দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সিলন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর, সিলনের ব্রিটিশ উপনিবেশে (আধুনিক শ্রীলঙ্কা), স্যার ডন ব্যারন জয়তিলকের সরকার,মহামান্য ব্রিটিশ রাজ ও তাঁর সরকারকে নিরবচ্ছিন্ন সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দিয়েছিলেন।

যুদ্ধের সময় সিলনের কলম্বো রেসকোর্স থেকে একটি আরএএফ ব্রিস্টল ব্লেনহাইম বম্বার প্লেন উড্ডয়নরত।

যুদ্ধের প্রস্তুতি[সম্পাদনা]

১৭৯৬ সাল থেকেই এই দ্বীপের উপকূল অঞ্চল ব্রিটিশরা দখল করে রেখেছিল, কিন্তু ১৯১৭ সালের পর এই কলোনিতে ব্রিটিশ সৈন্যের কোনো নিয়মিত গ্যারিসন ছিল না। এসময় সিলন ডিফেন্স ফোর্স এবং সিলন নৌ স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী গঠন ও সম্প্রসারণ করা হয়েছিলো। রয়্যাল নেভি ত্রিনকোমালিতে তাদের নৌ স্থাপণার রক্ষণাবেক্ষণ করতো এবং যুদ্ধের অনেক আগেই রয়্যাল এয়ার ফোর্স(আরএএফ) ত্রিনকোমালির চায়না বে তে একটি বিমানঘাঁটি স্থাপণ করেছিলো।

সিঙ্গাপুরের পতনের পর রয়্যাল নেভির পূর্ব ভারতীয় ঘাঁটি প্রথমে কলম্বো ও পরে ত্রিনকোমালিতে স্থানান্তরিত হয়েছিলো। অ্যাডমিরাল স্যার জিওফ্রে লেটনএয়ার ভাইস মার্শাল জন ডি'আলবিয়াক যথাক্রমে সিলনের কমান্ডার-ইন-চিফ ও কমান্ডিং এয়ার অফিসার নিযুক্ত হন। অ্যাডমিরাল স্যার জেমস সমারভিল, ব্রিটিশ ইস্টার্ণ ফ্লিটের কমান্ডার নিযুক্ত হন।

স্থল প্রতিরক্ষার অংশ হিসবে চারটি উপকূলীয় ব্যাটারি কলম্বোয় এবং পাঁচটি ত্রিনকোমালিতে যুদ্ধের ঠিক আগেই স্থাপিত হয়েছিল। ১৯৪১ সালে কলম্বোর কাছেই রাতমালানা বিমানবন্দর দখল করে কান্দাওয়ালাতে স্টেশন হেডকোয়ার্টার স্থাপণের মাধ্যমে আরএএফ বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সম্প্রসারণ করছিলো। খুব দ্রুতই গালের নিকট কোজ্ঞালাতে আরেকটি বিমানঘাঁটি স্থাপিত হয়েছিলো, এছাড়া সমগ্র দেশজুড়েই অস্থায়ী বিমানঘাঁটি স্থাপিত হয়েছিলো, যার মধ্যে বৃহত্তম ছিলো কলম্বো রেসকোর্স বিমানঘাঁটি। বেশ কয়েকটি আরএএফ স্কোয়াড্রন সিলনে পাঠানো হয়েছিলো। পুরো যুদ্ধের সময়কালীন কিছু কমনওয়েলথ ইউনিটও সিলনে অবস্থান করছিলো।

সিলনের স্বেচ্ছাসৈনিকগণ[সম্পাদনা]

অন্যান্য ব্রিটিশ উপনিবেশের মত সিলনে কন্সক্রিপশন (বাধ্যতামূলকভাবে সৈন্যদলে নিয়োগ) বাস্তবায়ন করা হয়েছিলো না। তবুও, সিলনবাসীকে স্বেচ্ছাসেবক হতে উৎসাহ প্রদান করা হতো। যুদ্ধকালীন সময়ে অনেকেই স্বেচ্ছাসৈনিক হিসেবে যোগ দেয়। এদের অধিকাংশই সিলন ডিফেন্স ফোর্সে যোগ দেয়, যা একটি রিজার্ভ ইউনিট থেকে ১০ টি পদাতিক ব্যাটালিয়ন, ৩ টি আর্টিলারি রেজিমেন্ট এবং সহকারী ইউনিটে সম্প্রসারিত হয়। প্রথমবারের মতো সিলনের ইউনিটসমূহ সিলনের বাইরে মোতায়েন করা হয় কিন্তু কোকোস দ্বীপের বিদ্রোহের পর কিছু ব্যাতিক্রম ব্যতীত বিদেশে সৈন্য মোতায়েন থামিয়ে দেয়া হয়েছিলো।

