ব্যবহারকারী:BadhonCR/সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ
প্রতিষ্ঠানিক লোগো
নীতিবাক্যজ্ঞান - সংস্কার - ঐক্য
গঠিত৬ নভেম্বর ২০১০
ধরনধর্মীয় সংগঠন
সদরদপ্তরজগন্নাথ হল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
অবস্থান
সভাপতি
শ্রী কুশল বরণ চক্রবর্ত্তী
সম্পাদক
সুমন কুমার দাশ

সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় ভিত্তিক একটি সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের ধর্মীয় ছাত্র সংগঠন। বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে এর শাখা সংগঠন রয়েছে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মানবাধিকার রক্ষা এবং জাগতিক ও পারমার্থিক কল্যাণ; কুসংস্কার দূর করে সমাজ সংস্কার এবং হিন্দু ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সংরক্ষণের লক্ষ্য ২০১০ সালে এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠা করা হয়।[১][২][৩] এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শ্রী কুশল বরণ চক্রবর্ত্তী।[৪]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

২০১০ সালে দীপান্বিতা অমাবস্যাতিথিতে কালীপূজার দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একদল স্বপ্নবাজ উচ্চশিক্ষিত যুবকদের হাতে প্রতিষ্ঠিত হয় সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ। এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শ্রী কুশল বরণ চক্রবর্ত্তী (সহকারী অধ্যাপক, সংস্কৃত বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়)।[৪]

বর্তমান কমিটি[সম্পাদনা]

বর্তমান সংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শ্রী কুশল বরণ চক্রবর্তী ও সম্পাদক সুমন কুমার দাশ। সহ-সভাপতি শ্রীশিবানন্দ দেব ও শ্রীশঙ্কর দত্ত। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে আছেন শ্রীমিঠুন দত্ত ও শ্রীরাজীব রায়। কোষাধক্ষ্য হলেন শ্রীসুবিনয় কুমার সাহা ও ধর্মচক্র বিষয়ক সম্পাদক শ্রীবিজয় দে। এছাড়াও কমিটিতে উপদেষ্টা মন্ডলী হিসাবে আছেন শ্রীমৎ স্বামী তপনান্দগিরি মহারাজ, অধ্যাপক ড. নারায়ন চন্দ্র বিশ্বাস ও অধ্যাপক হীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস এবং পৃষ্ঠপোষক হিসাবে আছেন শ্রীভানু লাল দে ও শ্রীঅদুল কান্তি চৌধুরি।[৫]

মূলনীতি[সম্পাদনা]

১. একম্ এব অদ্বিতীয়ম্

এক এবং অদ্বিতীয় পরমেশ্বরই এ বিশ্ব সংসার এবং সনাতন ধর্মের প্রবর্তক। তিনি সচ্চিদানন্দ স্বরূপ, চিন্তার অতীত, সর্বশক্তিমান, সর্বব্যাপী, সর্বান্তর্যামী, অনন্ত, অনাদি এবং সৃষ্টি, পালন ও লয় কর্তা। তিনিই পরমাত্মা ও পরমব্রহ্ম নামে খ্যাত। একমাত্র পরমসত্য পরমাত্মাতেই বিশ্বাসী ও আস্থাশীল হতে হবে।

২. একং সদ্ বিপ্রা বহুধা বদন্তি

জীবের চিন্তার অতীত এক অদ্বিতীয় নিরাকার পরমব্রহ্মেরই বিভিন্ন গুণ ও শক্তির প্রতীকী প্রকাশ হলেন দেবতাগণ। নিরাকার উপাসনার পাশাপাশি সাকার উপাসনাও ধর্মে স্বীকৃত। তাই নিজের উপাস্য দেবতার পাশাপাশি সকল দেবতার উপাসনায় শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে।

৩. বেদো অখিল ধর্ম মূলম

বিশ্বের সকল ধর্মের মূল হলো বেদ। বেদ মানব জাতির পূর্ণাঙ্গ সংবিধান। অপৌরুষেয় সত্যবিদ্যাময় এ গ্রন্থই সনাতন ধর্মের ভিত্তিস্বরূপ। তাই সর্বপ্রকার শাস্ত্রীয় বিচারে বেদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। বৈদিক জ্ঞানের সারমর্ম স্বরূপ শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা সর্বমান্য গ্রন্থ এবং শ্রীশ্রীচণ্ডী অনুরূপ মর্যাদা পাবে।

৪. শ্রদ্ধাবান লভতে জ্ঞানম্

সনাতন ধর্মে অনাদি অনন্ত ব্রহ্মের উপাসনা পঞ্চমতে ও পথে বিভজিত যথা- শাক্ত, শৈব, সৌর, গাণপত্য এবং বৈষ্ণব। এর মধ্যে বাংলাদেশে প্রধানত শাক্ত, শৈববৈষ্ণব তিনটি মত-পথের সম্প্রদায় বিদ্যমান। নিজ নিজ উপাস্য সম্প্রদায় ব্যতীত এ পঞ্চমতের সকল সম্প্রদায়ের প্রতি সমান শ্রদ্ধা পোষণ করতে হবে। পক্ষান্তরে কোন আন্তঃসম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষ মনোভাব পোষণ করা যাবে না।

