২০২৩ বাংলায় তাপপ্রবাহ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বাংলা অঞ্চল

২০২৩ বাংলায় তাপপ্রবাহ হচ্ছে বাংলায় প্রবাহমান তীব্র তাপপ্রবাহবিহার, উডিষ্যা এবং ত্রিপুরা-মেঘালয়ের কিছু অংশে প্রবাহমান মৃদু তাপপ্রবাহ[১][২] এপ্রিল মাসের প্রারম্ভে এ তাপপ্রবাহ শুরু হয় যা এ অঞ্চলের ইতিহাসে প্রায় অর্ধ-শতাব্দিকালে সর্বোচ্চ এবং বাংলাদেশের চুয়াডাঙ্গায় জেলায় ১৫ এপ্রিল সর্বোচ্চ ৪২.২ ডিগ্রি তাপমাত্রা নথিভুক্ত করা হয়।[৩]

তাপপ্রবাহের দরুন স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করা হয়, বিদ্যালয় ও অফিস ঘন্টা গুলো চলমান রাখা ব্যাহত হয়, বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয় তথাপি সাধারণ জীবযাপনের অস্বাভাবিক ব্যাঘাত দেখা দিয়েছে।[৪]

কারণ[সম্পাদনা]

ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিউশনের মে মাসের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে ভারতবাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপপ্রবাহের সম্ভাবনা কমপক্ষে ৩০ গুণ বেশি ছিল এবং জলবায়ু পরিবর্তন এপ্রিলে তাপমাত্রা প্রায় ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৩.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট) বৃদ্ধি করে।[৫]

ঘটনা প্রবাহ[সম্পাদনা]

এপ্রিল[সম্পাদনা]

বাংলাদেশ[সম্পাদনা]

বাংলাদেশ কোথাও মৃদু তাপপ্রবাহ এবং কোথাও তীব্র তাপপ্রবাহ দেখা যায়।[৬] তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে বাযুর আদ্রতাও হ্রাস পেয়েছিলো। ১৬ই এপ্রিল বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা ৫৮ বছর পর আরেকটি তীব্র দাবদাহের দিন দেখে, যেদিন তাপমাত্রা ৪০.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা নথিভুক্ত করা হয়।[৭] একইদিন, তীব্র তাপপ্রবাহকে সংকট হিসেবে উল্লেখ করে তা মোকাবেলায় ‘তাপমাত্রাজনিত জরুরি অবস্থা’ জারি করা হতে পারে বলে গণমাধ্যমকে জানান বাংলাদেশের পরিবেশমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দীন[৮]

পশ্চিমবঙ্গ[সম্পাদনা]

এপ্রিল মাসের প্রারম্ভকালে পশ্চিমবঙ্গে মৃদু তাপপ্রবাহ দেখা যায়। ১৩ এপ্রিল কলকাতায় ৩৯.৬ ডিগ্রি তাপমাত্রা নথিভুক্ত করা হয়।[৯] ভারতের আবহাওয়া বিজ্ঞান দপ্তর পশ্চিমবঙ্গে তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করে এবং রাজ্য সরকার তাপপ্রবাহের দরুণ রাজ্যের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে।[৯][১০]

মে[সম্পাদনা]

বাংলাদেশ[সম্পাদনা]

মে মাসের জুড়ে তাপমাত্রা হ্রাসবৃদ্ধি হতে থাকে, কোথায় ঝড়-বৃষ্টি, কোথাও মৃদু থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ হয়। ৯ মে আবহাওয়ার পুর্বাভাসে বলা হয় দেশের পাঁচ জেলায় তীব্র তাপপ্রবাহ এবং কয়েকটি জেলায় মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ৮ ও ৯ মে চুয়াডাঙ্গায় ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা নথিভুক্ত করা হয়, ৯ মে কুমারখালীতেনেত্রকোনায় ৪০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং রাজশাহীতে ৪০.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা নথিভুক্ত করে আবহাওয়া অধিদপ্তর।[১১] ২১শে মে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় রাজশাহী, পাবনা, যশোরচুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।[১২] মাসের শেষদিকে তাপমাত্রা বাড়তে থাকে, ৩১শে মে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয় দেশে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে যা অব্যাহত থাকবে।[১৩]

পশ্চিমবঙ্গ[সম্পাদনা]

২৭শে মে পশ্চিমবঙ্গে তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করা হয়। ভারতের আবহাওয়া দপ্তর আশংকা করে, মে মাসের শেষে এবং জুনে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির সেলসিয়াস অতিক্রম করতে পারে।[১৪]


জুন[সম্পাদনা]

বাংলাদেশ[সম্পাদনা]

