বিষয়বস্তুতে চলুন

সরদার আমজাদ হোসেন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সরদার আমজাদ হোসেন
বাংলাদেশের খাদ্যমন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
২৭ মার্চ ১৯৮৮ – ১০ ডিসেম্বর ১৯৯০
পূর্বসূরীমোহাব্বত জান চৌধুরী
উত্তরসূরীইকবাল হোসাইন চৌধুরী
বাংলাদেশের মৎস্য ও পশুপালনমন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
১০ ডিসেম্বর ১৯৮৮ – ৩০ অক্টোবর ১৯৮৯
পূর্বসূরীআব্দুস সালাম
উত্তরসূরীসুনীল কুমার গুপ্ত
বাংলাদেশের ভূমিমন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
৩ অক্টোবর ১৯৮৯ – ২ মে ১৯৯০
বাংলাদেশের কৃষিমন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
২ মে ১৯৯০ – ৬ ডিসেম্বর ১৯৯০
পূর্বসূরীএম. এ. মুন’এম
উত্তরসূরীশূন্য
বাংলাদেশের খাদ্য প্রতিমন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
৩০ নভেম্বর ১৯৮৬ – ২৭ মার্চ ১৯৮৮
রাজশাহী-৩ আসনের
সংসদ সদস্য
কাজের মেয়াদ
৭ মে ১৯৮৬ – ২৪ নভেম্বর ১৯৯৫
পূর্বসূরীএহসান আলী খান
উত্তরসূরীমুহম্মদ আবদুল গফুর
রাজশাহী-১২ আসনের
সংসদ সদস্য
কাজের মেয়াদ
৭ মার্চ ১৯৭৩ – ৬ নভেম্বর ১৯৭৫
পূর্বসূরীপদ সৃষ্টি
উত্তরসূরীআফজাল হোসেন
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম১৯৩৯
হামিরকুৎসা গ্রাম, বাগমারা, রাজশাহী , বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত
(বর্তমান বাংলাদেশ)
মৃত্যু১৯ ডিসেম্বর ২০১৪
অ্যাপোলো হাসপাতাল, ঢাকা
সমাধিস্থলহামিরকুৎসা গ্রাম, বাগমারা, রাজশাহী
রাজনৈতিক দলজাতীয় পার্টি
বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ
দাম্পত্য সঙ্গীফেরদৌসি নিগার হোসেন
সন্তান১ ছেলে ও ২ মেয়ে
প্রাক্তন শিক্ষার্থীপাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

সরদার আমজাদ হোসেন (১৯৩৯ — ১৯ ডিসেম্বর ২০১৪) বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ ছিলেন। এরশাদের মন্ত্রিসভায় তিনি প্রথম প্রতিমন্ত্রী ও পরে মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি তৎকালীন রাজশাহী-১২রাজশাহী-৩ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন।[]

১৯৭০ সালে তিনি পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে রাজশাহী-১২ এলাকা থেকে সদস্য (এমপিএ) নির্বাচিত হন।[]

প্রাথমিক জীবন

[সম্পাদনা]

সরদার আমজাদ হোসেন ১৯৩৯ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের রাজশাহীর বাগমারার হামিরকুৎসা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।[][][]

তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ থেকে অনার্স এবং লাহােরের পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর (এম.এ.) পাশ করেন।[]

তার স্ত্রী ফেরদৌসি নিগার হোসেন ঢাকা কলেজের ইংরেজি সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। এই দম্পতীর এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে।[][]

রাজনৈতিক জীবন

[সম্পাদনা]

সরদার আমজাদ হোসেন ১৯৬৩-৬৪ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ্ মাখদুম হলের প্রথম সাধারণ সম্পাদক এবং পরের বছর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) নির্বাচিত হন।[]

তিনি ১৯৬৪ সালে আওয়ামী ছাত্রলীগে যোগ দেন।[]

পূর্বোক্ত শিক্ষাবর্ষেই তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে তৎকালীন গভর্নর মোনেম খানের উপস্থিতির প্রতিবাদে সমাবর্তন বর্জন করার অপরাধে বহিষ্কৃত হন।[]

তিনি পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র সমিতি, লাহোরে সভাপতি নির্বাচিত হন।[]

