ওয়াশিংটন আরভিং

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ওয়াশিংটন আরভিং
ওয়াশিংটন আরভিঙের ড্যাগুয়েরোটাইপ (মূল জন প্লাম্ব ও আধুনিক অনুলিপি ম্যাথু ব্র্যাডি)
ওয়াশিংটন আরভিঙের ড্যাগুয়েরোটাইপ
(মূল জন প্লাম্ব ও আধুনিক অনুলিপি ম্যাথু ব্র্যাডি)
স্থানীয় নাম
Washington Irving
জন্ম(১৭৮৩-০৪-০৩)৩ এপ্রিল ১৭৮৩
নিউ ইয়র্ক সিটি, নিউ ইয়র্ক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
মৃত্যু২৮ নভেম্বর ১৮৫৯(1859-11-28) (বয়স ৭৬)
সানিসাইড, ট্যারিটাউন, নিউ ইয়র্ক
সমাধিস্থলস্লিপি হলো সেমেটারি, নিউ ইয়র্ক
ছদ্মনামজেফ্রি ক্রেয়ন, ডিয়েড্রিখ নিকারবোকার
পেশাছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, জীবনীকার, ইতিহাসবেত্তা, কূটনীতিক
ভাষাইংরেজি
সাহিত্য আন্দোলনরোমান্টিকতা

স্বাক্ষর

ওয়াশিংটন আরভিং (ইংরেজি: Washington Irving; ৩ এপ্রিল ১৭৮৩ - ২৮ নভেম্বর ১৮৫৯) ছিলেন একজন মার্কিন ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, জীবনীকার, ইতিহাসবেত্তা ও কূটনীতিক। তিনি "রিপ ভ্যান উইঙ্কল" (১৮১৯) ও "দ্য লেজেন্ড অব স্লিপি হলো" (১৮২০) ছোটগল্পের জন্য সর্বাধিক পরিচিত। এই ছোটগল্প দুটি দ্য স্কেচ বুক অব জেফ্রি ক্রেয়ন, জেন্ট. সংকলনে অন্তর্ভুক্ত। তার ইতিহাস আশ্রিত কর্মসমূহ হল আইরিশ লেখক অলিভার গোল্ডস্মিথ, ইসলামের নবী মুহাম্মাদ, ও মার্কিন রাষ্ট্রপতি জর্জ ওয়াশিংটনের জীবনী এবং পঞ্চদশ শতাব্দীর স্পেনের কয়েকটি ইতিহাস বই, যেগুলোর বিষয়বস্তু ছিল আলহাম্বরা, ক্রিস্টোফার কলম্বাস ও মুর জাতি।

আরভিং ইউরোপে সমাদৃত ও জনপ্রিয়তা অর্জনকারী প্রথম মার্কিন লেখক এবং তিনি নাথানিয়েল হথোর্ন, হেনরি ওয়েডসওয়ার্থ লংফেলো, হারমান মেলভিলএডগার অ্যালান পোসহ অন্যান্য মার্কিন লেখকদের অনুপ্রাণিত করেছেন। লর্ড বায়রন, টমাস ক্যামবেল, চার্লস ডিকেন্স, ফ্রান্সিস জেফ্রিওয়াল্টার স্কটসহ বেশ কয়েকজন ব্রিটিশ লেখক তার সৃষ্টিকর্মের প্রশংসা করেছেন।

জীবনী[সম্পাদনা]

প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]

