বিষয়বস্তুতে চলুন

ফ্রাঙ্ক লসন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ফ্রাঙ্ক লসন
১৯৫০ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে ফ্রাঙ্ক লসন
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
ফ্রাঙ্ক অ্যান্ডারসন লসন
জন্ম(১৯২৫-০৭-০১)১ জুলাই ১৯২৫
ব্রাডফোর্ড, ইয়র্কশায়ার, ইংল্যান্ড
মৃত্যু৮ সেপ্টেম্বর ১৯৮৪(1984-09-08) (বয়স ৫৯)
পুল-ইন-হোয়ারফিডেল, ইয়র্কশায়ার, ইংল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি অফ ব্রেক
ভূমিকাব্যাটসম্যান
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৩৬০)
২৬ জুলাই ১৯৫১ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
শেষ টেস্ট২১ জুলাই ১৯৫৫ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ২৭৭
রানের সংখ্যা ২৪৫ ১৫৩২১
ব্যাটিং গড় ১৮.৮৪ ৩৭.১৮
১০০/৫০ –/২ ৩১/৭২
সর্বোচ্চ রান ৬৮ ২৫৯*
বল করেছে ৩০
উইকেট
বোলিং গড়
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৫/– ১৯০/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৩ এপ্রিল ২০২০

ফ্রাঙ্ক অ্যান্ডারসন লসন (ইংরেজি: Frank Lowson; জন্ম: ১ জুলাই, ১৯২৫ - মৃত্যু: ৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৮৪) ইয়র্কশায়ারের ব্রাডফোর্ড এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন।[] ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৫১ থেকে ১৯৫৫ সময়কালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ইয়র্কশায়ার দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ ব্রেক বোলিং করতেন ফ্রাঙ্ক লসন

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

১৯৪৯ সাল থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত ফ্রাঙ্ক লসনের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলাগুলো থেকে ৩৭-এর অধিক গড়ে ১৫,৩২১ রান তুলেছেন। অথচ, ত্রিশ বছর বয়সের শুরুতে কাউন্টি খেলাগুলোয় অংশগ্রহণ করা থেকে তাকে দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছিল।[]

ইয়র্কশায়ারের ব্রাডফোর্ড এলাকায় ফ্রাঙ্ক লসনের জন্ম। ডানহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে ব্রাডফোর্ড লীগে খেলতেন। এরপর, প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলার সুযোগ পান। ১৯৪৯ সালে ইয়র্কশায়ারের পক্ষে প্রথম মৌসুমেই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে আবির্ভূত হন ও ১৭৯৯ রান তুলে তাৎক্ষণিকভাবে সফলতার স্বাক্ষর রাখেন। তার সাথে জুটি বাঁধা লেন হাটনও তার খেলোয়াড়ী জীবনের সেরা সফলতম মৌসুম অতিবাহিত করেছিলেন। পরের বছর তিনি তার সফলতাকে আরও স্ফীত করে তুলেন। ২১৫২ রান তুলেন তিনি। ১৯৫০-এর দশকের প্রথমার্ধ্বে লেন হাটনের সাথে সমানতালে অগ্রসর হয়েছিলেন। প্রায়শঃই তাকে হাটনের প্রতিচ্ছবি হিসেবে চিত্রিত করা হতো।[]

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে সাতটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন ফ্রাঙ্ক লসন। ২৬ জুলাই, ১৯৫১ তারিখে লিডসে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ২১ জুলাই, ১৯৫৫ তারিখে একই মাঠে ও একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

কাউন্টি ক্রিকেটের ন্যায় লসন-হাটন জুটিকে টেস্ট ক্রিকেটে রাখা হয়। ১৯৫১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম উইকেটে তারা ৯৯ রান তুলে। হেডিংলিতে অনুষ্ঠিত ঐ টেস্টে লসনের প্রথম ইনিংসে সংগ্রহ ছিল ৫৮। ওভালে টেস্ট সিরিজের শেষ খেলায়ও তিনি তার স্থান অক্ষুণ্ন রাখেন।

ভারত গমন

[সম্পাদনা]

১৯৫১-৫২ মৌসুমে ভারত, পাকিস্তান ও সিলনে বেশ কষ্টকর দীর্ঘ পাঁচ মাসের সফরে তাকে এমসিসি দলে রাখা হয়। এ পর্যায়ে তিনি নিজেকে মাঝারিমানের খেলোয়াড়ের ভূমিকায় অবতীর্ণ করেছিলেন।[] লেন হাটনসহ বেশ কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় ইংরেজ খেলোয়াড় নিজেদেরকে এ সফর থেকে দূরে সরিয়ে রাখেন।