সিলনীরা স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী, আরএএফ এবং রয়্যাল নেভিতে যোগ দিতে থাকে। সিলন ডিফেন্স ফোর্সের যেসব সদস্য ফ্রন্টলাইনে যাওয়ার আবেদন করেছিলো তাদের সেখানে পাঠানো হয়। তারা প্রথমে বার্মা ও পরে মালয়ে সেবা প্রদান করে। সিলনীরা ইতালিতে রয়্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের সাথে এবং মধ্যপ্রাচ্যউত্তর আফিকায় রয়্যাল আর্মি সার্ভিসে সেবা প্রদান করে। সিলন মিলিটারি পুলিশের প্রথম ব্যাটালিয়ন ১৯৪৯ পর্যন্ত মালয়ে সেবা প্রদান করে।

কমনওয়েলথ বাহিনীতে সেবাদানকারীদের অধিকাংশই ১৯৪৮ এ সিলনের স্বাধীনতা লাভের পর শ্রীলঙ্কার সশস্ত্র বাহীনিতে যোগদান করেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন জেনারেল ডি এস অ্যাট্টিগল, মেজর জেনারেল অ্যান্টন মুত্তুকুমারু, মেজর জেনারেল বার্ট্রাম হেইন, মেজর জেনারেল রিচার্ড উদুগামা, মেজর জেনারেল এইচ.ডব্লু.জি. বিজয়েকুন, রিয়ার অ্যাডমিরাল রাজন কাদিরাগামার এবং এয়ার ভাইস মার্শাল এডওয়ার্ড আমেরাসাকেরা[১]

সিলন নৌ স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী[সম্পাদনা]

সিলন নৌ স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীটি রয়্যাল নেভির হাতে নেওয়া হয়েছিলো। পোর্ট কমিশন টাগবোট স্যামসন ও গোলাইয়াথ এ হাতেখড়ির পর ইহা পরবর্তীতে সাবমেরিন শনাক্তকারী ও অস্ত্রসজ্জিত মাইনসুইপারে রূপান্তরিত ট্রলার ও হোয়েলার পরিচালনা করে। এগুলো ছিল এইচ.এম. জাহাজ ওভারডেল ওয়াইক (সিলন সরকার কর্তৃক ক্রয়কৃত প্রথম জাহাজ), ওকাপি, সেমলা, সম্ভুর, হোক্সা, বাল্টা এবং এইচ.এম টাগবোট বার্নেট এবং সি৪০৫ । এছাড়াও ইহা বেশ কয়েকটি মোটর ফিশিং ভেসেল (এমএফভি) এবং অন্যান্য সহায়ক নৌযান পরিচালনা করেছে। এগুলো সম্পূর্ণভাবে সিলন নৌবাহিনী পরিচালনা করেছে। এসব নৌযান বন্দরে প্রহরীর কাজে নিয়োজিত থাকলেও কখনো কখনো সিলনের নৌসীমার বাইরের মিশনেও ব্যবহার করা হয়েছে। এইসব অপারেশনের সময় নৌযানগুলো শত্রুর গুলির মোকাবেলা করেছে, বিদ্ধস্ত জাপানী বিমান থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদ্ধার করেছে, বার্মার ফ্রন্ট খুলে যাওয়ার পর আকিয়াব বন্দরে দায়িত্ব পালন করতে গিয়েছে এবং ইতালির ঔপনিবেশিক জাহাজ এরিত্রিয়ার আত্মসমর্পণ গ্রহণ করে তার নাবিকদলকে বন্দরে এসকোর্ট করেছে।

কোকোস দ্বীপের বিদ্রোহ[সম্পাদনা]