ওয়াশিংটন আরভিঙের পিতা উইলিয়াম আরভিং সিনিয়র স্কটল্যান্ডের ওর্কনির শ্যাপিন্সির কুহোমের অধিবাসী এবং মাতা সারা (জন্মনাম সন্ডার্স) ইংল্যান্ডের কর্নওয়ালের ফালমাউথের অধিবাসী ছিলেন। তারা ১৭৬১ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তখন উইলিয়াম ব্রিটিশ নৌবাহিনীতে পেটি অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তাদের এগার সন্তান ছিল, তন্মধ্যে আটজন বয়ঃপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। বাকিদের মধ্যে প্রথম দুই পুত্র ও চতুর্থ পুত্র শিশু অবস্থায় মারা যান। প্রথম দুজনের নাম রাখা হয়েছিল উইলিয়াম এবং চতুর্থ জনের নাম রাখা হয়েছিল জন। তাদের বয়ঃপ্রাপ্ত সন্তানেরা ছিলেন উইলিয়াম জুনিয়র (১৭৬৬), অ্যান (১৭৭০), পিটার (১৭৭১), ক্যাথরিন (১৭৭৪), এবেনেজার (১৭৭৬), জন ট্রিট (১৭৭৮), সারা (১৭৮০), ও ওয়াশিংটন।[১][২]

১৮৫৪ সালে জর্জ বার্নার্ড বাটলার জুনিয়র কর্তৃক অঙ্কিত জর্জ ওয়াশিংটনের সাথে ওয়াশিংটন আরভিঙের সাক্ষাতের জলরঙের চিত্রকর্ম

আরভিঙের পরিবর ম্যানহাটনে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে এবং তার এই শহরের বণিক শ্রেণিভুক্ত ছিলেন। আরভিং ১৭৮৩ সালের ৩রা এপ্রিল নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের নিউ ইয়র্ক সিটির ম্যানহাটনে জন্মগ্রহণ করেন।[১] একই সপ্তাহে নিউ ইয়র্ক সিটির বাসিন্দারা জানতে পারে যে ব্রিটিশরা যুদ্ধবিরতি দিয়েছে এবং মার্কিন স্বাধীনতা যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটেছে। আরভিঙের মা তার নামকরণ করেন জর্জ ওয়াশিংটনের নামানুসারে।[৩] জর্জ ওয়াশিংটন ১৭৮৯ সালে রাষ্ট্রপতিত্ব গ্রহণের পর নিউ ইয়র্কে বসবাসকালীন আরভিং তার সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন, তখন তার বয়স ছিল ৬ বছর। রাষ্ট্রপতি কিশোর আরভিংকে আশীর্বাদ জানান।[৪] এই সাক্ষাতের একটি ছোট জলরঙের চিত্রকর্ম তার বাড়িতে দীর্ঘদিন ঝুলানো ছিল।[৫] ওয়াশিংটনের জন্মের সময় আরভিং পরিবার ১৩১ উইলিয়াম স্ট্রিটে বসবাস করতেন, কিন্তু তারা পরে ১২৮ উইলিয়াম স্টিটে চলে যান।[৬]

আরভিং শিক্ষার্থী হিসেবে অমনযোগী ছিলেন এবং তিনি রোমাঞ্চকর গল্প ও নাটক পড়তে পছন্দ করতেন। ১৪ বছর বয়সে তিনি নিয়মিত ক্লাস ফাঁকি দিয়ে সন্ধ্যায় মঞ্চনাটক দেখতে যেতেন।[৭] ১৭৯৮ সালে ম্যানহাটনে পীতজ্বরের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে তাকে তার বন্ধু জেমস কার্ক পলডিঙের সাথে থাকার জন্য ট্যারিটাউইনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ট্যারিটাউনে থাকাকালীন তিনি নিকটবর্তী শহর স্লিপি হলো সম্পর্কে অবগত হন, বিশেষ করে এই শহরের ওলন্দাজ রীতিনীতি ও স্থানীয় ভূতের গল্পগুলো সম্পর্কে।[৮] কিশোর বয়সে তিনি আরও বেশ কয়েকবার হাডসনের অপর পাড়ে যান, তন্মধ্যে জনস্টাউইনে ভ্রমণ করতে গিয়ে ক্যাটসকিল পর্বত অঞ্চলে সময় কাটান, যেটি তার "রিপ ভ্যান উইঙ্কল" গল্পের পটভূমি।[৯]

