জ্যাক বোর্ড

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
জ্যাক বোর্ড
১৮৯৬ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে জ্যাক বোর্ড
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামজন হেনরি বোর্ড
জন্ম(১৮৬৭-০২-২৩)২৩ ফেব্রুয়ারি ১৮৬৭
ক্লিফটন, ব্রিস্টল, ইংল্যান্ড
মৃত্যু১৫ এপ্রিল ১৯২৪(1924-04-15) (বয়স ৫৭)
সলিল সমাধি
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
ভূমিকাউইকেট-রক্ষক-ব্যাটসম্যান, কোচ, আম্পায়ার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ১১১)
১৪ ফেব্রুয়ারি ১৮৯৯ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
শেষ টেস্ট৩০ মার্চ ১৯০৬ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৮৯১ - ১৯১৪গ্লুচেস্টারশায়ার
১৯০০ - ১৯০৪লন্ডন কাউন্টি
১৯১০/১১ - ১৯১৩/১৪হকস বে
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৫২৫
রানের সংখ্যা ১০৮ ১৫৬৭৪
ব্যাটিং গড় ১০.৮০ ১৯.৩৭
১০০/৫০ ০/০ ৯/৬৪
সর্বোচ্চ রান ২৯ ২১৪
বল করেছে - ৫৭
উইকেট - -
বোলিং গড় - -
ইনিংসে ৫ উইকেট - -
ম্যাচে ১০ উইকেট - -
সেরা বোলিং - -
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৮/৩ ৮৫১/৩৫৫
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৬ মার্চ ২০২০

জন হেনরি বোর্ড (ইংরেজি: Jack Board; জন্ম: ২৩ ফেব্রুয়ারি, ১৮৬৭ - মৃত্যু: ১৫ এপ্রিল, ১৯২৪) ব্রিস্টলের ক্লিফটন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও আম্পায়ার ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৮৯৯ থেকে ২০০৬ সময়কালে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে গ্লুচেস্টারশায়ার ও লন্ডন কাউন্টি এবং নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে হকস বে দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ উইকেট-রক্ষক-ব্যাটসম্যান। এছাড়াও, ডানহাতে ব্যাটিং করতেন জ্যাক বোর্ড

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট[সম্পাদনা]

১৮৯১ সাল থেকে ১৯১৪-১৫ মৌসুম পর্যন্ত জ্যাক বোর্ডের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। ১৮৯১ সাল থেকে ১৯১৪ সাল পর্যন্ত একাধারে খেলেন। ১৮৯৬ সালে ওভালে জেন্টলম্যান বনাম প্লেয়ার্সের খেলায় প্রথম অংশ নেন। ১৯১০ সালে লর্ডসে সর্বশেষ খেলায় অংশগ্রহণ করেন।

বোর্ডের মৃত্যুর এক মাস পর তার পূর্বসূরি উইকেট-রক্ষক জেএ বুশের দেহাবসান ঘটে। এ দুজন গ্লুচেস্টারশায়ারের পক্ষে চল্লিশ বছরের অধিক সময় উইকেট-রক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ১৯০০, ১৯০৫, ১৯০৬, ১৯০৭, ১৯০৯ ও ১৯১১ - এ ছয় বৎসর খেলেন। তার খেলার ভঙ্গীমা তেমন ভালো ছিল না। তবে, বল ঠেকিয়ে খেলার বিষয়ে যথেষ্ট জ্ঞান ছিল। বেশ জোরে বলকে আঘাত করতেন। উইলিয়াম স্টোরারের সহচর ছিলেন।

উইকেট-রক্ষক ও ডানহাতি ব্যাটসম্যান জ্যাক বোর্ড খেলোয়াড়ী জীবনের শুরুতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। তবে, পরবর্তীতে উত্তরোত্তর কার্যকরী খেলোয়াড়ে রূপান্তরিত হন ও গ্লুচেস্টারশায়ারের পক্ষে একসময় প্রায়শই ইনিংস উদ্বোধন করতেন। ব্রিস্টলে ক্লাব ক্রিকেটে অংশগ্রহণকারী জ্যাক বোর্ডকে ডব্লিউ. জি. গ্রেস চিহ্নিত করেন ও ১৮৯১ সালে লর্ডসে সাউথের সদস্যরূপে নর্থের বিপক্ষে খেলান। এরপর সোজা গ্লুচেস্টারশায়ার দলে খেলার সুযোগ পান ও সেখানে তিনি প্রায় ২০ বছর অবস্থান করেন। ১৮৯৫ সালে এক মৌসুমে সর্বাধিকসংখ্যক ৭৫টি ডিসমিসালের কাউন্টি রেকর্ড গড়েন।

