জেফ জোন্স

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
জেফ জোন্স
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামআইভর জেফ্রি জোন্স
জন্ম (1941-12-10) ১০ ডিসেম্বর ১৯৪১ (বয়স ৮২)
ডাফেন, কারমার্থেনশায়ার, ওয়েলস
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনবামহাতি ফাস্ট
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক২১ জানুয়ারি ১৯৬৪ বনাম ভারত
শেষ টেস্ট২৮ মার্চ ১৯৬৮ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ১৫ ১৯৮
রানের সংখ্যা ৩৮ ৫১৩
ব্যাটিং গড় ৪.৭৫ ৩.৯৭
১০০/৫০ –/– –/–
সর্বোচ্চ রান ১৬ ২১
বল করেছে ৩৫৪৬ ৩০৭৯৮
উইকেট ৪৪ ৫১১
বোলিং গড় ৪০.২০ ২৫.৯৮
ইনিংসে ৫ উইকেট ১৮
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৬/১১৮ ৮/১১
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৪/– ৪৬/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২১ মে ২০১৯

আইভর জেফ্রি জোন্স (ইংরেজি: Jeff Jones; জন্ম: ১০ ডিসেম্বর, ১৯৪১) কারমার্থেনশায়ারের ডাফেন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ওয়েলসীয় বংশোদ্ভূত প্রথিতযশা ও সাবেক ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।[১] ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি।[২] ১৯৬৪ থেকে ১৯৬৮ সময়কালে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে গ্ল্যামারগন দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ বামহাতি ফাস্ট বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, নিচেরসারিতে ডানহাতে ব্যাটিংয়ে পারদর্শী ছিলেন জেফ জোন্স

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট[সম্পাদনা]

১৯৬০ সালে গ্ল্যামারগনের সদস্যরূপে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয় তার। ১৯৬৫ সালে লিচেস্টারের গ্রেস রোডে অনুষ্ঠিত লিচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে পোতানো উইকেটে ব্যক্তিগত সেরা বোলিং পরিসংখ্যান ১৩-৯-১১-৮ লাভ করেন। এক পর্যায়ে কোন রান খরচ করা বাদেই পাঁচ উইকেট পেয়েছিলেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ১৫টি টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন জেফ জোন্স। এ সময়ে তিনি চুয়াল্লিশ উইকেট লাভ করেছিলেন। ২১ জানুয়ারি, ১৯৬৪ তারিখে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ১৯৬৩-৬৪ মৌসুমে ভারত গমন করেন। বোম্বে টেস্টের মাধ্যমে ভারতের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে শুরু করেন। সর্বমোট ১৫ টেস্টে অংশগ্রহণ করেছিলেন তিনি।

১৯৬৫ সালের শীতকালে অস্ট্রেলিয়া গমনকালে ইংল্যান্ডের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৬৫-৬৬ মৌসুমের অ্যাশেজ সিরিজে তিনি ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী ছিলেন। ৩৫.৫৩ গড়ে ১৫ উইকেট পেয়েছিলেন। তন্মধ্যে, অ্যাডিলেডে অনুষ্ঠিত চতুর্থ টেস্টে ৬/১১৮ সেরা বোলিং করেন। তৃতীয় টেস্টে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১৬ রান তুলেন। এ পর্যায়ে শেষ উইকেট জুটিতে ডেভিড অ্যালেনের সাথে ৫৫ রান যুক্ত করেন।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ গমন, ১৯৬৭-৬৮[সম্পাদনা]