আরভিং ১৮০২ সালে ১৯ বছর বয়সে নিউ ইয়র্ক মর্নিং ক্রনিকল-এ চিঠি পাঠানো শুরু করেন এবং শহরের সামাজিক ঘটনাবলি ও মঞ্চনাটক নিয়ে জোনাথন ওল্ডস্টাইল ছদ্মনামে মন্তব্য পাঠাতে শুরু করেন।নামটি তার ফেডারাল পন্থী ভাবাদর্শ থেকে উদ্ভূত[১০] এবং এটি তার কর্মজীবনে একাধিক ছদ্মনামের প্রথম নাম। চিঠিগুলোর খাতিরে আরভিং সামান্য খ্যাতি ও উল্লেখযোগ্যতা লাভ করেন। ক্রনিকল-এর একজন সহ-প্রকাশক ছিলেন অ্যারন বার। তার লেখনীতে মুগ্ধ হয়ে বার তার কন্যা টিওডোসিয়া বার অ্যালস্টনের কাছে ওল্ডস্টাইলের কয়েকটি লেখা পাঠান। চার্লস ব্রকডেন ব্রাউন তার ফিলাডেলফিয়া থেকে সম্পাদিত একটি সাহিত্য পত্রিকায় ওল্ডস্টাইলকে নিয়োগ প্রদানের জন্য নিউ ইয়র্কে আসেন।[১১]

আরভিঙের স্বাস্থ্যের বিষয় খেয়াল রেখে তার ভাইয়েরা ১৮০৪ থেকে ১৮০৬ সালে ইউরোপে ভ্রমণের জন্য অর্থায়ন করে। তিনি তার ভাই উইলিয়ামকে আতঙ্কিত করার জন্য একজন যুবকের সামাজিক বিকাশের জন্য গুরুতপূর্ণ বলে বিবেচিত অধিকাংশ স্থান এড়িয়ে যান। উইলিয়াম তাকে চিঠি লিখে জানান যে তার স্বাস্থ্যের উন্নতির খবর শুনে তিনি খুশি, কিন্তু তিনি "গালোপ হয়ে ইতালি"তে যাওয়া পছন্দ করেননি এবং চেয়েছিলেন তিনি যেন ফ্লোরেন্স শহরকে বামে ও ভেনিসকে ডানে রেখে যান।[১২] এর পরিবর্তে আরভিং তার সামাজিক ও কথোপকথনের দক্ষতা বৃদ্ধি করেন, যা তাকে বিশ্বের সবচেয়ে চাহিদাসম্পন্ন অতিথি হিসেবে গড়ে তোলে।[১৩] ১৮০৫ সালে রোমে ভ্রমণকালে চিত্রশিল্পী ওয়াশিংটন অ্যালস্টনের সাথে তার বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে।[১২] এবং তিনি আরভিংকে চিত্রশিল্পী হতে উদ্ধুদ্ধ করেছিলেন। এই প্রসঙ্গে আরভিং বলেন, "আমার ভাগ্য ভিন্ন ছিল।"[১৪]

প্রথম স্বীকৃত লেখনী[সম্পাদনা]

