২০২৩ বাংলায় তাপপ্রবাহ
২০২৩ বাংলায় তাপপ্রবাহ হচ্ছে বাংলায় প্রবাহমান তীব্র তাপপ্রবাহ ও বিহার, উডিষ্যা এবং ত্রিপুরা-মেঘালয়ের কিছু অংশে প্রবাহমান মৃদু তাপপ্রবাহ।[১][২] এপ্রিল মাসের প্রারম্ভে এ তাপপ্রবাহ শুরু হয় যা এ অঞ্চলের ইতিহাসে প্রায় অর্ধ-শতাব্দিকালে সর্বোচ্চ এবং বাংলাদেশের চুয়াডাঙ্গায় জেলায় ১৫ এপ্রিল সর্বোচ্চ ৪২.২ ডিগ্রি তাপমাত্রা নথিভুক্ত করা হয়।[৩]
তাপপ্রবাহের দরুন স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করা হয়, বিদ্যালয় ও অফিস ঘন্টা গুলো চলমান রাখা ব্যাহত হয়, বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয় তথাপি সাধারণ জীবযাপনের অস্বাভাবিক ব্যাঘাত দেখা দিয়েছে।[৪]
কারণ[সম্পাদনা]
ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিউশনের মে মাসের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে ভারত ও বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপপ্রবাহের সম্ভাবনা কমপক্ষে ৩০ গুণ বেশি ছিল এবং জলবায়ু পরিবর্তন এপ্রিলে তাপমাত্রা প্রায় ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৩.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট) বৃদ্ধি করে।[৫]
ঘটনা প্রবাহ[সম্পাদনা]
এপ্রিল[সম্পাদনা]
বাংলাদেশ[সম্পাদনা]
বাংলাদেশ কোথাও মৃদু তাপপ্রবাহ এবং কোথাও তীব্র তাপপ্রবাহ দেখা যায়।[৬] তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে বাযুর আদ্রতাও হ্রাস পেয়েছিলো। ১৬ই এপ্রিল বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা ৫৮ বছর পর আরেকটি তীব্র দাবদাহের দিন দেখে, যেদিন তাপমাত্রা ৪০.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা নথিভুক্ত করা হয়।[৭] একইদিন, তীব্র তাপপ্রবাহকে সংকট হিসেবে উল্লেখ করে তা মোকাবেলায় ‘তাপমাত্রাজনিত জরুরি অবস্থা’ জারি করা হতে পারে বলে গণমাধ্যমকে জানান বাংলাদেশের পরিবেশমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দীন।[৮]
পশ্চিমবঙ্গ[সম্পাদনা]
এপ্রিল মাসের প্রারম্ভকালে পশ্চিমবঙ্গে মৃদু তাপপ্রবাহ দেখা যায়। ১৩ এপ্রিল কলকাতায় ৩৯.৬ ডিগ্রি তাপমাত্রা নথিভুক্ত করা হয়।[৯] ভারতের আবহাওয়া বিজ্ঞান দপ্তর পশ্চিমবঙ্গে তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করে এবং রাজ্য সরকার তাপপ্রবাহের দরুণ রাজ্যের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে।[৯][১০]
মে[সম্পাদনা]
বাংলাদেশ[সম্পাদনা]
মে মাসের জুড়ে তাপমাত্রা হ্রাসবৃদ্ধি হতে থাকে, কোথায় ঝড়-বৃষ্টি, কোথাও মৃদু থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ হয়। ৯ মে আবহাওয়ার পুর্বাভাসে বলা হয় দেশের পাঁচ জেলায় তীব্র তাপপ্রবাহ এবং কয়েকটি জেলায় মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ৮ ও ৯ মে চুয়াডাঙ্গায় ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা নথিভুক্ত করা হয়, ৯ মে কুমারখালীতে ও নেত্রকোনায় ৪০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং রাজশাহীতে ৪০.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা নথিভুক্ত করে আবহাওয়া অধিদপ্তর।[১১] ২১শে মে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় রাজশাহী, পাবনা, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।[১২] মাসের শেষদিকে তাপমাত্রা বাড়তে থাকে, ৩১শে মে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয় দেশে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে যা অব্যাহত থাকবে।[১৩]
পশ্চিমবঙ্গ[সম্পাদনা]
২৭শে মে পশ্চিমবঙ্গে তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করা হয়। ভারতের আবহাওয়া দপ্তর আশংকা করে, মে মাসের শেষে এবং জুনে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির সেলসিয়াস অতিক্রম করতে পারে।[১৪]
জুন[সম্পাদনা]
বাংলাদেশ[সম্পাদনা]
জুনের প্রারম্ভে তাপমাত্রা বেড়ে যায়, ২রা জুন বাংলাদেশের রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী ও সৈয়দপুর জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং সিলেট, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, চাঁদপুর, নোয়াখালী ও ফেনী জেলাসহ ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা বিভাগ, রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের কিছু অংশের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়া শুরু হয়। এ সময় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস নথিভুক্ত করা হয়।[১৫]
