জামিয়া কারিমিয়া নুরুল উলুম, জুম্মাপাড়া

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আল জামিয়াতুল করীমিয়া নুরুল উলুম (জুম্মাপাড়া মাদরাসা)
একনজরে আল জামিয়াতুল করীমিয়া নুরুল উলুম জুম্মাপাড়া মাদরাসা রংপুর এর পুুকুর, নবনির্মিত তাহফিজ ভবন এবং নুরানী, নাজেরা ও হিফজ বিভাগের ভবন।
আরবি: الجامعة الكريمية نور العلوم
প্রাক্তন নাম
করিমুদ্দিন ইসলামিয়া ও হাফিযিয়া মাদরাসা
ধরনকওমি মাদরাসা
স্থাপিত১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দ, ১৩৯৭ হিজরি
প্রতিষ্ঠাতাআলহাজ হাফেজ ইদ্রীস আলী দা. বা.
মূল প্রতিষ্ঠান
দারুল উলুম দেওবন্দ
অধিভুক্তিতানযীমুল মাদারিসিদ দ্বীনিয়া বাংলাদেশ
ধর্মীয় অধিভুক্তি
ইসলাম
মহাপরিচালকআলহাজ হাফেজ ইদ্রীস আলী দা. বা.
সহকারী পরিচালকআলহাজ মাওলানা ইউনুস আলী দা.বা.
শায়খুল হাদিসমুফতি জসিম উদ্দীন দা.বা. ও মুফতি এহতেশামুল হক কাসেমি দা.বা.
প্রধান মুফতিমুফতি এহতেশামুল হক কাসেমি দা.বা.
শিক্ষা পরিচালকমুফতি নাজমুল হক দা.বা.
শিক্ষায়তনিক ব্যক্তিবর্গ
৯০ জন (২০২৩)
শিক্ষার্থী৩৫০০ জন (২০২৩)
দাওরায়ে হাদিস২০০৪ সাল
অবস্থান
শিক্ষাঙ্গনশহর
ভাষাআরবি, ফার্সি, উর্দু, বাংলা, ইংরেজি
সংক্ষিপ্ত নামজুম্মাপাড়া মাদরাসা

আল জামিয়াতুল করীমিয়া নুরুল উলুম মাদরাসা হলো বাংলাদেশের রংপুর বিভাগীয় শহরে অবস্থিত একটি কওমি মাদরাসা[১] ১৯৭৭ সালে হাফেজ ইদ্রীস আলী মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন। এটি ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ এবং বাংলাদেশের দারুল উলুম হাটহাজারির আদলে প্রতিষ্ঠা লাভ করে এবং দেওবন্দ ও হাটহাজারি মাদরাসার মত এটিও আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আদর্শ ও চিন্তাধারা মাফিক পরিচালিত হয়। এটি কওমি মাদরাসাগুলির অন্যতম বোর্ড তানযিমের অধিভুক্ত।[২]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

১৮৬৬ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের সাহারানপুর জেলার দেওবন্দে দারুল উলুম দেওবন্দ প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর দেওবন্দের অনুসরণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলে দেওবন্দী মাদরাসা গড়ে উঠতে শুরু করে। এর অংশ হিসেবে ১৯৭৭ সালের ২১ অক্টোবর রংপুর জেলা সদরের ২৩ নং মহানগর ওয়ার্ডের জুম্মাপাড়া এলাকায় হাফেজ ইদ্রিস আলি উক্ত প্রতিষ্ঠানটির ভিত্তি স্থাপন করেন। শুরুতে এর নাম ছিল করিমুদ্দীন হাফিজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানা। পরবর্তীতে মাদরার পরিসর বৃদ্ধির সাথে সাথে এর নামেও পরিবর্তন আসে। সর্বশেষ এর নাম নির্ধারিত করা হয় "আল জামিয়াতুল করীমিয়া নুরুল উলুম"[২]

