বিষয়বস্তুতে চলুন

বহুজাতিকতা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বহুজাতিকতা, নিউ ইয়র্ক সিটিতে

বহুজাতিকতা (ইংরেজি: "Polyethnicity") বলতে ভিন্ন জাতিগত পটভূমির মানুষের একটি দেশে বা অন্য নির্দিষ্ট ভৌগোলিক অঞ্চলে একত্রে বসবাস করাকে বুঝায়। ব্যক্তিবর্গের নিজেদের বহু জাতির লোক বলে পরিচয় দেয়ার ক্ষমতা এবং ইচ্ছাও এর সাথে সম্পর্কিত।[] ভিন্ন জাতির মানুষ যখন একটি নির্দিষ্ট জায়গায় বসবাস করে, বিশেষ করে অভিবাসন, অসবর্ণ বিয়ে, বাণিজ্য, বিজয়লাভ এবং যুদ্ধ-পরবর্তী ভূমি-বিভাগের মাধ্যমে তখন এমনটি হয়ে থাকে।[][][]

প্রফেসর উইলিয়াম এইচ. ম্যাকনেইল "বহুজাতিকতা" নিয়ে তার ভাষণে উল্লেখ করেন যে, 'বিভিন্ন জাতি নিয়ে সংস্কৃতি তৈরী হওয়াই সামাজিক নিয়ম।'[] দেশধর্মের উপর এটির অনেক রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রভাব রয়েছে।[][]

সকল দেশে না হলেও বেশিরভাগ দেশেই কম বেশি বহুজাতিকতাদের লক্ষ্য করা যায়, তারমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকানাডাতে অধিক পরিমাণে এবং জাপানপোল্যান্ড-এ তুলনামূলক কম।[][][১০][১১]

বহুজাতিকতাের পরিমাণের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক সমাজে কিছু বিতর্কের জন্ম দিচ্ছে, তারমধ্যে একটি বিশ্বাস হচ্ছে, এটি প্রত্যেক সমাজের সবলতাকে দূর্বল করে দিচ্ছে এবং আরেকটি ধারণা হচ্ছে বহুজাতিকতা দেশের রাজনৈতিক- জাতিগত ব্যাপারগুলো নির্দিষ্ট জাতির জন্য আলাদা আইন হলে বেশি ভালভাবে কার্যকর করা যায়।[১২][১৩]

ধারণামূলক ইতিহাস

[সম্পাদনা]

১৯৮৫ সালে বহুজাতিকতা বিষয়ে অভিজ্ঞ কানাডিয়ান ইতিহাসবেত্তা অধ্যাপক উইলিয়াম এইচ. ম্যাকনেইল টরেন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ে বহুজাতিকতা-এর অতীত ও বর্তমান সাংষ্কৃতি নিয়ে তিনটি ভাষণ দেন।[১৪] তার ভাষণের প্রধান গবেষণামূলক উপস্থাপনটি ছিল যে বিভিন্ন জাতি নিয়ে সমাজের গঠনই সাংস্কৃতির আদর্শ নিয়ম। ম্যাকনেইলের মতে সমজাতি সমাজকে আদর্শ ধারণা করার ব্যাপারটি ১৭৫০ থেকে ১৯২০ সালে পশ্চিম ইউরোপ-এ গড়ে ওঠে কারণ তখন সমাজের রাজনৈতিক সংগঠনগুলো একক জাতীয়তাবাদী বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছিল। ম্যাকনেইল বিশ্বাস করেন যে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ-এর সময়ে সমজাতি রাষ্ট্রের ধারণাটি দূর্বল হতে শুরু করে।[১৫]

রাজনীতির ওপর প্রভাব

[সম্পাদনা]

বহুজাতিকতা রাষ্ট্রে বিভেদ সৃস্টি করে, রাজনৈতিকভাবে স্থানীয় ও জাতীয় সরকারের সব জাতিগোষ্ঠীকে সন্তুষ্ট করার প্রচেষ্টাকে জটিল করে তোলে।[] বহু রাজনীতিবিদ তাদের দেশে বিভিন্ন জাতিগত পরিচয়ে এবং পুরো জাতির সামগ্রিক পরিচয়ে সমতা আনার চেষ্টা করেন।[] জাতীয়তাবাদও এসব রাজনৈতিক বিতর্কে বড় ভূমিকা রাখে কারণ বহুজাতিকতা রাষ্ট্রের জাতীয়তাবাদের গণতান্ত্রিক বিকল্প হলো সাংস্কৃতিক বহুত্ববাদ এবং ক্ষমতা ভাগাভাগি।[১৬] জাতিয়তাবাদের ধারণাটি জাতিগত হবার পরিবর্তে সামাজিক হওয়ার ফলে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য, পরিচয় ভাগাভাগি করার চেতনা এবং বংশের উপর ভিত্তি না করেই সম্প্রদায় গঠিত হয়।[১৭] একাধিক সাংস্কৃতি নিয়ে গঠিত রাষ্ট্রগুলো সাংবিধানিকভাবে বিকেন্দ্রিক বা এককেন্দ্রিক হতে পারে (যেমন গ্রেট ব্রিটেন) বা ফেডারেল রাষ্ট্র (যেমন বেলজিয়াম, সুইজারল্যান্ড, বা কানাডা)।[১৮] এইসব বহুজাতিকতা অঞ্চলে জাতিগত দলগুলো রাষ্ট্রবিরোধী হয় না তবে তারা রাষ্ট্রে সর্বোচ্চ ক্ষমতা দাবি করে।[১২][১৭] অনেক বহুজাতিকতা রাষ্ট্র তাদের শাসনকার্যের সিদ্ধান্ত নিতে এসব সংকটের মুখোমুখি হয়। নিচে এমন কিছু রাষ্ট্র ও অঞ্ছলের এসব সমস্যা ও তার প্রভাব উল্লেখ করা হলোঃ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

[সম্পাদনা]
U.S. languages (2006)[]
English (only) 224.2 million
Spanish, incl. Creole 34.0 million
Chinese 2.5 million
French, incl. Creole 2.0 million
Tagalog 1.4 million
Vietnamese 1.2 million
German 1.1 million
Korean 1.1 million

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. McNeil 1985, page 85
  2. Arabandi 2000, Online
  3. Smith 1998, page 190
  4. Smith [1998, page 200
  5. Dreisziger 1990 page 1
  6. Safran 2000, Introduction
  7. Benhabib 1996, pages 154–155
  8. U.S. Census Bureau
  9. Thomson 2000, pages 213-215
  10. Burgess 2007, Online
  11. Safran 2000, pages 1-2
  12. Robertson 1992, pages 1-10
  13. Thomson 2000, pages 214–215
  14. Ritzer 2004, page 141
  15. Dreisziger 1990, pages 1-2
  16. Kellas 1991, page 8
  17. Kellas 1991, page 65
  18. Kellas 1991, pages 180-183