সুলুস

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সুলুস লিপিতে লিখিত একটি দোয়া।
আবদুল হক কর্তৃক তাজমহলের দেয়ালে উৎকীর্ণ সুলুস, ১৬০৯ খ্রিষ্টাব্দ
সৌদি আরবের পতাকায় সুলুস লিপিতে উৎকীর্ণ শাহাদাহ

সুলুস (ফার্সি: ثلث sols, Turkish: Sülüs, from আরবি: ثلث ṯuluṯ "one-third") আরবি ক্যালিগ্রাফির একপ্রকার শৈলী। পারস্যের ক্যালিগ্রাফার ইবনে মুকলা এর উদ্ভাবন করেছেন। হিজরি ৪র্থ শতাব্দীতে (খ্রিষ্টীয় ১১শ শতাব্দী) প্রথম এই লিপি দেখা যায়। কুফিক লিপির সরল কৌণিক রূপকে এই লিপিতে বক্র ও তির্যক রূপ দ্বারা প্রতিস্থাপন করা হয়। সুলুসে হরফের এক তৃতীয়াংশ ঢালু হয়। এ থেকে নাম সুলুস (আরবি “তৃতীয়াংশ”) এসেছে। মধ্যযুগে মসজিদের অলংকরণে এই লিপি ব্যবহৃত হত। সুলুসের রীতিতে পরিবর্তন এনে অন্য কিছু ক্যালিগ্রাফিক শৈলীর উদ্ভব হয়েছে।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

মুহাম্মদ এর নামের পাশে সুলুস লিপিতে লিখিত সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
হুসাইন ইবনে আলির জন্য সুলুস লিপিতে লিখিত একটি শিয়া দোয়া।।

উসমানীয় সাম্রাজ্যে সময় তিনধাপে সুলুস লিপির বিবর্তন ঘটেছে। উসমানীয় শিল্পের ইতিহাসবিদরা একে "ক্যালিগ্রাফিক বিপ্লব" বলে থাকেন,

শিল্পী[সম্পাদনা]

সুলুস লিপির বিখ্যাত শিল্পী হলেন মোস্তফা রকিম এফেন্দি (১৭৫৭-১৮২৬)। তিনি একজন চিত্রশিল্পী ছিলেন এবং উসমানীয় ক্যালিগ্রাফির মান নির্ণয় করেছেন যা অনেকের মতে বর্তমানে টিকে নেই।[৭]

ব্যবহার[সম্পাদনা]

কুরআনের সূরার শিরোনাম লেখায় সুলুস লিপির ব্যবহার হত। কুরআনের কিছু প্রাচীন পান্ডুলিপি সুলুস লিপিতে লেখা হয়েছিল। পরের পান্ডুলিপিগুলো সুলুস এবং নাসখ লিপি বা মুহাক্কাক লিপি সমন্বয়ে লেখা হয়েছে। ১৫শ শতাব্দীর পর থেকে নাসখ লিপির ব্যবহার বৃদ্ধি পায়।

সৌদি আরবের পতাকায় উৎকীর্ণ শাহাদাহ সুলুস লিপিতে লিখিত।

শৈলী[সম্পাদনা]

সুলুসের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল স্বরবর্ণ প্রকাশের জন্য এতে হরকত ও লিপির সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য কিছু চিহ্ন ব্যবহার হয়। হরকতের ব্যবহার আরবি লিপির মতই। সৌন্দর্যের জন্য ব্যবহৃত চিহ্ন ব্যবহারের পৃথক নিয়ম রয়েছে।

সুলুস থেকে উদ্ভূত লিপি[সম্পাদনা]

উদ্ভবের পর থেকে সুলুস বিভিন্ন ক্যালিগ্রাফিক শৈলীর জন্ম দিয়েছে। বড় প্যানেল যেমন কবরের ফলকে উৎকীর্ণের জন্য জালি সুলুস নামক শৈলী ব্যবহার হয়। সুলুসের আনুভূমিক অংশ প্রশস্ত করার মাধ্যমে মুহাক্কাক লিপি উদ্ভূত হয়েছে। নাসখ লিপি আকার ছোট ও সূক্ষ্ম করে পরিবর্তনের সূচনা করেছিল। সুলুসের ক্ষুদ্র সংস্করণ হল তেভকিরুকাহ লিপি সুলুস ও নাসখ লিপি থেকে উদ্ভূত হয়েছে বলে মত রয়েছে।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Hüseyin Kutlu: Hat sanatı kalemi şevk edebilmektir - Kalem Güzeli"। ৮ ডিসেম্বর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ এপ্রিল ২০১৫ 
  2. hamdullah1500s
  3. Kitap Sanatı
  4. Ali, Wijdan. "From the Literal to the Spiritual: The Development of Prophet Muhammad's Portrayal from 13th Century Ilkhanid Miniatures to 17th Century Ottoman Art ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩ ডিসেম্বর ২০০৪ তারিখে". In Proceedings of the 11th International Congress of Turkish Art, eds. M. Kiel, N. Landman, and H. Theunissen. No. 7, 1–24. Utrecht, The Netherlands, August 23–28, 1999, p. 7
  5. http://www.bilgininadresi.net/Madde/9375/Mehmed-Şevki-Efendi-(M/1887)[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  6. "Türk Ýslam Sanatlarý - Tezyini Sanatlar"। ৩০ জুন ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ এপ্রিল ২০১৫ 
  7. "Journal of Ottoman Calligraphy :: RAKIM: 'Mustafa Rakim" (1757 - 1826) :: April :: 2006"। ৬ মার্চ ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ এপ্রিল ২০১৫ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]