১৯৬৯ সালে আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পান আমজাদ। এছাড়া তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন।[]

১৯৭০ সালে তিনি পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে রাজশাহী-১২ এলাকা থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সদস্য (এমপিএ) নির্বাচিত হন।[][]

১৯৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৎকালীন রাজশাহী-১২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[]

১৯৮৬ সালের তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের (বাকশাল) প্রার্থী হিসেবে হিসেবে রাজশাহী-৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।[]

১৯৮৭ সালে সাংসদ থাকা অবস্থায় আওয়ামী লীগ থেকে জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়ে এরশাদের মন্ত্রিসভায় তিনি ৩০ নভেম্বর ১৯৮৬ থেকে ২৭ মার্চ ১৯৮৮ পর্যন্ত খাদ্য প্রতিমন্ত্রী পদে দায়িত্ব পালন করেন।

এর পর ১৯৮৮ সালের চতুর্থ ও ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে রাজশাহী-৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[][]

এরশাদের মন্ত্রিসভায় তিনি ২৭ মার্চ ১৯৮৮ থেকে ১০ ডিসেম্বর ১৯৯০ সাল পর্যন্ত খাদ্যমন্ত্রী, ১০ ডিসেম্বর ১৯৮৮ থেকে ৩০ অক্টোবর ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত মৎস্য ও পশুপালনমন্ত্রী, ৩ অক্টোবর ১৯৮৯ থেকে ২ মে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত ভূমিমন্ত্রী এবং ২ মে ১৯৯০ থেকে ৬ ডিসেম্বর ১৯৯০ সাল পর্যন্ত কৃষিমন্ত্রী পদে দায়িত্ব পালন করেন।

১ জুন ২০০৫ সালে তিনি জাতীয় পার্টি ছেড়ে আবার আওয়ামী লীগে ফিরে আসেন।[][১০]

২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে পরাজিত হয়েছিলেন তিনি। এরপর থেকে রাজনীতিতে তিনি অনেকটা নিষ্ক্রিয় হয়ে যান।[১০]

লিখালিখি

[সম্পাদনা]

বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে কলাম লেখার পাশাপাশি কয়েকটি বইও লিখেছেন আমজাদ হোসেন।[১১] এগুলো হলো-

  • অর্ধশতাব্দীর মূল্যায়ন
  • বাংলাদেশের জয়-পরাজয়ের রাজনীতি
  • একুশ শতকের সিঁডিতে বাংলাদেশ

মৃত্যু

[সম্পাদনা]

১৯ ডিসেম্বর ২০১৪ বিকেলে ঢাকার এ্যাপোলো হ‍াসপাতালে চিকিৎসাধীন আমজাদের মৃত্যু হয়। তাকে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার হামিরকুৎসা গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।[][১২]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "সরদার আমজাদ আর নেই"banglanews24.com। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ১৬, ২০১৮ 
  2. "১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে প্রাদেশিক পরিষদে বিজয়ী সদস্যদের তালিকা"সংগ্রামের নোটবুক। ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ 
  3. সরদার আমজাদ হোসেন (২০০৬)। একুশ শতকের সিঁড়িতে বাংলাদেশবাংলাদেশ: আগামী প্রকাশনী। পৃষ্ঠা ৩১২। আইএসবিএন 9844019265 
  4. সরদার আমজাদ হোসেন। বাংলাদেশে জয় পরাজয়ের রাজনীতিবাংলাদেশ 
  5. সরদার আমজাদ হোসেন। যোগাযোগ গবেষণা: অর্ধশতাব্দির মূল্যায়ণবাংলাদেশ: বাংলা একাডেমি 
  6. "১ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  7. "৩য় জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  8. "৪র্থ জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ৮ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  9. "৫ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  10. "Ex-minister Sardar Amjad passes away"দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ১৯ ডিসেম্বর ২০১৪। ২১ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ অক্টোবর ২০২৩ 
  11. "সরদার আমজাদ ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মের উজ্জ্বল নক্ষত্র"banglanews24.com। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ১৬, ২০১৮ 
  12. "সাবেক মন্ত্রী সরদার আমজাদ আর নেই"thereport24.com। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ১৬, ২০১৮