বিষয়বস্তুতে চলুন

ব্রুন স্মিথ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ব্রুন স্মিথ
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
ফ্রাঙ্ক ব্রুন্টন স্মিথ
জন্ম(১৯২২-০৩-১৩)১৩ মার্চ ১৯২২
র‍্যাঙ্গিওরা, ক্যান্টারবারি, নিউজিল্যান্ড
মৃত্যু৬ জুলাই ১৯৯৭(1997-07-06) (বয়স ৭৫)
ক্রাইস্টচার্চ, ক্যান্টারবারি, নিউজিল্যান্ড
ডাকনামরান্টি
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি অফ ব্রেক
ভূমিকাব্যাটসম্যান
সম্পর্কফ্রাঙ্ক স্মিথ (পিতা), জিওফ স্মিথ (পুত্র)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৪২)
২১ মার্চ ১৯৪৭ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৪৯
রানের সংখ্যা ২৩৭ ২৬৪৩
ব্যাটিং গড় ৪৭.৪০ ৩৩.০৩
১০০/৫০ ০/২ ৪/১৪
সর্বোচ্চ রান ৯৬ ১৫৩
বল করেছে - ১১৭
উইকেট -
বোলিং গড় - ৭৬.০০
ইনিংসে ৫ উইকেট -
ম্যাচে ১০ উইকেট -
সেরা বোলিং - ১/৬
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১/- ২১/-

ফ্রাঙ্ক ব্রুন্টন স্মিথ (ইংরেজি: Brun Smith; জন্ম: ১৩ মার্চ, ১৯২২ - মৃত্যু: ৬ জুলাই, ১৯৯৭) ক্যান্টারবারির র‍্যাঙ্গিওরা এলাকায় জন্মগ্রহণকারী নিউজিল্যান্ডীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৪৭ থেকে ১৯৫২ সময়কালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে ক্যান্টারবারি দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন ‘রান্টি’ ডাকনামে পরিচিত ব্রুন স্মিথ

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

১৯৪২-৪৩ মৌসুম থেকে ১৯৫২-৫৩ মৌসুম পর্যন্ত ব্রুন স্মিথের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। ছোটখাটো গড়নের অধিকারী হলেও আক্রমণাত্মক ভঙ্গীমায় ব্যাটিং করতেন। ক্রাইস্টচার্চের দর্শকদের প্রিয়পাত্রে পরিণত হয়েছিলেন তিনি। মাঝারিসারিতে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতেন ব্রুন স্মিথ।

১৯৪৬-৪৭ মৌসুম থেকে ১৯৫২-৫৩ মৌসুম পর্যন্ত প্লাঙ্কেট শীল্ডে ক্যান্টারবারির পক্ষে খেলেছেন তিনি। জানুয়ারি, ১৯৪৭ সালে অকল্যান্ডের বিপক্ষে ক্যান্টারবারির সংগৃহীত ১৯৪ রানের মধ্যে তিনি ১০৬ রানে অপরাজিত ছিলেন। এর দুই সপ্তাহ পরই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলার জন্যে জাতীয় দলে আহুত হন।

১৯৪৮-৪৯ মৌসুমে নিজস্ব স্বর্ণালী মৌসুম অতিবাহিত করেন। প্লাঙ্কেট শীল্ডের তিনটি খেলার মধ্যে ওতাগো’র বিপক্ষে ১৬৩ মিনিটে ১৫৩ রান ও অকল্যান্ডের বিপক্ষে অল্প ব্যবধানে ১৪৬ রান তুলেন। ক্রাইস্টচার্চে ওতাগো’র বিপক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১৫৩ রান তুলেন। এ পর্যায়ে ৫৬.০০ গড়ে ৩৯২ রান তুলে ক্যান্টারবারিকে প্লাঙ্কেট শীল্ডের শিরোপা বিজয়ে প্রভূতঃ সহায়তা করেন।

১৯৫১-৫২ মৌসুমে ওয়াল্টার হ্যাডলি’র পরিবর্তে ক্যান্টারবারির অধিনায়কের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ঐ মৌসুমের প্লাঙ্কেট শীল্ডের শিরোপা বিজয়ে নেতৃত্ব দেন তিনি।[]

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে চারটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন ব্রুন স্মিথ। ২১ মার্চ, ১৯৪৭ তারিখে ক্রাইস্টচার্চে সফরকারী ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২ তারিখে একই মাঠে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