আরভিং ইউরোপ থেকে ফিরে এসে তার আইনি উপদেষ্টা বিচারক জোসিয়াহ ওগডেন হফম্যানের সাথে নিউ ইয়র্ক সিটিতে আইন বিষয়ে অধ্যয়ন শুরু করেন। তিনি খুব ভালো শিক্ষার্থী ছিলেন না এবং খুবই নিম্ন ফলাফল নিয়ে ১৮০৬ সালে বার পরীক্ষা পাস করেন।[১৫][১৬][১৭] তিনি সাহিত্যমনা যুবকদের একটি দলের সাথে সংঘবদ্ধ হন, যাকে তিনি "দ্য ল্যাডস অব কিলকেনি" নামে ডাকতেন।[১৮] তিনি ১৮০৭ সালের জানুয়ারি মাসে তার ভাই উইলিয়াম ও বন্ধু জেমস কার্ক পলডিংকে নিয়ে সালমাগুন্ডি সাহিত্য পত্রিকা চালু করেন। তিনি তাতে বিভিন্ন ছদ্মনামে লিখতেন, সেগুলো হল উইলিয়াম উইজার্ড ও লঞ্চেলট ল্যাংস্টাফ। আরভিং নিউ ইয়র্কের সংস্কৃতি ও রাজনীতিকে বর্তমান সময়ের ম্যাড পত্রিকার মত ব্যঙ্গ করতেন।[১৯] সালমাগুন্ডি মাঝারি মানের সফলতা অর্জন করে, যার ফলে নিউ ইয়র্ক ও এর বাইরে আরভিঙের নাম ও খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। তিনি ১৮০৭ সালের ১১ নভেম্বরে তার পত্রিকার ১৭তম সংখ্যায় নিউ ইয়র্ক সিটির ডাকনাম প্রদান করেন "গোথাম"। এটি একটি অ্যাংলো-স্যাক্সন শব্দ, যার অর্থ "ছাগলের শহর"।[২০][২১]

আরভিং তার বাগদত্তা ১৭ বছর বয়সি মাটিল্ডা হফম্যান মৃত্যুতে শোকার্ত অবস্থায় আ হিস্ট্রি অব নিউ-ইয়র্ক ফ্রম দ্য বিগিনিং অব দ্য ওয়ার্ল্ড টু দি এন্ড অব দ্য ডাচ ডাইনেস্টি, বাই ডিয়েড্রিখ নিকারবোকার (১৮০৯) সমাপ্ত করেন। এটি তার প্রথম বড় মাপের বই এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থানীয় ইতিহাস ও সমকালীন রাজনীতির উপর লেখা ব্যঙ্গধর্মী রচনা। এই বইটি প্রকাশের পূর্বে আরভিং চাতুরি করে নিউ ইয়র্কের সংবাদপত্রে ডিয়েড্রিখ নিকারবোকার নামে একজন ওলন্দাজ ইতিহাসবেত্তার হারানোর খবর ছাপান, যিনি নিউ ইয়র্ক সিটির একজন হোটেল থেকে হারিয়ে গেছেন। এই চাতুরির অংশ হিসেবে তিনি হোটেলের মালিকের পক্ষ থেকে পাঠকদের উদ্দেশ্যে একটি ঘোষণা প্রদান করেন যে যদি জনাব নিকারবোকার ফিরে এসে তার হোটেলের বিল পরিশোধ না করে তবে তিনি তার ফেলে যাওয়া একটি পাণ্ডুলিপি প্রকাশ করে দেবেন।[২২]

সন্দেহাতীতভাবে পাঠকেরা নিকারবোকারের গল্পটি বিশ্বাস করে এবং তার পাণ্ডুলিপির প্রতি আগ্রহ দেখায়। নিউ ইয়র্ক সিটির কয়েকজন দাপ্তরিক কর্মকর্তা নিখোঁজ ইতিহাসবেত্তার খোঁজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য পুরস্কারের ঘোষণা দেয়। আরভিং এরপর ১৮০৯ সালের ৬ই ডিসেম্বর নিকারবোকার ছদ্মনামে আ হিস্ট্রি অব নিউ ইয়র্ক প্রকাশ করেন, যা তাৎক্ষণিকভাবে সমাদৃত ও জনপ্রিয়তা অর্জন করে।[২৩]

ইউরোপে জীবন[সম্পাদনা]

দ্য স্কেচ বুক[সম্পাদনা]

