টনি ম্যাকগিবন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
টনি ম্যাকগিবন
১৯৫৮ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে টনি ম্যাকগিবন
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামঅ্যান্থনী রয় ম্যাকগিবন
জন্ম(১৯২৪-০৮-২৮)২৮ আগস্ট ১৯২৪
ক্রাইস্টচার্চ, নিউজিল্যান্ড
মৃত্যু৬ এপ্রিল ২০১০(2010-04-06) (বয়স ৮৫)
উচ্চতা৬ ফুট ৫ ইঞ্চি (১.৯৬ মিটার)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম
ভূমিকাবোলার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৫২)
১৭ মার্চ ১৯৫১ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট২১ আগস্ট ১৯৫৮ বনাম ইংল্যান্ড
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ২৬ ১২৪
রানের সংখ্যা ৮১৪ ৩,৬৯৯
ব্যাটিং গড় ১৯.৮৫ ১৯.৮৮
১০০/৫০ ০/৩ ০/১৪
সর্বোচ্চ রান ৬৬ ৯৪
বল করেছে ৫,৬৫৯ ২৪,০৬৯
উইকেট ৭০ ৩৫৬
বোলিং গড় ৩০.৮৫ ২৬.১২
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৫/৬৪ ৭/৫৬
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১৩/- ৮১/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০

অ্যান্থনী রয় ম্যাকগিবন (ইংরেজি: Tony MacGibbon; জন্ম: ২৮ আগস্ট, ১৯২৪ - মৃত্যু: ৬ এপ্রিল, ২০১০) ক্রাইস্টচার্চ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী নিউজিল্যান্ডীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৫১ থেকে ১৯৫৮ সময়কালে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে ক্যান্টারবারি দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং করতেন। এছাড়াও, নিচেরসারিতে ডানহাতে কার্যকরী ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শন করেছেন টনি ম্যাকগিবন

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট[সম্পাদনা]

১৯৪৭-৪৮ মৌসুম থেকে ১৯৬১-৬২ মৌসুম পর্যন্ত টনি ম্যাকগিবনের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। ১৯৫০ থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডের অন্যতম বোলিং আক্রমণকারীর ভূমিকায় অবর্তীণ হয়েছিলেন। এ পর্যায়ে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটে টালমাটাল অবস্থায় নিপতিত ছিল। দীর্ঘ দূরত্ব অতিক্রম করে বোলিং করতেন। ৬ ফুট ৫ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী টনি ম্যাকগিবন বলকে উভয় দিক দিয়েই সুইং করানোয় সক্ষম ছিলেন। এছাড়াও, নিচেরসারিতে কার্যকর ব্যাটিং করতেন। পাশাপাশি স্লিপ অঞ্চলে চমৎকারভাবে ফিল্ডিং করতেন।

১৯৫০-এর দশকের অধিকাংশ সময় দলের পক্ষে বোলিং আক্রমণে নেতৃত্ব দিতেন। দীর্ঘদেহের অধিকারী টনি ম্যাকগিবন বলকে অফের দিকে সিম করাতে পারতেন। মনপ্রাণ দিয়ে খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেন। তবে, এ সময়ে নিউজিল্যান্ড দল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে সর্বাপেক্ষা দূর্বলতম দলগুলো অন্যতম ছিল।

১৯৪৭-৪৮ মৌসুম থেকে ক্যান্টারবারির পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলতে শুরু করেন টনি ম্যাকগিবন। ১৯৪৯ সালে ইংল্যান্ড গমনকল্পে নিউজিল্যান্ডে যাচাই-বাছাইয়ের খেলায় অংশ নেন। তবে, ঐ সফরের জন্যে নির্বাচিত হননি। ১৯৫৪ সালে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট অ্যালমেনাক কর্তৃক বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের মর্যাদায় ভূষিত হয়েছিলেন। ১৯৬১-৬২ মৌসুমে পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডীয় ঘরোয়া ক্রিকেটে অংশ নেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ছাব্বিশটি টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন টনি ম্যাকগিবন। ১৭ মার্চ, ১৯৫১ তারিখে ক্রাইস্টচার্চে সফরকারী ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ২১ আগস্ট, ১৯৫৮ তারিখে ওভালে একই দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

