মৎস্যকন্যা
নিচের ছবিটি John William Waterhouse এর আঁকা। ছকে কিছু প্রাথমিক তথ্য দেওয়া হলো।
দল | পৌরাণিক |
---|---|
উপ দল | জলজ আত্তা |
অনুরূপ সৃষ্টি | মৎস্যনর Siren Ondine |
পুরাণ | বিশ্ব পুরাণ |
দেশ | বিশ্বব্যাপী |
আবাস | মহাসাগর, সমুদ্র , পাহাড় , নদী ,গাছ |
পরিচয়
[সম্পাদনা]এটি মূলত একটি কাল্পনিক জীব। বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনীতে এর উপস্থিতি পাওয়া যায়। বাংলায় একে সাধারণত মানুষের উৎপত্তির ব্যাখ্যা থেকে পাওয়া ধারণার প্রেক্ষিতে একে রেপটেলিয়ান যুগের মিসিং লিঙ্ক হিসেবেও ধরা যেতে পারে অথবা জলজ প্রাণী থেকে স্থলজ মানব উৎপত্তির নীতি প্যান্সপারমিয়া থেকে এটি সম্পর্কে যৌক্তিক ব্যাখ্যা পাওয়া সম্ভব যদি এর উপস্থিতি থেকে থাকে কিন্তু আজ পর্যন্ত এর উপস্থিতি সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য বা প্রমাণ পাওয়া যায় নি। এছাড়াও এরা যদি থেকেও থাকে অথবা ছিল এরূপ হয়ে থাকে তবুও হুবহু মানুষের মতো বুদ্ধিমান বা মানব অঙ্গ সম্পন্ন হবে তার কোনো মানে হয় না। তাই এটি শুধু গল্প বা কাহিনীতে সীমাবদ্ধ রয়েছে। এটি সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি বর্ণনা পাওয়া যায় পৌরাণিক কাহিনীতে যেগুলো সাধারণত গ্রিক, মিশরীয় এবং এগুলো দেব-দেবীর কাহিনীতে ভরপুর। তাছাড়া রূপকথার গল্পে এর জোরালো উপস্থিতি এর জনপ্রিয়তার অন্যতম প্রধান কারণ। এটি নারী চরিত্র হিসেবেই বেশি পরিচিত তবে বিভিন্ন ভাবে এর পুং লিঙ্গ হিসেবে 'জলপুরুষ' শব্দটিও পরিচিত।
এছাড়াও মধ্য যুগ থেকে জনমনে এদের উপস্থিতি সম্পর্কে বিশ্বাস লক্ষ্য করা যায়। অনেকে এদের দেখা পাওয়ার দাবিও করেন কিন্তু কেউই তা প্রমাণ করতে পারেন নি। কখনো কখনো এদের পরীদের সাথেও গুলিয়ে ফেলা হয়।
এদের অনেক সময় বন্যা, জাহাজডোবা ইত্যাদির জন্য দায়ী করা হতো। তবে মানুষের সাথে এদের প্রেমে জড়ানোর ব্যাপারটি সবচেয়ে চমকপ্রদ।
আকৃতি ও গঠন
[সম্পাদনা]এরা দেখতে অর্ধ মানুষের মত, যার কোমরের নিচের অংশবিশেষ সাধারণ মাছের মত। কিন্তু উপরের অর্ধাঙ্গ মানুষের অবয়বে গঠিত। এরা সামুদ্রিক পরিবেশে বেড়ে উঠলেও তারা অনেকটা ডলফিন এর মতো জলের উপরের পরিবেশে অভ্যস্ত। দীর্ঘ সময় পানির সংর্স্পশে না থাকলে এরা নিস্তেজ হয়ে পড়ে। তবে মাঝে মাঝে এদের ভয়ংকর রূপ যেমন হিংস্র দাঁত ও বড় বড় নখের উপস্থিতি পাওয়া যায় বিভিন্ন চিত্রকলা ও গল্প-কাহিনীতে।
শ্রেণিবিভাগ
[সম্পাদনা]বিভিন্ন কাহিনী ও চিত্র থেকে এদের কয়েকটি ধরন সম্পর্কে জানা যায়। সুতরাং দেখা যায় স্থান ও পরিবেশ ভেদে এরা বিভিন্ন ধরনের হয়। যেমনঃ মেলিয়া (Meliae) অ্যাশ গাছের (Ash Tree), ডরয়েড (Dryad) অক গাছের (Oak Tree), নেইয়ড (Naiads) পরিষ্কার পানির, নেরেইড (Nereids) সমুদ্রের এবং ওরেড (Oreads) পাহাড়ের বাসিন্দা হিসেবে পরিচিত।
ইতিহাস
এই কল্পিত জীবের উদ্ভব সম্পর্কে বেশ কিছু ঘটনা জানা যায়। তবে তার বেশিরভাগই পৌরাণিক কাহিনী। সেই ব্যাখ্যায় যাওয়ার আগে ছোট্ট একটি ইতিহাস বলা যেতে পারে। অনেকে মনে করেন মৎস্যকন্যার ধারণাটি এসেছে সাইরেন (Syren) নামক কল্পিত আরেকটি জীব থেকে যা গ্রিক পুরাণের অন্তর্ভুক্ত। এই জীবটি অর্ধেক পাখি এবং অর্ধেক মানুষের আকৃতিতে গঠিত।