রয় ম্যাকলিন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
রয় ম্যাকলিন
১৯৫৫ সালের গৃহীত স্থিরচিত্রে রয় ম্যাকলিন
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্ম(১৯৩০-০৭-০৯)৯ জুলাই ১৯৩০
পিটারমারিৎজবার্গ,, নাটাল, দক্ষিণ আফ্রিকা
মৃত্যু২৬ আগস্ট ২০০৭(2007-08-26) (বয়স ৭৭)
জোহানেসবার্গ, দক্ষিণ আফ্রিকা
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৪৯/৫০-১৯৬৫/৬৬নাটাল
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৪০ ২০০
রানের সংখ্যা ২১২০ ১০৯৬৯
ব্যাটিং গড় ৩০.২৮ ৩৬.৬৮
১০০/৫০ ৫/১০ ২২/৬৫
সর্বোচ্চ রান ১৪২ ২০৭
বল করেছে ১৮৪
উইকেট
বোলিং গড় ৬১.০০
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ২/২২
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ২৩/- ১৩২/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮

রয় অ্যালাস্টেয়ার ম্যাকলিন (ইংরেজি: Roy McLean; জন্ম: ৯ জুলাই, ১৯৩০ - মৃত্যু: ২৬ আগস্ট, ২০০৭) কোয়াজুলু-নাটাল প্রদেশের পিটারমারিৎজবার্গে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত দক্ষিণ আফ্রিকান আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। ১৯৫১ থেকে ১৯৬৪ সময়কালে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে নাটালের প্রতিনিধিত্ব করেছেন রয় ম্যাকলিন। দলে তিনি মূলতঃ মাঝারিসারির ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন।

প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]

নাটাল প্রদেশের পিটারমারিৎজবার্গ এলাকায় রয় ম্যাকলিনের জন্ম। হিলটন কলেজে অধ্যয়ন করেছেন তিনি। ক্রিকেট, হকি ও রাগবি ইউনিয়নে দক্ষতা প্রদর্শন করেছেন।[১] রাট নাটালের পক্ষে ফ্লাই হাফ অঞ্চলে রাগবি খেলতেন।[২]

১৯৪৯-৫০ মৌসুম থেকে ১৯৬৫-৬৬ মৌসুম পর্যন্ত নাটালের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন রয় ম্যাকলিন। ১৯৪৯ সালে নাটালের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার।

টেস্ট ক্রিকেট[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে চল্লিশ টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়ে রানের ফুলঝুড়ি ছুটিয়েছেন তিনি। দুই সহস্রাধিক রান সংগ্রহ করলেও ৭৩ টেস্ট ইনিংসের ১১টিতে শূন্য রান করেছেন।[৩]

১৯৫১ সালে ইংল্যান্ড সফরে যান। ৫ জুলাই, ১৯৫১ তারিখে ওল্ড ট্রাফোর্ডে অনুষ্ঠিত খেলায় রয় ম্যাকলিনের টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে। দৃষ্টিনন্দন ও মারকুটে মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। ব্যক্তিগতভাবে এ সফরে বেশ সলফলতা পান। ১৯৫২-৫৩ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা দলের সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড সফরে যান।তন্মধ্যে, স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের চূড়ান্ত টেস্টে অপরাজিত ৭৬ রান করে দলের জয়ে প্রভূতঃ ভূমিকা রাখেন। প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া দল ৫২০ রান তুললেও টেস্টে পরাজিত হলে সিরিজটি ড্রয়ে পরিণত হয়।[৪]

১৯৫৫ সালে পুনরায় ইংল্যান্ড সফরে যান। লর্ডসে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১৪২ রান তুলেন। ব্রায়ান স্ট্যাদাম, ফ্রেড ট্রুম্যান, ট্রেভর বেইলিজনি ওয়ারডলের ন্যায় তারকা বোলারদের মোকাবেলা করে এ সাফল্য পান। ২১ চার ও এক ছক্কায় এ ইনিংস করলেও ভাগ্য তার বেশ অনুকূলে ছিল। বেশ কয়েকবার আউট হওয়া থেকে বেঁচে যান তিনি। উইকেটে থাকাকালীন ১৯৬ রানের মধ্যে তিনি একাই করেন ১৪২। অবশেষে স্ট্যাদামের বলে বোল্ড হন তিনি।[৩] তবে, ঐ টেস্টে ইংল্যান্ড ৭৬ রানে জয় পেয়েছিল।[৫] ওল্ড ট্রাফোর্ডের তৃতীয় টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ফ্রাঙ্ক টাইসনের বলে বেশ কয়েকবার হুক মারেন। রান আউটের শিকার হবার পূর্বে ৭১ মিনিটে ৫০ রানের মনোজ্ঞ ইনিংস খেলেন। এ পর্যায়ে দক্ষিণ আফ্রিকা ৯ বল বাকী থাকতে জয় পায়।[৬] ১৯৫৫ সালে দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেট কর্তৃক বর্ষসেরা ক্রিকেটারের মর্যাদা লাভ করেন।[১]

