মহানায়ক (১৯৮৪-এর চলচ্চিত্র)
মহানায়ক | |
---|---|
পরিচালক | আলমগীর কবির |
প্রযোজক | বুলবুল আহমেদ |
রচয়িতা | আলমগীর কবির |
শ্রেষ্ঠাংশে | |
সুরকার | শেখ সাদী খান |
চিত্রগ্রাহক | মাহফুজুর রহমান খান |
সম্পাদক | খোরশেদ আলম |
প্রযোজনা কোম্পানি | ত্রয়ী চিত্রম |
পরিবেশক | ত্রয়ী চিত্রম |
মুক্তি | ১৯৮৪ |
স্থিতিকাল | ১২২ মিনিট |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা |
মহানায়ক আলমগীর কবির রচিত ও পরিচালিত ১৯৮৪ সালের রোমাঞ্চকর চলচ্চিত্র।[১] বুলবুল আহমেদ নিবেদিত চলচ্চিত্রটি প্রযোজনা ও পরিবেশনা করেছে ত্রয়ী চিত্রম।[২] এক বেকার যুবকের রোমাঞ্চকর প্রেমের গল্প নিয়ে ছবিটি নির্মিত হয়েছে। এতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন বুলবুল আহমেদ।[৩] অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন কাজরী, জুলিয়া, রিনা খান, শওকত আকবর, আহমেদ শরীফ প্রমুখ।
এই চলচ্চিত্রের "আমার এ দুটি চোখ পাথর তো নয়" গানের জন্য সুবীর নন্দী ৯ম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ পুরুষ কণ্ঠশিল্পী বিভাগে পুরস্কার অর্জন করেন।[৪]
কাহিনী সংক্ষেপ
[সম্পাদনা]বেকার রানা চাকরি পাচ্ছে না। তার বন্ধু দিলদারের সাথে একই মেসে থাকে। দিলদার তাকে নিয়ে যায় তার উস্তাদের কাছে। উস্তাদ কালু খাঁর অনুমতি নিয়ে সে লোকের পকেট মারা শুরু করে। পকেট মারায় তাকে পরিপক্ব করে তুলে দিলদার। কিন্তু সে ধরা পরে যায় পিটার সাক্সেনার কাছে। পিটার তাকে তার চোরাকারবারিতে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানায়। রানা সাড়া দিয়ে পিটারের সাথে তার অফিসে দেখা করতে যায়। কিন্তু কালুর লোক তা দেখে ফেলে এবং কালুকে জানিয়ে দেয়। কালু রানাকে শাসায়। রানা পিটারের সাথে ফন্দি করে কালুকে এক বাগান বাড়িতে ডেকে নিয়ে খুন করে।
পিটার তাকে তার হীরা ব্যবসায়ের ক্রেতাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় এবং তাকে থাইল্যান্ড পাঠায়। থাইল্যান্ডে পিটারের লোক তাকে সাদরে গ্রহণ করে। সেখানে তার পরিচয় হয় আধা-বাঙালি আধা-থাই লিন্ডার সাথে। লিন্ডা তাকে থাইল্যান্ড ঘুরিয়ে দেখায়। এরই মাঝে লিন্ডার সাথে তার সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হতে থাকে। কিন্তু তাকে বাংলাদেশে ফিরে আসতে হয়। তাকে আবার যেতে হয় নেপালের কাঠমান্ডুতে। সেখানে পিটারের ব্যবসায়িক বন্ধু জোশির হোটেলে গিয়ে ওঠে। জোশির সহকারী শিলা তাকে তাদের ব্যবসায়ের সকল কথা ফাঁস করে দিলে রানা জোশিকে সে কাজ করতে মানা করে। জোশি পিটারকে বাংলাদেশ থেকে ডাকিয়ে নিয়ে যায় এবং কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে জোশির গুলি পিটারের গায়ে লাগে। রানা তাকে ধাওয়া করলে জোশি পাহাড় থেকে পড়ে মারা যায়।