আরভিং পরবর্তী দুই বছর তার পারিবারিক জমি-জমার খালাসের চেষ্টা করেন, কিন্তু ততদিনে দেউলিয়া ঘোষিত হন।[২৪] চাকরিতে উন্নতির লক্ষণ না দেখে তিনি ১৮১৭ ও ১৮১৮ সাল জুড়ে লেখালেখি চালিয়ে যান। ১৮১৭ সালের গ্রীষ্মে তিনি ওয়াল্টার স্কটের সাথে দেখা হয়, যা তাদের মধ্যে পরবর্তী সারা জীবনের জন্য ব্যক্তিগত ও পেশাগত বন্ধুত্বের রূপ নেয়।[২৫]

১৮১৯ সালের বসন্তে আরভিং নিউ ইয়র্কে তার ভাই এবেনেজারের নিকট কয়েকটি ছোট গদ্য পাঠিয়ে দ্য স্কেচ বুক অব জেফ্রি ক্রেয়ন, জেন্ট. নামে প্রকাশ করতে বলেন। "রিপ ভ্যান উইঙ্কল" গল্প সংবলিত প্রথম কিস্তিটি বিপুল সফলতা অর্জন করে এবং বাকি কাজগুলোও সমানভাবে সফল হয়। ১৮১৯-১৮২০ সালে নিউ ইয়র্ক থেকে এর সাতটি কিস্তি প্রকাশিত হয় এবং লন্ডন থেকে দুই খণ্ড প্রকাশিত হয়। "দ্য লেজেন্ড অব স্লিপি হলো" নিউ ইয়র্কের সংস্করণে ষষ্ঠ সংখ্যায় এবং লন্ডনের সংস্করণে দ্বিতীয় খণ্ডে প্রকাশিত হয়।[২৬]

ব্রেসব্রিজ হলটেলস অব আ ট্রাভেলার[সম্পাদনা]

আরভিং ও প্রকাশক জন মারি দ্য স্কেচ বুক-এর সফলতার পরবর্তী ধাপ দেখতে আগ্রহী ছিলেন। আরভিং ১৮২১ সালের পুরোটা সময় ইউরোপ ভ্রমণ করে ওলন্দাজ ও জার্মান লোকসাহিত্য পাঠের মাধ্যমে নতুন উপাত্ত খুঁজতে ব্যয় করেন। রাইটার্স ব্লকে ভোগে এবং তার ভাই উইলিয়ামের মৃত্যুতে হতাশাগ্রস্থ হয়ে আরভিং ধীরে ধীরে কাজ করতে থাকেন এবং অবশেষে ১৮২২ সালের মার্চে মারির নিকট একটি পাণ্ডুলিপি জমা দেন। ব্রেসব্রিজ হল, অর দ্য হিউমারিস্ট, আ মেডলি শিরোনামের বইটি ১৮২২ সালের জুনে প্রকাশিত হয়।

স্পেনীয় বইসমূহ[সম্পাদনা]

প্যারিসে অবস্থানকালীন আরভিং ১৮২৬ সালের ৩০শে জানুয়ারি আলেকজান্ডার হিল এভারেটের নিকট থেকে একটি চিঠি পান। সম্প্রতি স্পেনে মার্কিন মন্ত্রী হওয়া এভারেট আরভিংকে মাদ্রিদে তার সাথে যোগ দিতে বলেন,[২৭] এবং লিখেন যে আমেরিকার স্পেনীয় বিজয় সংক্রান্ত বেশ কিছু সংখ্যক পাণ্ডুলিপি জনসাধারণের উদ্দেশ্যে প্রকাশিত হয়েছে। আরভিং মাদ্রিদের উদ্দেশ্যে রওনা দেন এবং আগ্রহের সাথে স্পেনীয় সংগ্রহশালায় বিভিন্ন উপাদানের সন্ধান করেন।[২৮]

লন্ডনে মার্কিন কূটনীতিক[সম্পাদনা]

