ডন ব্রেনান

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ডন ব্রেনান
১৯৪৯ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে ডন ব্রেনান
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামডোনাল্ড ভিনসেন্ট ব্রেনান
জন্ম(১৯২০-০২-১০)১০ ফেব্রুয়ারি ১৯২০
একলেশিল, ব্রাডফোর্ড, ইয়র্কশায়ার, ইংল্যান্ড
মৃত্যু৯ জানুয়ারি ১৯৮৫(1985-01-09) (বয়স ৬৪)
ইকলি, ইয়র্কশায়ার, ইংল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
ভূমিকাউইকেট-রক্ষক
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৩৫৯)
২৬ জুলাই ১৯৫১ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
শেষ টেস্ট১৬ আগস্ট ১৯৫১ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৫০ - ১৯৬৪মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাব (এমসিসি)
১৯৪৭ - ১৯৫৩ইয়র্কশায়ার
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ২৩২
রানের সংখ্যা ১৬ ১৯৩৭
ব্যাটিং গড় ৮.০০ ১০.৫২
১০০/৫০ ০/০ ০/১
সর্বোচ্চ রান ১৬ ৬৭*
বল করেছে
উইকেট
বোলিং গড়
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ০/১ ৩১০/১১৯
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৫ অক্টোবর ২০২০

ডোনাল্ড ভিনসেন্ট ব্রেনান (ইংরেজি: Don Brennan; জন্ম: ১০ ফেব্রুয়ারি, ১৯২০ - মৃত্যু: ৯ জানুয়ারি, ১৯৮৫) ইয়র্কশায়ারের একলেশিল এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন।[১] ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৫০-এর দশকের সূচনালগ্নে অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ইয়র্কশায়ার দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ উইকেট-রক্ষক হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন ডন ব্রেনান

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট[সম্পাদনা]

ব্রাডফোর্ডের একলেশিলে জন্মগ্রহণকারী ডন ব্রেনান নিজ শহরে ব্রাডফোর্ড লীগ ক্রিকেটে অংশ নেন। এরপর, ১৯৪৭ সালে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটের সাথে যুক্ত হন।[২] ১৯৪৬ সালে দ্বিতীয় একাদশের পক্ষে দুইটি খেলায় অংশ নেন। কিন্তু, পল গিব, আর্থার উড ও কেনেথ ফিডলিংয়ের কারণে প্রথম একাদশের সদস্য হতে পারেননি তিনি। তবে, ঐ তিনজন ক্লাব ত্যাগ করলে ১৯৪৭ সালে ব্রেনান ও হ্যারি ক্রিককে উইকেট-রক্ষণের জন্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হতে হয়।

১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত ডন ব্রেনানের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। ১৯৪৭ থেকে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত ইয়র্কশায়ারের পক্ষে নিয়মিতভাবে উইকেট-রক্ষকের দায়িত্ব পালন করে গেছেন। ইয়র্কশায়ার দলে অবস্থান করে জনি ওয়ারডল, বব এপলইয়ার্ডএডি লিডবিটারের স্পিন বোলিং বেশ দক্ষতার সাথে মোকাবেলা করেছেন ও খুব কমই স্ট্যাম্পিং করতে পারেননি। সবমিলিয়ে ৩১৬জন ব্যাটসম্যানকে কট ও ১১৫জনকে স্ট্যাম্পিং করেছিলেন তিনি।

২৭ বছর বয়সে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ডন ব্রেনানের অভিষেক ঘটে। মৌসুমের প্রথম খেলায় ইয়র্কশায়ারের প্রতিপক্ষ ছিল মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাব (এমসিসি)। তবে, মে মাসে চ্যাম্পিয়নশীপের ছয় খেলার পাঁচটিতেই হ্যারি ক্রিককে খেলানো হয়েছিল। এরপর থেকেই কেবল ডন ব্রেনানকে নিয়মিতভাবে খেলানো হয়। ঐ মৌসুমে তেইশটি খেলায় তিনি অংশ নেন, ক্রিক করেন পাঁচটি।[৩] প্রথম মৌসুমেই তিনি ক্যাপ লাভ করেছিলেন।[৪]

১৯৪৮ সালে কেবলমাত্র ইয়র্কশায়ারের পক্ষে অংশ নিয়ে ৪.৯৫ গড়ে ১০৪ রান সংগ্রহ করেন ও ৪৩টি ডিসমিসাল ঘটান।[৫] ১৯৪৯ ও ১৯৫০ সালে তিনি আরও নিয়মিতভাবে খেলার সুযোগ পান। সীমিত সুযোগ নিয়েও তিনি তার ব্যাটিং গড়কে উন্নত করতে সচেষ্ট হন।[৬] ১৯৫১ সালে ডন ব্রেনানের ব্যাটিংয়ের উত্তরণ লক্ষ্য করা যায়। পূর্ববর্তী মৌসুমের ৭.৮০ গড় থেকে দ্বিগুণ বেড়ে ১৫.৮১ হয়।[৭]

১৯৪৭ থেকে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত ইয়র্কশায়ারের পক্ষে নিয়মিতভাবে উইকেট-রক্ষক হিসেবে খেলে সাত মৌসুমে ৩৮০টি ডিসমিসাল ঘটিয়েছিলেন। ব্যাট হাতে তিনি মোটেই সুবিধের ছিলেন না। ২৩২টি ইনিংসে মাত্র একবার অর্ধ-শতরানের ইনিংস খেলতে সমর্থ হন। ১০.৫২ গড়ে রান তুলেছিলেন তিনি।

ক্রিকেট সংবাদদাতা কলিন বেটম্যান মন্তব্য করেন যে, ডন ব্রেনানকে গডফ্রে ইভান্সের পরিবর্তে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলে নেয়া হয়। উইকেট-রক্ষণে দক্ষতার কারণেই এটি সম্ভব হয়েছে।[৮]

