কাজী এবাদুল হক
কাজী এবাদুল হক | |
---|---|
জন্ম | ফেনী, বাংলাদেশ | ১ জানুয়ারি ১৯৩৬
মৃত্যু | ১৪ জুলাই ২০২২ শমরিতা হাসপাতাল, ঢাকা, বাংলাদেশ | (বয়স ৮৬)
শিক্ষা | এলএলবি |
মাতৃশিক্ষায়তন | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় |
পেশা | আইনজীবী |
কর্মজীবন | ১৯৫৯—২০০১ |
সন্তান | কাজী জিনাত হক |
পুরস্কার | একুশে পদক (২০১৬) |
কাজী এবাদুল হক (১ জানুয়ারি ১৯৩৬ — ১৪ জুলাই ২০২২) ছিলেন বাংলাদেশের সুপ্রিম আদালতের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি। বাংলা ভাষা আন্দোলনে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার ২০১৬ সালে তাকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করে।[১]
জন্ম, শিক্ষা ও ভাষা আন্দোলন
[সম্পাদনা]এবাদুল হক ১৯৩৬ সালের ১লা জানুয়ারি ফেনী জেলার বালীগাঁও গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার পিতা কাজী আবদুল হক এবং মাতা হুরেনেছা বেগম। তিনি ফেনী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৫১ সালে মাধ্যমিক পাস করেন। পরে তিনি ঢাকা কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হন এবং ছয়মাস সেখানে পড়াশোনা করেন। এই সময়ে তিনি কলেজের ছাত্র সংসদের নির্বাচিত আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। ঢাকা কলেজ থেকে তিনি ফেনী কলেজে স্থানান্তরিত হন এবং ১৯৫২ সালে ফেনী কলেজের ছাত্র সংসদের সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৫৩ সালে তিনি ফেনী কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন।[২] ১৯৫২ সালে তিনি ফেনী শহরে বাংলা ভাষা আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। তিনি ১৯৫৪ ও ১৯৫৫ সালে ফেনী ভাষা সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ছিলেন।[৩] পরবর্তী কালে তিনি ১৯৫৫ সালে স্নাতক এবং ১৯৫৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি উপাধি অর্জন করেন।[২]
কর্মজীবন
[সম্পাদনা]কাজী এবাদুল হক ১৯৫৯ সালে ফেনী মহকুমা আদালতে আইন পেশায় যুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে তার কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি ঢাকা জেলা আদালতে যোগদান করেন। ১৯৬৬ সালে ঢাকা উচ্চ আদালতের আইনজীবী নিযুক্ত হন এবং ১৯৭২ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। ১৯৯০ সালে তিনি উচ্চ আদালত বিভাগের বিচারপতি পদে যোগদান করেন। উচ্চ আদালত বিভাগের বিচারপতি থাকাকালীন ১৯৯৮ সালে "নজরুল ইসলাম বনাম রাষ্ট্র" মামলার রায়টি বাংলায় প্রদান করে নজির সৃষ্টি করেন। তাঁর এবং বিচারপতি হামিদুল হক সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চটিই প্রথম বাংলা ভাষায় রায় দেয়, যা আইন সাময়িকীতে (ঢাকা ল' রিপোর্টার্স ৫০ ও ৫১ ডিএলআর) প্রকাশিত হয়।[৪][৫] ২০০০ সালে তিনি আপিল বিভাগে বিচারপতি পদে পদোন্নতি লাভ করেন। ২০০১ সালে তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতির পদ থেকে অবসর নেন।[২]
মৃত্যু
[সম্পাদনা]কাজী এবাদুল হক ২০২২ সালের ১৪ই জুলাই রাত ১২.৪৫ মিনিটে ঢাকার শমরিতা হাসপাতালে বার্ধক্যজনিত কারণে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ইন্তেকাল করেন।[৬]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "একুশে পদক পাচ্ছেন কাজী এবাদুল হক"। দ্য ডেইলি স্টার। ১১ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ এপ্রিল ২০১৯।
- ↑ ক খ গ "কাজী এবাদুল হক"। দৈনিক ভোরের কাগজ। ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯। ১১ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ এপ্রিল ২০১৯।
- ↑ সাদেক, সাইফুল্লাহ (১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭)। "একুশে পদকপ্রাপ্ত ভাষা সংগ্রামী দম্পতির স্বর্ণালি দিনের কথা"। চ্যানেল আই অনলাইন। সংগ্রহের তারিখ ১১ এপ্রিল ২০১৯।
- ↑ রায়, কুন্তল (১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬)। "উচ্চ আদালতে এখনো অবহেলিত বাংলা"। দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ১১ এপ্রিল ২০১৯।
- ↑ "উচ্চ আদালতে বাংলা ভাষা উপেক্ষিত: ৮৪ বিচারপতির মধ্যে ব্যতিক্রম মাত্র দু'জন"। দৈনিক সমকাল। ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮। ১১ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ এপ্রিল ২০১৯।
- ↑ "সাবেক বিচারপতি কাজী এবাদুল হকের জীবনাবসান"। Jugantor (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৭-১৫।