লন্ডনে পৌঁছে আরভিং মার্কিন মন্ত্রী লুইস ম্যাকলেনের দলে যোগ দেন। ম্যাকলেন তাকে অন্য একজনের সহকারী হিসেবে নিযুক্ত করেন এবং তাকে ক্যাম্পের-সহায়তার দায়িত্ব দেন। তারা দুজনে পরের বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটিশ ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যে একটি বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে কাজ করেন এবং ১৮৩০ সালের আগস্টে চুক্তিটি বাস্তবায়িত হয়। একই বছর আরভিং রয়্যাল সোসাইটি অব লিটারেচার থেকে একটি পদক লাভ করেন এবং পরের বছর ১৮৩১ সালে অক্সফোর্ড থেকে ফৌজদারি আইনের উপর সম্মানসূচক ডক্টরেট লাভ করেন।[২৯]

গ্রন্থতালিকা[সম্পাদনা]

শিরোনাম প্রকাশের তারিখ যে নামে লিখেছেন ধরন
লেটার্স অব জোনাথন ওল্ডস্টাইল ১৮০২ জোনাথন ওল্ডস্টাইল পর্যবেক্ষণমূলক চিঠি
সালমাগুন্ডি ১৮০৭–১৮০৮ লঞ্চেলট ল্যাঙ্গস্টাফ, উইল উইজার্ড ব্যঙ্গধর্মী
আ হিস্টরি অব নিউ ইয়র্ক ১৮০৯ ডিয়েড্রিখ নিকারবোকার ব্যঙ্গধর্মী
দ্য স্কেচ বুক অব জেফ্রি ক্রেয়ন, জেন্ট. ১৮১৯–১৮২০ জেফ্রি ক্রেয়ন ছোটগল্প/প্রবন্ধ
ব্রেসব্রিজ হল ১৮২২ জেফ্রি ক্রেয়ন ছোটগল্প/প্রবন্ধ
টেলস অব আ ট্রাভেলার ১৮২৪ জেফ্রি ক্রেয়ন ছোটগল্প/প্রবন্ধ
আ হিস্টরি অব দ্য লাইফ অ্যান্ড ভয়েজেস অব ক্রিস্টোফার কলম্বাস ১৮২৮ ওয়াশিংটন আরভিং জীবনী/ইতিহাস
ক্রনিকল অব দ্য কনকোয়েস্ট অব গ্রানাডা ১৮২৯ ফ্রে অ্যান্টনিও আগাপিডা[ক] প্রণয়ধর্মী ইতিহাস
ভয়েজেস অ্যান্ড ডিসকভারি
অব দ্য কম্প্যানিয়ন্স অব কলম্বাস
১৮৩১ ওয়াশিংটন আরভিং জীবনী/ইতিহাস
টেলস অব দি আলহাম্বরা ১৮৩২ "স্কেচ বুকের লেখক" ছোটগল্প/ভ্রমণ
দ্য ক্রেয়ন মিসেলানি[খ] ১৮৩৫ জেফ্রি ক্রেয়ন ছোটগল্প
অ্যাস্টোরিয়া ১৮৩৬ ওয়াশিংটন আরভিং জীবনী/ইতিহাস
দি অ্যাডভেঞ্চার অব ক্যাপ্টেন বোনভিল ১৮৩৭ ওয়াশিংটন আরভিং জীবনী/প্রণয়ধর্মী ইতিহাস
দ্য লাইফ অব অলিভার গোল্ডস্মিথ ১৮৪০
(পুনঃসংস্করণ ১৮৪৯)
ওয়াশিংটন আরভিং জীবনী
বায়োগ্রাফি অ্যান্ড পোয়েটিক রিমেইন্স
অব দ্য লেট মার্গারেট মিলার ডেভিডসন
১৮৪১ ওয়াশিংটন আরভিং জীবনী
মাহোমেট অ্যান্ড হিজ সাকসেসর্স ১৮৪৯ ওয়াশিংটন আরভিং জীবনী/ইতিহাস
উল্‌ফার্টস রুস্ট ১৮৫৫ জেফ্রি ক্রেয়ন
ডিয়েড্রিখ নিকারবোকার
ওয়াশিংটন আরভিং
জীবনী
দ্য লাইফ অব জর্জ ওয়াশিংটন (৫ খণ্ড) ১৮৫৫–১৮৫৯ ওয়াশিংটন আরভিং জীবনী