৫. সংগচ্ছধ্বং সংবদদ্ধং

সনাতন ধর্মাবলম্বী সকলের জন্য ‘এক ধর্ম (সনাতন), এক মত (বৈদিক), এক পরিচয় (হিন্দু)’ এই মূলমন্ত্রে বিশ্বাস করতে হবে।

৬. ব্যক্তিকেন্দ্রিক ধর্মীয় মতবাদের ততটুকুই গ্রহণযোগ্য যতটুকু বেদানুমোদিত। তবে বেদানুগত সকল মহামানবের প্রতিই সংযত শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে।

৭. সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল একটি স্বতন্ত্র, ধর্মীয়-সামাজিক, সেবাব্রতী সংগঠন।

লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য[সম্পাদনা]

১. সনাতন ধর্মীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি লালন ও সংরক্ষণ করা।

২. হিন্দু সমাজে প্রচলিত সকল প্রকার ধর্মীয় কুসংস্কার দূর করে এক প্রগতিশীল ও ঐক্যবদ্ধ উন্নত জাতিতে পরিণত করা।

৩. সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মানবাধিকার রক্ষা এবং জাগতিক ও পারমার্থিক কল্যাণের জন্য সদা নিয়োজিত থাকা।

কর্মকান্ড[সম্পাদনা]

  • মানবতার সর্বজনীন কল্যাণের লক্ষ্যে ‘বেদ এবং বেদান্ত  দর্শন’-এর  অনুশীলন ও প্রচার।
  • সাপ্তাহিক ‌‌সমেবত উপাসনায় নিয়মিত অংশগ্রহণ।
  • ধর্মের প্রকৃত শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা তুলে ধরে সামাজিক বর্ণবাদ, ব্যক্তিকেন্দ্রিক সাম্প্রদায়িক গুরুবাদ, অস্পৃশ্যতা, যৌতুক প্রথা দূরীকরণ এবং শাস্ত্রসম্মত অসবর্ণ বিবাহে উৎসাহ প্রদান।
  • দরিদ্র ও মেধাবী বিদ্যার্থীদের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান, ধর্মান্তকরণরোধ, ধর্মীয় তথ্যসন্ত্রাস দূরীকরণ ও সচেনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সেমিনার, কর্মশালা, আলোচনা সভা, শিক্ষাভ্রমণ ইত্যাদির আয়োজন।[৬][৭][৮]
  • অসহায়, নিপীড়িত, দুর্গত এবং লাঞ্ছিত মানুষের পাশে থেকে সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান।[৯]
  • হিন্দু সমাজের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গবেষণা পত্রিকা এবং বিভিন্ন গ্রন্থাদির প্রকাশনা ও অনলাইনে প্রচার।

আরো পড়ুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "সনাতন বিদ্যার্থী সংসদের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন"BangladeshDarpan। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-১৮ 
  2. "সনাতন বিদ্যার্থী সংসদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও দীপাবলি উদযাপন"BangladeshDarpan। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-১৮ 
  3. "Sanatan Vidyarthi Samsad, Bangladesh"www.facebook.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-১৮ 
  4. "Hurting religious sentiment: Are minorities denied justice?"Dhaka Tribune। ২০২০-১১-০৭। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-১৮ 
  5. "সনাতন বিদ্যার্থী সংসদের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন"BangladeshDarpan। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-১৮ 
  6. প্রতিনিধি, জেলা (২০২২-১২-১৮)। "মীরসরাইয়ে এসভিএস বিদ্যার্থী বৃত্তি পরীক্ষার পুরস্কার বিতরণ"NagorNews (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-১৮ 
  7. Uddin, Helal। "বিদ্যার্থী বৃত্তি পরীক্ষার পুরস্কার বিতরণ ও শিক্ষণীয় ধর্মীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত | রাজশাহীর সময়"www.rajshahirsomoy.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-১৮ 
  8. shisir (২০২২-১২-১৮)। "মীরসরাইয়ে এসভিএস বিদ্যার্থী বৃত্তি পরীক্ষার পুরস্কার বিতরণ"বাংলা খবর (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-১৮ 
  9. "বেরোবিতে অসহায়দের মাঝে সনাতন বিদ্যার্থী সংসদের উপহার বিতরণ"দৈনিক মতপ্রকাশ। ২০২২-০৯-২৯। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-১৮ 

বিষয়শ্রেণী:বাংলাদেশ ভিত্তিক হিন্দু সংগঠন বিষয়শ্রেণী:২০১০-এ প্রতিষ্ঠিত বিষয়শ্রেণী:২০১০-এ বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত বিষয়শ্রেণী:২০১০-এ প্রতিষ্ঠিত ধর্মীয় সংগঠন