চুহেন্‌ফা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
চাওফা চ্যু-হেন-ফা
চাওফা
আসামের রাজা
রাজত্ব১৪৮৮ সাল থেকে ১৪৯৩ সাল পর্যন্ত
পূর্ণ নাম
চাওফা চ্যু-হেন-ফা
রাজবংশছ্যু ফৈদ , আহোম রাজবংশ
ধর্মআহোম ধর্ম

চাওফা চ্যু-হেন-ফা ১৪৮৮ সাল থেকে ১৪৯৩ সাল পর্যন্ত আহোম রাজ্য শাসন করা স্বর্গদেউ। তার রাজত্বকালে আহোম রাজ্যের পরিসীমা বেড়েছিল এবং সেইজন্য নাগা এবং কাছাড়ি রাজ্যর সাথে সংঘাত হয়েছিল। নাগাদের বিরুদ্ধে তার সামরিক অভিযান সফল হলেও কাছাড়িদের সাথে তার পরাজয় হয়েছিল। টাইরুংয়ান ফৈদর একজন আহোমের হাতে তার মৃত্যু হয়।

সিংহারোহণ[সম্পাদনা]

চুহেনফা আহোম রাজা চুচেনফার পুত্র। ৪৯ বছর শাসন করে চুচেনফার মৃত্যু হওয়াতে ১৪৮৮ সালে চুচেনফা শিঙরি ঘরে ওঠেন।

রাজত্বকাল[সম্পাদনা]

নাগাদের সাথে সংঘাত[সম্পাদনা]

চুহেনফার বাবা চুচেনফার সময়ে পরাস্ত হওয়া টাংসু নগারা পুনরায় আহোম রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামে। তারা ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার গ্রামগুলি আক্রমণ করে সাধারণ মানুষকে বন্দী করে নিয়ে গিয়েছিল। এর প্রতিকারের জন্য চুহেনফা তাওকাংবাংরেক বুরগোহাঁইর অধীনে একদল সৈন্য পাঠিয়ে দেন। টাংসু নাগা তাঁদের পরাস্ত করে বরগোহাঁইর মাথা কেটে নিয়ে যায়। চুহেনফা ততালিকে একদল নতুন সৈন্য তৈর করে নংরাং বরগোহাঁইকে নাগার বিরুদ্ধে পাঠান। তুমুল যুদ্ধের পরে বরগোহাঁ নাগাদের পরাস্ত করেন এবং তারা আহোমদের অধীন হতে মেনে হয়। বরগোহাঁবিজয়ের চিহ্ন হিসাবে কয়েকজন নাগাকে বন্দী করে এনে চুহেনফার অনুমতিক্রমে তাঁদের আহোম রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে থাকতে দেন।[১][২][৩]

কাছাড়ির সাথে যুদ্ধ[সম্পাদনা]

চুহেনফা ব্রহ্মপুত্রর নিম্নে রাজ্য বিস্তার করতে চেয়েছিলেন। সেই সময় উজনি আসামের বড় অংশ অধিকার করে থাকা কাছাড়িরা তাঁদের অঞ্চল অধিকারে বাধা দেয়। চুহেনফা বল প্রয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে আহোম প্রধান চেলাওচেং নেওগকে কাছাড়ি অঞ্চলের মধ্যে টংসুতে একটি দুর্গ তৈরিতে নির্দেশ দেন। কাছাড়িদের থেকে কোনো বাধা না পাওয়ায় এই কাজ সমাধা হয়। এখানে উৎসাহ পেয়ে তিনি খুংলুং বুঢ়াগোহাঁইর অধীনে একদল সৈন্য কাছাড়ি রাজ্যের আরো মধ্যে পাঠান। কাছাড়িরা এই সৈন্যদলকে পরাস্ত করে। আহোম সেনাপতি জিয়েউমুং নেওগ এবং ১৫০ জন সৈন্য যুদ্ধে পড়ে। কাছাড়িরা আহোমদের দিখৌ নদীর পার পর্যন্ত তাড়িয়ে নিয়ে যায়। খুংলুং বুঢ়াগোহাঁ দিখৌ নদী সাঁতরে পার হয়ে প্রাণ রক্ষা করেন।[৪] মন্ত্রীদের সাথে আলোচনা করে চুহেনফা কাছাড়ি রাজার সাথে মিত্রতার জন্য রাজি হন। তিনি কাছাড়ি রাজা ও একজন রাজকুমারীর সাথে যৌতুক হিসাবে দুটি হাতি এবং বারজন দাসী পাঠান।[৫] কোনো কোনো সূত্রের মতে যুদ্ধের ফলাফল অনির্দিষ্ট ছিল এবং শান্তি স্থাপনের পরে কাছাড়িরা আহোমদের কিছু অঞ্চল ছেড়ে দিয়েছিলেন।[৬][৭]


হত্যা[সম্পাদনা]

তাইরুংবন ফৈদের লন্তরুবন নামের একজন লোক রাজার ভাণ্ডার থেকে শস্য চুরি করে ধরা পড়েছিল। সঙ্গীদের সাথে তাঁকে এই কাজের জন্য শাস্তি দেওয়া হয়। লন্তরুবন এবং সঙ্গীরা রাজার উপরে পোটক তুলতে ইচ্ছা করেন। ১৪৯৩ সালে তারা রাজার মহলে মেরামতির কাজে নিয়োগ ছিলেন। কাজে আসায় লন্তরুবন বাঁশের মধ্যে একটি যাঠী লুকিয়ে আনেন। কাজের অগ্রগতি দেখতে চুহেনফা আসায় লন্তরুবন যাঠী দিয়ে তার প্রাণ নাশ করেন।[৮](অন্য সূত্রের মতে রাজাকে জোঙা বাঁশে হত্যা করা হয়েছিল।) কোনো কোনো তথ্য অনুসারে খুংলুং বুঢ়াগোহাঁ এই কাজ করিয়েছিলেন।[৯]

টীকা[সম্পাদনা]

  1. (Barbaruah 1981, পৃ. 42)
  2. (Barua 2008, পৃ. 58)
  3. (Gait 1926, পৃ. 85)
  4. (Barbaruah 1981, পৃ. 42)
  5. (Gait 1926, পৃ. 308)
  6. (Barua 2008, পৃ. 58)
  7. (Gait 1926, পৃ. 85)
  8. (Barbaruah 1981, পৃ. 42)
  9. (Barbaruah 1981, পৃ. 42)

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  • Barbaruah, Hiteswar (১৯৮১)। Ahomar-Din or A History of Assam under the Ahoms (ইংরেজি ভাষায়) (১ম সংস্করণ)। গুয়াহাটি: আসামের প্রকাশনা বোর্ড। 
  • Barua, Gunaviram (২০০৮)। Assam Buranji or A History of Assam (৪র্থ সংস্করণ)। গুয়াহাটি: আসামের প্রকাশনা বোর্ড। 
  • Gait, E A (১৯২৬)। A History of Assam (2 সংস্করণ)। কলকাতা: Thackar, Spink and Co।