মোহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ
নজরুল গবেষক মোহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ | |
---|---|
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ১ জানুয়ারি ১৯৩৬ নাওঘাট, আশুগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত। (বর্তমান বাংলাদেশ) |
মৃত্যু | ২৯ ডিসেম্বর ২০১৩ মিরপুর, ঢাকা। |
সমাধিস্থল | শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থান |
সন্তান | মকসুদ জামিল মিন্টু সহ দুই ছেলে ও এক মেয়ে |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা কলেজ |
পেশা | সাহিত্যিক ও সাংবাদিক |
পুরস্কার | একুশে পদক -২০০৭ বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৭৭) |
মোহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ (১ জানুয়ারি ১৯৩৬ – ২৯ ডিসেম্বর ২০১৩) বাংলাদেশের সাহিত্যিক, কবি ও সাংবাদিক যিনি বাংলা ভাষা আন্দোলন কর্মী ছিলেন। ভাষা ও সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য ২০০৭ সালে তিনি রাষ্ট্রের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান একুশে পদক-এ ভূষিত হন।[১][২]
প্রাথমিক জীবন
[সম্পাদনা]মোহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ ১ জানুয়ারি ১৯৩৬ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের নাওঘাট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।[২] নাওঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে তিনি প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করে ১৯৫০ সালে তালশহর হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন। এর পর ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৫২ সালে আইএ ও ১৯৫৫ সালে বিএ পাশ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ১৯৫৫-১৯৫৬ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হয়ে তিনি শিক্ষাজীবনের ইতিটানেন।
তিনি বিবাহিত এবং দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক। সুরকার মকসুদ জামিল মিন্টু তার ছেলে।
কর্মজীবন
[সম্পাদনা]মোহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ ১৯৫২ সালের বাংলা ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।
তিনি অধুনালুপ্ত দৈনিক বাংলার সিনিয়র সহসম্পাদক ছিলেন। ছিলেন মাসিক 'দ্যুতি' পত্রিকার সহসম্পাদক। মাসিক মাহে নও পত্রিকায় ১৯৫৬ থেকে ১৯৬১ সাল পর্যন্ত সহসম্পাদক, দৈনিক জেহাদ পত্রিকায় ১৯৬১ থেকে ১৯৬২ সাল পর্যন্ত সাহিত্য সম্পাদক। মাসিক পুবালি পত্রিকায় ১৯৬১ থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত সহসম্পাদক, দৈনিক বাংলা (সাবেক পাকিস্তান) পত্রিকায় ১৯৬৪ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত সিনিয়র সহকারী সম্পদক।
নজরুল ইনস্টিটিউট ১৯৭৯ সালে প্রতিষ্ঠা হলে প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে নির্বাহী সদস্য ও নজরুল প্রত্রিকার প্রধান উপদেষ্টা, পরবর্তীতে নিবার্হী পরিচালক হিসেবে ১৯৮৫ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর পরিচালনা পরিষদের সদস্য ছিলেন। ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের প্রযত্ন পরিষদের (২০০৩-২০০৫) সদস্য।
তিনি ছিলেন নজরুল ইসলাম ও ফররুখ গবেষক। রবীন্দ্র গবেষণায়তেও তার খ্যাতি ছিল।
গ্রন্থ
[সম্পাদনা]মাহফুজ উল্লাহর জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ওপরে বেশ কয়েকটি গবেষণা গ্রন্থ রয়েছে। তার কবিতা স্নাতকের পাঠ্য বইয়ে অন্তর্ভুক্ত। তার উল্লেখযোগ্য প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে: -[৩]
- জুলেখার মন ১৯৫৯,
- অন্ধকারে একা ১৯৬৬,
- রক্তিম হৃদয় ১৯৭০,
- আপন ভুবনে ১৯৭৫,
- মোহাম্মদ মাহফুজউল্লাহর কাব্য-সম্ভার ১৯৮২,
- বৈরিতার হাতে বন্দী ১৯৯০,
- সময়ের বিমর্ষ দর্পণে ২০০৬,
- মোহাম্মদ মাহফুজউল্লাহর কবিতা সংগ্রহ ২০০১
পুরস্কার ও সম্মাননা
[সম্পাদনা]- একুশে পদক (২০০৭)
- বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার (১৯৭৭)
- নজরুল স্মৃতি পুরস্কার, কলকাতা (১৯৮৫)
- তমদ্দুন মজলিশ মাতৃভাষা পদক
- তমদ্দুন মজলিশ গুণীজন পদক
- জাতীয় প্রেসক্লাব লেখক সম্মাননা পদক
- ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন সম্মাননা পদক
- নজরুল ইনস্টিটিউট নজরুল পদক (২০০৪)
মৃত্যু
[সম্পাদনা]মোহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ ২৯ ডিসেম্বর ২০১৩ সালে ঢাকার মিরপুরে মৃত্যুবরণ করেন। মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "একুশে পদকপ্রাপ্ত সুধীবৃন্দ ও প্রতিষ্ঠান" (পিডিএফ)। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। পৃষ্ঠা ৪। ২২ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ এপ্রিল ২০১৯।
- ↑ ক খ "নজরুল গবেষক মোহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ আর নেই"। দৈনিক ইত্তেফাক। ৩০ ডিসেম্বর ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ মুহম্মদ মতিউর রহমান (১০ জানুয়ারি ২০২০)। "কবি মোহাম্মদ মাহফুজউল্লাহ"। দৈনিক নয়াদিগন্ত। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০২১।