রানা বাংলাদেশে ফিরে এসে রেসেপশনিস্ট রেহানাকে বিয়ে প্রস্তাব দেয়। রেহানা প্রথমে নিমরাজি থাকলেও রানার অর্থবিত্তের কথা ভেবে রাজি হয়। কিন্তু পরদিন সে জানতে পারে আসলে রানা তার পূর্ব অপমানের প্রতিশোধ নিয়েছে। কালু খাঁ মারা যাওয়ার পর দিলদার তার অধীনে কাজ করতে চায়। তারা দুজনে পরিকল্পনা করে চলচ্চিত্র নির্মাণের কথা বলে গায়িকা ইয়াসমিন খানের গহনা হাতিয়ে নেওয়ার সময় তার কাছে ধরা পড়ে। ইয়াসমিন তাদেরকে শহর ত্থেকে যেতে বলে ছেড়ে দেয়। এভাবেই মানুষকে ধোঁকা দিয়ে চলতে থাকে তার জীবন।
কুশীলব
[সম্পাদনা]- বুলবুল আহমেদ - রানা রহমান
- কাজরী - লায়লা
- জুলিয়া - ইয়াসমিন খান
- রিনা খান - রেহানা, রেসেপশনিস্ট
- সুমিতা চৌধুরী - লিন্ডা লাস্কার
- সুবর্ণা পোখরেল - শিলা
- শওকত আকবর - মিঃ খান
- আহমেদ শরীফ - পিটার সাক্সেনা
- বেবী জামান - উস্তাদ কালু খাঁ
- দিলদার - দিলদার
- কেরামত মওলা - জোশি
- জাহানারা ভূঁইয়া - মিসেস খান
- উৎপল বড়ুয়া -
- তপন ঘোষ
- আমিনুল হক -
- শিবলি সাদিক - রামু বড়ুয়া
- আশীষ কুমার লোহ - হীরা ক্রেতা
- অমল বোস - হীরা ক্রেতার
- অরুপ রতন চৌধুরী - মিঃ ফখরুদ্দিন
- মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু
- রানু -
- মায়া চৌধুরী
- সাইফুদ্দিন - (অতিথি চরিত্রে)
- জহিরুল হক - (অতিথি চরিত্রে)
- সুমিতা দেবী - (অতিথি চরিত্রে)
নির্মাণ
[সম্পাদনা]চলচ্চিত্রটি বাংলাদেশ ছাড়াও থাইল্যান্ড, নেপালের কাঠমান্ডু, ও বার্মা ফ্রন্টিয়ারে চিত্রায়িত হয়েছে।
সঙ্গীত
[সম্পাদনা]মহানায়ক চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন শেখ সাদী খান। গীত রচনা করেছেন মাসুদ করিম, মনিরুজ্জামান মনির, নজরুল ইসলাম বাবু ও জাহিদুল হক। গানে কণ্ঠ দিয়েছেন রুনা লায়লা, এন্ড্রু কিশোর, সুবীর নন্দী, হৈমন্তী শুক্লা ও সাবিনা ইয়াসমিন।
গানের তালিকা
[সম্পাদনা]নং. | শিরোনাম | রচয়িতা | কণ্ঠশিল্পী | দৈর্ঘ্য |
---|---|---|---|---|
১. | "তুমি যাও প্রিয়া নদী হয়ে" | মনিরুজ্জামান মনির | হৈমন্তী শুক্লা | ৪:২৪ |
২. | "আমার এ দুটি চোখ পাথর তো নয়" | জাহিদুল হক | সুবীর নন্দী | ৩:৩১ |
৩. | "আমি কারে বলি ভালো" | রুনা লায়লা | : | |
৪. | "হাজার মনের কাছে প্রশ্ন রেখে /পৃথিবীতে প্রেম বলে কিছু নেই" | নজরুল ইসলাম বাবু | সুবীর নন্দী | ৪:৩০ |
মোট দৈর্ঘ্য: | ৪ঃ০৫ |
মূল্যায়ন
