মানকর
মানকর | |
---|---|
গ্রাম | |
পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতে মানকরের অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২৩°২৬′০৭″ উত্তর ৮৭°৩৩′১০″ পূর্ব / ২৩.৪৩৫৩১৯° উত্তর ৮৭.৫৫২৭৩° পূর্ব | |
রাষ্ট্র | ভারত |
রাজ্য | পশ্চিমবঙ্গ |
জেলা | পূর্ব বর্ধমান |
আয়তন | |
• মোট | ৭.৪৮ বর্গকিমি (২.৮৯ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ১০,৩৭০ |
• জনঘনত্ব | ১,৪০০/বর্গকিমি (৩,৬০০/বর্গমাইল) |
ভাষা | |
• দাপ্তরিক | বাংলা, ইংরাজী |
সময় অঞ্চল | আইএসটি (ইউটিসি+০৫:৩০) |
পিন | ৭১৩১৪৪ |
টেলিফোন কোড | ০৩৪৫২ |
লোকসভা নির্বাচনকেন্দ্র | বর্ধমান-দুর্গাপুর |
বিধানসভা নির্বাচনকেন্দ্র | গলসি |
ওয়েবসাইট | purbabardhaman |
মানকর হলো পূর্ব ভারতে অবস্থিত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বর্ধমান বিভাগের পূর্ব বর্ধমান জেলার বর্ধমান সদর উত্তর মহকুমার গলসি ১ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের অন্তর্গত একটি গ্রাম তথা গ্রাম পঞ্চায়েত।
পৌরাণিক উল্লেখ
[সম্পাদনা]মনে করা হয় পঞ্চপাণ্ডব অজ্ঞাতবাসের সময়ে এই স্থানে কিছুদিন লুক্কায়িত ছিলেন। মানকরে পঞ্চপাণ্ডব এবং দ্রৌপদীর আলাদা আলাদা মূর্তির একটি পুরানো মন্দিরও রয়েছে।[১]
ভূগোল
[সম্পাদনা]অবস্থান
[সম্পাদনা]মানকর গ্রামটি ২৩°২৬′০৭″ উত্তর ৮৭°৩৩′১০″ পূর্ব / ২৩.৪৩৫৩১৯° উত্তর ৮৭.৫৫২৭৩° পূর্ব স্থানাঙ্কে অবস্থিত, যা পূর্ব বর্ধমান জেলার পশ্চিমাংশে বুদবুদ জনগণনা নগরের সামান্য উত্তরে অবস্থিত।
নগরায়ন
[সম্পাদনা]বর্ধমান সদর উত্তর মহকুমার মোট জনসংখ্যার ৭৩.৫৮ শতাংশ মানুষ গ্রামাঞ্চলে বাস করেন। আবার বাকী ২৬.৪২ শতাংশ মানুষ শহরাঞ্চলে বাস করেন, যা সমগ্র পূর্ব বর্ধমান জেলার মহকুমাগুলিতে নগরবাসী জনসংখ্যার মধ্যে সর্বপ্রথম স্থান দখল করেছে।[২]
জনতত্ত্ব
[সম্পাদনা]২০১১ সালের ভারতের জনগণনা অনুসারে মানকর গ্রামের মোট জনসংখ্যা ১০৩৭০ জন, যার মধ্যে ৫২৯০ জন পুরুষ এবং ৫০৮০ জন নারী। ছয় বৎসর অনূর্ধ্ব শিশু সংখ্যা ১০৮৮ জন যা জনসংখ্যার ১০.৪৯ শতাংশ। মোট ছয় বৎসরোর্ধ্ব জনসংখ্যা ৬৯৮১ জন তথা ৭৫.২১ শতাংশ সাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন।[৩]
পরিবহন
[সম্পাদনা]বর্ধমান-আসানসোল রেল বিভাগের একটি স্টেশন হলো মানকর রেলওয়ে স্টেশন। এটি হাওড়া–দিল্লি প্রধান লাইন, হাওড়া–গয়া–দিল্লি লাইন এবং হাওড়া–এলাহাবাদ–মুম্বাই লাইনের অংশ।[৪]
বীরভূম জেলার দুবরাজপুর থেকে নদিয়া জেলার বেতাই অবধি প্রসারিত ১৪ নং রাজ্য সড়কটি মানকরের ওপর দিয়ে দীর্ঘায়িত।[৫]
শিক্ষা
[সম্পাদনা]২০০৮ খ্রিস্টাব্দে মানকরে কণাদ প্রযুক্তিবিদ্যা ও ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান (কণাদ ইন্সটিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট) মহাবিদ্যালয়টির উদ্বোধন করা হয়। এটি মৌলানা আবুল কালাম আজাদ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংসৃষ্ট।[৬]
মানকরে ১৯৮৭ খ্রিস্টাব্দে মানকর মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সংসৃৃষ্ট। মহাবিদ্যালয়টিতে বাংলা, সংস্কৃত, ইংরাজী, হিন্দি, ইতিহাস, ভূগোল, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, দর্শন, গণিতকবিদ্যা, গণিত, কম্পিউটার বিজ্ঞানের ওপর স্নাতক পাশ করার সুযোগ রয়েছে।[৭]
মানকর উচ্চ বিদ্যালয় এবং মানকর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় স্কুলদুটি পশ্চিমবঙ্গ মধ্য শিক্ষা পর্ষদের অন্তর্ভুক্ত।[৮] মানকর উচ্চ বিদ্যালয়ের উচ্চতর শিক্ষাক্ষেত্র বালক ও বালিকা উভয়ের শিক্ষালাভের জন্য এবং এটি পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের অন্তর্ভুক্ত।[৯] মানকর উচ্চ বিদ্যালয় ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে[১০] এবং মানকর বালিকা বিদ্যালয় ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়।[১১]