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে দুইটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন ডন ব্রেনান। সবগুলো টেস্টই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলেছিলেন তিনি। ২৬ জুলাই, ১৯৫১ তারিখে লিডসে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এরপর, ১৬ আগস্ট, ১৯৫১ তারিখে ওভালে একই দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

ঘরোয়া ক্রিকেটে উন্নততর ক্রীড়া সঠিক সময়ে আসে ও ইংল্যান্ড দলে তাকে মনোনীত করা হয়। সিরিজের শেষ দুই টেস্টে অংশ নেন। সফররত দক্ষিণ আফ্রিকা দলের বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ টেস্টে গডফ্রে ইভান্সের স্থলাভিষিক্ত হন তিনি।[৯] হেডিংলি স্টেডিয়ামে ফ্রাঙ্ক লসনপিটার মে’র সাথে তার একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। দক্ষিণ আফ্রিকা তাদের প্রথম ইনিংসে ৫৩৮ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করালেও তিনি মাত্র একটি বাই রান দেন। এরপর, পৌনে এক ঘণ্টা সময় নিয়ে ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে ১৬ রান তুলেন। এরপর টাফটি মানের বলে বোল্ড হন।[১০] ট্রেভর বেইলিকে সাহসীকতাপূর্ণ ইনিংস খেলতে উদ্বুদ্ধ করেন ও ৩২ রান তুলতে সহায়তা করেন। সময়ের চেয়েও রানগুলো মূল্যবান ছিল।

তিন সপ্তাহ পর ওভালে নিজস্ব দ্বিতীয় টেস্ট খেলার সুযোগ পান। প্রথম ইনিংসে একটি ডিসমিসাল ঘটান। জিম লেকারের বোলিং থেকে স্ট্যাম্পিং করেন তিনি। তবে, নিজের একমাত্র ইনিংসে শূন্য রানে বিদেয় নিতে বাধ্য হন।[১১]

ভারত গমন[সম্পাদনা]

১৯৫১-৫২ মৌসুমের শীতকালে এমসিসি দলের সদস্যরূপে ভারত ও পাকিস্তান গমনার্থে তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তবে, পাঁচ টেস্টের সবকটিতেই ডিক স্পুনারকে উইকেট-রক্ষণের জন্যে খেলানো হয়। ঐ সফরে তিনি মাত্র পাঁচটি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিতে পেরেছিলেন। তন্মধ্যে, মহারাষ্ট্রের বিপক্ষে ৬৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। এটিই তার পূর্ণাঙ্গ প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবনের একমাত্র অর্ধ-শতরানের ইনিংস ছিল।[১২]

অবসর[সম্পাদনা]

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে প্রত্যাখ্যাত হবার পর তিনি আরও দুই মৌসুম কাউন্টি ক্রিকেট খেলেন। ১৯৫২ সালে ১১ গড়ে ২৪২ রান সংগ্রহসহ ৬২টি ডিসমিসাল ঘটান। ১৯৫৩ সালে ১৪.০৩ গড়ে ৩৭৯ রান ও ৫১টি ডিসমিসাল ঘটান।[৭] ঐ মৌসুম শেষে পারিবারিক টেক্সটাইল ব্যবসায় মনোসংযোগ ঘটাতে অবসর গ্রহণ করেন।[৯] এছাড়াও, অবসর গ্রহণের পর ইয়র্কশায়ার কমিটির সাথে যুক্ত ছিলেন।[৯]

১৯৬৪ সালে এমসিসি’র সদস্যরূপে ইয়র্কশায়ারের বিপক্ষে একটি খেলায় অংশ নিয়েছিলেন।[১৩] দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন তিনি। অতঃপর, ৯ জানুয়ারি, ১৯৮৫ তারিখে ৬৪ বছর বয়সে ইয়র্কশায়ারের ইকলি এলাকায় ডন ব্রেনানের দেহাবসান ঘটে।[৯]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Warner, David (২০১১)। The Yorkshire County Cricket Club: 2011 Yearbook (113th সংস্করণ)। Ilkley, Yorkshire: Great Northern Books। পৃষ্ঠা 364। আইএসবিএন 978-1-905080-85-4 
  2. Double debut joy for Tykes, Telegraph & Argus, Retrieved on 19 December 2008
  3. Batting and Fielding for Yorkshire, County Championship 1947, CricketArchive, Retrieved on 19 December 2008
  4. Player Profile, CricketArchive, Retrieved on 19 December 2008
  5. Batting.html Batting and Fielding for Yorkshire, County Championship 1948, CricketArchive, Retrieved on 19 December 2008
  6. First-class Batting and Fielding in Each Season by Jack Firth, CricketArchive, Retrieved on 19 December 2008
  7. First-class Batting and Fielding in Each Season by Don Brennan, CricketArchive, Retrieved on 19 December 2008
  8. Bateman, Colin (১৯৯৩)। If The Cap Fits। Tony Williams Publications। পৃষ্ঠা 31আইএসবিএন 1-869833-21-X 
  9. Player Profile, Cricinfo, Retrieved on 19 December 2008
  10. England v South Africa, South Africa in British Isles 1951 (4th Test), CricketArchive, Retrieved on 19 December 2008
  11. England v South Africa, South Africa in British Isles 1951 (5th Test), CricketArchive, Retrieved on 19 December 2008
  12. Maharashtra v MCC, MCC in India 1951/52, CricketArchive, Retrieved on 19 December 2008
  13. Yorkshire v MCC, Other First-Class matches in England 1964, CricketArchive, Retrieved on 19 December 2008

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]