১৯৫০-৫১ মৌসুমে সফররত ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। তবে, সিরিজের দুই খেলায় অংশ নিয়ে খুব কমই অবদান রেখেছিলেন। চার ইনিংসে তিনি মাত্র ৩২ রান তুলেন ও কোন উইকেট লাভে ব্যর্থতার পরিচয় দেন। দুই বছর পর সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা দলের বিপক্ষে একটি টেস্টে অংশ নিয়েও তেমন সফল হননি। কিন্তু, রয় ম্যাকলিনকে আউট করে প্রথম উইকেট লাভের সন্ধান পান।

দক্ষিণ আফ্রিকা গমন[সম্পাদনা]

পরের বছর নিউজিল্যান্ড দল দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করে। এ পর্যায়ে তিনি দূরত্ব কমিয়ে বোলিং করতেন ও দলের সর্বাপেক্ষা সফলতম বোলারে পরিণত হন। উইকেট প্রতি ২১ রানের কম গড় নিয়ে ২২ উইকেট পেয়েছিলেন টনি ম্যাকগিবন। ১৯৫৫-৫৬ মৌসুমে দ্বিতীয়বারের মতো পাকিস্তানভারত গমন করেন। এ সফরে বোলার হিসেবে কম সফল ছিলেন। সবমিলিয়ে আট টেস্টে অংশ নেন। দুইটি অর্ধ-শতরানের ইনিংস খেলেন। পরের মৌসুমে নিজ দেশে নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসের প্রথম টেস্ট বিজয়ী দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। অকল্যান্ডে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের বিপক্ষে তার দল বিজয়ী হয়েছিল। এ পর্যায়ে প্রথম ইনিংসে আলফন্সো রবার্টসকে বোল্ড করে প্রথম নিউজিল্যান্ডীয় হিসেবে টেস্টে ৫০তম উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন।[১] নিচুমূখী রানের খেলায় ৩৫ রান তুলে দলের বিজয়ে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন।

১৯৫৮ সালে দলের সাথে ইংল্যান্ড গমন করেন। এ সফরেই তিনি তার সর্বশেষ টেস্ট খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। ভেজা গ্রীষ্মে দলের বিপর্যয়কর ফলাফলের বিপরীতে রুখে দাঁড়ানো স্বল্পসংখ্যক নিউজিল্যান্ডীয় খেলোয়াড়ের অন্যতম ছিলেন তিনি। প্রথম টেস্টে ৫/৬৪ লাভ করেন। এটিই তার খেলোয়াড়ী জীবনের একমাত্র পাঁচ-উইকেট লাভের ঘটনা ছিল। ফলশ্রুতিতে, ইংল্যান্ড দল ২২১ রানে গুটিয়ে যায়। দ্বিতীয় ইনিংসে আরও তিন উইকেট পান। তাসত্ত্বেও, স্বাগতিক দল বেশ সহজেই জয় তুলে নেয়। ওল্ড ট্রাফোর্ডে সিরিজের চতুর্থ টেস্টে ৬৬ রান তুলেন। শুধুমাত্র ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানই নয়; বরঞ্চ সিরিজে নিউজিল্যান্ড দলের সর্বোচ্চ ইনিংস ছিল। এ সফরে সামগ্রিকভাবে ৬৭০ রান ও ৭৩ উইকেট পেয়েছিলেন তিনি।

অবসর[সম্পাদনা]

১৯৫৮ সালের সফর শেষে টেস্ট ক্রিকেট থেকে নিজের অবসর গ্রহণের কথা ঘোষণা করেন টনি ম্যাকগিবন। উচ্চ শিক্ষার্থে যুক্তরাজ্যে চলে যান ও ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পুরকৌশল বিষয়ে অধ্যয়ন করেন। কেবলমাত্র একবারই নিউজিল্যান্ড দলে ফিরে এসেছিলেন।

৬ এপিল, ২০১০ তারিখে ৮৫ বছর বয়সে ক্যান্টারবারির ক্রাইস্টচার্চ এলাকায় টনি ম্যাকগিবনের দেহাবসান ঘটে।[২]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. R.T. Brittenden, Great Days in New Zealand Cricket, A.H. & A.W. Reed, Wellington, 1958, p. 189.
  2. Bidwell, Hamish (৯ এপ্রিল ২০১০)। "History-making Kiwi cricketer MacGibbon dies"The Press। সংগ্রহের তারিখ ২৩ নভেম্বর ২০১১ 

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]