জুনের প্রারম্ভে তাপমাত্রা বেড়ে যায়, ২রা জুন বাংলাদেশের রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহীসৈয়দপুর জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং সিলেট, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, চাঁদপুর, নোয়াখালীফেনী জেলাসহ ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা বিভাগ, রংপুররাজশাহী বিভাগের কিছু অংশের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়া শুরু হয়। এ সময় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস নথিভুক্ত করা হয়।[১৫]

পশ্চিমবঙ্গ[সম্পাদনা]

ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জেলায় মৃদু ও তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে এবং তা ৭ জুন পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।[১৬][১৭]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. নিজস্ব প্রতিবেদক (ঢাকা), প্রথম আলো (১৩ এপ্রিল ২০২৩)। "সাত বিভাগে তাপপ্রবাহ, কাল থেকে গরম আরও বাড়তে পারে"প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ১৬ এপ্রিল ২০২৩ 
  2. "বাংলা-সহ পূর্বের বেশির ভাগ রাজ্যে আপাতত তাপপ্রবাহ! বৃষ্টির পূর্বাভাস উত্তর-পশ্চিম ভারতে"আনন্দবাজার পত্রিকা। ১৬ এপ্রিল ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ১৬ এপ্রিল ২০২৩ 
  3. চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি ,যুগান্তর (১৫ এপ্রিল ২০২৩)। "তীব্র দাবদাহে পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা, তাপমাত্রা ৪২.২ ডিগ্রি"যুগান্তর। সংগ্রহের তারিখ ১৬ এপ্রিল ২০২৩ 
  4. Sumon, Shehab (২০২৩-০৪-৩০)। "Record heat threatens health, food security of Bangladeshis"Arab News (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৫-০২ 
  5. "Extreme humid heat in South Asia in April 2023, largely driven by climate change, detrimental to vulnerable and disadvantaged communities"www.worldweatherattribution.org। ১৭ মে ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুন ২০২৩ 
  6. নিজস্ব প্রতিবেদক (ঢাকা), প্রথম আলো (১৩ এপ্রিল ২০২৩)। "সাত বিভাগে তাপপ্রবাহ, কাল থেকে গরম আরও বাড়তে পারে"প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ১৬ এপ্রিল ২০২৩ 
  7. Sahidul Hasan Khokon, Dhaka (১৬ এপ্রিল ২০২৩)। "At 40.4°C, Dhaka sees hottest day in 58 years as Bangladesh reels under heatwave"ইন্ডিয়া টুডে। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুন ২০২৩ 
  8. কালের কন্ঠ ডেস্ক (১৬ এপ্রিল ২০২৩)। "'তাপমাত্রাজনিত জরুরি অবস্থা' জারি হতে পারে!"কালের কন্ঠ। সংগ্রহের তারিখ ১৬ এপ্রিল ২০২৩ 
  9. "কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গে তাপপ্রবাহের সতর্কতা"বিবিসি বাংলা। ১৩ এপ্রিল ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ১৬ এপ্রিল ২০২৩ 
  10. আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা পোস্ট (১৬ এপ্রিল ২০২৩)। "তীব্র তাপপ্রবাহ : পশ্চিমবঙ্গে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা"ঢাকা পোস্ট। সংগ্রহের তারিখ ১৬ এপ্রিল ২০২৩ 
  11. নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের কন্ঠ (৯ মে ২০২৩)। "গরমে নাকাল সারা দেশ, থাকবে আরো দুই দিন"কালের কন্ঠ। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুন ২০২৩ 
  12. স্টার অনলাইন রিপোর্ট (২১ মে ২০২৩)। "দেশের ৪ জেলায় মৃদু তাপপ্রবাহ চলছে: আবহাওয়া অধিদপ্তর"ডেইলি স্টার। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুন ২০২৩ 
  13. বাসস, ঢাকা (৩১ মে ২০২৩)। "দেশে মৃদু তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে"দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুন ২০২৩ 
  14. বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট (২৭ মে ২০২৩)। "পশ্চিমবঙ্গে ফের তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি"বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুন ২০২৩ 
  15. অনলাইন ডেস্ক, এনটিভি (২ জুন ২০২৩)। "চার জেলায় তীব্র তাপপ্রবাহ, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা পৌঁছাল ৪১ ডিগ্রিতে"এনটিভি। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুন ২০২৩ 
  16. বিশেষ সংবাদদাতা, কলকাতা (২ জুন ২০২৩)। "পশ্চিমবঙ্গে সাত জুন পর্যন্ত তাপপ্রবাহ চলবে"মানবজমিন। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুন ২০২৩ 
  17. দাস, আয়ান (১ জুন ২০২৩)। "৭ জুন পর্যন্ত অসহ্য গরমে পুড়বে বাংলা, কবে কোন জেলায় তাপপ্রবাহ? জারি সতর্কতার"হিন্দুস্তান টাইমস। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুন ২০২৩