পশ্চিমবঙ্গ[সম্পাদনা]
ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জেলায় মৃদু ও তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে এবং তা ৭ জুন পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।[১৬][১৭]
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ নিজস্ব প্রতিবেদক (ঢাকা), প্রথম আলো (১৩ এপ্রিল ২০২৩)। "সাত বিভাগে তাপপ্রবাহ, কাল থেকে গরম আরও বাড়তে পারে"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ১৬ এপ্রিল ২০২৩।
- ↑ "বাংলা-সহ পূর্বের বেশির ভাগ রাজ্যে আপাতত তাপপ্রবাহ! বৃষ্টির পূর্বাভাস উত্তর-পশ্চিম ভারতে"। আনন্দবাজার পত্রিকা। ১৬ এপ্রিল ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ১৬ এপ্রিল ২০২৩।
- ↑ চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি ,যুগান্তর (১৫ এপ্রিল ২০২৩)। "তীব্র দাবদাহে পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা, তাপমাত্রা ৪২.২ ডিগ্রি"। যুগান্তর। সংগ্রহের তারিখ ১৬ এপ্রিল ২০২৩।
- ↑ Sumon, Shehab (২০২৩-০৪-৩০)। "Record heat threatens health, food security of Bangladeshis"। Arab News (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৫-০২।
- ↑ "Extreme humid heat in South Asia in April 2023, largely driven by climate change, detrimental to vulnerable and disadvantaged communities"। www.worldweatherattribution.org। ১৭ মে ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুন ২০২৩।
- ↑ নিজস্ব প্রতিবেদক (ঢাকা), প্রথম আলো (১৩ এপ্রিল ২০২৩)। "সাত বিভাগে তাপপ্রবাহ, কাল থেকে গরম আরও বাড়তে পারে"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ১৬ এপ্রিল ২০২৩।
- ↑ Sahidul Hasan Khokon, Dhaka (১৬ এপ্রিল ২০২৩)। "At 40.4°C, Dhaka sees hottest day in 58 years as Bangladesh reels under heatwave"। ইন্ডিয়া টুডে। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুন ২০২৩।
- ↑ কালের কন্ঠ ডেস্ক (১৬ এপ্রিল ২০২৩)। "'তাপমাত্রাজনিত জরুরি অবস্থা' জারি হতে পারে!"। কালের কন্ঠ। সংগ্রহের তারিখ ১৬ এপ্রিল ২০২৩।
- ↑ ক খ "কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গে তাপপ্রবাহের সতর্কতা"। বিবিসি বাংলা। ১৩ এপ্রিল ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ১৬ এপ্রিল ২০২৩।
- ↑ আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা পোস্ট (১৬ এপ্রিল ২০২৩)। "তীব্র তাপপ্রবাহ : পশ্চিমবঙ্গে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা"। ঢাকা পোস্ট। সংগ্রহের তারিখ ১৬ এপ্রিল ২০২৩।
- ↑ নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের কন্ঠ (৯ মে ২০২৩)। "গরমে নাকাল সারা দেশ, থাকবে আরো দুই দিন"। কালের কন্ঠ। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুন ২০২৩।
- ↑ স্টার অনলাইন রিপোর্ট (২১ মে ২০২৩)। "দেশের ৪ জেলায় মৃদু তাপপ্রবাহ চলছে: আবহাওয়া অধিদপ্তর"। ডেইলি স্টার। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুন ২০২৩।
- ↑ বাসস, ঢাকা (৩১ মে ২০২৩)। "দেশে মৃদু তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে"। দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুন ২০২৩।
- ↑ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট (২৭ মে ২০২৩)। "পশ্চিমবঙ্গে ফের তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি"। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুন ২০২৩।
- ↑ অনলাইন ডেস্ক, এনটিভি (২ জুন ২০২৩)। "চার জেলায় তীব্র তাপপ্রবাহ, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা পৌঁছাল ৪১ ডিগ্রিতে"। এনটিভি। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুন ২০২৩।
- ↑ বিশেষ সংবাদদাতা, কলকাতা (২ জুন ২০২৩)। "পশ্চিমবঙ্গে সাত জুন পর্যন্ত তাপপ্রবাহ চলবে"। মানবজমিন। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুন ২০২৩।
- ↑ দাস, আয়ান (১ জুন ২০২৩)। "৭ জুন পর্যন্ত অসহ্য গরমে পুড়বে বাংলা, কবে কোন জেলায় তাপপ্রবাহ? জারি সতর্কতার"। হিন্দুস্তান টাইমস। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুন ২০২৩।