মাখন ধোসা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মাখন ধোসা
অন্যান্য নামদাবণগেরে বেনে ধোসা
উৎপত্তিস্থলভারত
অঞ্চল বা রাজ্যকর্ণাটক
প্রধান উপকরণচাল বাটা, মাখন

দাবণগেরে বেনে ধোসা বা মাখন ধোসা হল এক ধরনের ধোসা যার উদ্ভব ভারতের কর্ণাটকের দাবণগেরে শহরে। বেনে ধোসা শব্দটি এসেছে ইংরেজি ভাষার বাটার ডোজ্ বা মাখনের মাত্রা -এই শব্দটি থেকে। একটি সাধারণ ধোসা তৈরি করার সময় যখন প্রচুর পরিমাণে মাখন যোগ করা হয় এবং নারকেলের চাটনি সহকারে পরিবেশন করা হয় তখন তাকে মাখন ধোসা বা বেনে ধোসা বলা হয়। একটি সাধারন ধোসা প্রস্তুতির সময় যে চাল, ডাল ইত্যাদি উপাদানের এক থকথকে পিটালি গোলা তৈরী করা হয় তার থেকে বেনে ধোসার জন্য প্রস্তুত গোলা একটু আলাদা হয়। এটি সাধারণত কাঠের রান্না করার পাত্রে তৈরি করা হয়। এটি মসালা দোসা বা সেট ডোসার মতোই হয় তবে তুলনামুলকভাবে এটি আকারে ছোট হয়। চাল বাটার গোলা এবং অনেক বেশি পরিমানে মাখন যোগ করে এই ধোসা তৈরি করা হয়। রান্না করার পর এই ধোসার উপর মাখন ছিটিয়ে পরিবেশন করা হয়।[১][২]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

দাবণগেরে বেনে দোসার উৎপত্তির একটি আকর্ষণীয় ইতিহাস রয়েছে যার সময়কাল ১৯২৮ সাল। চেন্নাম্মা নামের এক মহিলা তার সন্তানদের নিয়ে কর্ণাটকের দাবণগেরে শহরে বসবাসের জন্য আসেন। তিনি তার নিজস্ব অনন্য রন্ধনপ্রনালী দিয়ে দোসা, চাটনি এবং আলু পালিয়া ইত্যাদি খাবার তৈরি করতে শুরু করেন। তিনি দাবণগেরের বসন্ত টকিজের কাছে অবস্থিত সাভালাগি নাট্যমঞ্চের সামনে তার ছোট্ট খাবারের দোকান শুরু করেছিলেন যা তার হাতে তৈরি খাবারের স্বাদের জন্য জনপ্রিয় হয়েছিল।

প্রথমে তিনি রাগি বেটে তৈরি পিটালি গোলা দিয়ে ধোসা তৈরি করতেন। পরবর্তীতে ১৯৩৮ সাল নাগাদ, তার সন্তানেরা চালের বাটা দিয়ে ও তার মধ্যে মাখন দিয়ে ধোসা তৈরি করতে শুরু করে। এটি খুব দ্রুত স্থানীয়দের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। চেন্নাম্মার দুই ছেলে শান্তাপ্পা এবং মহাদেবপ্পা এই রন্ধনপ্রনালী পরম্পরাগতভাবে অনুসরন করতেন। তারা দুজনেই তাদের নিজস্ব খাবারের দোকান খুলেছিলেন।

শান্তাপ্পা ১৯৪৪ সালে "শান্তাপ্পা দোসা হোটেল" নামে তার নিজস্ব খাবারের দোকান খোলেন এবং এটি পুরানো দাবণগেরের ঘড়ি ঘরের কাছে অবস্থিত। এটি শহরের সবচেয়ে পুরনো বেনে ধোসা খাবারের দোকান এবং বর্তমানে তার ছেলে গণেশ এটি পরিচালনা করেন। [৩]

মহাদেবাপ্পা বসন্ত থিয়েটারের কাছে তার ভোজনশালা খোলেন যা বর্তমানে আর নেই। তার বড় ছেলে রবি চার্চ রোডের কাছে রবি বেনে ডোজ হোটেল নামের একটি বেনে ধোসার দোকান খুলেছিল। [৪] তার ছোট ছেলে ভিজির ডেন্টাল কলেজ রোডে নিজস্ব খাবারের দোকান আছে যা ভিজি বেনে দোসা নামে পরিচিত।

বর্তমানে দাবণগেরের শহরে অনেক রেস্তোরাতে বেনে ধোসা পাওয়া যায়, যাদের মধ্যে কিছু জনপ্রিয় রেস্তরার নাম হল শ্রী গুরু কোত্তুরেশ্বরা বেন্নে দোসা হোটেল, গায়ত্রী বেন্নে দোসা হোটেল, বসন্ত বেনে দোসা হোটেল, ইত্যাদি। যেহেতু পেটেন্ট সংক্রান্ত কোন সমস্যা নেই তাই যে কেউ বেনে দোসা তৈরি করতে এবং বিক্রি করতে পারে। বেনে দোসা বা দাবণগেরের বেনে দোসা কর্ণাটক রাজ্যের একটি জনপ্রিয় খাবার।

গ্যালারি[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Mujumdar, Neha (২২ ডিসেম্বর ২০১২)। "In search of Davangere Benne Dosa"The Hindu। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জুন ২০১৯ 
  2. "Davanagere Benne Dosa - Aayis Recipes" 
  3. Archived at Ghostarchive and the "Shanthappa Benne Dose Davangere(1944), Benne Dose Inventors | 75 Years Old Hotel"YouTube। Archived from the original on ২৫ জুন ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মার্চ ২০২৩ : "Shanthappa Benne Dose Davangere(1944), Benne Dose Inventors | 75 Years Old Hotel"YouTube 
  4. "Ravi Benne Dosa Hotel · 619/2, PJ Extension, Church Rd, Prince Jayachamaraja Wodeyar, Davanagere, Karnataka 577002, India"