সংস্কৃতি
[সম্পাদনা]ডেভিড ম্যাকাচন মানকরের একাধিক টেরাকোটা মন্দিরের শিল্পকলার বিষয়ে আলোচনা করেন:[১২]
- রায়পুরের টেরাকোটার কাজসমৃৃৃৃদ্ধ দেউলেশ্বর শিবমন্দির
- ভট্টাচার্যপাড়াতে অবস্থিত চতুর্বেদীবিশিষ্ট টেরাকোটার কারুকার্যযুক্ত শিবমন্দির
- রায়পুরে দত্ত পরিবারে টেরাকোটার মূর্তির কাজে পরিপূর্ণ শিবমন্দির
- ইটের ওপর কাজবিশিষ্ট করবাড়ীর লক্ষ্মী জনার্দন মন্দির
- বিশ্বাসবাড়ীর অসম্পূর্ণ অষ্টভূজাকৃৃতি স্তম্ভবিশিষ্ট রেখা দেউল
- অষ্টবাহুবিশিষ্ট দুটি ধাপে চারটি চালাবিশিষ্ট ছদ্মচালা, যা আটচালার মন্দির সদৃশ
- দেউলযুক্ত গম্বুজাকৃতি অষ্টকোণী রাধাবল্লভ মন্দির
- পঞ্চরত্ন দোলমঞ্চ
স্বাস্থ্যকেন্দ্র
[সম্পাদনা]মানকরে ৩০ শয্যাবিশিষ্ট মানকর গ্রামীণ হাসপাতাল এবং পুড়শাতে ৩০ শয্যাবিশিষ্ট পুড়শা গ্রামীণ হাসপাতাল রয়েছে, গলসি ১ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের অন্যতম প্রধান হাসপাতাল। কাছাকাছি ভরতপুর, লোয়া ও দ্বারমারিতে ৬ ও ১০ শয্যাবিশিষ্ট প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবা কেন্দ্রও রয়েছে।[১৩]
চিত্রশালা
[সম্পাদনা]-
মোরল পরিবারের লক্ষ্মী জনার্দন মন্দির
-
Central arch panel of Morol family temple
-
কর পরিবারের লক্ষ্মী জনার্দন মন্দির
-
ব্যানার্জি পরিবারের শিব মন্দির
-
Terracotta wall decoration of Shiva and Parvati in the Banerjee family temple
-
দত্ত পরিবারের শিব মন্দির
-
রাধাবল্লভ মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ
-
পঞ্চরত্ন দোল মঞ্চ
-
আনন্দময়ী মন্দির কমপ্লেক্স
-
রঙমহল কমপ্লেক্সের ভিতর দুটি অষ্টতলকার ছলা মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Purba Bardhaman district"। Tourism। District authorities। ৭ মে ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "District Statistical Handbook 2014 Bardhaman"। Table 2.2। Department of Statistics and Programme Implementation, Government of West Bengal। ২১ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "2011 Census – Primary Census Abstract Data Tables"। West Bengal – District-wise। Registrar General and Census Commissioner, India। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুন ২০১৭।
- ↑ "63509 Bardhaman-Asansol MEMU"। Time Table। indiarailinfo। সংগ্রহের তারিখ ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
- ↑ "List of State Highways in West Bengal"। West Bengal Traffic Police। সংগ্রহের তারিখ ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
- ↑ "Kanad Institute of Engineering and Management"। KIEM। সংগ্রহের তারিখ ২ মার্চ ২০১৭।
- ↑ "Mankar College"। College Admission। সংগ্রহের তারিখ ২ মার্চ ২০১৭।
- ↑ "West Bengal Board of Secondary Education"। Burdwan। WBBSE। ২ মে ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "West Bengal Council of Higher Secondary Education"। Budwan। WBCHSE। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "Mankar High School"। Schools World.in। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জানুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "Mankar Girls' High School"। ICBSE। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জানুয়ারি ২০১৯।
- ↑ McCutchion, David J., Late Mediaeval Temples of Bengal, first published 1972, reprinted 2017, pages 23, 46, 50, 59, 60, 61, 75. The Asiatic Society, Kolkata, আইএসবিএন ৯৭৮-৯৩-৮১৫৭৪-৬৫-২
- ↑ "Health & Family Welfare Department"। Health Statistics। Government of West Bengal। ২৮ অক্টোবর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জানুয়ারি ২০১৯।