ইংল্যান্ড গমন, ১৯৬০[সম্পাদনা]

১৯৬০ সালে ইংল্যান্ড সফরে কেবলমাত্র তিনি ও ফাস্ট বোলার নীল অ্যাডকক সফলতার মুখ দেখেছিলেন।[৪] ওরচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে ২০৭ রানের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ প্রথম-শ্রেণীর ইনিংস খেলেন। তার এ সংগ্রহটি ঐ মৌসুমের দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়ে। হ্যাস্টিংসে এ ই আর জিলিগান একাদশের বিপক্ষে উৎসবের খেলায় ৭৫ মিনিটে তা সম্পন্ন করেছিলেন। তবে, প্রথম আধা-ঘণ্টায় তিনি মাত্র ৬ রান তুলেছিলেন।[১][৩][৭] তারা প্রত্যেকেই উইজডেন কর্তৃক ১৯৬১ সালের সংস্করণে অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটারের মর্যাদা লাভ করেছিলেন।[৪]

১৯৬১ সালে ফেজেলাস নামে তরুণ খেলোয়াড়দের সমন্বয়ে গঠিত দল নিয়ে অনানুষ্ঠানিক সফরে ইংল্যান্ড গমন করেন। ঐ দলটিতে ১৯৬০-এর দশকের শেষার্ধ্বে দক্ষিণ আফ্রিকা দলের প্রধান মেরুদণ্ডরূপে স্বীকৃত খেলোয়াড় - পিটার পোলক, এডি বার্লো, কলিন ব্ল্যান্ড, ডেনিস লিন্ডসেপিটার ভ্যান ডার মারউই’র ন্যায় বিখ্যাত খেলোয়াড়দের অন্তর্ভূক্তি ছিল। সফরে দলটি অপরাজিত অবস্থায় ছিল।

১৯৬৬ সালে উইজডেন ক্রিকেটার্স অ্যালমেনাকের সম্পাদক নরম্যান প্রিস্টন ১৯৬৫ সালে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকানদের সফলতার পিছনে এর.এ. ম্যাকলিনের ন্যায় প্রাণবন্ত চরিত্রের অধিকারীর ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন। তিনি ১৯৬১ সালে ফেজেলা দল নিয়ে ইংল্যান্ড সফরে নিয়ে নতুন স্প্রিংবকসদের উত্থানে প্রভূতঃ অবদান রেখেছেন।[৮]

১৯৬১-৬২ মৌসুমে সফরকারী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ টেস্টের সিরিজের সবকটিতেই অংশ নেন। ১৯৬৪-৬৫ মৌসুমে সফরকারী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ দুই টেস্টে খেলেন।

অবসর[সম্পাদনা]

ক্রিকেট খেলার পাশাপাশি রাগবি ইউনিয়নেও কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন। ১৯৫৩ সালের শেষদিকে অস্ট্রেলিয়ান রাগবি ইউনিয়ন দল দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে আসে। নাটালের সদস্যরূপে সফরকারী দলের বিপক্ষে ড্রপ-গোল করে ১৫-১৪ গোলে জয় এনে দেন।

১৯৬৬ সালে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট থেকে রয় ম্যাকলিন অবসর গ্রহণ করেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বীমাকর্মী ছিলেন। ২৬ আগস্ট, ২০০৭ তারিখে ৭৭ বছর বয়সে জোহেন্সবার্গে রয় ম্যাকলিনের দেহাবসান ঘটে। দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন তিনি।[২][৭] মৃত্যুকালীন ৫১ বছর বয়সী স্ত্রী বারবারা ও তিন কন্যাকে রেখে যান।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

গ্রন্থপঞ্জি[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]