রোহিনী, পশ্চিমবঙ্গ

স্থানাঙ্ক: ২২°১০′১০.৬″ উত্তর ৮৭°০৫′৫৮.৮″ পূর্ব / ২২.১৬৯৬১১° উত্তর ৮৭.০৯৯৬৬৭° পূর্ব / 22.169611; 87.099667
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
রোহিনী
গ্রাম
রোহিনী পশ্চিমবঙ্গ-এ অবস্থিত
রোহিনী
রোহিনী
রোহিনী ভারত-এ অবস্থিত
রোহিনী
রোহিনী
পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতে রোহিনীর অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২২°১০′১০.৬″ উত্তর ৮৭°০৫′৫৮.৮″ পূর্ব / ২২.১৬৯৬১১° উত্তর ৮৭.০৯৯৬৬৭° পূর্ব / 22.169611; 87.099667
রাষ্ট্র ভারত
রাজ্যপশ্চিমবঙ্গ
জেলাঝাড়গ্রাম
আয়তন
 • মোট০.৭১ বর্গকিমি (০.২৭ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)
 • মোট১,৬৯১
 • জনঘনত্ব২,৪০০/বর্গকিমি (৬,২০০/বর্গমাইল)
ভাষা
 • সরকারীবাংলা, ইংরাজী
সময় অঞ্চলআইএসটি (ইউটিসি+০৫:৩০)
পিন৭২১১৪৩
টেলিফোন কোড০ ৩২২৩
লোকসভা নির্বাচনকেন্দ্রঝাড়গ্রাম
বিধানসভা নির্বাচনকেন্দ্রগোপীবল্লভপুর
ওয়েবসাইটpurbamedinipur.gov.in

রোহিনী হলো পূর্ব ভারতে অবস্থিত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মেদিনীপুর বিভাগের অন্তর্গত ঝাড়গ্রাম জেলার ঝাড়গ্রাম মহকুমার একটি গ্রাম তথা গ্রাম পঞ্চায়েত। গ্রামটি ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইল সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকে অবস্থিত।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

স্থানীয় লোকমুখে চর্চিত জনশ্রুতি অনুযায়ী রামায়ণের মুখ্য চরিত্র তথা অযোধ্যার রাজা রাম এই স্থান পরিদর্শনে আসেন এবং এখানে একটি রামেশ্বর শিবের মন্দির প্রতিষ্ঠা করে তার পূজার্চনা করেন। মন্দিরটি বর্তমানে অক্ষত রয়েছে। "রামদাতুন" নামে একটি ভেষজ উদ্ভিদের শিকড় প্রতিষ্ঠিত শিব লিঙ্গকে বেষ্টন করে রয়েছে।

ব্রিটিশ আমলে রোহিনীতে জমিদার চৌধুরী লক্ষীনারায়ন ষড়ঙ্গী শাসন করতেন। তিনি বারাজিত পরগনার জমিদারী পেলে ঐতিহাসিক স্থাপত‍্য রামেশ্বর মন্দিরের সংস্কার করেন । তিনি রোহিনী সহ অন্যান্য অনেক গ্রামে শিক্ষা ব‍্যাবস্থার সংস্কার করেন । ১৮৯২ থেকে ১৯০৬-এর মধ্যে সাঁওতাল, ভূমিজ ও কুড়মি কৃষকদের ৫৮০.৪ একর জমি হস্তান্তরিক হয়ে যায় দিকু তথা অনাদিবাসী বাঙালিদের হাতে।[১]

গ্রাম সম্বন্ধ্যে[সম্পাদনা]

দৃষ্টিনন্দন রোহিনী গ্রামটির ইতিহাস প্রায় পাঁচশ বছর পুরাতন। স্থানীয়দের মতে রোহিনী পূর্বে রোহোনি নামে পরিচিত ছিলো। ব্রিটিশদের আগমনের পর অপভ্রংশে রোহিনী নামটি প্রচলিত হয়। এই সময়েই জলপথে সুবর্ণরেখার মাধ্যমে রোহিনীর সাথে বিভিন্ন অঞ্চল যুক্ত হয়। ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দের পর থেকে রোহিনী সড়কপথে যুক্ত হয়, যার ফলে কলকাতা থেকে রোহিনীর সময়দূরত্ব ২০ থেকে আড়াই ঘণ্টায় কমে আসে। গ্রামে বড় সংখ্যায় আদিবাসী বাস করে এবং প্রায় ৩০% ব্রাহ্মণ, বৈষ্ণব ও কায়স্থের বাস। ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে এখানে প্রথম উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।[২]

ভূগোল[সম্পাদনা]