রণতরী এইচএমএস প্রিন্স অফ ওয়েলস ও এইচএমএস রিপালস ডুবে যাওয়ার ঘটনা এবং এরপরেই সিঙ্গাপুরের পতন, ব্রিটিশদের অপরাজেয়তার মিথকে চিরকালের জন্য নস্যাৎ করে দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে এবং ট্রটস্কিবাদী 'লংকা সমসমাজ পার্টি' এর আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ হয়ে কোকোস দ্বীপেপুঞ্জের হর্সবার্গ উপদ্বীপের সিলন গ্যারিসন আর্টিলারির সৈনিকেরা ১৯৪২ সালের ৮ মে রাতে বিদ্রোহ করে। এই বিদ্রোহের উদ্দেশ্য ছিল দ্বীপগুলির ক্ষমতা জাপানিদের হাতে তুলে দেওয়া। যদিও এক ঘণ্টার মধ্যেই এই বিদ্রোহ দমন করা সম্ভব হয়। ফলস্বরূপ তিনজন বিদ্রোহীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় - যারা বিদ্রোহের জন্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত একমাত্র ব্রিটিশ কমনওয়েলথ সৈনিক।[২]

এই বিদ্রোহের পরিপ্রেক্ষিতে ব্রিটিশরা যুদ্ধে সিলনের সৈন্যদের ব্যবহার বন্ধ করে দেয়, যদিও কিছু সাপ্লাই ও ট্রান্সপোর্ট ইউনিট মধ্য প্রাচ্যে এরপরও ব্যবহৃত হচ্ছিলো। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের প্রায় সমস্ত রাবারের জোগানদার হওয়ায় দ্বীপটির কৌশলগত গুরুত্ব অত্যধিক ছিলো, একারণে সপ্তম অস্ট্রেলীয় ডিভিশন এবং প্রথম (আফ্রিকান) ডিভিশন দ্বারা সিলনের সৈন্যদের প্রতিস্থাপণ করা হয়। সিলনবাসীদের অসন্তুষ্টি প্রতিরোধ করার লক্ষ্যে রেশন ব্যবস্থা চালু করা হয়, যাতে তারা প্রতিবেশী ভারতীয়দের থেকে তুলনামূলক ভালো অন্নলাভে সক্ষম হয়।

সিলনে জাপানের আক্রমণ[সম্পাদনা]

১৯৪২ সালের ৫ এপ্রিল জাপান কলম্বোতে যে এয়ার রেইড চালিয়েছিলো তাকেই বলা হয় দি ইস্টার সানডে রেইড ; যার কিছুদিন পরে ত্রিনকোমালিও আক্রান্ত হয়। এই আক্রমণগুলো কমার্স রেইডিং এবং ভারত মহাসাগরে অবস্থানরত ব্রিটিশ ইস্টার্ণ ফ্লিটকে হয়রানির অংশ হিসেবে পরিচালনা করা হয়।

সিলনে ব্রিটিশদের বিমানবিধ্বংসী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, ১৯৪১।

যদিও এই অভিযানের ফলে দুটি ক্রুজার এবং একটি বিমানবাহক সহ বেশ কয়েকটি জাহাজ ডুবে যাওয়ায় যথেষ্টই সামরিক প্রভাব রেখেছিলো, নানচিং গণহত্যা এবং দখলকৃত অঞ্চলে জাপানীদের বর্বরতার কথা শোনার কারণে সিলনবাসীদের ওপর এর প্রভাব আরো গভীর ছিলো। এই অভিযানের পর জনসাধারণ নৌকায় করে কলম্বো এবং সিলন থেকে ভারতে পালাতে শুরু করে।[৩]

বিরোধীপক্ষ এবং উপনিবেশবাদবিরোধী জাতীয়তাবাদ[সম্পাদনা]

সিলনে যুদ্ধ নিয়ে কিছুটা বিরোধিতা বিরাজ করছিলো, বিশেষ করে শ্রমিকশ্রেণী ও জাতিয়তাবাদীদের মধ্যে, যাদের ট্রটস্কিবাদী সম সমাজ পার্টি প্রণোদনা দিতো, যারা আবার স্বাধীনতা আন্দোলনকে সমর্থন করতো এবং যুদ্ধবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছিলো, তারা এটা পরিষ্কার করেছিলো যে অক্ষশক্তি বা মিত্রশক্তির কোনোটিকেই তারা সমর্থন করে না এবং যুদ্ধটি নিতান্তই আন্তর্জাতিকতাবাদীসিলনের কমিউনিস্ট পার্টিও যুদ্ধ বিরোধী আন্দোলন সমর্থন করছিলো কারণ তারা একে সাম্রাজ্যবাদীদের যুদ্ধ হিসেবে দেখতো, কিন্তু ১৯৪১ এ জার্মানির সোভিয়েত ইউনিয়ন আক্রমণের পর যুদ্ধটিকে জনগণের যুদ্ধ নামাঙ্কিত করে তারা এর সমর্থন শুরু করে। কিন্তু জনসাধারণের অধিকাংশই জাপানের বিজয়ের সম্ভাবনাকে ভীতির চোখে দেখছিলো।