টেস্ট অভিষেকে তিনি ১৮ রান তুলতে সক্ষম হন। ১৯৪৯ সালে নিউজিল্যান্ড দলের সাথে ইংল্যান্ড গমন করেন। এ সফরে ২৮.০০ গড়ে ১০০৮ রান তুলেছিলেন। সিরিজের দুই টেস্টে অংশ নেন। হেডিংলিতে সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে দুই ঘণ্টা সময় নিয়ে ৯৬ রান তুলেন। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে ৫৪ রান করেন।[] গুরুত্বপূর্ণ ঐ ইনিংসটি কব্জির মোচড়ে স্কয়ার কাটে পূর্ণ ছিল। এ পর্যায়ে স্লিপ অঞ্চলে অবস্থানকারী ফিল্ডারের কাছ থেকে ‘আমি তোমাকে বেশি দূর এগুতে দেবো না, তার আগেই তোমায় বিদেয় করার মতো’ সাবধানবাণী শ্রবণ করেছিলেন।

কিন্তু, লর্ডস টেস্ট শেষে ২৩ রান তুলে তাকে দলের বাইরে চলে যেতে হয়। এরপর, তৃতীয় টেস্টে তার পরিবর্তে জন রিড স্থলাভিষিক্ত হন এবং সিরিজের তৃতীয় ও চতুর্থ টেস্টে খেলেন।

১৯৫১-৫২ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল নিউজিল্যান্ড গমনে আসে। ক্রাইস্টচার্চে সিরিজের প্রথম টেস্টে অংশ নেন তিনি। পায়ের মাংসপেশীতে টান পড়া সত্ত্বেও দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৭ রান তুলে দলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন।[] ঐ টেস্টটিই তার খেলোয়াড়ী জীবনের সর্বশেষ টেস্ট ছিল। ২০০ বা ততোধিক টেস্ট রান সংগ্রহকারী নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে ৪৭.৪০ গড়ে রান তুলে স্টুই ডেম্পস্টারমার্টিন ডনেলি’র পর তৃতীয় স্থানে পৌঁছেন।[]

মূল্যায়ন

[সম্পাদনা]

ডিক ব্রিটেনডেন তার সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন যে, স্মিথের ব্যাটিংশৈলী সচরাচর ভালোমানের হলেও সর্বদাই আগ্রাসী ধাঁচের ছিল। তারমানে এই নয় যে, তিনি সর্বদাই ভালো জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন।[] ১৯৫২ সালের দ্য ক্রিকেটারের নিউজিল্যান্ডীয় সংবাদ প্রতিনিধি মন্তব্য করেছিলেন যে, ১৯৫১-৫২ মৌসুমে প্লাঙ্কেট শীল্ডে তিনি অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বনপূর্বক অগ্রসর হয়েছিলেন। তিনি নিজেকে অন্য জগতে নিয়ে যান।[] একবার ক্যান্টারবারির পক্ষে মধ্যাহ্নভোজনের বিরতির পূর্বেই সেঞ্চুরি করেন। ক্রাইস্টচার্চে অনুষ্ঠিত ক্লাবের খেলায় মাত্র ৬২ মিনিটে ১৫৫ রান তুলেন।[]

তিনি প্রায়শঃই ভাগ্যের সহায়তা নিয়ে অগ্রসর হয়েছেন। স্লিপ ফিল্ডারেরা ব্যর্থ হলে তিনি নিজেকে বেশ সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতেন। দর্শনীয়ভাবে স্ট্রোক খেলতেন। সুন্দর ফিল্ডিং করতেন ও ব্যক্তিত্বগুণে নিজেকে অন্যতম সেরা জনপ্রিয় খেলোয়াড়ে পরিণত করেন। যে-কোন প্রজন্মের কাছেই তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

ব্যক্তিগত জীবন

[সম্পাদনা]

ক্রাইস্টচার্চের বেশ কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছেন।[] তার পিতা ফ্রাঙ্ক স্মিথ প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন। ১৯২০-এর দশকে ক্যান্টারবারির পক্ষে খেলেন।[]

ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন তিনি। তার সন্তান জিওফ স্মিথ ১৯৭০-এর দশকে পূর্ব-পুরুষের পদাঙ্ক অনুসরণ করে ক্যান্টারবারির পক্ষে অংশ নিয়েছেন।[] এরফলে, এ প্রদেশের একমাত্র পরিবার হিসেবে তিন পুরুষ খেলার গৌরব অর্জন করে। জুলাই, ১৯৯৭ তারিখে ৭৫ বছর বয়সে ক্যান্টারবারির ক্রাইস্টচার্চ এলাকায় ব্রুন স্মিথের দেহাবসান ঘটে।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. A. D. Davidson, "The Plunket Shield", The Cricketer, 3 May 1952, pp. 114–18.
  2. Wisden 1950, pp. 227-28.
  3. Wisden 1953, p. 837.
  4. Wisden 2012, pp. 1437-44.
  5. R.T. Brittenden, New Zealand Cricketers, A.H. & A.W. Reed, Wellington, 1961, pp. 154–56.
  6. Wisden 1998, p. 1440.
  7. Frank Smith at Cricket Archive
  8. Geoff Smith at Cricket Archive

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]