রোহিনী গ্রাম ও গ্রাম পঞ্চায়েতটি ডুলুং নদীর তীরে সুবর্ণরেখা নদীর সাথে মিলনস্থলের সামান্য উত্তরে অবস্থিত। গ্রামটি বাংলা - উড়িষ্যা - ছোটোনাগপুর সীমানার কাছাকাছি অবস্থিত। রোহিনী সুবর্ণরেখার অববাহিকা অঞ্চলে অবস্থিত।

ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের অন্তর্গত রোহিনী গ্রাম পঞ্চায়েতটি নিম্নলিখিত গ্রামগুলি নিয়ে গঠিত:[৩]

  • রোহিনী
  • রনজিতপুর
  • হাতিবান্ধী
  • আকাশপুরা
  • প্রহরাজপুর
  • আঁধারী
  • তেঁতুলি

গ্রাম্য জলনিকাশী ব্যবস্থার প্রভূত উন্নতিসাধনের কারণে গ্রামটির "রাষ্ট্রপতি পুরস্কার" প্রাপ্তি ঘটে।

জনতত্ত্ব[সম্পাদনা]

২০১১ সালের ভারতের জনগণনা অনুসারে রোহিনী গ্রামের মোট জনসংখ্যা ১৬৯১ জন, যার মধ্যে ৮৭৬ জন পুরুষ এবং ৮১৫ জন নারী। ছয় বৎসর অনূর্ধ্ব শিশু সংখ্যা ১৭৪ জন যা জনসংখ্যার ১০.২৯ শতাংশ। মোট ছয় বৎসরোর্ধ্ব জনসংখ্যা ১২৭৩ জন তথা ৭৫.২৮ শতাংশ সাক্ষর।[৪]

ব্লক সদর[সম্পাদনা]

ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইল সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের সদরটি রোহিনীতে অবস্থিত।[৫] নিকটস্থ পুলিশ ফাঁড়িটি সাঁকরাইলে অবস্থিত।

শিক্ষা[সম্পাদনা]

রোহিনীতে অবস্থিত সরকারী বিদ্যালয়গুলি হলো -

  • রোহিনী বালিকা বিদ্যালয়
  • রোহিনী মর্নিং স্টার স্কুল
  • রোহিনী চৌধুরানী দেবী রুক্মিনী উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়

পরিবহন[সম্পাদনা]

পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন বড় শহর তথা খড়গপুর, মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, গোপীবল্লভপুর, বেলদা, দীঘা, হাওড়ার সাথে রোহিনীর সড়ক পথে যোগাযোগ রয়েছে। রাজ্য দক্ষিণবঙ্গ পরিবহন দপ্তর রোহিনী থেকে হাওড়া ও কলকাতাগামী একাধিক বাস পরিষেবা দেয়।

সংস্কৃতি[সম্পাদনা]

বৈষ্ণবধর্মের অন্যতম রসিকানন্দ মহাপ্রভু জন্মস্থান এই রোহিনী। স্বাধীনতার পরে রোহিনী ঝাড়গ্রামের একটি শিক্ষাকেন্দ্র হিসাবে বেশ প্রসিদ্ধি পায়। বহু দুষ্পাপ্য বইয়ের সংগ্রহের আগার রামনারায়ণ পাঠাগারটি একাধিক গবেষকেরও আকৃষ্ট করেছে। বিখ্যাত বাঙালি লেখক অমর সারঙ্গীর জন্মস্থান রোহিনীর রনজিতপুর।

দর্শনীয় স্থান[সম্পাদনা]

  • সুবর্ণরেখা নদীর তীরে রামেশ্বর শিবের মন্দির
  • রসিকানন্দ মহাপ্রভুর জন্মস্থান ও তাঁর নামাঙ্কিত মন্দির
  • রোহিনীর গড়ের রাজবাড়ী
  • রনজিতপুর রামনারায়ণ পাঠাগার
  • সুবর্ণরেখার নদীর তীরে চড়ুইভাতির স্থান (পাকনিক স্পট)
  • ভ্রমরগড়, প্রাচীন প্রেমকাহিনীর স্মৃতি বিজড়িত স্থান
  • রোহিনী নীলকুঠি

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৩ নভেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০১৯ 
  2. http://www.onefivenine.com/india/villages/Medinipur-West/Sankrail/Rohini
  3. "Rohini"। Glorius India। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুলাই ২০১৬ 
  4. "2011 Census – Primary Census Abstract Data Tables"West Bengal – District-wise। Registrar General and Census Commissioner, India। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুন ২০১৭ 
  5. "District Census Handbook: Paschim Medinipur" (পিডিএফ)Map of Paschim Medinipur with CD Block HQs and Police Stations (on the fifth page)। Directorate of Census Operations, West Bengal, 2011। সংগ্রহের তারিখ ২০ নভেম্বর ২০১৬