বৌদ্ধদের মধ্যে ক্ষোভ জমা হচ্ছিলো কারণ জার্মান বংশোদ্ভূত বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের 'বিদেশি শত্রু' ডাকা হলেও ইতালির রোমান ক্যাথলিকদের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য হচ্ছিলো না। গভর্নিং পার্টির দুই তরুণ সদস্য, জুনিয়াস রিচার্ড জয়েবর্ধন (যিনি পরবর্তীতে প্রেসিডেন্ট হন) এবং ডাডলি সেনানায়ক (পরবর্তীতে তৃতীয় প্রধানমন্ত্রী), ব্রিটিশদের ক্ষমতাচ্যুত করার লক্ষ্যে জাপানিদের সাথে আলোচনা শুরু করেছিলেন। তুলনামূলক প্রবীণ ডি. এস. সেনানায়েক তাদের থামিয়ে দেওয়ায় আলোচনা বেশীদূর এগোতে পারেনি।

স্বাধীনতা আন্দোলনকারীরা ব্রিটিশদের যুদ্ধে সমর্থনের জন্য মন্ত্রীদের বিরোধিতা করেছিলেন। স্থানীয় মন্ত্রীরা প্রস্তাবনা তুলে সিলনী করদাতাদের অর্থ ব্রিটিশদের যুদ্ধের যোগান হিসেবে উপহার দেয়, স্টেট কাউন্সিলের স্বাধীনতাপন্থী সদস্যরা যার বিরোধিতা করেছিলেন। অস্ট্রেলীয়, ব্রিটিশ থেকে শুরু করে দেশীয় সৈন্যদের মধ্যে প্রোপাগান্ডা চালানো হলেও তা বিশেষ ফল দেয়নি।

১৯৩৯ এর নভেম্বর থেকে ১৯৪০ এর মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ব্রিটিশ মালিকানাধীন বাগানগুলোতে স্বতঃস্ফূর্ত ধর্মঘট পালিত হয়েছিলো, প্রধানত সংগঠনের অধিকার আদায়ের জন্য। এসময় প্রধানত দুটি শ্রমিক ইউনিয়ন কাজ করছিলো, নাতাশা আইয়ার এর সিলন ইন্ডিয়ান কংগ্রেস এবং সমসমাজবাদীদের অল-সিলন এস্টেট ওয়ার্কারস ইউনিয়ন (পরবর্তীতে লংকা এস্টেট ওয়ার্কারস ইউনিয়ন)। মধ্য প্রদেশের মলয়া এস্টেটে সমসমাজবাদীদের নেতৃত্বে ধর্মঘট তীব্রমাত্রা ধারণ করেছিলো। এরপর তা দক্ষিণে উভা প্রদেশে ছড়িয়ে পড়ে এবং আরো দীর্ঘায়িত হয়ে ওঠে। এসময় সমসমাজবাদী দলের মিলিট্যান্ট নেতাদের ওপর শ্রমিকদের আরো বেশি আনুগত্য তৈরী হয়। ১২ মে তে, ট্রটস্কিবাদী নেতা এন.এম.পেরেরা বিশাল জনসভায় ভাষণ দেন এবং তাতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলেও পুলিশ কিছুই করতে পারেনি। ওয়েওয়েসা এস্টেটে শ্রমিকরা নির্বাচিত কাউন্সিল তৈরী করে, যার সুপারিনটেনডেন্ট ওয়ার্কারস কাউন্সিল অনুযায়ী কাজ করতে রাজি হন। 'আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার' করতে যাওয়া একটি সশস্ত্র পুলিশ দলকে শ্রমিকরা নিরস্ত্র করে। শেষ পর্যন্ত ধর্মঘটের বহমান ধারাকে পুলিশের সন্ত্রাসবাদী ধারা দ্বারা দমিয়ে দেওয়া হয়। বন্যার কারণে উভা প্রদেশের সাথে বাকি দেশের বিচ্ছিন্নতা এতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