টীকা[সম্পাদনা]

  1. আরভিঙের প্রকাশক জন মারি ছদ্মনাম ব্যবহারের বিষয়ে আরভিঙের সিদ্ধান্ত বাতিল করে আরভিঙের নামে বইটি প্রকাশ করেন।[৩০]
  2. দ্য ক্রেয়ন মিসেলানি সংকলনে তিনটি ছোটগল্প অন্তর্ভুক্ত করা হয়, সেগুলো হল - "আ টুর অন দ্য প্রেইরিস", "অ্যাবটসফোর্ড অ্যান্ড নিউস্টিড অ্যাবি", ও "লেজেন্ডস অব দ্য কনকোয়েস্ট অব স্পেন"।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. বারস্টেইন (২০০৭), পৃ. ৭।
  2. ডোসেন্ট টুর (২৮ অক্টোবর ২০১৭)। "Home of the Legend: Washington Irving's Sunnyside"। হিস্টরিক হাডন ভ্যালি 
  3. পিএমআই, ১:২৬, অন্যান্য
  4. পিএমআই, ১:২৭।
  5. জোন্স (২০০৮), পৃ. ৫।
  6. "The life and letters of Washington Irving" আর্কাইভ।
  7. ওয়ার্নার (১৯৮১), পৃ. ২৭; পিএমআই, ১:৩৬।
  8. জোন্স (২০০৮), পৃ. ১১।
  9. পিএমআই, ১:৪২–৪৩।
  10. বারস্টেইন, পৃ. ১৯।
  11. জোন্স (২০০৮), পৃ. ৩৬।
  12. বারস্টেইন (২০০৭), পৃ. ৪৩।
  13. জোন্স (২০০৮), পৃ. ৪৪–৭০।
  14. আরভিং, ওয়াশিংটন। "Memoir of Washington Allston", ওয়ার্কস ২:১৭৫।
  15. Washington Irving to Mrs. Amelia Foster, [April–May 1823], Works, ২৩:৭৪০-৪১।
  16. পিএমআই, ১:১৭৩।
  17. উইলিয়ামস, ১:৭৭, অন্যান্য
  18. বারস্টেইন (২০০৭), পৃ. ৪৭।
  19. জোন্স (২০০৮), পৃ. ৮২।
  20. বুরোস, এডউইন জি. ও ওয়ালেস, মাইক (১৯৯৯)। Gotham: A History of New York City to 1898। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস। পৃ. ৪১৭।
  21. জোন্স (২০০৮), পৃ. ৭৪-৭৫।
  22. জোন্স (২০০৮), পৃ. ১১৮-১২৭।
  23. বারস্টেইন, পৃ. ৭২।
  24. হেলম্যান, পৃ. ৯৭।
  25. জোন্স, পৃ. ১৫৪-১৬০।
  26. See reviews from Quarterly Review and others, in The Sketch Book, xxv–xxviii; PMI 1:418–19.
  27. বার্স্টেইন, পৃ. ১৯১।
  28. বাউয়ার্স, পৃ. ২২-৪৮।
  29. PMI, 2:429, 430, 431–32
  30. জোন্স (২০০৮), পৃ. ২৫৮-৫৯।

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

কূটনৈতিক পদবী
পূর্বসূরী
অ্যারন ভেইল
স্পেনে মার্কিন রাষ্ট্রদূত
১৮৪২–১৮৪৬
উত্তরসূরী
রমুলাস এম. সন্ডার্স