ভারতের বিপক্ষে পাঁচ টেস্টের চারটিতে তার অংশগ্রহণ ছিল। প্রথম খেলায় তিনি ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৬৮ রান তুলেন। ঐ সফরে তিনি ৪৪ গড়ে সহস্রাধিক প্রথম-শ্রেণীর রান সংগ্রহ করেছিলেন। কিন্তু, টেস্টগুলোয় মাত্র ১৮ গড়ে রান পেয়েছিলেন। উইজডেনে এ সফরের পর্যালোচনায় মন্তব্য করা হয় যে, লসন স্ট্রোকের মারে নিজেকে আরও গুছিয়ে নিয়েছেন ও আপাতদৃষ্টিতে দলের সর্বাপেক্ষা পরিচ্ছন্ন ব্যাটসম্যান ছিলেন। কিন্তু, দূর্ভাগ্যজনকভাবে টেস্টগুলো এ ধারা প্রবাহিত করতে পারেননি। তার দক্ষতাকে অস্বীকার করা যাবে না ও সর্বদাই তিনি ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজেকে তুলে ধরতে প্রয়াস চালিয়েছেন। শুধুমাত্র মনকে সংযত করে নেয়ার বিষয়টিই কেবল সন্দেহের উদ্রেক ঘটায়।

দলে প্রত্যাখ্যান

[সম্পাদনা]

উপমহাদেশ সফরের মাধ্যমে লসনের খেলোয়াড়ী জীবনে বড়ধরনের জলচ্ছবি হিসেবে রয়ে যায় ও এরপর আর মাত্র একটি টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। ১৯৫৫ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হেডিংলি টেস্টে কাউন্টি দলের সঙ্গী উইলি ওয়াটসনকে তার স্থলাভিষিক্ত করা হয়।[]

১৯৫২ সালে কাউন্টি ক্রিকেটে বেশ ভালো করেন। ১৯৫৩ সালে এ সাফল্যকে আরও ছাপিয়ে যান। এ পর্যায়ে নিউ রোডে ওরচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ২৫৯ রান তুলেছিলেন তিনি। ১৯৫৪ সালে আবারও ভালো খেলা প্রদর্শনে সচেষ্ট হন। ১৯৫৫ সালে লেট হাটনের অবসর গ্রহণের পর লসনেরও বাজে মৌসুম অতিবাহিত হয়। তবে, ১৯৫৬ সালে পুনরায় খেলায় ছন্দ ফিরে পান। ১৯৫৭ সালে আঘাতের কবলে পড়েন ও ১৯৫৮ সালে পুরোপুরি নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন।

১৯৫৮ মৌসুম শেষে ইয়র্কশায়ার দল কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপে সফলতার দিক দিয়ে কম মানদণ্ডের অধিকারী ছিল। ইয়র্কশায়ার কর্তৃপক্ষ ও নবনিযুক্ত অধিনায়ক রনি বার্নেট যুবদের নীতি গ্রহণ এবং জনি ওয়ারডল, বব এপলইয়ার্ড ও ফ্রাঙ্ক লসনের ন্যায় কয়েকজন জ্যেষ্ঠ খেলোয়াড়দেরকে বাদ দেয়। এরফলে, ১৯৫৯ সালে পরের মৌসুমে ইয়র্কশায়ার দল চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা জয় করতে সক্ষম হয়। তবে, ৩৩ বছর বয়সে ফ্রাঙ্ক লসনকে লীগ ক্রিকেটে অংশ নিতে দেখা যায় ও তিনি আর প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশ নেননি।

ইয়র্কশায়ার পোস্টের সাবেক ক্রিকেট প্রতিনিধি জে. এম. কিলবার্ন লসনের খেলোয়াড়ী জীবন সম্পর্কে আলোকপাত করতে গিয়ে মন্তব্য করেন যে, ‘টেস্ট ক্রিকেটারের সবগুলো গুণই তার মাঝে বহমান কিন্তু, উচ্চাকাঙ্খী হবার চিন্তাধারা এর ব্যতিক্রম ছিল।’

ব্যক্তিগত জীবন

[সম্পাদনা]

ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর বীমা পেশার দিকে ধাবিত হন।[][] ফ্রাঙ্ক লসনের পরিবার ক্রিকেটের সাথে জড়িত। তার কাকাতো ভাইয়ের দুই নাতি চার্লস ও অ্যালেন প্রিটচার্ড স্টাফোর্ড ক্রিকেট ক্লাবে অংশ নিয়েছেন। অন্যদিকে, দৌহিত্র ম্যাথু আম্পায়ার হিসেবে নিজেকে খেলার সাথে জড়িয়ে রেখেছেন।

৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৮৪ তারিখে ৫৯ বছর বয়সে ইয়র্কশায়ারের পুল-ইন-হোয়ারফিডেল এলাকায় ফ্রাঙ্ক লসনের দেহাবসান ঘটে।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Bateman, Colin (১৯৯৩)। If The Cap Fits। Tony Williams Publications। পৃষ্ঠা 114আইএসবিএন 1-869833-21-X 
  2. Wisden 1985

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]