ম্যাচা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ম্যাচা
বেলিয়াতোড়ের একটি মিষ্টির দোকানের ম্যাচা
ধরনমিষ্টি
উৎপত্তিস্থলভারত
অঞ্চল বা রাজ্যবাঁকুড়া জেলা, পশ্চিমবঙ্গ
উদ্ভাবন১৬২৫-৩৫[১]
পরিবেশনস্বাভাবিক তাপমাত্রা
প্রধান উপকরণমুগডাল, চিনি

ম্যাচা বা মেচা পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার এক জনপ্রিয় মিষ্টি। একে অনেক সময় ম্যাচা সন্দেশও বলা হয়। বেলিয়াতোড়ের ম্যাচা অত্যন্ত প্রসিদ্ধ[২] এবং সব চেয়ে উৎকৃষ্ট বলে গণ্য করা হয়।[৩] মুগডাল ও চিনি দিয়ে ম্যাচা তৈরী করা হয়। ম্যাচা দেখতে অনেকটা মনোহরার মত।[২] পূর্বে ম্যাচার জনপ্রিয়তা বর্তমানে অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে।[২] পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্যোগে, বর্ধমানের উপকন্ঠে নবনির্মিত মিষ্টি হাবে, পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য মিষ্টির সাথে ম্যাচাও উৎপাদিত হবে।[৪]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

বেলিয়াতোড়ের একটি ম্যাচার দোকান

ম্যাচার স্রষ্টার নাম জানা যায় না।[৫] বেলিয়াতোড়ের ম্যাচা প্রস্তুতকারকদের মতে ম্যাচার ইতিহাস অন্তত দু'শো বছরের প্রাচীন।[৬] জনশ্রুতি, বিষ্ণুপুরের মল্লরাজের দেওয়ান রাজার কাছ থেকে উপহার পেয়েছিলেন বেলিয়াতোড়ের জমিদারি। সেই সময়ে বেলিয়াতোড়ে প্রথম মেচা তৈরী হয়।[৭] অপর একটি মত অনুসারে ম্যাচার স্রষ্টা জনৈক মিষ্টান্ন প্রস্তুতকারক গিরিশচন্দ্র মোদক।[৮] বর্ষায় বাবা ধর্মদাসের মেলা বসত। সেই মেলায় গুড়ের লাড্ডু বিক্রি করতেন গিরিশচন্দ্র মোদক। কিন্তু আর্দ্র আবহাওয়ায় গুড়ের পাক নষ্ট হয়ে যেত। সেই সমস্যা সমাধান করতে গিয়ে গিরিশচন্দ্র নতুন একটি মিষ্টি উদ্ভাবান করেন, যা হল ম্যাচা।[৮]

ইংরেজ আমলেও বেলিয়াতোড়ের ম্যাচা প্রসিদ্ধ ছিল বলে মনে করা হয়। ম্যাচার আদি কারিগরেরা ছিলেন বর্তমান বেলিয়াতোড় ব্লকের বাসিন্দা। পরবর্তীকালে তারা ছড়িয়ে পড়েন ওন্দা, কোতলপুর এবং অন্যান্য স্থানে।

প্রস্তুত প্রণালী[সম্পাদনা]

ম্যাচার মুল উপকরণ মুগ ডাল[৯] ও চিনি। প্রথমে মুগডালবাটার সাথে চিনি মিশিয়ে ঠিকমতো পাক করে গোল্লা পাকানো হয়। পরে এর উপর একটি চিনির প্রলেপ দেওয়া হয়।[২]

জনপ্রিয়তা[সম্পাদনা]

বাংলার বিখ্যাত চিত্রশিল্পী যামিনী রায় ছিলেন ম্যাচার গুণগ্রাহী।। কলকাতায় অবস্থানকালে যখনই তিনি বাঁকুড়া যেতেন, তিনি ম্যাচার গুণমান ও ম্যাচার কারিগরদের খোঁজখবর নিতেন।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. লাহিড়ী, অর্পিতা (২৭ মে ২০১৮)। "Bankura's mecha sandesh demands GI tag"The BengalStory। সংগ্রহের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০১৮ 
  2. রায়, প্রণব (জুলাই ১৯৮৭)। বাংলার খাবার। কলকাতা: সাহিত্যলোক। পৃষ্ঠা ৪৩। 
  3. দাস, অশোক (১৮ মে ২০১৩)। "ফ্যাণ্ডা ফ্যাচাং তরকারি"গণশক্তি। সিপিআইএম। ১৭ আগস্ট ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ 
  4. "মিষ্টি হাব বর্ধমানে"প্লাস বাংলা। জেসান মিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  5. বন্দ্যোপাধ্যায়, সুকুমার; মুখোপাধ্যায়, পলাশ। "মেচায় মজেছে মন"আবেক্ষণ। ১৯ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ 
  6. সিদ্দিকী, কাঞ্চন (১৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৫)। "Mecha doesn't tickle govt sweet tooth"। দ্য স্টেটসম্যান (ইংরেজি ভাষায়)। দ্য স্টেটসম্যান লিমিটেড। 
  7. বন্দ্যোপাধ্যায়, তারাশংকর। "স্বাদের ঐতিহ্যে বেলিয়াতোড়ের মেচা সন্দেশ"কৌলালআইএসএসএন 2348-6864। সংগ্রহের তারিখ ১৮ নভেম্বর ২০১৮ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  8. পান, মৃন্ময় (১৬ নভেম্বর ২০১৮)। "বেলিয়াতোড়ের মোড় এলেই হাতছানি দেবে মেচা সন্দেশ"দ্য ওয়াল। ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ নভেম্বর ২০১৮ 
  9. বোস, মেঘাদ্রিতা। "বাঙালির ভুরিভোজের ইতিকথা"অন্যদেশ। সংগ্রহের তারিখ ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]