জামিয়ার কর্মধারা[সম্পাদনা]

মাদ্রাসাটির মূলত দুটি ক্যাম্পাস রয়েছে। উভয় ক্যাম্পাসের পরিধি প্রায় ৭ একর। এর শিক্ষাক্রম শিশু শ্রেণী হতে সর্বোচ্চ ইসলামি শিক্ষা দাওরায়ে হাদিস [মাস্টার্স], ইফতা, কিরাত পর্যন্ত বিস্তৃত। এর ক্রমবিন্যস্ত শিক্ষা পদ্ধতির মাধ্যমে জামিয়ায় পর্যায়ক্রমে কুরআন, হাদিস, ফিকহ, উসুল, আকাইদ, ফারাইয ইত্যাদি ও বৈষয়িক পর্যায়ে ব্যাকরণসহ আরবি, উর্দু ও ফার্সি সাহিত্যের মৌলিক কিতাবাদী বিশদভাবে শিক্ষা দেয়া হয়। এছাড়াও বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস, ভূগোল, বিজ্ঞান ও দর্শনসহ আরও বেশ কিছু বিষয় পড়ানো হয়।

১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই মাদরাসাটি দরসে নিজামি অনুসরণ করে পরিচালিত হচ্ছে। মাদ্রাসার শিক্ষাসেবা আংশিক বৈতনিক। শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য প্রচলিত দলীয় রাজনীতি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। পুরনো শিক্ষাক্রমকে অক্ষুন্ন রেখে যুগোপযোগী আধুনিক সিলেবাসে কুরআন, হাদিস, ফিকহ, তাফসীর, মানতিক, ফালসাফা, দর্শন, ইতিহাস, বালাগাত, সাহিত্য, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞান পাঠদান করা হয়। এসব ছাড়াও বাংলাভাষা ও সাহিত্য বিভাগ, হিফজ বিভাগ, নূরানী ও হস্তলিপি বিভাগ চালু রয়েছে।

মাদরাসাটি তানযীম বোর্ডের অন্তর্ভুক্ত হয়ে কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ অথরিটি আল আল হাইয়াতুল উলয়া লিল মাদারিসিল কওমিয়ার আওতাভুক্ত। মাদ্রাসার বর্তমান বিভাগসমূহ:

  1. মক্তব বিভাগ
  2. হিফয বিভাগ
  3. নুরানি একাডেমি [৩]
  4. কিতাব বিভাগ
  5. ছাত্র প্রশিক্ষণ বিভাগ
  6. ছাত্র পাঠাগার
  7. মাসিক দেয়াল পত্রিকা
  8. সাহিত্য মজলিস
  9. সাপ্তাহিক বক্তৃতা মজলিস
  10. বিষয়ভিত্তিক তারবিয়ত ও প্রশিক্ষণ বিভাগ।
  11. ফতওয়া ও ফারায়েয বিভাগ
  12. কুতুবখানা (মাদ্রাসা লাইব্রেরি)
  13. লিল্লাহ বোর্ডিং
  14. আবাসিক ছাত্রাবাস
  15. [৪]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. QOWMIPEDIA। "আল জামেয়াতুল কারিমীয়া নুরুল উলুম (জুম্মাপাড়া মাদরাসা)"QOWMIPEDIA (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-১৬ 
  2. আল কারীম (২০২২)। "বিদায়ী কাফেলা"। জামিয়া কারিমিয়া নুরুল উলুম জুম্মাপাড়া 
  3. "রংপুর জুম্মাপাড়া মাদ্রাসার নুরানী একাডেমীর নতুন শিক্ষাবর্ষের উদ্বোধন"। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-১৬ 
  4. Alam, Nure (২০২০-১২-১২)। "মাহফিলে জনস্রোতের ফলে বাধা তুলে নিতে বাধ্য হলো প্রশাসন"ইত্তেহাদ মিডিয়া ডট কম (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২১-০২-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-১৬