আনোয়ার পারভেজ
আনোয়ার পারভেজ | |
---|---|
জন্ম | আনু. ১৯৪৪ |
মৃত্যু | ১৭ জুন ২০০৬ জাতীয় হার্ট ফাউন্ডেশন, ঢাকা, বাংলাদেশ | (বয়স ৬১–৬২)
সমাধি | আজিমপুর কবরস্থান, ঢাকা |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
পেশা | |
কর্মজীবন | আনু ১৯৬৫–২০০৬ |
দাম্পত্য সঙ্গী | জেসমিন পারভেজ |
আত্মীয় | শাহনাজ রহমতুল্লাহ (বোন) জাফর ইকবাল (ভাই) |
সঙ্গীত কর্মজীবন | |
ধরন | |
আনোয়ার পারভেজ (মৃত্যু ১৭ জুন, ২০০৬) একজন বাংলাদেশী শীর্ষস্থানীয় সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক, সঙ্গীতজ্ঞ ও শব্দসৈনিক৷ ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ জুন তিনি মৃত্যুবরণ করেন৷ বিবিসির জরিপে যে ২০টি বাংলা গান সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বলে স্বীকৃতি পেয়েছে, সেগুলোর মধ্যে তার সুরকৃত তিনটি গান রয়েছে৷ এই তিনটি গান হলো “জয় বাংলা বাংলার জয়”, “একবার যেতে দে না” এবং “একতারা তুই দেশের কথা”৷[১] তার সুরারোপিত ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’ গানটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত বিভিন্ন দেশাত্মবোধক গানের মধ্যে অনেক জনপ্রিয় ছিল৷ সঙ্গীতে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ২০০৭ সালে মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত করে৷[২]
কর্মজীবন
[সম্পাদনা]ষাটের দশকের গোড়ায় তিনি পেশাদার সঙ্গীত জীবন শুরু করেন চট্টগ্রাম বেতারে সুরকার পদে যোগ দিয়ে৷ পরে ঢাকায় এসে বিভিন্ন মাধ্যমে সঙ্গীত পরিচালনা করেন৷ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন তিনি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে “জয় বাংলা বাংলার জয়” গানের সুর করেন৷ এছাড়া তার সুরকৃত শাহনাজ রহমতুল্লাহর কণ্ঠে “একতারা তুই দেশের কথা” ও “একবার যেতে দে না আমার” গান দুটি জনপ্রিয়তা লাভ করে৷[৩] স্বাধীনতার পরই বাংলাদেশের একটি অন্যতম ব্যবসাসফল ছবি রংবাজ-এর সুরকারও ছিলেন তিনি৷ সে সময় “সে যে কেন এলো না কিছু ভালো লাগে না” বা “এই পথে পথে, আমি একা চলি” — এ গানগুলো জনপ্রিয়তা লাভ করে৷ এছাড়া দি রেইন (১৯৭৬) চলচ্চিত্রে সুর করেও তিনি সমালোচকদের দৃষ্টি কেড়েছিলেন৷ সঙ্গীত জীবনের ৪০ বছরে দুই হাজারেরও বেশি গানে সুর দিয়েছেন৷[৪]
ব্যক্তিগত জীবন
[সম্পাদনা]আনোয়ার পারভেজ জেসমিন পারভেজের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন৷ তার বোন শাহনাজ রহমতুল্লাহ দেশের একজন খ্যাতিমান গায়িকা এবং তার ভাই জাফর ইকবাল ছিলেন একজন চলচ্চিত্র অভিনেতা৷
মৃত্যু
[সম্পাদনা]দীর্ঘদিন ধরেই তিনি প্রস্টেট ক্যান্সারে ভুগছিলেন৷ ২০০৫ সালে তা তার হার্ট অবধি ছড়িয়ে পড়েছিল৷[৫] ভীষণ অসুস্থ অবস্থায় তাকে ঢাকার জাতীয় হার্ট ফাউন্ডেশনে নেয়ার পর পরই কোমায় চলে যান তিনি এবং ২০০৬ সালে ১৭ জুন মধ্যরাতে ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন৷[৬] তাকে ঢাকার আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়৷[৭]
সুরারোপিত চলচ্চিত্র
[সম্পাদনা]- বিজলী (১৯৬৯)
- বিন্দু থেকে বৃত্ত (১৯৭০)
- জয় বাংলা (১৯৭১)
- ছন্দ হারিয়ে গেল (১৯৭২)
- রংবাজ (১৯৭৩)
- বন্দিনী (১৯৭৬)
- দি রেইন (১৯৭৬)
- মাটির মায়া (১৯৭৬)
- অভিযান (১৯৮৪)
- রাজিয়া সুলতানা (১৯৮৪)
- ঢাকা ৮৬ (১৯৮৬)
- জবরদস্ত (১৯৮৮)
- জীনের বাদশা (১৯৮৯)
- ছুটির ফাঁদে (১৯৯০)
- মৌমাছি (১৯৯৬)
- সাবাশ বাঙ্গালী (১৯৯৮)
- বউ শাশুড়ীর যুদ্ধ (২০০৩)
- মধু মালতী
- সোনার হরিণ
- তালাক
- সকাল সন্ধ্যা
সম্মাননা
[সম্পাদনা]- সঙ্গীতে অবদানের জন্য মরণোত্তর একুশে পদক (২০০৭)
- বাংলাদেশ ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটি থেকে আজীবন সম্মাননা (২০০৬)[৮]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাংলা গান"। বিবিসি বাংলা। ৩ মে ২০০৬। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৭।
- ↑ "Five receive Ekushey Padak"। দ্য ডেইলি স্টার। ২১ ফেব্রুয়ারি ২০০৭। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৭।
- ↑ "Anwar Pervez talks about his invaluable patriotic song"। দ্য ডেইলি স্টার। ১৬ ডিসেম্বর ২০০৪। ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৭।
- ↑ "Anwar Parvez no more"। দ্য ডেইলি স্টার। ১৮ জুন ২০০৬। ৭ মার্চ ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৭।
- ↑ "Anwar Parvez in critical condition"। দ্য ডেইলি স্টার। ২১ আগস্ট ২০০৫। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৭।
- ↑ "Eminent music composer Anwar Parvez passes away"। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ১৬ জুন ২০০৬। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৭।
- ↑ "Bidding farewell to a cultural icon"। স্টার উইকেন্ড। ২৩ জুন ২০০৬। ৫ আগস্ট ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৭।
- ↑ "Lifetime Achievement Award for film personalities"। স্টার উইকেন্ড। ৭ মার্চ ২০০৬। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৭।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে আনোয়ার পারভেজ (ইংরেজি)