আন্দোলন |
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার | বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (২০২১) |
রবিউল আলম (জন্ম ৩ নভেম্বর ১৯৪৬) একজন বাংলাদেশী নাট্যকার, নাট্য নির্দেশক, অভিনেতা, ও সংগঠক। তিনি সাড়ে চার দশক ধরে বাংলাদেশের নাট্য আন্দোলনের সাথে যুক্ত রয়েছেন। নাটকে অবদানের জন্য তিনি ২০২১ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার অর্জন করেন।[১][২]
প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]
রবিউল আলম ১৯৪৬ সালের ৩রা নভেম্বর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) বগুড়া জেলার বারপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা জসিমউদ্দিন আহমেদ এবং মাতা জমিলা খাতুন। তিনি ১৯৬৫ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। তিনি ১৯৬৯ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়ন প্রকৌশল বিষয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন।[৩] উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ার সময় ১৯৬৫ সালে তিনি তার প্রথম নাটক বর সংকট লিখেন ও বগুড়ায় মঞ্চায়ন করেন।
কর্মজীবন[সম্পাদনা]
আলম কর্মজীবনে ৩৫ বছর টিএসপি ফার্টিলাইজার, ইউনিলিভার বাংলাদেশ ও কোহিনূর কেমিক্যালে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।[৩]
চট্টগ্রামে টিএসপি ফার্টিলাইজারে কর্মরত অবস্থায় ১৯৭২ সালে তিনি প্রথম মঞ্চ অভিনয়ে যুক্ত হন। পরে ১৯৭৩ সালে নাট্যকাল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। এরপর ১৯৭৪ সালে তিনি “তীর্যক নাট্যগোষ্ঠী” প্রতিষ্ঠা করেন। এই গোষ্ঠীর প্রথম নাটক জননীর মৃত্যু চাই-এর নাট্যকার তিনি। তিনি এই দলের জন্য সমাপ্তি অন্যরকম, এক যে ছিল দুই হুজুর, আকাঙ্ক্ষিত একজন, বিপক্ষে বন্দুক-সহ নয়টি নাটক রচনা করেন। এছাড়া তিনি উইলিয়াম শেকসপিয়ারের অ্যাজ ইউ লাইক ইট নাটকের অনুবাদ করেছেন।[৩]
রবিউল আলম ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ বেতারে নাট্যকার হিসেবে, পরে অভিনেতা (১৯৮১) ও অতিথি প্রযোজক (১৯৯৪) হিসেবে যুক্ত হন। তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনে নাট্যকার (১৯৯৭) ও অভিনেতা (২০০২) হিসেবেও কাজ করেছেন।
তীর্যকের বাইরে তার রচিত নাপুস নাটকটি ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, কোরাস, বেনানাশিস ও চট্টগ্রাম ক্লাবে মঞ্চস্থ হয়। নাটকটি ১৯৯৩ সালে বেনানাশিস জাতীয় নাট্যোৎসবে শ্রেষ্ঠ প্রযোজনার পুরস্কার লাভ করে। এছাড়া তার রচিত রাজা সাহিত্য কারখানা থিয়েটার ওয়ার্কশপ চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম ক্লাব ও শব্দ নাট্যচর্চা কেন্দ্রে; বিবি পাঠশালা ত্রিতরঙ্গ ও মতিঝিল থিয়েটারে; আকাশ পারের আগন্তুক ও উল্টো ফাঁদে চট্টগ্রাম ক্লাবে; এবং মিশার কীর্তি ও চলন বিলে কলঙ্ক বগুড়ার প্রাকৃতজনে মঞ্চস্থ হয়।[৩]
গ্রন্থের তালিকা[সম্পাদনা]
রবিউল আলমের প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ১৯টি। এর মধ্যে ১৪টি নাট্যগ্রন্থ (শেক্সপীয়র, মলিয়ের ও হ্যারল্ড পিন্টারের নাটকের ৩টি অনুবাদগ্রন্থসহ), ২টি উপন্যাসিকা, ১টি রম্য ও ২টি গল্পগ্রন্থ।