ব্যাটসম্যান হিসেবে ১৯০০ সালে সমারসেটের বিপক্ষে ২১০ মিনিটে ২১৪ রান তুলেছিলেন তিনি।[১] এ সংগ্রহটি গ্লুচেস্টারশায়ারের উইকেট-রক্ষক হিসেবে সর্বাধিক ছিল। ১৯০৩ সালে হোভে সাসেক্সের বিপক্ষে গিলবার্ট জেসপকে সাথে নিয়ে ষষ্ঠ উইকেটে জুটিতে ৩২০ রান তুলেন। গিলবার্ট জেসপ ২৮৬ রানে তুললেও তিনি সংগ্রহ করেছিলেন মাত্র ৭১ রান।[২] অদ্যাবধি ষষ্ঠ উইকেটে সংগৃহীত এ সংগ্রহটি কাউন্টি দলটির পক্ষে রেকর্ড হিসেবে রয়ে গেছে।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ছয়টিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন জ্যাক বোর্ড। ১৪ ফেব্রুয়ারি, ১৮৯৯ তারিখে জোহেন্সবার্গে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ৩০ মার্চ, ১৯০৬ তারিখে কেপ টাউনে একই দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

১৮৯৭-৯৮ মৌসুমে এ. ই. স্টডার্টের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ দলের সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়া গমন করার সুযোগ লাভ করেন। দুইবার দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করলেও মাত্র একটি টেস্ট খেলতে পেরেছিলেন তিনি। ১৮৯৮-৯৯ মৌসুমে লর্ড হকের নেতৃত্বে দুই টেস্টে অংশ নেন। প্রথম ইনিংসে দলের পক্ষে সর্বাধিকসংখ্যক রান সংগ্রহ করলেও ২৯ রানের পর ঐ খেলা থেকে সংগৃহীত রানকে আর টপকাতে পারেননি। ১৯০৫-০৬ মৌসুমে প্লাম ওয়ার্নারের নেতৃত্বে বিদেশ সফরে চারটি টেস্টে অংশগ্রহণ করেছিলেন তিনি।

অবসর[সম্পাদনা]

ব্রিস্টলের ক্লিফটনে জন্মগ্রহণকারী জ্যাক বোর্ড পেশায় মালি ছিলেন। পরবর্তীতে পেশাদারী ক্রিকেটের দিকে ধাবিত হন। খেলোয়াড়ী জীবন শেষে প্রথিতযশা ক্রিকেট কোচের মর্যাদা লাভ করেন। নিউজিল্যান্ডের হকস বে দলে প্রশিক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন এবং দলের পক্ষে ১৩৪ ও ১৯৫ রানের ইনিংস খেলেন। ১৯১০ সাল থেকে প্রতি শীত মৌসুমে নিউজিল্যান্ড গমন করতেন। সেখানে তিনি কোচের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়াসহ হকস বে’র পক্ষে খেলতেন। দেশে ফিরে ইংরেজ গ্রীষ্মে মৌসুমে গ্লুচেস্টারশায়ারের পক্ষে কয়েকটি খেলায় অংশ নিতেন।

১৯২১ সাল থেকে কাউন্টি খেলাগুলোয় অন্যতম নিয়মিত আম্পায়ার ছিলেন। এমনকি মৃত্যুকালীনও আম্পায়ারের তালিকায় ছিলেন। ১৯০১ সালে ব্রিস্টলে আর্থিক সুবিধা গ্রহণের খেলার জন্যে সারের খেলায় মনোনীত হন। উল্লেখযোগ্য দিক ছিল, গ্লুচেস্টারশায়ারের পক্ষে অংশগ্রহণের পূর্বে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে উইকেট-রক্ষণে নিযুক্ত হওয়া।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষে ইংরেজ ক্রিকেটে আম্পায়ারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। পাশাপাশি, দক্ষিণ আফ্রিকায় কোচিং করাতেন তিনি। ১৯২৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ইংল্যান্ডে ফেরার প্রাক্কালে কেনিলওয়ার্থ ক্যাসলের পাটাতনে হৃদযন্ত্র ক্রীয়ায় আক্রান্ত হয়ে ১৫ এপ্রিল, ১৯২৪ তারিখে ৫৭ বছর বয়সে জ্যাক বোর্ডের দেহাবসান ঘটে। সাগরেই তাকে সমাধিস্থ করা হয়।[৩]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]