মেটে হুতোমপ্যাঁচা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

মেটে হুতোমপ্যাঁচা
Bubo coromandus
মেটে হুতোমপ্যাঁচা (Bubo coromandus)
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: প্রাণী জগৎ
পর্ব: কর্ডাটা
শ্রেণী: পক্ষী
বর্গ: স্ট্রিজিফর্মিস
পরিবার: Strigidae
গণ: Bubo
প্রজাতি: B. coromandus
দ্বিপদী নাম
Bubo coromandus
(ল্যাথাম, ১৭৯০)
প্রতিশব্দ

Strix coromandus

মেটে হুতোমপ্যাঁচা (বৈজ্ঞানিক নাম: Bubo coromandus) বা ভুমা প্যাঁচা (ইংরেজি নাম: Dusky eagle-owl) Strigidae (স্ট্রিজিডি) গোত্র বা পরিবারের অন্তর্গত Bubo (বুবো) গণের অন্তর্গত বড় আকারের প্যাঁচা[২][৩] মেটে হুতোমপ্যাঁচার বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ করোম্যান্ডলের হুতোমপ্যাঁচা (লাতিন: bubo = হুতোমপ্যাঁচা, coromandus = করমন্ডল উপকূল)।[৩] পাখিটি বাংলাদেশ, ভারত ছাড়াও দক্ষিণদক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে দেখা যায়। সারা পৃথিবীতে এক বিশাল এলাকা জুড়ে এরা বিস্তৃত, প্রায় ১৪ লক্ষ ৩০ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এদের আবাস।[৪] বিগত কয়েক দশক ধরে এদের সংখ্যা ক্রমেই কমছে, কিন্তু এখনও আশঙ্কাজনক পর্যায়ে যেয়ে পৌঁছেনি। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত বলে ঘোষণা করেছে।[১] বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে এ প্রজাতিটিকে সংরক্ষিত ঘোষণা করা হয় নি।[৩]

জোড়া

উপপ্রজাতি[সম্পাদনা]

মেটে হুতোমপ্যাঁচার উপপ্রজাতি দুইটি[৫]:

বিবরণ[সম্পাদনা]

মেটে হুতোমপ্যাঁচা কানঝুঁটিওয়ালা বড়সড় নিশাচর পাখি। এর দৈর্ঘ্য কমবেশি ৫৮ সেমি, ডানা ৪০ সেমি, ঠোঁট ৪.২ সেমি, লেজ ১১.৫ সেমি ও পা ৬.৮ সেমি।[৩] এর পিঠ ধূসরাভ-বাদামি। অতি সরু ছিটে দাগ ও বিচ্ছিন্ন কালচে বাদামি ছিটে দাগ দেখা যায়। দেহতল ধূসরাভ সাদা। সূক্ষ্ম আঁকাবাঁকা দাগ রয়েছে। কাঁধ ও ডানা বাদামি। ডানায় পীতাভ ও সাদাটে তিলা থাকে। লেজের পালকে আড়াআড়ি ডোরা রয়েছে। চোখ ফিকে হলুদ। ঠোঁট নীলচে-সাদা। আঙুল ফিকে বাদামি ও নখর কালচে বাদামি। স্ত্রী ও পুরুষ পাখির চেহারা অভিন্ন। ছানা সাদা কোমল পালকে ঢাকা তুলতুলে বলের মত দেখতে।[৩]

স্বভাব[সম্পাদনা]

মেটে হুতোমপ্যাঁচা পুরোন আমবাগান, তেঁতুলবন, বাগান ও ঘন বনের বসবাস করে। সাধারণত পানির ধারে এর বিচরণ বেশি। সচরাচর একা কিংবা জোড়ায় জোড়ায় থাকে। গাছে বসে ভূমিতে শিকার খোঁজে ও লম্বা নখর দিয়ে শিকার ধরে খায়। এর খাদ্যতালিকায় রয়েছে ছোট স্তন্যপায়ী, পাখি, সরীসৃপ, বড় পোকা, জলজ পোকা ইত্যাদি। রাতে, বিশেষ করে ভোর ও গোধূলিতে এবং মেঘাচ্ছন্ন দিনে কর্মতৎপর থাকে। দিনে ছায়াঘেরা গাছে ঘুমায় ও সূর্যাস্তের একঘণ্টা আগে জেগে ওঠে। সচরাচর গম্ভীর স্বরে ডাকে: ও-ও-ও-ও-ও-ও-ওওওওউ। শীতকালে ও বর্ষাকালে বেশি ডাকে। নভেম্বর-এপ্রিল মাসে পানির ধারে বড় গাছের কোটরে এরা বাসা করে। এছাড়া শকুন, চিলঈগলের পুরোন বাসায় সবুজ পাতার আস্তরণ দিয়ে ডিম পাড়ে। ডিমগুলো সাদা, সংখ্যায় ২টি। ডিমের মাপ ৫.৯ × ৪.৮ সেমি।[৩]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Bubo coromandus"The IUCN Red List of Threatened Species। ২০১৩-০৯-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৬-১৫ 
  2. রেজা খান (২০০৮)। বাংলাদেশের পাখি। ঢাকা: বাংলা একাডেমী। পৃষ্ঠা ৬৭। আইএসবিএন 9840746901 
  3. জিয়া উদ্দিন আহমেদ (সম্পা.) (২০০৯)। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ: পাখি, খণ্ড: ২৬। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ১১৮। 
  4. "Dusky Eagle Bubo coromandus"BirdLife International। ২০১৬-০৩-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৬-১৫ 
  5. "Dusky Eagle-owl (Bubo coromandus)"। The Internet Bird Collection। সংগ্রহের তারিখ ২ আগস্ট ২০১৩ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]