- জননীর মৃত্যু চাই (১৯৭৭)
- কখনো সৈকতে নাটক (১৯৭৮)
- অথচ অন্ধকার (১৯৭৯)
- নাপুস/ নাপুস আবার (১৯৯৫)
- বিপক্ষে বন্দুক (১৯৯৮)
- আকাশ পারের আগন্তুক (১৯৯৮)
- রাজা সাহিত্য কারখানা (২০০৪)
- বিবি পাঠশালা (২০০৭)
- হ্যারল্ড পিন্টারের চারটি নাটক (২০১২)
- নাট্যসমগ্র ১ (২০১৩)
- কিশোর কাজির বিচার (২০১৩)
- নাট্যসমগ্র ২ (২০১৪)
- নাট্যসমগ্র ৩ (২০১৫)
- শীলুর চোখ (১৯৮১)
- সময় অসময় (১৯৮২)
- সেই পাহাড়ে (১৯৯৬)
- অচিনপুর (২০০৪)
- অ্যাজ ইউ লাইক ইট (২০১৬)
- আড্ডায় রসভঙ্গ (২০১৮)
চলচ্চিত্রের তালিকা[সম্পাদনা]
অভিনীত চলচ্চিত্র[সম্পাদনা]
- মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রাম
- হালদা (২০১৭)
- আলগা নোঙর
রচিত টিভি নাটক[সম্পাদনা]
- সন্ধান
- অমি যখন বন্দী
- বন্ধনহীন গ্রন্থি
- তোমরা আমরা (নাপুস)
- উল্টো ফাঁদে
- একজন মিশার ঈদ
- পরাহত
- নিভৃত নিবাস
- এক সকালে
- চন্দ্রাহত
- যার সাথে যার
- শান্তা একদিন
- কখনো সৈকতে
- অজ্ঞাতবাস
- ছায়াহীন বৃক্ষ
- বাঁধ ভেঙে দাও
- নাপুস আবার
- প্রথম রৌদ্রের গন্ধ
- মিশার কীর্তি
- সেই উঠান
- পরম্পরা
- সম্পর্ক
- বলা হয়নি
- নিঃসঙ্গ নিরাময় কেন্দ্র
- দায়ভার
- রাজা সাহিত্য কারখানা
- বিপ্রতীপ
- মফিজন
পুরস্কার ও সম্মাননা[সম্পাদনা]
- আন্তর্জাতিক যুববর্ষ পদক চট্টগ্রাম (১৯৮৫)
- বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন-বেঙ্গল ফাউন্ডেশন সংবর্ধনা (২০০৫)
- এ্যামবিশন সম্মাননা বগুড়া (২০১০)
- আরণ্যক সম্মাননা (২০১৩)
- নান্দীমুখ সংবর্ধনা (২০১৫)[৩]
- জিয়া হায়দার নাট্যপদক (২০১৯)[৪]
- বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (২০২১)[৫]
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ "বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পাচ্ছেন ১০ জন"। দ্য ডেইলি স্টার। ২৫ জানুয়ারি ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০২১।
- ↑ "বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার"। বাংলা একাডেমি পুরস্কার।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ আহমেদ, সাজু (৩ নভেম্বর ২০১৬)। "নাট্যজন রবিউল আলমের জন্মদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি"। দৈনিক জনকন্ঠ। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০২১।
- ↑ "জিয়া হায়দার নাট্যপদক পাচ্ছেন রবিউল আলম"। ২৪ ঘণ্টা নিউজ। ৫ নভেম্বর ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০২১।
- ↑ "বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পেলেন ১০ জন"। বাংলা ট্রিবিউন। ২৫ জানুয়ারি ২০২১। ১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০২১।
বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]
- ১৯৪৬-এ জন্ম
- জীবিত ব্যক্তি
- ২০শ শতাব্দীর বাংলাদেশী নাট্যকার
- ২১শ শতাব্দীর বাংলাদেশী নাট্যকার
- বাংলাদেশী চলচ্চিত্র অভিনেতা
- বাংলাদেশী টেলিভিশন অভিনেতা
- বাংলাদেশী নাট্যকার
- বাংলাদেশী বেতার অভিনেতা
- বাংলাদেশী মঞ্চ অভিনেতা
- বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- বগুড়া জেলার ব্যক্তি
- নাটকে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার বিজয়ী