তবে উপনিবেশবাদী কর্তৃপক্ষ বুঝতে পারছিলো যে স্বাধীনতা সংগ্রাম খুব শক্তিশালী হয়ে উঠছে। ডানকার্কের ঘটনার পর ব্রিটিশরা ভয় পেয়ে গিয়েছিলো (কয়েক দশক পরে প্রকাশিত গোপন নথি অনুযায়ী) এবং ১৮ জুনে সমসমাজবাদী পার্টির স্টেট কাউন্সিল মেম্বার এন.এম.পেরেরা, ফিলিপ গুণবর্ধন এবং অন্যদের গ্রেফতার করা হয়েছিল। সমসমাজবাদী প্রেসগুলিতে অভিযান চালিয়ে সিল করে দেয়া হয়েছিলো। এমনসব বিধান জারি করা হয়েছিল যে উন্মুক্তভাবে পার্টির কাজ করা বস্তুতঃ অসম্ভব হয়ে পড়েছিলো। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের প্রতি জনগনের বিরোধিতা বেড়েই চলছিলো।

জাপান অধিকৃত সিঙ্গাপুর ও মালয়ে নাৎসি জার্মানি দ্বারা প্রতিষ্ঠিত, নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু এর নেতৃত্বে গঠিত আজাদ হিন্দ ফৌজ এর অংশ হিসেবে সেখানকার সিলনীরা 'লংকা রেজিমেন্ট' গঠন করে। তাদেরকে সাবমেরিনে করে সিলনে পাঠিয়ে স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু করার পরিকল্পনা তৈরী করা হলেও পরে তা বাতিল করা হয়।

সমসমাজবাদী দলের নেতারা একজন রক্ষীর সহায়তা নিয়ে পালাতে সক্ষম হয়েছিলেন। তাদের অধিকাংশই পালিয়ে ভারতে চলে যান ও সেখানকার স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেন। তারা যুদ্ধের আগে সুপ্রতিষ্ঠিত এ কথাটিকেই সামনে আনেন যে, ভারত ও সিলনের স্বাধীনতা সংগ্রাম আন্তঃসম্পর্কিত। তবুও, ফিলিপের ভাই রবার্ট গুণবর্ধনের নেতৃত্বে বেশ বড় একটি দলই দেশে রয়ে গিয়েছিলো।

ছবিসমূহ[সম্পাদনা]

সিলনের ওমেন্স রয়্যাল নেভাল সার্ভিস (ডব্লিউআরএনএস)।
রয়্যাল নেভাল স্কুল অফ ম্যালেরিয়া এন্ড হাইজিন কন্ট্রোল, কলম্বো।
আরএনএএস পুত্তালামে ফিফি নামক কর্মী হাতি।
সিংহলের নারী মজুররা আরএএফ এর ফ্লাইংবোট স্টেশন মেরামতরত, রেড হিলস লেক, সিলন, সেপ্টেম্বর ১৯৪৪।
১১ তম ইস্ট আফ্রিকান ডিভিশন এর আস্কারি সৈন্যরা অ্যান্টি এয়ারক্র্যাফট অস্ত্রে প্রশিক্ষনরত।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

টীকা[সম্পাদনা]

  1. Forgotten campaign, forgotten veterans
  2. "Cocos Island Mutiny"। ১১ সেপ্টেম্বর ২০০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ আগস্ট ২০২০ 
  3. Ludowyck E.F.C., The Story of Ceylon, 1962, London, Faber & Faber

সূত্রসমূহ[সম্পাদনা]

  • Arsecularatne, SN, Sinhalese immigrants in Malaysia & Singapore, 1860-1990: History through recollections, KVG de Silva & Sons, কলম্বো, ১৯৯১
  • Crusz, Noel, The Cocos Islands Mutiny, Fremantle Arts Centre Press, Fremantle, WA, ২০০১
  • Muthiah, Wesley and Wanasinghe, Sydney, Britain, World War 2 and the Sama Samajists, Young Socialist Publication, কলম্বো, ১৯৯৬
  • Lankan was privy to WW II covert operation

আরও পড়ুন[সম্পাদনা]