[সম্পাদনা]সমালোচকদের প্রতিক্রিয়া
[সম্পাদনা]চলচ্চিত্র সমালোচক রহমান মতি এই চলচ্চিত্রের পরিচালনায় সৃজনশীলতা এবং বুলবুল আহমেদের স্টাইলিশ অভিনয়েরর প্রশংসা করেন। তার মতে প্রেম, প্রতারণা, বিবেকবোধ সব মিলিয়ে মহানায়ক একটি পুর্ণাঙ্গ চলচ্চিত্র।[৫]
পুরস্কার
[সম্পাদনা]- বিজয়ী: শ্রেষ্ঠ পুরুষ কণ্ঠশিল্পী - সুবীর নন্দী[৬]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ওয়াহিদ, সুজন (জানুয়ারি ১৮, ২০১২)। "চলচ্চিত্রের মুশকিল আসানে আলমগীর কবির"। ইচ্ছেশুণ্য মানুষ। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০১৭।
- ↑ মারিয়া, শান্তা (২০১৫-০৭-১৪)। "আলমগীর কবির-বুলবুল আহমেদ: শিল্পসার্থক ছবির স্রষ্টা যে জুটি"। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ২০১৫-০৮-১০ তারিখে আসল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০১৭।
- ↑ "আলমগীর কবির-বুলবুল আহমেদ: শিল্পসার্থক ছবির স্রষ্টা যে জুটি"। যায়যায়দিন। জুলাই ২৫, ২০১২। ৬ জুলাই ২০২১ তারিখে আসল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০১৭।
- ↑ "এখন কেউ আর গান শোনেন না দেখেন মাত্র : সুবীর নন্দী"। দৈনিক আজাদী। ২০ নভেম্বর ২০১৪। ২৫ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০১৭।
- ↑ মতি, রহমান (ডিসেম্বর ১৯, ২০১৬)। "মহানায়ক : প্লেবয় অ্যাডভেঞ্চার"। বাংলা মুভি ডেটাবেজ। ২০ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০১৭।
- ↑ মিথুন, মিজানুর রহমান (জুন ২, ২০১৪)। "আলমগীর কবির-বুলবুল আহমেদ: শিল্পসার্থক ছবির স্রষ্টা যে জুটি"। যায়যায়দিন। ১৯ জুন ২০২১ তারিখে আসল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০১৭।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে মহানায়ক (ইংরেজি) টেমপ্লেট:আলমগীর কবির
বাংলা মুভি ডেটাবেজে মহানায়ক ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৪ আগস্ট ২০১৭ তারিখে
- বাংলা ভাষার চলচ্চিত্র
- ১৯৮৪-এর চলচ্চিত্র
- ১৯৮০-এর দশকের প্রণয়ধর্মী চলচ্চিত্র
- ১৯৮০-এর দশকের রোমাঞ্চকর চলচ্চিত্র
- বাংলাদেশী চলচ্চিত্র
- বাংলাদেশী প্রণয়ধর্মী চলচ্চিত্র
- বাংলাদেশী রোমাঞ্চকর চলচ্চিত্র
- আলমগীর কবির পরিচালিত চলচ্চিত্র
- ত্রয়ী চিত্রমের চলচ্চিত্র
- শ্রেষ্ঠ পুরুষ কণ্ঠশিল্পীর জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (বাংলাদেশ) বিজয়ী চলচ্চিত্র
- বাংলা ভাষার বাংলাদেশী চলচ্চিত্র
- ১৯৮০-এর দশকের বাংলা ভাষার চলচ্চিত্র
- থাইল্যান্ডে ধারণকৃত চলচ্চিত্র
- কাঠমান্ডুতে ধারণকৃত চলচ্চিত্র