১৯৬৭-৬৮ মৌসুমে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে যান ও শীর্ষস্থানীয় বোলারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। তবে, চূড়ান্ত টেস্টের শেষ ওভারটি বেশ সাহসীকতার সাথে আটকিয়ে ইংল্যান্ডের ১-০ ব্যবধানে সিরিজ বিজয়ে প্রভূতঃ ভূমিকা রেখেছিলেন। গায়ানার জর্জটাউন টেস্টে ব্যাটিং করে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন। সচরাচর ব্যাট হাতে এগারো নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে খেলার শেষ ওভারে ল্যান্স গিবসের বলে বোল্ড হন। এরফলে ইংল্যান্ড দল পরাজয়ের হাত থেকে রক্ষা পেয়ে ড্রয়ের দিকে নিয়ে যায় ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জয়ে সমর্থ হয়।

এটিই তার সর্বশেষ টেস্টে অংশগ্রহণ ছিল। এছাড়াও, ১৯৬৮ সালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন শেষ হয়ে যায়।

অবসর[সম্পাদনা]

১৯৬৮ সালের শুরুতে আঘাতের কবলে পড়ে গ্রীষ্মকালীন অ্যাশেজ সিরিজের বাইরে থাকতে বাধ্য হন তিনি। পূর্ণাঙ্গ সুস্থ হবার প্রাক্কালে ঐ বছরের শেষদিকে কনুইয়ের জোড়ায় বাতরোগের লক্ষ্মণ ধরা পড়ে। বোলিং ভঙ্গীমা পরিবর্তনের প্রয়াস চালান। তবে তা কার্যকর হয়নি। এরপর তিনি প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবনকে বিদায় জানাতে বাধ্য হন। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ২৬ বছর।[১] কনুইয়ের আঘাতের কারণে ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর মদ্য উৎপাদনকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন।[১]

ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন। তার সন্তান সাইমন জোন্স গ্ল্যামারগনের ডানহাতি ফাস্ট বোলারসহ ইংল্যান্ডের পক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন। ১১ এপ্রিল, ২০০৬ তারিখে লন্ডনে অনুষ্ঠিত উইজডেন কর্তৃক মধ্যাহ্নভোজন অনুষ্ঠানে স্বীয় সন্তান সাইমন জোন্সকে অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার প্রদান করেন।

মূল্যায়ন[সম্পাদনা]

বিখ্যাত ক্রিকেট লেখক কলিন বেটম্যান মন্তব্য করেন যে, ওয়েলসের দক্ষিণাঞ্চল সর্বদাই ফাস্ট বোলারদের জন্যে পরিচিতি পেয়ে আসছে। তবে, ১৯৬০ সালে শক্ত মজবুত গড়নের অধিকারী বামহাতি জেফ জোন্স গ্ল্যামারগনের কর্মী হিসেবে যোগদান করে চমৎকার বিনোদনধর্মী ক্রীড়া উপস্থাপন করে গেছেন। তার অংশগ্রহণের পর থেকে গ্ল্যামারগন বিধ্বংসী খেলা প্রবর্তন করতে সমর্থ হয়।[১] জনমত সমীক্ষায় দেখা যায় যে, ঐ সময়ে তার ন্যায় অন্য কোন ফাস্ট বোলার কাউন্টি ক্রিকেট খেলেননি। তবে, সবক্ষেত্রেই তিনি স্বল্প রানে উইকেট লাভে সক্ষম ছিলেন না। তবে, নিজের সেরা দিনে যে-কোন ব্যাটসম্যানের জন্যেই দুঃশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াতেন।

বেশ শক্ত মজবুত গড়নের বামহাতি ফাস্ট বোলার ছিলেন জেফ জোন্স। তবে, আঘাতের কবলে পড়ে অকালেই তার খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটেছিল। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে তার ব্যাটিং গড় ছিল মাত্র ৩.৯৭। তন্মধ্যে, অধিকাংশ ইনিংসেই অপরাজিত ছিলেন তিনি।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Bateman, Colin (১৯৯৩)। If The Cap Fits। Tony Williams Publications। পৃষ্ঠা 100আইএসবিএন 1-869833-21-X 
  2. [১] ESPNcricinfo, ESPN, সংগ্রহের তারিখ: ২১ নভেম্বর, ২০১৮

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]